দক্ষিণ ভারতের উপকূলে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় বরদার তাণ্ডব কিছুটা হয়েও মন্দিভূত৷ এ মুহূর্তে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ ওদিকে সরকারি সাহায্যের সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফ থেকে৷
বিজ্ঞাপন
বঙ্গোপসাগরের প্রচণ্ড সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বরদা ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে দক্ষিণ ভারতের উপকূলবর্তী তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে আছড়ে পড়ার পর, গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে জনজীবন একেবারে স্তব্ধ হয়ে পড়ে৷ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় জানমালের৷ অবশ্য ধীরে ধীরে ঝড়ের গতিবেগ কমে আসছে বলে জানা গেছে৷
ঘূর্ণিঝড়ে চেন্নাই মহানগরীর সঙ্গে আশেপাশের শহরগুলির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ ব্যাংকিং পরিষেবা, ক্যাশলেস বা নগদহীন পরিষেবা অচল হয়ে পড়ে৷ রেল, বিমান ও সড়ক যোগাযোগ হয় বিপর্যস্ত৷ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ শেষ পাোয়া খবর অনুযায়ী, তামিলনাড়ুর সমুদ্র উপকূল থেকে মত্সজীবীদের উদ্ধার করা হয়েছে৷ তবে বৃষ্টিপাতসহ এই ঘূর্ণি ঝড়ের ফলে রাজ্যের জলাভাব কিছুটা হলেও কম হবে বলে জল-পরিচালন কর্তৃপক্ষ আশা করছেন৷
চেন্নাই-এর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমান মেডিক্যাল ক্যাম্প খোলা হয়েছে জলবাহিত অসুখ-বিসুখের চিকিত্সার জন্য৷ ট্রেন ও বিমান চলাচল ফের শুরু হয়েছে আংশিকভাবে৷ অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করার কাজ চলেছে৷ হাসপাতালগুলিতে ডিজেল জেনারেটর ও ব্যাটারি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে৷ তামিনাড়ুতে দশ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷ খোলা হয়েছে প্রায় ৩০০ ত্রাণ শিবির৷ বর্তমানে জনজীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে, এমনটাই দাবি করছে প্রশাসন৷
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, জলাধারগুলিতে যেন ফাটল না ধরে বা জল যাতে ধরে রাখা যায় তার উপযুক্ত জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য৷ অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দরকার হলে তামিলনাড়ুকেও যেন ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে সহায়তা করা হয়৷ অন্ধ্রের ৩০টি উপকূলবর্তী গ্রামে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ প্রায় হাজার পঞ্চাশেক পরিবারকে অন্য নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে৷ ব্যাঙ্গালুরু এবং তার পাশ্ববর্তী অঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঝড় ও বজ্রবিদ্যুতসহ প্রবল বৃষ্টি হতে পারে৷ এক জরুরি বৈঠকে কর্নাটক রাজ্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বিশেষ দলকে তৈরি রাখা হয়েছে৷
মহাশূন্য থেকে দেখা প্রাকৃতিক বিপর্যয়
স্যাটেলাইট থেকে পৃথিবীটা কেমন দেখায়? ভূপৃষ্ঠে কী ঘটছে, তার কতটুকু জানতে পারে তারা? স্যাটেলাইট থেকে তোলা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছবি দেখলে তার একটা আন্দাজ পাওয়া যায়৷
ছবি: NASA
আগ্নেয়গিরির যখন ঘুম ভাঙে
আগ্নেয়গিরিরা যতদিনই নিদ্রমগ্ন থাকুক না কেন, তাদের ঘুম ভাঙলে আর রক্ষা নেই! ২০০৯ সালে রাশিয়ার কুরিল দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত সারিকেভ আগ্নেয়গিরিটি যখন বিস্ফোরিত হয়, তখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র আইএসএস ঠিক তার উপর দিয়ে যাচ্ছিল৷ মহাকাশচারীরা মেঘের ফাঁক দিয়ে আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের ছবি তোলার সুযোগ পান৷ আগ্নেয়গিরির ছাই থেকে শুরু করে বাষ্প, প্রায় সব কিছুই মহাকাশ থেকে দেখা যায়৷
ছবি: NASA
পড়ে থাকে বালুচর
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা-র প্রোবা-৫ পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইটটি ভূপৃষ্ঠে কোনো বিশেষ এলাকার ছবি তোলে দিনের পর দিন, যা থেকে পরিবেশগত পরিবর্তনের একটা চিত্র ধরা পড়ে৷ ওপরের ছবিগুলো তোলা হয়েছিল (বাম থেকে ডান) ২০১৪ সালের এপ্রিল, ২০১৫ সালের জুলাই ও ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে৷ ছবিগুলি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, বলিভিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদ পুপো কিভাবে ধীরে ধীরে উধাও হচ্ছে৷
ছবি: ESA/Belspo
আগুন নিয়ে খেলা
প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অরণ্যে দাবানল মানুষ ও পরিবেশের বিপুল ক্ষতি করে৷ মানুষই অধিকাংশ সময়ে এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী৷ ইন্দোনেশিয়াতে চাষিরা ক্রান্তিমণ্ডলীয় ‘পিট’ রেইনফরেস্টে আগুন লাগানোর ফলে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়৷ বোর্নিও আর সুমাত্রা দ্বীপের আগুন স্যাটেলাইটের ক্যামেরায় ধরা পড়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে৷ সেই আগুনের ধোঁয়ার কারণে ইন্দোনেশিয়ার বহু মানুষ বায়ুদূষণ সম্পর্কে সচেতন হন৷
ছবি: NASA/J. Schmaltz
বানভাসি জার্মানি
২০১৩ সালে মধ্য ইউরোপে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়, তা-তে এ অঞ্চলের মুখ্য নদীগুলিতে বন্যা নামে৷ স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, এলবে নদী কিভাবে কুল ছাপিয়েছে৷
ছবি: NASA/J. Allen
ঘূর্ণিঝড়
হারিকেন অথবা সাইক্লোন; প্রচণ্ড বাতাসের গতি, বিপুল বৃষ্টিপাত, সাগরে বান; এ ধরনের ঝড়ের গতিবেগ, গতিপথ ও অগ্রগতির উপর চোখ রাখার জন্য চাই মহাশূন্য থেকে সংগৃহীত তথ্য৷ মেক্সিকোর উপকূলে ২৫শে নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে তোলা স্যান্ড্রা ঘূর্ণিঝড়ের ছবি৷
ছবি: NASA/J. Schmaltz
হিমবাহের বরফ গলছে
জলবায়ু পরিবর্তনের উপর নজর রাখতে স্যাটেলাইটের দরকার, বিশেষ করে হিমবাহের বরফ গলার পরিমাপ বুঝতে৷ মহাশূন্য থেকে তোলা ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা দেখাতে পেরেছেন যে, সারা বিশ্বে একাধিক হিমবাহের বরফ কমে গিয়েছে – অপরদিকে সাগরের জল বেড়েছে৷ ২০০২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে আর্জেন্টিনার পাটাগোনিয়ো অঞ্চলের উপশালা হিমবাহ কিভাবে ধীরে ধীরে সরে গিয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র আইএসএস থেকে তোলা এই সব ছবি তার প্রমাণ৷
ছবি: NASA
বালির ঝড়
অথবা ধুলোর ঝড়, হাবুব কিংবা সিমুম৷ ছবিটি তোলা হয় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, স্যাটেলাইট থেকে৷ মধ্যপ্রাচ্যে এ ধরনের ধুলোবালির ঝড় দিনকে রাত করে দেয়৷ স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য ভূপৃষ্ঠে গ্রাউন্ড স্টেশনের সেন্সরগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়৷
ছবি: NASA/J. Schmaltz
‘নগ্ন শিখর’
ক্যালিফর্নিয়ার মাউন্ট শাস্টা পাহাড়ের চূড়ায় যে পর্যাপ্ত বরফ নেই, এই পরিস্থিতি বর্ণনা করার জন্য নাসা ঐ দু’টি শব্দ ব্যবহার করেছে৷ মাউন্ট শাস্টা এই অঞ্চলে পানীয় জলের একটি প্রধান উৎস৷ শুধু ক্যালিফর্নিয়াতেই নয়, বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকেও এই ধরনের ‘বাদামি পাহাড়ের’ ছবি পাওয়া গিয়েছে, যদিও অদূর অতীতে তাদের তুষারাবৃত শ্বেতশুভ্র মূর্তি স্মৃতিতে আজও অম্লান৷
ছবি: NASA/R. Simmon
8 ছবি1 | 8
তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়ছে কেন? ভূ-বিজ্ঞান ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এক সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের জলস্তরের উষ্ণতা গত ৩০ বছরে ক্রমাগত বেড়ে চলার ফলে বরদার মতো সাইক্লোন ঘন ঘন উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ভারতের উপকুলবর্তী রাজ্যগুলিতে তাণ্ডব চালাবে৷ এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানী অধ্যাপক আশুতোষ মিশ্র উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের গত ১২২ বছরের ডেটা বা পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এক সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, প্রতি বছর মে, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর, এই চার মাসে বিশেষ করে তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশে বরদার মতো প্রচণ্ড সামু্দ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এরমধ্যে সবথেকে বেশি হবার আশংকা সাধারণত নভেম্বর মাসে৷ গড়ে পাঁচ থেকে ছ'বার৷ এমনকি আরব সাগরেও অপেক্ষাকৃত কম তীব্রতার বারংবার ঘূর্ণিঝড় হবার আশংকা আছে৷ প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলস্তরের উষ্ণতা বৃদ্ধিই এর কারণ৷ ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন বিশেষ করে উপকূলবর্তী অঞ্চলে দ্রুত শিল্পায়নও এর বড় কারণ৷
ঘূর্ণিঝড়ের বরদা নামটা পাকিস্তানের দেওয়া৷ এই উর্দু শব্দের অর্থ লাল গোলাপ৷ ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলের যে আটটি দেশ – ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, মলদ্বীপ ও ওমানের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরের উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়, সেইসব দেশের আদ্যাক্ষর দিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের একটা রীতি চালু হয় ২০০৪ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার বৈঠকে৷ ভারতের দেওয়া নামের তালিকায় আছে, অগ্নি, বিজলি, আকাশ, জল, লেহর, মেঘ, সাগর ও বায়ু. বিশেষ নামকরণের উদ্দেশ্য, অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের বদলে একটা বিশেষ নাম দিলে মানুষ ও প্রচার মাধ্যম সেই ঘূর্ণি সামুদ্রিক ঝড়ের ধ্বংসলীলার ব্যাপকতা মনে রাখতে পারবে৷ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হ্যারিকেন স্যান্ডি, ক্যাটরিনা৷ হ্যারিক্যান, টাইফুনের সঙ্গে বরদা ঘূর্ণিঝড়ের পার্থক্যটা কী? হ্যারিক্যান উঠে অ্যাটলান্টিক মহাসাগর এবং উত্তর-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর থেকে টাইফুন উত্তর-পশচিম প্রশান্ত মহাসাগর থেকে এবং সাইক্লোন দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর থেকে আর বরদা উঠেছে বঙ্গোপসাগর থেকে৷
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে দ্বীপগুলো
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই শতকেই বিশ্বের অনেক মানুষ খাদ্যাভাবে পড়বে, বাড়বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানুষে মানুষে হানাহানি৷ আইপিসিসি-র রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পৃথিবীর স্বর্গ হারানোর পথে
বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সাগরে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো ঝুঁকির মুখে রয়েছে৷ মালদ্বীপ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৫ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত৷ ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে এটি পুরোপুরি তলিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের৷
ছবি: picture alliance/chromorange
বন্যার প্রকট আকার
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশ৷ নিম্ন ভৌগলিক অবস্থান এবং জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে নানা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে দেশটি৷ সাগরের পানির উচ্চতা মাত্র তিন ফুট বেড়ে গেলেই দেশের অর্ধেক পানির নীচে তলিয়ে যাবে৷
ছবি: Tareq Onu
পানিতে নিমজ্জিত সম্পদ
সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ার কারণে এরই মধ্যে দ্বীপগুলোর নিম্নাঞ্চল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে শুরু করেছে অনেকেই৷ প্রশান্ত মহাসাগরীয় কিরিবাটি দ্বীপপুঞ্জের কিছু গ্রাম এরই মধ্যেপানিতে তলিয়ে গেছে৷ ফসলি জমিতে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় বেশ চিন্তিত সেখানকার চাষীরা৷
ছবি: AFP/Getty Images
তাপমাত্রা বৃদ্ধি
আইপিসিসি’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই শতকে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে ০.৩ থেকে ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এমনকি শিল্পকারখানা যেখানে বেশি সেখানে গড়ে ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে৷ ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রে পানির উচ্চতা বাড়বে ২৬ থেকে ২৮ সেন্টিমিটার৷
ছবি: picture-alliance/AP
সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচে বসবাস
সমুদ্রের পানি থেকে বাঁচার উত্তম পন্থা জানা আছে ডাচদের৷ প্রায় ১০০০ বছর আগে বন্যার হাত থেকে বাঁচতে তারা প্রথম পরিখা নির্মাণ করেছিল৷ এ কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচে দুই তৃতীয়াংশ মানুষ নির্বিঘ্নে দিন কাটাচ্ছে সেখানে৷ তবে বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েও ভাবছে ডাচরা৷
ছবি: picture-alliance/Ton Koene
ডুবছে বিশ্ব ঐতিহ্য
ইটালির ভেনিস পুরোটাই পানি বেষ্টিত৷ তাই সেখানে বন্যা কোনো আকস্মিত ঘটনা নয়৷ কিন্তু চিন্তা বিষয় হল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরটি ক্রমেই পানির তলায় তলিয়ে যাচ্ছে৷ ইটালির সরকার ভেনিস রক্ষায় ৯.৬ বিলিয়ন ইউরোর একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে৷ বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বিশ্ব ঐতিহ্য রক্ষার এই প্রকল্প ২০১৬ সাল নাগাদ শেষ হবে৷
ছবি: AP
প্রাকৃতিক বিপর্যয়
আইপিসিসি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এশিয়া ও ইউরোপে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ অন্যদিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে পানি সংকট এবং খরা দেখা দেবে বলেও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে৷ এর ফলে ফসল ভালোমত হবে না, দেখা দেবে খাদ্য ঘাটতি৷
ছবি: dapd
কোনো মানুষ রেহাই পাবে না
আইপিসিসি-র সভাপতি রাজেন্দ্র পাচৌরি বলেছেন, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা যদি ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায় তবে ঝুঁকির পরিমাণও সেই অনুপাতে বাড়বে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব থেকে বিশ্বের কোনো মানুষই রেহাই পাবেন না৷