1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে চাষিদের মাধ্যমে বনায়নের অভিনব উদ্যোগ

১ সেপ্টেম্বর ২০২১

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সব পক্ষকে শামিল করলে যে সুফল পাওয়া যায়, ভারতে এক প্রকল্প হাতেনাতে তা দেখিয়ে দিচ্ছে৷ পতিত জমিতে বনায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষও উপকৃত হচ্ছে৷

ছবি: DW

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে নারীরা স্থানীয় গাছের চারা লাগাচ্ছেন৷ এটা শুধু কোনো পুনর্বনায়ন প্রকল্প নয়৷ তারা এমন জায়গায় চারা লাগাচ্ছেন, অনুর্বর জমি হিসেবে যা সাধারণত খালি থাকে৷ ‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস' নামের সংগঠন এমন পতিত জমিকে জঙ্গলে পরিণত করার আইডিয়া কার্যকর করছে৷

‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস' সংগঠনের সহ প্রতিষ্ঠাতা আরতী ধর বলেন, ‘‘জঙ্গলের কথা ভাবলে সেটিকে শুধু কার্বন সংরক্ষণের পাওয়ারহাউস হিসেবে ভাবলে চলবে না৷ জঙ্গল গোটা ইকোসিস্টেমের জন্য অসংখ্য সুবিধা এনে দেয়৷ কার্বন বিচ্ছিন্ন করা থেকে শুরু করে ভূগর্ভস্থ পানির ভাণ্ডার চাঙ্গা করে তোলা, মাটি সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্যের জন্য অনুকূল পরিবেশও দেয়৷ এই সব ইকোলজিক্যাল প্রণালী যে পরিষেবা দেয়, আমাদের বাজার এখনো তার আর্থিক মূল্য স্থির করে নি৷ ইকোসিস্টেম পরিষেবার জন্য মাসুল বাজারের এই ব্যর্থতা সংশোধন করার চেষ্টা করছে৷’’

মহারাষ্ট্রে কৃষকদের বনায়ন

04:29

This browser does not support the video element.

ক্ষুদ্র চাষিদের সহায়তার উদ্যোগ

‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস' সংগঠন গণেশ ধাভালের মতো ক্ষুদ্র চাষিদের সহায়তা নিচ্ছে৷ তিনি ২০২০ সালে তাঁর দুই একর অব্যবহৃত জমি এই সংগঠনকে ইজারা দেন৷ সেখানে প্রায় ৮,০০০ চারাগাছ লাগানো হয়েছে৷ ধীরে ধীরে কার্বন ধারণকারী বড় এক জঙ্গল গজিয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

জমির মালিক হিসেবে ধাভালে পাঁচ বছর ধরে প্রতি তিন মাস অন্তর ‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস' সংগঠনের কাছ থেকে প্রায় ১০০ ইউরো করে হাতে পাবেন৷ জঙ্গলে গাছপালা বড় হয়ে যে ইকোসিস্টেম পরিষেবা দেবে, সেই বাবদ এই অর্থ দেওয়া হবে৷

২৩ বছর বয়সি গণেশ ধাভালের ছোটখাটো গ্যারেজের ব্যবসা রয়েছে৷ তাঁর পরিবারের হাতে বেশ কিছু কৃষিজমি রয়েছে৷ তবে শুধু চাষবাস করে তাঁর ছয় সদস্যের পরিবারের অন্নসংস্থান করা আর সম্ভব নয় বলে ধাভালে জানালেন৷ ফলে তাঁকে উপার্জনের দ্বিতীয় পথ খুঁজতে হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘অনেক মানুষ চাষবাস ছেড়ে দিয়েছে৷ তারা শিল্পখাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে৷ কেউ কেউ নিজের ব্যবসা শুরু করেছে কারণ চাষের কাজ আর আগের মতো নেই৷ সে কারণে আমি টু-হুইলারের ওয়ার্কশপ চালু করেছি৷ চাষিরা এখন দৈনিক উপার্জনের পথ খুঁজছে৷ গত কয়েক বছরে বৃষ্টিপাত অনিয়মিত হয়ে পড়েছে৷ এমনটা চলতে থাকলে এই এলাকায় চাষের কাজ উধাও হয়ে যাবে৷’’

পরিবেশ সংরক্ষণের মাসুল

দুটি লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে ‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস' সংগঠন পেমেন্ট ফর ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস, সংক্ষেপে পিইএস পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেছে৷ বর্তমান জঙ্গল সংরক্ষণ ও পতিত জমিতে নতুন জঙ্গল গড়ে তোলাই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য৷ জিপিএস ট্যাগ ও স্যাটেলাইট ইমেজ কাজে লাগিয়ে সংগঠনের টিম প্রত্যেকটি চারাগাছের অবস্থার উপর নজর রাখে৷

এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারী, চাষি ও শ্রমিকদেরও সহায়তা করা হয়৷ আজ তাঁরা রামদাস শিণ্ডে নামের এক জমির মালিকের সাড়ে তিন একর জমিতে কাজ করছেন৷

শিণ্ডে বর্তমানে এক পেট্রোল পাম্পে কিছু সময়ের জন্য কাজ করেন৷ পিইএস প্রকল্প থেকে অর্থ পেতে শুরু করলে তিনি আবার চাষের কাজে ফিরে যাবার আশা করছেন৷ তিনি এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হলে তাঁর দেখাদেখি আরও চাষি সেই পথ বেছে নেবেন বলে তাঁর বিশ্বাস৷

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থ

রামদাস শিণ্ডে ও গণেশ ধাভালের আশা, তাঁদের এই বিনিয়োগের ফলে আগামী প্রজন্মের লাভ হবে৷ গণেশ ধাভালে বলেন, ‘‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস সব গাছ লাগালেও জমির উপর আমাদেরই পুরো অধিকার রয়েছে৷ এই সংগঠনের সঙ্গে পাঁচ বছরের ইজারা চুক্তি সত্ত্বেও জমিতে যে ফলন হবে, আমরাই তা বিক্রি করতে পারবো৷ আগামী বছরগুলিতে গাছের ফল ও কাঠের মালিক আমরাই থাকবো৷’’

পাঁচ বছর পর প্রকল্প শেষ হলেও ‘ফার্মার্স ফর ফরেস্টস' সংগঠন অদূর ভবিষ্যতে আরও দাতাদের আকর্ষণ করতে চাইছে৷ সেটা ঘটলে গোটা অঞ্চলজুড়ে বনায়ন প্রক্রিয়া অগ্রসর হবে৷ তখন স্থানীয় চাষিরা জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা অনেকটাই সামলে নিতে পারবেন৷

নায়ার/জোস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ