1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডায়বেটিস

২১ এপ্রিল ২০১২

বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা ডাব্লিউএইচও’র তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ৩৪৬ মিলিয়ন মানুষ ডায়বেটিসে আক্রান্ত৷ ২০৩০ সাল নাগাদ গোটা বিশ্বে আনুমানিক ৭.৮ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে৷

Thema Diabetes Blutzuckermessung und Insulin. Hier ist ein Blutzuckermessgerät an einer Hand zu sehen, aus dem Finger tropft Blut. #12341080 Erstellung: 13.03.2012 © Fotoimpressionen - Fotolia.com
Diabetes Blutzuckermessung Insulinছবি: Fotoimpressionen/Fotolia

বর্তমানে চীন ও ভারতে দেখা যাচ্ছে এর প্রকোপ৷ নতুন সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতে ৫১ মিলিয়ন মানুষ ডায়বেটিসে ভুগছেন৷ আগমী ২০ বছরে এই সংখ্যা ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ দিল্লি, মুম্বই ও কলকাতার মতো বড় বড় শহরে ডায়বেটিস রোগীরা একই ধরনের সমস্যার কথা বলেন চিকিত্সকের কাছে, যেমন অফিসে চেয়ারে বসেই কাজ করতে হয় অনেকটা সময়, খেলাধুলা ও স্বাস্থ্যকর খাবারের সুযোগ সুবিধাও কম৷ পুষ্টিকর খাদ্য দ্রব্য ও রান্নাবান্নার সময়ও পান না অনেকে৷ চারিদিকে, কোকাকোলা, পিৎসা ও বার্গারের মতো ফাস্টফুডের বিজ্ঞাপন৷ একটু স্বচ্ছল হলেই গাড়ি কেনার প্রবণতা৷ ঘরকন্নার সাহায্যে থাকে কাজের লোক৷ শারীরিক পরিশ্রমের পাল্লাটা অনেক কম ইত্যাদি ইত্যাদি৷ আর এসবই বহুমূত্র রোগের দিকে ঠেলে দেয় মানুষকে৷

শহুরে জীবনযাত্রা মূলত দায়ী

জার্মান ডায়বেটিস সমিতির প্রধান হেরমান লিলিয়েনফেল্ড এই রোগটির ব্যাপারে একটা অন্ধকার চিত্রই তুলে ধরলেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সমগ্র অর্থনীতির জন্যই এটা একটা বিরাট চাপ৷ তবে এটাও মনে রাখতে হবে, বেশির ভাগ মানুষই যথেষ্ট খাবার পায় না৷ পাশ্চাত্যের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার সঙ্গে যারা তাল মিলিয়ে চলেন, তাদেরই ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি৷ তবে এই সাথে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থারও উন্নয়ন প্রয়োজন৷''

শরীর চর্চা ডায়বেটিস প্রতিরোধে সহায়কছবি: AP

ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও ১৯৯১ সালে অর্থনীতির বাজার মুক্ত করে দেয়ার পর, ভারতের অর্থনীতিও ফুলেফেঁপে উঠেছে৷ ২০ বছরের মধ্যে মাথা পিছু আয় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ দারিদ্র্যের ভয়াবহতাও অনেকটা কমেছে৷ নিরক্ষরতার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে৷ এই সব উন্নয়নই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে, যদি ডায়বেটিসের মতো রোগ ব্যাধি গোটা প্রজন্মকে বিধ্বস্ত করে ফেলে৷

তরুণরা বিপদাপন্ন

বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মই ঝুঁকির মুখে৷ ভারতে ডায়বেটিসে আক্রান্তদের গড় বয়স এখন সাড়ে বেয়াল্লিশ বছর৷ পশ্চিমের দেশগুলির তুলনায় অনেক কম৷ এমনিতেই ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ম্যালেরিয়া, পোলিও, যক্ষ্মা, লেপ্রা ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে৷ স্বাস্থ্যবিমা এখনও বেশির ভাগ মানুষের কাছেই অপরিচিত৷ ভারতের মাত্র পাঁচ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য বিমার সুফল ভোগ করেন৷

চিকিত্সা ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য বহু পুরস্কারে ভূষিত ড. কে. কে. আগরওয়াল৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই ভাবে ভারতে যদি ডায়বেটিস রোগটি মহামারির আকার নিতে থাকে, তা হলে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অন্ধ, হৃদরোগ ও অঙ্গহীন মানুষের বাসস্থান হবে দেশটি৷ দুর্ভাগ্যবশতঃ এখন পর্যন্ত ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো কর্মসূচি নেই ভারতে৷ হৃদরোগের রক্ত সঞ্চালন ও মেদ জনিত অসুখ বিসুখের ব্যাপারে কিছু কিছু প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হলেও এক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে৷ আর তা না হলে এ ব্যাপারে পরিবর্তন আসবে না৷''

স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা

ভারত সরকার সরকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের পরিমাণ এক শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তিন শতাংশে করার ঘোষণা দিয়েছে৷ বিশ্বব্যাংকের অনুমান, ডায়বেটিস ও হৃদরোগের মত ব্যাধির কারণে ভারত সরকার প্রতি বছর ২৩ বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে৷ এই সব অসুখ বিসুখের প্রকোপ না থাকলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন চার শতাংশ বেশি হতে পারতো৷

ডায়বেটিস গবেষক লিলিয়েনফেল্ড'এর ভাষায়, ‘‘এই রোগটি নিয়ে সুন্দর একটি বাক্য আছে: চিনি ব্যথার সৃষ্টি করেনা তাই খুব খারাপ কিছু হওয়ার কথা নয়৷ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হলে এই রকমটি মনে হতে পারে প্রথম দিকে৷ তার মানে, যে সময়টাতে শর্করার উপস্থিতি তেমন ভাবে অনুভব করা যায় না, ঠিক তখনই রোগটি দানা বাধতে থাকে, যেটা আবার পরে বোঝা যায়৷ যেমন দেখা দেয় হৃদযন্ত্রের সমস্যা, স্ট্রোক, চোখ বা কিডনির সমস্যা৷ এই সব সমস্যা দেখা দিলে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়, রোগটি ততোদিনে চলে যায় আয়ত্তের বাইরে৷''

দৃষ্টি শক্তি বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারানো ভারতের মতো কোনো দেশের মানুষের পক্ষে অসহনীয় এক অবস্থা৷ সম্পূর্ণভাবে পরনির্ভরশীল এক জীবন অতিবাহিত করতে হয় ভু্ক্তভোগীদের৷ হারাতে হয় আত্মসম্মান৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়বেটিস মহামারিকে দ্রুত আয়ত্তে আনতে না পারলে ফলাফল ভয়ানক হবে৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ