প্রথমে শুরু হয়েছিল হায়দ্রাবাদে, তারপর গত কয়েকদিনে দিল্লি, জয়পুর, রাঁচিতেও একের পর এক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনাগুলো নির্ভয়কাণ্ডের মতোই ভয়ংকর৷
বিজ্ঞাপন
স্বাভাবিকভাবে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে৷ আলোড়ন দেখা দিয়েছে৷ সোমবার সংসদও এই ধর্ষণ নিয়ে উত্তাল হয়েছে৷
হায়দ্রাবাদের ধর্ষণ ও হত্যার রেশ কাটতে না কাটতোই দিল্লি, রাজস্থান, রাঁচি থেকেও একের পর এক ধর্ষণ ও হত্যার খবর এসেছে৷ ঘটনাগুলো আবার জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ ধর্ষণগুলির সঙ্গে এত বেশি নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতা জড়িয়ে আছে যে, তা আবার ২০১২ সালের নির্ভয়াকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে৷ সেই সঙ্গে পুলিশের আচরণ নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
হায়দ্রাবাদের ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার৷ সেখানে একজন মহিলা পশুচিকিৎসককে চারজন মিলে ধর্ষণ করে৷ তাঁর মুখে মদ ঢেলে দেওয়া হয়৷ তিনি যখন বিপন্ন অবস্থায় চিৎকার করছেন, তখন তাঁকে হত্যা করা হয়৷ তাঁর দেহ কম্বলে মুড়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ ধর্ষিতার বাড়ির লোকজন পুলিশের কাছে নালিশ জানানোর জন্য গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরেছেন৷ এক থানা পাঠিয়ে দিয়েছে অন্য থানায়৷ এই ঘটনার দুদিন পরে আবার একই জায়গায় আরেক মহিলার পোড়া মৃতদেহ পাওয়া যায়৷
দিল্লিতে গত শুক্রবার রাতে পঞ্চান্ন বছরের এক মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করেছে তাঁরই চব্বিশ বছর বয়সি প্রতিবেশী৷ পরে পুলিশের কাছে ধর্ষক বলেছে, ওই নারী সেদিন তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন৷ তারই প্রাতিশোধ নিতে ধর্ষণ ও হত্যা৷ রাজস্থানের টঙ্কে একটি ছয় বছরের মেয়েকে রবিবার রাতে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে৷ শনিবার তাকে অপহরণ করা হয়েছিল৷ রাঁচিতে গত শুক্রবার এক মহিলাকে ইঁট ভাটার কাছ থেকে ভর সন্ধ্যায় অপহরণ করা হয়৷ তারপর বারোজন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে৷
নারীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর দেশ ভারত
নারী বিষয়ক অধিকার নিয়ে কাজ করা ৫৫০ বিশেষজ্ঞের মতামতের প্রেক্ষিতে পরিচালিত এক জরিপের ফলে ‘নারীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক’ দেশের তালিকার শীর্ষে এসেছে ভারত৷ থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের জরিপটি ছবিঘরে দেখে আসি জরিপের খুঁটিনাটি৷
ছবি: Imago/Indiapicture
ভারতীয় নারী
‘নারীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত ভারতে প্রতিদিন একশ’ নারীর ওপর যৌন হয়রানি বা ধর্ষণের অভিযোগ পায় পুলিশ৷ ২০১৬ সালে ভারতের পুলিশ প্রায় ৩৯ হাজার নারীর ওপর আক্রমণ বা হয়রানির অভিযোগ পেয়েছিল, যা তার আগের বছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি ছিল৷ ভারতের নারীরা যৌন হয়রানি বা ধর্ষণ ছাড়াও, পাচার, জোর করে কাজ করানো, আয় বৈষম্য, অ্যাসিড নিক্ষেপ ইত্যাদির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷
ছবি: Reuters/P. Ravikumar
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান
২০১১ সালে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন পরিচালিত একই শিরোনামের প্রথম জরিপটিতে নারীদের জন্য ভয়ঙ্কর দেশের তালিকায় আফগানিস্তান ছিল প্রথমে৷ এবার তালিকায় তাদের অবস্থান দুই নম্বরে৷ তালিকায় যে সাতটি বিষয়ের ওপর জরিপ চালানো হয়েছিল, তার চারটি বিষয়ে আফগানিস্তান সবচেয়ে কম পয়েন্ট পেয়েছে৷ লৈঙ্গিক নিপীড়ন, ব্যবহার, নিরক্ষরতা, দারিদ্র ইত্যাদি প্রশ্নে আফগানিস্তান এখনো নারীদের জন্য নরক৷
ছবি: AP
সিরিয়া
সিরিয়ায় তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর উত্থান এবং যুদ্ধ সেদেশের নারীদের জন্য তৈরি করেছে ভয়ংকর পরিবেশ৷ ২০১১ সালে একই তালিকায় সিরিয়া প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে ছিল না৷ তারাই এবার উঠে এসেছে তিন নম্বরে৷
ছবি: picture-alliance/Anadolu Agency/M. Abdullah
আফ্রিকার তিন দেশ
সোমালিয়া, কঙ্গো আর নাইজেরিয়ার নারীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দেশের তালিকায় যথাক্রমে চতুর্থ, সপ্তম এবং নবম স্থানে রয়েছে৷ এদের মধ্যে সোমালিয়া প্রায় দুই দশক ধরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত৷ এর আগের তালিকায় সোমালিয়ার অবস্থান ছিল ৫ নম্বরে৷ এদিকে ২০১১ সালের তুলনায় জরিপের ফল অনুযায়ী রিপাবলিক কঙ্গোর অবস্থান কিছুটা ভালো হয়েছে৷ তারা এর আগে তালিকায় দুই নম্বরে ছিল৷
ছবি: AFP/Getty Images
সৌদি ও পাকিস্তান
আগের তালিকায় পাকিস্তান ছিল তিন নম্বরে, অর্ধযুগের বেশি সময় পরে চালানো জরিপে তাদের অবস্থান ছয় নম্বরে৷ এদিকে সম্প্রতি নারীবান্ধব নানা পদক্ষেপ নিলেও সৌদি আরব নারী অধিকার ও নিপীড়নের প্রশ্নে, এখনো বিশ্বে নারীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর দেশের তালিকাতে শীর্ষের দিকেই রয়ে গেছে৷ সৌদির অবস্থান নতুন তালিকায় ৬ নম্বরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Nureldine
জরিপ
জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩ টি দেশের ওপর এই জরিপ চালানো হয়৷ জরিপে তালিকার শীর্ষের দেশগুলো আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের৷ যে যে বিষয় জরিপে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: স্বাস্থ্যখাত, নারীদের অর্থনৈতিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক চর্চা, যৌন নিপীড়ন, যৌনতা ছাড়া অন্যান্য নিপীড়ণ এবং নারী পাচার৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO
অ্যামেরিকাও তালিকায়
পশ্চিমের একমাত্র দেশ হিসেবে মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশের তালিকায় অ্যামেরিকা এসেছে ১০ নম্বরে৷ সম্প্রতি ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ আন্দোলন এবং ‘টাইমস আপ’ ক্যাম্পেইনে নারীদের ওপর দেশটিতে প্রচুর যৌন নিপীড়নের ঘটনা প্রকাশ হতে শুরু করায় তালিকায় এসেছে দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/R. Tivony
7 ছবি1 | 7
হায়দরাবাদ ও তার পরের ঘটনায় দেশজুড়ে রীতিমতো আলোড়ন দেখা দিয়েছে৷ সোমবার রাজ্যসভায় সাংসদ জয়া বচ্চন ক্রুব্ধ ও আবেগতাড়িত হয়ে বলেছেন, দোষীদের প্রকাশ্যে হত্যা করা উচিত৷ এআইএডিএমকে সাংসদ বিজিলা সত্যনাথ তো বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন৷ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটা তুলে দিয়েছেন রাজ্যসভর বিরোধী নেতা গুলাম নবি আজাদ৷ তিনি বলেছেন, মহিলাদের যৌন নির্যাতম বন্ধ করার জন্য প্রচুর আইন করা হয়েছে. তারপরেও তো ঘটনা কমছে না৷ তাঁর প্রস্তাব, পুরো দেশকে এক হয়ে একেবারে শিকড় থেকে এই সমস্যা শেষ করতে হবে৷
রাজনীতিকরা তা-ও রেখেঢেকে কথা বলেন৷ নির্ভয়ার মায়ের মতো সরাসরি বলেন না৷ সাত বছর আগে দিল্লীতে ধর্ষণ ও নির্যাতনে মারা যাওয়া নির্ভয়ার মা বলেছেন, এই যে এত ধর্ষণ হচ্ছে, তার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা দায়ী৷ নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীদের এখনো ফাঁসি হয়নি৷ দোষীদের ফাঁসি হলে যে কেউ যা কিছু করতে পারবে না৷ আইন প্রচুর আছে৷ নিভর্য়ার পরও কড়া আইন হয়েছে৷ সেখানে ফাঁসির ব্যবস্থা করা হযেছে৷ তা সত্ত্বেও সাত বছর হয়ে গেল৷ দোষীদের ফাঁসি হলো না৷
সত্যি সত্যিই কড়া আইন সত্ত্বেও ঘটনা কমা দূরে থাক, বরং বাড়ছে৷ তা হলে উপায়? কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কেও সংসদে সোমবার অসহায় লেগেছে৷ তিনি বলেছেন, স্পিকার ঠিক করুন কী করবেন৷ লোকসভায় সর্বসম্মতি হোক৷ লোকসভা যা বলবে, তা-ই সরকার করবে৷ আইন পরিবর্তনের দরকার হলে তাতেও সরকার পিছপা হবে না৷ সরকারও চায় এই সমস্যা মূল থেকে নিকেশ হোক৷
সরকারের চিন্তার আরেকটি কারণ আছে৷ সেটা হলো, দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছে৷ সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মেয়েরা বিপন্ন বোধ করে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন৷ দিল্লিতে রবিবার অনু বর্মা সংসদ ভবনের পাশে একাই বিক্ষোভে বসেছিলেন৷ নিজেই সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে জানিয়েছিলেন, এই প্রথম তিনি অন্যের হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷ বারবার আশঙ্কা প্রকাশ করছিলেন, তাঁর পরিবারের যেন কোনো হয়রানি না হয়৷ হায়দ্রাবাদের ঘটনা তাঁকে এতটাই আলোড়িত করেছে যে, তিনি ঘরে বসে থাকতে পারেননি৷ প্রতিবদে নেমেছেন৷ পুলিশ তাঁকে জোর করে তুলে থানায় নিয়ে এসে কয়েক ঘন্টা পরে ছেড়ে দেয়৷ হায়দ্রাবাদে নিয়মিত বিক্ষোভ চলছে৷ জনতার রাগ গিয়ে পড়েছে পুলিশের ওপর৷ থানা লক্ষ্য করে পাথরও ছোঁড়া হয়েছে৷ নির্ভয়ার পর ইন্ডিয়া গেট থেকে বিজয় চক পর্যন্ত পুরো এলাকা চলে গিয়েছিল বিক্ষোভকারীদের দখলে৷ এবার প্রতিবাদ সেই পর্যায়ে না পৌঁছালেও কলকাতাসহ দেশের অধিকাংশ শহরেই বিক্ষোভ হয়েছে৷
এই ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হওয়া খুবই স্বাভাবিক৷ কিন্তু যে প্রশ্নের জবাব খুঁজছে সারা দেশ, তা হলো, কী করে এ ধরনের ঘটনা থামবে? কবে দেশের শহর ও গ্রাম মেয়েদের কাছে নিরাপদ হবে?
জিএইচ/এসিবি
গত বছর এপ্রিলের ছবিঘরটি দেখুন...
দু’টি গণধর্ষণের ঘটনায় ভারতে বিক্ষোভ
ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে আট বছরের এক শিশুকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে৷ আরেক গণধর্ষণের ঘটনায় শাসক দল বিজেপির এক বিধায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Kakade
ঘটনা জানুয়ারি মাসের
১৭ জানুয়ারি ভারতের জম্মু কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার একটি জঙ্গল (ছবি) থেকে আট বছরের আসিফার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ যাযাবর বাখরওয়াল উপজাতির এই নাবালিকা ঘোড়াকে ঘাস খাওয়াতে জঙ্গলে গিয়েছিল৷ তারপর আর তার বাড়ি ফেরা হয়নি৷ আসিফাকে এক সপ্তাহ ধরে গণধর্ষণ করা হয়৷ এরপর না খাইয়ে মন্দিরে আটকে রাখা হয়৷ হত্যা করার আগে আসিফাকে আবারো ধর্ষণ করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/C. Anand
গ্রেপ্তার আট
এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এক নাবালকসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ অভিযুক্তদের মধ্যে দীপক খাজুরিয়া (নীল টি-শার্ট পরিহিত) নামে পুলিশের এক কর্মকর্তাও আছে৷
ছবি: Reuters
অভিযুক্তদের মুক্তির দাবিতে আইনজীবীদের বনধ!
৯ এপ্রিল পুলিশ স্থানীয় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে গেলে কাঠুয়ার হিন্দু আইনজীবীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছিল৷ এরপর ১২ তারিখ জম্মু বার এসোসিয়েশনের ডাকে বনধ’ও পালিত হয়েছে৷ এছাড়া একটি মৌলবাদী হিন্দু গোষ্ঠীর হাজার হাজার সদস্য বন্দিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে৷ উল্লেখ্য, আসিফা মুসলমান সম্প্রদায়ের সদস্য ছিল৷ ছবিতে পুলিশ ভ্যানে আরেক অভিযুক্ত সাবেক সরকারি কর্মচারী সঞ্জি রামকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters
আড়াই মাস পর আলোচনায়
আসিফার মৃতদেহ পাওয়া যায় ১৭ জানুয়ারি৷ তবে এপ্রিলের শুরুতে ভারতজুড়ে সেটি আলোচনার জন্ম দেয়৷ অভিযুক্তদের মুক্তির দাবিতে হিন্দু গোষ্ঠীর বিক্ষোভ আর প্রতিবেদন জমা দিতে হিন্দু আইনজীবীদের বাধা দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় বিষয়টি সামনে আসে৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress/F. Khan
শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত: মন্ত্রী
১২ বছরের কমবয়সি শিশুদের ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আইনে পরিবর্তন আনার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী মানেকা গান্ধী৷ বর্তমানে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Sharma
নির্ভয়াকাণ্ডের সমতুল্য
আসিফা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডকে ২০১২ সালে দিল্লি গণধর্ষণের সঙ্গে তুলনা করে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ২০১২ সালে বাসে এক ছাত্রীর (নাম দেয়া হয়েছিল নির্ভয়া) গণধর্ষণের ঘটনায় ভারতজুড়ে শুরু হওয়া প্রতিবাদের ফলে ধর্ষণবিরোধী আইনে পরিবর্তন এসেছিল৷ তবে এরপরও গতবছর শিশুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও সমমানের প্রায় ৩৬ হাজার অপরাধের ঘটনা ঘটেছে বলে ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ডস ব্যুরো জানিয়েছে৷
ছবি: AP
আরেকটি ধর্ষণ এবং ধর্ষিতার বাবার মৃত্যু
আসিফার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার আগে গণধর্ষণের আরেক ঘটনা আলোচনায় ছিল৷ উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের ১৮ বছরের এক তরুণী বিজেপির বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের (ছবি) বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন৷ কিন্তু এক বছরেও তিনি কোনো বিচার পাননি৷ উলটো ঐ তরুণীর বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ৷ পরে ধর্ষিতা তরুণী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন৷ অবশ্য ১৩ এপ্রিল ঐ বিধায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ছবি: Imago/Hindustan Times
মোদীর মন্তব্য
যারা নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ করে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না বলে শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এসব ঘটনা সভ্য সমাজের অংশ হতে পারে না উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘‘আমাদের কন্যারা নিশ্চিতভাবেই সুবিচার পাবে৷’’
ছবি: picture-alliance/Zumapress
মোদীকে সাবেক আমলাদের চিঠি
ভারতের একদল সাবেক আমলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা এক চিঠিতে কাঠুয়া ও উন্নাওয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ মোদীকে উদ্দেশ্য করে তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘দলের ভেতর আপনার আধিপত্য এবং আপনার ও আপনার দলের সভাপতি যেরকম নিয়ন্ত্রণ চর্চা করেন, সে হিসেবে দেশের এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতির জন্য অন্যদের চেয়ে আপনাকেই বেশি দায়ী করা হবে৷’’
ছবি: picture-alliance/Zumapress/F. Khan
‘বিজেপির হাত থেকে মেয়েদের বাঁচাও!’
নারী উন্নয়নে ভারতের বিজেপি সরকারের একটি কর্মসূচির নাম ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’৷ তবে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে এক তরুণীকে গণধর্ষণের সঙ্গে বিজেপির এক বিধায়কের নাম জড়িয়ে পড়ার পর বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী ‘বিজেপিসে বেটি বাঁচাও’, অর্থাৎ বিজেপির হাত থেকে মেয়েদের বাঁচানোর কথা বলেছেন৷