পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম পর্বের ভোটেও অশান্তির খবর এসেছে। রোববার রাতেই উলুবেড়িয়ার বিজেপি-র বুথ সভাপতির ভাইপোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারা হয়। অভিযোগ, তৃণমূলের কর্মীরা এই কাজ করেছে।
আরামবাগে এক তৃণমূল নেতা শ্যামল রায়ের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারা হয়েছে। অভিযোগ, বিজেপি-র বিরুদ্ধে। তাকে উদ্ধার করতে দুইজন কর্মী গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। তিনজনই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ, একাধিক বুথে তৃণমূল কর্মীরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বনগাঁর গয়েশপুরে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। স্বরূপনগরে বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ এসেছে।
খানাকুলে সিপিএম প্রার্থীর অভিযোগ, সেখানে বোমাবাজি হয়েছে। শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী তাকে বুথে ঢুকতে বাধা দিয়েছে।
পুরশুড়াতেও বোমা উদ্ধার করা হয়। লিলুয়াতে প্রিসাইডিং অফিসারকে চড় মারা হয়েছে বলে অভিযোগ।
উলুবেড়িয়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠার পর তাকে ডিউটি থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সকাল নয়টা পর্যন্ত পশ্চিমবহঙ্গে ভোট পড়েছে ১৫ শতাংশ।
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম দফায় মোট ১৩ হাজার ৫৮১টি বুথে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন এর মধ্যে সত হাজার ৭১১টি বুথকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে। মডেল বুথ ৯৩টি।
সাতটি কেন্দ্রের জন্য ৬৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। চতুর্থ পর্বেই দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা ভোটে সহিংসতা বেড়েছে। এজেন্টদের মেরে বের করে দেয়া, ছাপ্পা ভোট দেয়ার অভিযোগ, বোমামাজি, ভয় দেখানোর অভিযোগ সামনে এসেছে।
ভারতে ভোট : নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাহাড়, মরুভূমি, নদী পাড়ি দেয়া
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৯৭ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি৷ ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাহাড়, মরুভূমি, নদী পাড়ি দিতে হচ্ছে৷
ছবি: Anupam Nath/AP Photo/picture alliance/dpa
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক অনুশীলন
ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে৷ সাত পর্বের নির্বাচনের তিনটি পর্ব ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে৷ বাকি পর্বগুলো শেষ করে ৪ জুন ফল ঘোষণা করা হবে৷ প্রায় ৯৭ কোটি (বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি) ভোটার লোকসভার ৫৪৩ জন সদস্য নির্বাচিত করবেন৷
ছবি: Deepak Sharma/AP/picture alliance
নির্বাচনি আইনে শর্ত
ভারতের নির্বাচনি আইন বলছে, একজন ভোটারের কাছ থেকে ভোটকেন্দ্রের দূরত্ব দুই কিলোমিটারের বেশি হতে পারবে না৷ এছাড়া একটি ভোটকেন্দ্রে অন্তত ছয়জন পোলিং স্টাফ ও দুজন পুলিশ সদস্য থাকতে হবে৷ এসব শর্ত মানতে প্রত্যন্ত এলাকায় ছুটে যেতে হচ্ছে নির্বাচন কর্মকর্তাদের৷ ছবিতে কর্মকর্তাদের আসামের মাজুলীর বাগমরা চাপোরিতে যেতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Anupam Nath/AP Photo/picture alliance
ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা
ভারতের নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটিং উপকরণ বহনে হেলিকপ্টার, বাস, ট্রাক, নৌকা, এমনকি গাধা, খচ্চরও ব্যবহার করছেন৷ তারা জঙ্গল, তুষারাবৃত পাহাড়, ছোট নদীও হেঁটে পার হয়ে তাঁবু, শিপিং কনটেনার, প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলসহ বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করছেন৷ ছবিতে কর্মকর্তাদের পাহাড়ি পথ পেরিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত গ্রাম ডেসায় যেতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Channi Anand/AP Photo/picture alliance
একজন ভোটারের জন্যও ভোটকেন্দ্র
গুজরাটের গির অরণ্যের গহীনে একটি মন্দির আছে৷ সেটির দেখাশোনা করেন মহন্ত হরিদাস উদাসীন৷ মঙ্গলবার (৭ মে) তিনি ভোট দিয়েছেন৷ নির্বাচন আইন মেনে তার জন্য ভোটকেন্দ্র বসাতে সেখানে গিয়েছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য৷ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা বাসে করে অসমতল পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের৷ এছাড়া ভোটার একজন হলেও আইন মেনে সারাদিনই ভোটকেন্দ্র খোলা রাখতে হয়েছিল তাদের৷
ছবি: Indranil Mukherjee/AFP/Getty Images
পাহাড়ি পথ পাড়ি
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত গ্রাম ডেসায় ভোটকেন্দ্র বসাতে এক নির্বাচনি কর্মকর্তা ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে ছোট্ট এক ঘোড়ার পিঠে চেপে বসেছেন৷ বাকি কর্মকর্তারা পাহাড়ি এই পথ হেঁটে পার হচ্ছেন৷
মেঘালয়ের শিলংয়ের এক কুলি পিঠে ভোটিং মেশিন নিয়ে একটি সাসপেনশন ব্রিজ পার হচ্ছেন৷
ছবি: Adnan Abidi/REUTERS
মরুভূমিতে হাঁটা
রাজস্থানের মরুভূমি এলাকায় অবস্থিত আকলি গ্রামে ভোটকেন্দ্র বসাতে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা৷
ছবি: Deepak Sharma/AP Photo/picture alliance
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভোটকেন্দ্র
১ জুন হিমাচল প্রদেশের তাশিগাংয়ে ভোটগ্রহণ হবে৷ সেখানকার ভোটকেন্দ্রটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত ভোটকেন্দ্র৷ সমুদ্র থেকে ১৫ হাজার ২৫৬ ফুট (৪,৬৫০ মিটার) উঁচুতে অবস্থিত৷ ছবিতে ২০০৯ সালের নির্বাচনের সময় সাড়ে ১৫ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত হিকিম গ্রামের নারীদের ভোট দিতে যেতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
মহারাষ্ট্রে সোমবার যে কেন্দ্রগুলিতে ভোট হচ্ছে, সেখানে শিবসেনার শক্তি বেশি। ফলে উদ্ধব ঠাকরে ও একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বে শিবসেনার মধ্যে এর অনেকগুলিতে তীব্র লড়াই হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশে যে ১৪টিতে ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে বিজেপি গতবার ১৩টিতেই জিতেছিল। শুধু রায়বেরিলিতে জিতেছিল কংগ্রেস। সোনিয়া গান্ধী এবার আর বায়বেরিলি থেকে লড়ছেন না। তার জায়গায় লড়ছেন রাহুল গান্ধী। সোনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা রায়বেরিলিতে রাহুলের হয়ে প্রচার করেছেন।
গতবার আমেঠি থেকে লড়ে হেরেছিলেন রাহুল গান্ধী। তাই তিনি এবার আমেঠি থেকে লড়ছেন না। এখানে বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানির ভাগ্যপরীক্ষা হচ্ছে সোমবার।