ভারতে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হওয়ার কথা বিচারপতি খান্নার
১৭ অক্টোবর ২০২৪
ভারতীয় আইন মন্ত্রণালয়কে এই মর্মে চিঠি দিয়েছেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। নভেম্বরে তিনি অবসর নেবেন।
বিজ্ঞাপন
আগামী ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব থেকে অবসর নেবেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণতম বিচারপতি। কিন্তু অবসর গ্রহণ করার আগে বর্তমান প্রধানবিচারপতি পরবর্তী বিচারপতির নাম চিঠে লিখে আইন মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে যাবেন, এটাই দস্তুর। সেই মতো বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে সঞ্জীব খান্নার নাম জানিয়ে চিঠি লিখেছেন আইন মন্ত্রণালয়কে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কী বলছে কাশ্মীর?
৩৭০ ধারা বাতিল বৈধ, বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ নিয়ে কাশ্মীরী নেতারা ইতিমধ্যেই নানা মন্তব্য করেছেন। দেখে নেব এক নজরে।
ছবি: Indranil Mukherjee/AFP
ফৈজের কবিতা ওমর আবদুল্লাহ-র কলমে
কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ফারুক আবদুল্লাহের ছেলে ওমর আবদুল্লাহ পরপর দুইটি বিবৃতি দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ। তিনি লিখেছেন, 'হতাশ কিন্তু নিরুৎসাহিত হইনি। লড়াই জারি থাকবে। বিজেপি-র এখানে পৌঁছাতে বহু সময় লাগছে। পাল্টা প্রস্তুতি আমরাও নিচ্ছি।' এরপরেই আরেকটি বিবৃতিতে ফৈজ আহমেদ ফৈজের একটি কবিতা পোস্ট করেন তিনি।
ছবি: Imago/Hindustan Times/A. Sharma
মেহবুবা মুফতির হতাশা
কাশ্মীরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। পিপল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা মুফতি জানিয়েছেন, ''জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ আশা ছাড়বেন না। মর্যাদার লড়াই চলতে থাকবে। রাস্তা এখানেই শেষ হচ্ছে না।''
ছবি: Getty Images/S. Hussain
ওমর এবং মুফতির অভিযোগ
দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সোমবার বিকেলে বন্ধ ছিল। বাইরে বিপুল পরিমাণ ফোর্স দাঁড়িয়ে ছিল। মঙ্গলবার দুই নেতাই অভিযোগ করেছিলেন, প্রশাসন তাদের গৃহবন্দি করেছিল।
ছবি: Tauseef Mustafa/AFP/Getty Images
গুলাম নবি আজাদের মন্তব্য
একসময় কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং বর্তমানে ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ আজাদ পার্টির চেয়ারম্যান গুলাম নবি আজাদ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। সোমবারের রায়কে দুঃখজনক এবং হতাশাজনক বলে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। কাশ্মীরের মানুষ এই রায়ের সন্তুষ্ট নন বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন আজাদ।
ছবি: Hindustan Times/IMAGO
নরেন্দ্র মোদী বললেন 'ঐতিহাসিক'
স্বাভাবিকভাবেই আদালতের রায়ে খুশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স-এ নিজের হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, '২০১৯ সালে পার্লামেন্ট যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আদালত তাকেই বৈধতা দিল। এ এক ঐতিহাসিক রায়। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে আমি আশ্বস্ত করছি, তাদের সমস্ত স্বপ্নের পাশে থাকবে আমাদের সরকার।'
ছবি: Tauseef Mustafa/AFP
অমিত শাহের পোস্ট
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লিখেছেন, '৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের গরিব এবং অবহেলিত মানুষকে অধিকারের রাস্তা দেখিয়েছিলাম আমরা। কাশ্মীরে এখন আর পাথর ছোঁড়া হয় না। বিচ্ছিন্নতাবাদ আগের চেয়ে কমেছে। কাশ্মীরে মানুষ বেড়াতে যাচ্ছেন, সেখানে আনন্দের সংগীত বাজছে।' তার বক্তব্য, আদালতের রায়ে আবার প্রমাণিত হলো, কাশ্মীর ভারতের অখণ্ড অংশ। বস্তুত, এদিন জওহরলাল নেহরুর নীতিরও সমালোচনা করেছেন শাহ।
ছবি: Mayank Makhija/picture alliance/NurPhoto
কংগ্রেসের অবস্থান
কংগ্রেস নেতা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, ''সুপ্রিম কোর্টের রায়কে আমরা সম্মান জানাচ্ছি কিন্তু তার সঙ্গে সহমত হচ্ছি না। যে প্রক্রিয়ায় বিজেপির সরকার ৩৭০ বাতিল করেছিল, তা বৈধ বলে আমরা মনে করি না।''
ছবি: Prakash Singh/AFP/Getty Images
হরি সিংয়ের ছেলের মন্তব্য
কাশ্মীর ভারতে অন্তর্ভুক্তির সময় সেখানকার রাজা ছিলেন হরি সিং। তার ছেলে করণ সিং কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেস হাই কম্যান্ডের সঙ্গে তিনি সহমত নন। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেছেন, কাশ্মীরের মানুষের এই রায় মেনে নেওয়া উচিত।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Desfor
কাশ্মীরের পরিস্থিতি
সার্বিকভাবে কাশ্মীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে কাশ্মীরের জনসাধারণের একাংশের বক্তব্য, আদালত রায় নিয়ে তারা ভাবিত নন। ফলে এনিয়ে আলাদা করে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।
ছবি: Tauseef Mustafa/AFP/Getty Images
পৃথক রাজ্য
আদালত জানিয়েছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাশ্মীরে নির্বাচন করতে হবে। এবং আলাদা রাজ্য তৈরি করতে হবে। এবিষয়েও সংবাদমাধ্যমের সামনে কাশ্মীরের মানুষ বিশেষ কথা বলতে চাইছেন না।
ছবি: Samaan Lateef/DW
10 ছবি1 | 10
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যারা প্রধান বিচারপতি হন, সাধারণত তারা দেশের কোনো না কোনো রাজ্যের হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসেন। কিন্তু সঞ্জীব খান্না তার ব্যতিক্রম। তিনি ২০১৯ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির দায়িত্ব পালন করলেও দেশের অন্য কোনো রাজ্যে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেননি।
দিল্লির জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন সঞ্জীব খান্না। এরপর দিল্লি হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে কাজ শুরু করেন।
দীর্ঘদিন দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে কাজ করার পর ২০১৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যোগ দেন। কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি, ইলেক্টোরাল বন্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দিয়েছেন তিনি।
এই মুহূর্তে আরজি কর মামলার শুনানিচলছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচরপতির বেঞ্চে। বিচারপতি খান্না নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করে এই মামলাকে কোন দিকে পরিচালিত করেন, সেদিকে তাকিয়ে অনেকেই। তবে বিচারপতি খান্না খুব বেশি দিন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন না। ২০২৫ সালের মে মাসে তিনি অবসর গ্রহণ করবেন।