গর্ভাশয়ের সমস্যার কারণে যেসব নারী স্বাভাবিকভাবে গর্ভাধারণ করতে অক্ষম, তাঁদের ক্ষেত্রে গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন সবচেয়ে ভালো বিকল্প৷ পুনে শহরে এই প্রথম গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন অপারেশন হলো৷ এ সাফল্যে ভারত জুড়ে তুমুল সাড়া পড়েছে৷
বিজ্ঞাপন
গত ১৮ই মে মহারাষ্ট্রের পুনে শহরের গ্যালাক্সি কেয়ার ল্যাপ্রোস্কপি ইন্সটিটিউটে ১২ জন ডাক্তারের একটি মেডিক্যাল টিম দেশে প্রথম গর্ভাশয় প্রতিস্থাপনের একট জটিল সার্জারি করে এক অসাধ্য সাধন করলেন৷ মহারাষ্ট্রের সালাপুরের ২১ বছরের তরুণীর জরায়ুতে জন্মগত কিছু ত্রুটি থাকার কারণে তিনি কখনোই গর্ভবতী হতে পারতেন না৷ তরুণীর মায়ের দেওয়া গর্ভাশয়টি ল্যাপ্রোস্কপিক টেকনিকে কেটে বের করে মেয়ের গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়৷ অপারেশন শুরু হয় সকাল ৯টায়, শেষ হয় রাত ৯টায়৷ ডাক্তারা প্রথমে ভেবেছিলেন সাত-আট ঘণ্টা লাগবে কিন্তু লাগে ১২ ঘণ্টারও বেশি৷
পরে ডাক্তাররা জানান, অপারেশন সফল হয়েছে৷ যিনি জরায়ু দান করেছেন, তাঁর স্বাস্থ্য ঠিক আছে৷ প্রতিস্থাপনের পর গ্রহীতা মেয়েকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়৷ তারপর সপ্তাহ খানেক আইসিইউ-তে এবং পরের দুই সপ্তাহ রাখা হবে সাধারণ কেয়ারে৷ সেই সময় মহিলার দেহে প্রতিস্থাপিত গর্ভাশয় কেমন কাজ করছে, জরায়ুতে নিয়মিত রক্ত সরবরাহ হচ্ছে কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে সোনোগ্রাফির মাধ্যমে৷ জানালেন হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর শৈলেশ পুন্টামবেকার এবং অপারেশন টিমের অন্যতম সদস্য ডক্টর সঞ্জীব যাদব৷ আশা করা হচ্ছে, সুস্থ হয়ে ওঠার পর তিনি স্বাভাবিকভাবেই গর্ভবতী হতে পারবেন৷
পুনের গ্যালাক্সি কেয়ার ল্যাপ্রোস্কপিক ইন্সটিটিউটে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো আছে কিনা তা দেখার পরই মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দপ্তর এই ধরনের জটিল অপারেশনের লাইসেন্স দেয়৷ ১৯ মে অনুরূপ আরেকটি সার্জারি হয়৷ ২৫ বছর বয়সি এক নারীর দেহে গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন করা হয়৷ ‘‘আমার জীবনে সবথেকে সুখকর অভিজ্ঞতা হবে নিজের সন্তানকে ১০ মাস গর্ভে ধারণ করা'', গড়গড় করে সংবাদমাধ্যমকে বলে গেলেন ঐ নারী৷
গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন বন্ধ্যাত্ব চিকিত্সার একটা নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে চিকিত্সা মহল আশা করছে৷ ‘‘এই ধরনের বেশ কিছু সার্জারির পর অদূর ভবিষ্যতে এটা হবে মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া'', বলেন হাসপাতালের গায়নাকোলজিস্ট ডক্টর মিলিন্দ টেলাং৷ প্রথম দুই-তিনটি গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন সফল হলে ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন ইতিহাস রচিত হবে৷
ভারতে সারোগেসির সেকাল-একাল
ভারতে সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়া সহজলভ্য ও খরচ কম হওয়ায় বাণিজ্যের বাজার দাঁড়িয়েছে ১৫০০ কোটি টাকার মতো৷ তবে গত বছর এই পদ্ধতিকে প্রায় নিষিদ্ধ করার আইন হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে ভারতের কয়েকটি ক্লিনিকের কথা৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
সারোগেসি আসলে কী?
সারোগেসি হলো সন্তান জন্মদানের জন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া নেওয়া৷ এই প্রক্রিয়ায় কোনো সন্তানহীন দম্পতি অথবা কোনো একক মা বা বাবা সন্তানলাভের জন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া নিতে পারেন৷ বলা বাহুল্য, এক্ষেত্রে ‘সারোগেট মা’ বা যিনি সেই সন্তান ধারণ করছেন, এতে তাঁর সম্মতি থাকতে হবে৷ সন্তানটি প্রসবের পর অবশ্য সারোগেট মা সদ্যজাত সন্তানকে ঐ দম্পতিকে দিতে বাধ্য থাকবেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain
কারা এমন সন্তান চান?
বিদেশি সন্তানহীন দম্পতি, প্রবাসী ভারতীয় দম্পতি, একক বাবা-মা, সমকামী – এমন অনেকেই সারোগেসির জন্য ভারতকে বেছে নেন৷ এমন ভারতীয় দম্পতিরা, যাঁদের ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ-এর মাধ্যমে, অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়, তাঁরাও সারোগেসির দ্বারস্থ হন৷ বর্তমানে ভারতে এ ধরনের ক্লিনিক বেশি আছে দিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো বড় বড় শহরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
ভারতে সারোগেসির সূত্রপাত
ডা. নয়না প্যাটেল ভারতে প্রথম সারোগেসি বাণিজ্যিকভাবে চালু করেন৷ আহমেদাবাদ থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে আনন্দ শহরে ২০০৫ সালে বাণিজ্যেকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেন তিনি৷ সেসময় থেকেই নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে ডা. নয়না প্যাটেল এক বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় নাম হয়ে ওঠে৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
আকাঙ্খা ক্লিনিক
২০১৫ সালে ডা. প্যাটেল একটি ক্লিনিক চালু করেন, ঐ আনন্দেই, যার নাম আকাঙ্খা৷ সারোগেসি, আইভিএফ’সহ অন্যান্য নানা ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে৷ তবে সারোগেসির জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু সুবিধা৷ যেমন শুক্রাণু ব্যাংক৷ এমনকি সন্তান প্রসবের পর সদ্যজাতকে যথেষ্ট পরিমাণ দুধের জোগান দিতে রয়েছে ‘মিল্ক ব্যাংক’-ও৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মায়েরা
আকাঙ্খা ক্লিনিকে সারোগেট মায়েদের গর্ভধারণ থেকে শুরু থেকে প্রসব পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হয়৷ ক্লিনিকের একেবারে নীচ তলায় তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে৷ বর্তমানে সেখানে অন্ততপক্ষে ৭০ জন সারোগেট মা রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৬২ জন সন্তানসম্ভবা৷
ছবি: DW/D. Guha
আকাঙ্খা ক্লিনিকে খরচ
সারোগেসির জন্য এখানে খরচ পড়ে সাড়ে ৬ থেকে সাড়ে ৭ লাখ রুপি৷ তবে অর্থটা নির্ভর করে সারেগেট মা এবং ‘ইন্টেনডেড পেরেন্ট’ বা আইপি, অর্থাৎ সেই নিঃসন্তান দম্পতির শারীরিক অবস্থার ওপর৷ এক্ষেত্রে শুত্রাণু বা ডিম্বাণুর প্রয়োজন হলে অর্থের পরিমাণটি বাড়তে পারে৷ এমনকি প্রথমবারে গর্ভধারণ সম্ভব না হলে, এক-একটি প্রতিস্থাপনে বেড়ে যেতে পারে খরচ৷
ছবি: Sam Panthakya/AFP/Getty Images
বিভিন্ন সময় খবরে এসেছে যে ক্লিনিক
আকাঙ্খা ক্লিনিক যেহেতু শুরু থেকেই সারোগেসি নিয়ে কাজ করছে, তাই বহুবার পত্রিকায় খবর হয়েছে এই ক্লিনিক নিয়ে৷ এখানে সারোগেট মায়েরা পান সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ রুপি৷ এজেন্ট, অর্থাৎ যাঁরা এই মায়েদের জোগাড় করে দেন, তাঁরা পান ২৫ হাজার রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
উরুজেন ক্লিনিক, দিল্লি
দিল্লির চিকিৎসক দম্পতি অশোক ও সুরভী গুপ্তা এই সারোগেসি ক্লিনিকটি চালু করেন৷ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত৷ এই ক্লিনিকে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ১২ থেকে সাড়ে ১২ লাখ রুপি৷ আগে এখানে নিঃসন্তান বিদেশি দম্পতিরাই বেশি আসতেন, তবে বর্তমান দেশি দম্পতিদের অনেকেই আসেন৷
ছবি: DW/D. Guha
অশোক গুপ্তা
উরুজেন এর চিকিৎসক অশোক গুপ্তা৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মা
উরুজেন ক্লিনিকের দু’জন সারোগেট মা৷ এই ক্লিনিকে সেই সব মায়েদের নির্বাচন করা হয়, যাঁদের নিজেদের আর সন্তানের প্রয়োজন নেই এবং যাঁদের আর বাচ্চা হবে না৷ এঁরা সন্তান গর্ভে আসা থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতেই থাকেন৷ তাই এঁরা পুরো সময়টা উপভোগ করেন এবং হাসিখুশি থাকেন৷ এই মায়েরা পান সাড়ে তিন লাখ রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
জেনোম, কলকাতা
কলকাতায় সারোগেসির জন্য এই ক্লিনিকটি সুনাম রয়েছে৷ এই ক্লিনিকে সন্তান পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ১০ লঅখ রুপির মতো৷ আর সারোগেট মায়েরা পান ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
ঐন্দ্রী স্যান্নাল
এই ক্লিনিকটির চিকিৎসক ঐন্দ্রী স্যান্নাল৷
ছবি: DW/D. Guha
কাউন্সেলর
দুই সারোগেট মায়ের মাঝে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি জেনোম ক্লিনিকের সারোগেট মায়েদের কাউন্সেলিং করে থাকেন৷ তবে এই দুই সারোগেট মা এখন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন৷ সারোগেসির ক্ষেত্রে একজন মা নিজের সন্তানসহ কেবল পাঁচবার গর্ভধারণ করতে পারবেন৷ অর্থাৎ যে মায়ের নিজের দু’টি সন্তান রয়েছে, তিনি আর তিনবার সারোগেট মা হতে পারবেন৷ তবে অস্ত্রপচার বা সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রসব হতে পারবে মাত্র দু’বার৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মায়েদের থাকার ব্যবস্থা
কলকাতায় সারোগেট মায়েদের তিনরকম থাকার ব্যবস্থা রয়েছে – হোম, নিজের বাসা, এমনকি যাঁরা বাচ্চা নেবে তাঁদের বাসাতেও চাইলে থাকতে পারেন সন্তানসম্ভবা সারোগেট মা৷
ছবি: DW/D. Guha
কলকাতার হোম
এই হোমের ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে সেখানে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের থাকার পরিবেশ ততটা ভালো নয়৷ তবে সেখানে তাঁকে তাঁর পরিবারের মানুষ দেখতে যেতে পারেন৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেসি বন্ধে আইন
ভারতে সারোগেসি নিয়ে যে নতুন আইনটি উত্থাপিত হয়েছে, তা অনুযায়ী বিদেশি তো বটেই, দেশীয় নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্যও বাণিজ্যেক সারোগেসি বন্ধ হতে যাচ্ছে৷ অর্থাৎ আইনটি পাশ হলে, অর্থের বিনিময়ে গর্ভভাড়া নেওয়া আর যাবে না ভারতে৷ কেবল নিঃসন্তান বিবাহিত দম্পতি – যাঁরা মেডিক্যাল কারণে বাবা-মা হতে পারছেন না – একমাত্র তাঁরাই সন্তানের জন্য কোনো নিকটাত্মীয়ের সাহায্য নিতে পারবেন৷
ছবি: DW/D. Guha
16 ছবি1 | 16
সার্জারির আগে মা ও মেয়েকে সামনাসামনি বসিয়ে কাউন্সেলিং করা হয়৷ যিনি জরায়ু দিচ্ছেন এবং যিনি গ্রহণ করছেন, তাঁদের মানসিক শক্তির মূল্যায়ন করা হয়৷ দেখা হয়, গর্ভাশয় দিতে দাত্রীর উপর কোনোরকম চাপ আছে কিনা৷ শুধু তাই নয়, যিনি নেবেন তাঁর ও তাঁর স্বামীর দাম্পত্য সম্পর্ক কতটা স্থিতিশীল তা-ও দেখা হয়৷ গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন সার্জারি নিয়ে গোটা দেশে সাড়া পড়ে গেছে৷ এর ভালো-মন্দ দিক নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক৷ বলা হচ্ছে, এই অপারেশন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রক্রিয়া৷ বারংবার হাসপাতালে আসতে হয়৷ এই অপারেশন বেশ ব্যয়বহুল৷ এটা একটা অস্থায়ী অঙ্গ প্রতিস্থাপন৷ এর থেকে সারোগেসিবা দত্তক নেওয়া অনেক সহজ৷ যদিও পুনের গ্যালাক্সি হাসপাতালের মতে, গর্ভাশয় প্রতিস্থাপনের সার্জারি প্রক্রিয়া কিডনি, লিভার বা অন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতোই৷
গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন কিভাবে হয়, কাদের হয়? যে নারীর গর্ভাশয় বাদ দেওয়া হয়েছে বা সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই রকম নারীই হতে পারেন গ্রহীতা৷ ডোনার হতে পারেন মা, বোন কিংবা মেয়ে৷ সার্জারির আগে গ্রহীতার ডিম্বানু এবং তাঁর স্বামীর শুক্রাণু নিষিক্তকরণের পর ভ্রুণ হিমায়িত অবস্থায় রাখা হবে৷ তারপর ডোনারের জরায়ু নিয়ে তা প্রতিস্থাপন করা হবে গ্রহীতার দেহে৷ প্রতিস্থাপনের বছর খানেক পর সেই হিমায়িত ভ্রুণ গ্রহীতার গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হবে৷ সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে৷ সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর প্রতিস্থাপিত গর্ভাশয় আবার কেটে বাদ দেওয়া হয়৷
প্রথম জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয় সৌদি আরবে ২০০২ সালে৷ দ্বিতীয়টা হয় তুরস্কে ২০১১ সালে৷ কিন্তু কোনোটাই সফল হয়নি৷ কারণ দু'টি ক্ষেত্রেই জরায়ু নেওয়া হয়েছিল ‘ব্রেন ডেড' মহিলার৷ তাই গ্রহীতা মহিলার দেহ তা নিতে পারেনি৷ বিশ্বে প্রথম সফল গর্ভাশয় প্রতিস্থাপিত হয় ২০১৪ সালে, সুইডেনে৷ ডাক্তার ম্যাটস ব্রানসস্ট্রম হলেন একমাত্র ডাক্তার যিনি জীবিত মহিলার জরায়ু কেটে অন্য মহিলার দেহে প্রতিস্থাপন করেন এবং সফল হন৷
২০১৬ সালে লোকসভায় পাশ হওয়া বিল অনুযায়ী, ভারতে বিদেশি, সিঙ্গেল, সমকামী বা ‘লিভ-ইন পার্টনারদের’ সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেয়া অবৈধ৷ তবে বিলটি এখনো আইন হয়নি বলে বলিউডের কয়েকজন তারকা ইতিমধ্যে গর্ভ ভাড়া করে সন্তান নিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/Dinodia Photo
করণ জোহর
এ তালিকায় সর্বশেষ নাম করণ জোহর৷ চলচ্চিত্র নির্মাতা করণ জোহর গত ৫ মার্চ নিজেই জানিয়েছেন দুই সন্তানের ‘বাবা’ হওয়ার খবর৷ তবে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে বিয়ে করে তিনি জনক হননি৷ তাঁর পক্ষে তা হয়ত সম্ভবও নয়, কারণ, ৪৪ বছর বয়সি এই পরিচালক সমকামী৷ সারোগেসি বিল ভারতের রাজ্যসভায় পাশ হলেই তা আইনের মর্যাদা পাবে৷ আইন হয়ে গেলে করণ জোহর এভাবে সন্তান নিতে পারতেন না৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
তুষার কাপুর
বলিউডের সাবেক জনপ্রিয় নায়ক জিতেন্দ্র’র ছেলে তুষার কাপুর৷ তিনিও হিন্দি ছবির নায়ক৷ এবং তিনিও বিয়ে না করেই বাবা৷ প্রস্তাবিত আইনে ‘সারোগেট মাদার’-এর সহায়তায় ‘সিঙ্গেল ফাদার’ হওয়াও অবৈধ৷ কিন্তু তুষারও সন্তান নিয়েছেন আইন হওয়ার আগে৷ এতদিন তিনিই ছিলেন বলিউডের একমাত্র ‘সিঙ্গেল ফাদার’৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
শাহরুখ খান
‘বলিউড কিং’ শাহরুখ খান আর তাঁর স্ত্রী গৌরী খানের এমনিতেই দুই সন্তান ছিল৷ তারপরও ২০১৩ সালে তাঁরা গর্ভ ভাড়া করে তৃতীয় সন্তান নেন৷ সেই সন্তানের নাম আবরাম৷ সন্তান নিতে শারীরিকভাবে সক্ষম কোনো দম্পতির সারোগেট মাদারের মাধ্যমে সন্তান নেয়া প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী অবৈধ৷ সারোগেসি বিলটি এখনো আইন হয়নি বলেই ‘কিং খান’-ও গর্ভ ভাড়া আবরামের বাবা হতে পেরেছেন৷
ছবি: picture alliance/Dinodia Photo
আমীর খান
আমীর খান বিবাহিত এবং তিনিও শারীরিকভাবে সন্তান জন্ম দেয়ায় সক্ষম৷ আগের স্ত্রীর ঘরে তাঁর দু’টি সন্তান রয়েছে৷ ফলে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী তাঁরও ‘সারোগেট চাইল্ড’ নিতে পারার কথা নয়৷ কিন্তু বর্তমান স্ত্রী কিরণ রাও একাধিকবার গর্ভ ধারণে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১১ সালে আমীরও সন্তান নিয়েছেন এভাবে৷ তাঁদের ‘সারোগেট চাইল্ড’-এর নাম আজাদ৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
সোহেল খান
সালমান খানের ছোট ভাই সোহেল খান সারোগেট মাদারের মাধ্যমে জনক হয়েছেন ২০০০ সালে৷ তার আগেও তাঁর দু’টি সন্তান ছিল৷ স্ত্রী সীমা খানের গর্ভের দুই সন্তানের পরও গর্ভ ভাড়া করে নির্ভানাকে পান তাঁরা৷