বর্ষশেষ ও নতুন বছরের প্রথম দিনে ভারতের অধিকাংশ শহরে কার্ফিউ। ব্যতিক্রম কলকাতা, চণ্ডিগড়ের মতো কয়েকটি শহর।
বিজ্ঞাপন
করোনার থাবা বর্ষশেষ ও নিউ ইয়ারের পার্টিতেও। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ের মতো শহরগুলিতে থাকছে রাতের কার্ফিউ। বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাত এগারোটা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত কার্ফিউ বহাল থাকবে। ফলে পথে নেমে হইচই, পার্টি সব বন্ধ। অনেক শহরে রাত দশটা বা এগারোটায় হোটেল, রেস্তোরঁ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। করোনার নতুন স্ট্রেইন ভারতে চলে আসায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে ব্যতিক্রম হলো কলকাতা, চণ্ডিগড়ের মতো হাতে গোণা কয়েকটি শহর। কলকাতায় যেমন কার্ফিউ বা কোনো কড়াকড়ি নেই। চণ্ডিগড়েও তাই। ফলে কলকাতায় পার্ক স্ট্রিটের মতো এলাকায় হইচই করে গভীর রাতে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।
কিন্তু দিল্লি সহ অন্য শহরে তা হবে না। সাধারণত কনট প্লেস, ইন্ডিয়া গেটের মতো জায়গায় রাত বারোটা পর্যন্ত বর্ষশেষ উদযাপন করেন দিল্লিবাসী। কিন্তু এই বার ওই সব জায়গা মানুষের নাগালের বাইরে থাকবে। মুম্বইতেও বড় সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাতে কার্ফিউ থাকবে। তবে আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়ি যাওয়া যাবে। সেখানে জমায়েত ছোট রাখতে হবে। পাবলিক প্লেসে একসঙ্গে চারজনের বেশি মানুষ থাকতে পারবেন না। সেটাও মাস্ক পরে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
বেঙ্গালুরুতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই কড়াকড়ি শুরু হয়ে গেছে। চেন্নাইতে মেরিনা সহ সব বিচ বন্ধ করে দেয়া হবে। হোটেল, রেস্তোরাঁ রাত দশটার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে। চেন্নাইতে নতুন ধরনের ভাইরাসে একজন আক্রান্ত হয়েছেন।
বিভিন্ন শহরের নিউ ইয়ার পার্টি
পৃথিবীতে সবার আগে ২০২০ সালে প্রবেশ করবে সামোয়া নামের দ্বীপরাষ্ট্র৷ ২৪ ঘণ্টা পর হাওয়াইতে গিয়ে শেষ হবে নতুন বছরের উদযাপন৷ এই ২৪ ঘণ্টা জুড়েই বিশ্বের বিভিন্ন শহর রঙিন হয়ে উঠবে আতশবাজির আলোয়৷
গরম কাপড় পরে ক্যানাডার মন্ট্রিল বন্দরে আতশবাজি দেখার আনন্দই আলাদা৷ শহরটিতে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ উপস্থিত হন৷ কুইবেক প্রদেশের সবচেয়ে বড় এ শহরটিতে বরফে স্কি করা এবং বরফে ঢাকা পাহাড়ে হাইকিং করাও এই উদযাপনের অংশ৷ আতশবাজি শেষ হলে বিভিন্ন ক্লাবে নেচে গেয়ে কাটানো যাবে রাত৷
ব্রাজিলের এই শহরটিতে নতুন বছরের মধ্যরাত বেশ রোমান্টিক৷ সাগরের ওপরে শোভা পায় আতশবাজি৷ মানুষ পানিতে ফুল ও মোমবাতি ভাসিয়ে নতুন বছরে স্বাগত জানায়৷ সৈকতের পার্টিগুলোতে সাম্বা হচ্ছে মূল আকর্ষণ৷ ব্রাজিলিয়রা মনে করেন, নতুন বছরের প্রথম মুহূর্তে সাদা পোশাক পরলে, তা সৌভাগ্য বয়ে আনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AP Photo/L. Correa
বার্লিন
বার্লিনের নতুন বছর উদযাপন ধীরে ধীরে ঐতিহ্যে পরিণত হচ্ছে৷ জার্মানির রাজধানীতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ ব্রান্ডেনবুর্গ গেট আর ভিক্টোরি কলামের মাঝখানে জড়ো হন৷ আতশবাজির খেলা শেষ হওয়ার পরও সারা রাত ধরে চলতে থাকে পার্টি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Carstensen
লন্ডন
বিগ বেন ঘোষণা দেয় নতুন বছরের আগমনের৷ এর পরপরই টেমস নদীর ওপর শুরু হয় আলোর খেলা৷ তবে সবচেয়ে ভালো দৃশ্য় দেখতে হলে চড়তে হবে লন্ডন আই-এ৷ ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই ফেরিস হুইলের নববর্ষের টিকেট পাওয়া অবশ্য দুঃসাধ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Mcnaughton
প্যারিস
ফ্রান্সের শঁ দ্য মার্স এবং পালে দু ত্র্য তে সবচেয়ে বড় নববর্ষের আয়োজন হয়৷ আইফেল টাওয়ারে আয়োজন হয় লাইট আর লেজার শো৷ শঁস এলিস থেকে দেখা যায় আর্ক দে ত্রিওম্ফ৷ সেখানে প্যারিসিয়ানরা জড়ো হন সবাইকে ‘বন অ্যান্নি’ বা ‘শুভ নববর্ষ’ জানাতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kovarik
রোম
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রিস্টানরা জড়ো হন ভ্যাটিকানের সেইন্ট পিটারস স্কয়ারের পিয়াৎসা সান পিয়েত্রোতে৷ সেইন্ট পিটারস ব্যাসিলিকায় পোপ নিজে আসেন নববর্ষ উদযাপন করতে৷ এই উদযাপনের টিকেট পাওয়া যায় বিনামূল্যে৷ কিন্তু আসন সীমিত, কেবল ১০ হাজার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Tersigni
প্রাগ
চেকিয়ার রাজধানী প্রাগে আশেপাশের পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করা হয় আতশ৷ আপেল কেটে প্রাগবাসী বরণ করেন নতুন বছর৷ যদি আপেলের মাঝখানে তারার আকৃতি পাওয়া যায়, সেটিকে সৌভাগ্যে প্রতীক বিবেচনা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Fluger
মাদ্রিদ
স্পেন রাজধানীর কেন্দ্র পুয়ের্তা দেল সোল স্কয়ারে সবচেয়ে বড় পার্টির আয়োজন হয়৷ স্পার্কলিং ওয়াইন এবং আঙুর নিয়ে সবাই সেখানো জড়ো হন৷ ঘড়ির কাঁটা যখন নতুন বছরের ঘোষণা দেয়, তখন ঘণ্টার প্রতিটি আওয়াজের সঙ্গে একটি করে আঙুর খাওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে স্পেনে৷ প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে আঙুর খাইয়ে দেন৷ একে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Cuevas
জেনেভা
সম্ভবত নতুন বছর উদযাপনের সবচেয়ে খরুচে স্থান সুইজারল্যান্ডের এই শহর৷ লেক জেনেভায় আতশবাজি দেখার পাশাপাশি প্যাডেল হুইল স্টিমারে ছয় পদের ডিনার এবং শ্যাম্পেন পানের আয়োজন করা হয়৷ পুরো লেকের পাড় নানা রঙের আলোতে সাজিয়ে তোলা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Di Nolfi
9 ছবি1 | 9
কলকাতায় নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসে একজন আক্রান্ত হলেও নতুন বছরের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো কড়াকড়ি করা হচ্ছে না। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা মধ্যপন্থা নিয়ে এগোতে চাইছে।
গত সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে জানিয়েছিল, করোনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়। তারপর অধিকাংশ রাজ্যই কোনো ঝুঁকি নেয়নি।
নতুন বছরের প্রথম দিনেই ভারতীয়দের জন্য সুখবর আসতে পারে। করোনার ভ্যাকসিন চালু করার কথা ঘোষণা করতে পারে সরকার। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। সেরাম ইতিমধ্যেই ৭ কোটি ৫০ লাখ ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছে। আগামী সপ্তাহেই মোট ১০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে বলে সেরাম জানিয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যকর্মী ও করোনার লড়াইয়ে পুরোভাগে থাকা মানুষদের অবিলম্বে টিকা দেয়া যাবে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, টিকা চালু করার সব প্রস্তুতি শেষ।