1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভালুক নাচ

৩ ডিসেম্বর ২০১২

একটা সময় ভারতের অলি-গলিতে দেখা যেতো ভালুক নাচ৷ পশু সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর তৎপরতায় সেই দৃশ্য আর দেখা যায় না৷ এতে মানুষের মনোরঞ্জনে ব্যাঘাত ঘটলেও ভালুকগুলোর জীবন বেঁচেছে৷ আর সঠিক পথ খুঁজে পেয়েছে কিছু মানুষ৷

A woman touches a monument to polar bear Knut after its unveiling at the Zoo in Berlin, Germany, Wednesday, Oct. 24, 2012. Polar bear Knut became a global celebrity before his sudden death last year. (Foto:Michael Sohn/AP/dapd)
ছবি: dapd

বিশাল আকারের একটি ভালুক নাচছে, হেলেদুলে দোল খেয়ে যাচ্ছে৷ দেখতে কিন্তু বেশ মজার৷ কিন্তু মনে করে দেখুন তো, নাকে দড়ি বাঁধা সেই ভালুকটির তা কি করতে ভালো লাগছে? বনের পশু রাস্তায় এসে নাচবে, সেটা না পাশবিক না মানবিক, কোনটাই তো নয়৷ তাই ভারতের পশু সংরক্ষণে আন্দোলন কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রথা বন্ধ করার চেষ্টা করছিলেন৷ আর তাতে সফলও হয়েছেন৷

ভারতের পথে ঘাটের এই ভালুক নাচের প্রচলন কিন্তু বহু আগের৷ সেই ১৩তম শতাব্দী থেকে মুসলমান কালান্দার গোত্রের মানুষ এর প্রচলন শুরু করে৷ বড়লোকদের বাড়িতে ভালুক নাচ দেখিয়ে কিছু পয়সা কড়ি রোজগার করতো তারা৷ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বংশানুক্রমে তারা সেই পেশা ধরে রাখে৷ কিন্তু এই কারণে দিন দিন ভালুকের সংখ্যাও কমতে থাকে৷

গত শতাব্দীতে এসে পশু সংরক্ষণ ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া বা ডাব্লিউটিআই এই ব্যাপারে প্রচারণা শুরু করে৷ ভারতের সরকারও ১৯৭২ সালে এই ভালুক নাচ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে৷ কিন্তু নিষিদ্ধ করলেই কি তা বন্ধ হয়? বাপ-দাদার এই পেশা থেকে তো সরে আসা সম্ভব নয়৷ তাই কালান্দার গোত্রের পুরুষেরা আইনের তোয়াক্কা না করেই এটি চালিয়ে আসছিলো৷ তবে ডাব্লিউটিআই জনসচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে তাদের মধ্যে৷ এছাড়া ওয়ার্ল্ড সোসাইটি ফর দ্য প্রোটেকশন অব অ্যানিমেলস ডাব্লিউএসপিএ এবং ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস- এই দুটি সংগঠনও ব্যাপক প্রচারণা চালায়৷

তাদের সেই প্রচারণা সুফল নিয়ে এসেছে৷ কয়েক মাস আগে এই ভালুক নাচের সমাপ্তির কথা জানানো হয়েছে৷ অর্থাৎ ভারতে এখন আর এই ভালুক নাচ দেখা যায় না৷ এর কারণ এই পেশায় জড়িতদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অন্য পেশাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ডাব্লিউটিআই এর কর্মকর্তা বিবেক মেনন বলেন, ‘‘আমাদের অনেক বছর লেগেছে এই গোত্রের মানুষগুলোকে অন্য কোন পেশায় নিয়ে যেতে৷ হয়তো মানুষের মনে এখনও এটি রয়ে গেছে তবে এটি আর কোথাও ঘটছে তেমন কোন ঘটনা আমাদের জানা নেই৷''

কালান্দার গোত্রের আফসার খানের কথাই ধরা যাক৷ তিনটি মেয়ের বাবা ৩০ বছরের আফসার খান৷ বাবা আর ভাইয়ের সঙ্গে তিনিও দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াতেন আর ভালুক নাচ দেখাতেন৷ দিনে আয় হতো তিনশ রুপি৷ কিন্তু ছয় বছর আগে সেই পেশা ছেড়ে দেন৷ ভালুকগুলোকে ডাব্লিউটিআই-র হাতে তুলে দেন এবং তার বিনিময়ে কিছু টাকা পান৷ সেই টাকা দিয়ে তিনি ট্রাক্টর কিনেছেন৷ এখন তিনি ট্রাক্টর চালিয়ে রোজ ৫০০ রুপি কামান৷ ছোট ভাইটাও এখন গাড়ি চালানো শিখছে৷ আগের দিনগুলো মনে করে তিনি বলেন, কাজটা খুব কঠিন ছিলো৷ কোথাও বেশিদিন থাকা সম্ভব হতো না, ফলে বাচ্চাগুলোও স্কুলে যেতে পারতো না৷ এছাড়া পুলিশের ভয় তো ছিলোই, তাদেরকে ঘুষ না দিলে ঝামেলা করতো৷''

ভালুক নাচ বন্ধে এই সাফল্য এখন সাপের খেলা বন্ধের প্রচারণাতে উৎসাহ যোগাবে৷ পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার ভালুকগুলোরও জীবন বাঁচাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

আরআই/এএইচ (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ