ভারতে মুসলিম নারীদের অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে মুসলিম পারিবারিক আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে মুসলিম মহিলা আন্দোলন৷ এতে মুখে তিনবার তালাক বলে ডিভোর্স, বহু বিবাহ এবং বিয়ের সময় যৌতুকের পরিমাণ নির্দিষ্ট করার কথা বলা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
গত প্রায় সাত বছর ধরে ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন সংক্ষেপে বিএমএমএ নামের একটি সংগঠন এই প্রথম মুসলিম সমাজে বিবাহ, ডিভোর্স এবং খোরপোষ সংক্রান্ত ইসলামিক আইন সংশোধন নিয়ে কাজ করার পর, মুসলিম মহিলা পারিবারিক নিয়ম-নীতির এক আচার-সংহিতা চূড়ান্ত করেছে৷ এই খসড়ার নাম দেয়া হয়েছে মুসলিম বিবাহ ও ডিভোর্স আইন৷ তাতে মুখে তিনবার তালাক বলে কোনো মুসলিম পুরুষ তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্স করতে পারবেন না৷
ভারতের চা বিক্রেতাদের কথা
রেশম গেলাটলি এবং জ্যাক মার্কস-এর প্রকল্পের নাম ‘ভারতের চায়েওয়ালা’৷ এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ভারত চষে বেড়াচ্ছেন তাঁরা৷ তাঁদের মতে, ‘চায়ে’ বা চা ভারতের সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ এই নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
রাস্তায় ‘চায়ে’
ভারতের প্রায় প্রতিটি রাস্তার কিনারে ‘চায়ে’ বা চা বিক্রেতাদের দেখা মেলে৷ প্রত্যেক বিক্রেতার আবার রয়েছে নিজস্ব ‘রেসিপির’ চা৷ ছবিতে মুম্বই হাইকোর্টের কাছের চা বিক্রেতা বংশী তাঁর খদ্দেরের হাতে চা তুলে দিচ্ছেন৷ অনেক আইনজীবী, এমনকি বিচারকও বংশীর চায়ের বিশেষ ভক্ত৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
‘টি(ম) গেম’
এই ছবিটি রাজস্থানের ক্লক টাওয়ার মার্কেটের সামনে অবস্থিত শ্রী রাম টি স্টলের৷ মহিন্দ্র তাঁর খদ্দেরদের মাঝে চা বিতরণ করছেন৷ তিনিসহ তিনজনের একটি দল দোকানটি চালাচ্ছেন৷ রাজা চা তৈরি করেন, হরেশ কাগজের কাপে করে মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে চা পৌঁছে দেন এবং মহিন্দ্র গ্লাস কাপে খদ্দেরদের চা দেন৷ চার কাপ চা এক হাতে ধরে নিয়ে যেতে বিশেষ পারদর্শী মহিন্দ্র৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
নারীর একক চেষ্টা
কলকাতার একটি আধুনিক শপিং কমপ্লেক্সের সামনে চা বানান মীনাক্ষী৷ পুরো চায়ের দোকান প্রায়শই একা সামলান তিনি৷ তাঁর স্বামী বাড়িতে তাদের চার বছরের ছেলেকে দেখাশোনা করেন৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
তারকাদের জন্য চা
বলিউড ছবি তৈরির সেটে ‘স্পট বয়দের’ দেখা মেলে, যাদের কাজ হচ্ছে ক্যামেরার ভারি যন্ত্রপাতি সরানো এবং চা তৈরি৷ বলিউডের বড় তারকাদের চা পান করিয়ে মুম্বইয়ে বেশ নাম করেছেন ছট্টু৷ প্রিয় তারকা সম্পর্কে জানতে চাইলে কূটনৈতিক সুরে ছট্টুর জবাব, ‘‘আমি নির্দিষ্ট একজনকে প্রিয় বলতে পারিনা, কারণ আমি সবার সঙ্গেই কাজ করি৷’’
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
কখনোই বুড়ো নয়
৭৩ বছরের জীবনের অধিকাংশ সময় কলকাতার বড় বাজারে পশু পালন করেছেন শিবনাথ রাই যাদব৷ কিন্তু দশ বছর আগে তাঁকে বলা হয় পশুর খামার শহরের বাইরে সরিয়ে নিতে৷ তখন চা বিক্রির নতুন পেশা শুরু করেন তিনি৷ তিনি চা তৈরিতে কোন পানি ব্যবহার করেন না৷ শুধু দুধ দিয়ে চা বানান৷ আর এটাই শিবনাথের বৈশিষ্ট্য৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
দৈনিক আয় বারো ইউরো
গঙ্গা নদীর তীরে একটি পিঁড়িতে বসে চা, বিস্কিট এবং সিগারেট বিক্রি করেন সুনীতা দেবী৷ তাঁর চায়ের খদ্দের মূলত নদীর এ পাড় থেকে ও পাড় মানুষ পারাপারের কাঠের নৌকার মাঝিরা৷ সুনীতা দিনে গড়ে দু’শো কাপ চা বিক্রি করেন৷ ইউরোর হিসেবে তাঁর দৈনিক আয় বারো ইউরোর মতো৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
পুজার সময় সারা রাত খোলা
শোভন বরওয়ার চায়ের দোকানের অবস্থান কলকাতার আলীপুরে৷ সাধারণ রাত দশটা পর্যন্ত দোকান খেলা রাখেন তিনি৷ কিন্তু দুর্গা পুজার সময় ভোর পাঁচটা অবধি চা বেঁচেন তিনি৷ পুজা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা রাত জেগে বিভিন্ন প্যান্ডেল ঘুরতে চান৷ তাই তাদের সজাগ রাখতে সারারাত চা বেচেন শোভন৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
যাত্রীদের সহায়তা
গনেশের চায়ের দোকানের অবস্থান বিহারের পাটনা ট্রেন স্টেশনে৷ এই ছবি যখন তোলা হয়, তখন রাতের শেষ পট চা চুলায় চড়িয়েছেন তিনি৷ গনেশের দোকানের পাশেই রয়েছে আরেকটি চায়ের দোকান৷ তবে দুই দোকানি একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন না৷ বরং দু’টি দোকান হওয়ায় ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের কাছে দ্রুত চা পৌঁছানো যায়, এতেই সন্তুষ্ট গনেশ৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
‘চায়ে ওয়ালা’ প্রকল্প
মার্কিন সাংবাদিক রেশম গেলাটলি (বামে) এবং জ্যাক মার্কস (ডানে) ২০১০-২০১১ সালে ভারতে বসবাসের সময় প্রথম চাওয়ালাদের সঙ্গে পরিচিত হন৷ পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের চাওয়ালাদের কথা জানতে এবং তাদের কথা গোটা বিশ্বকে জানাতে আগ্রহী হন তারা৷ আর সেই আগ্রহ থেকেই চলছে তাদের প্রকল্প ‘ভারতের চায়ে ওয়ালা’৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
9 ছবি1 | 9
শুধু তাই নয়, মুসলিম পুরুষদের বহু বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ডিভোর্স হলে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে খোরপোষ দেয়া এবং নিকা বা বিবাহ করার সময় কন্যাকে বরের পক্ষ থেকে যে যৌতুক দেয়া হয় তার পরিমাণ নির্দিষ্ট করা থাকবে এই খসড়ায়৷ ডিভোর্সের ক্ষেত্রে একমাত্র ‘‘তালাক-ই-এহসান'' মানা হবে৷ এতে তালাক দেবার পর তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ এছাড়া স্বামী-স্ত্রীকে দাম্পত্য কলহ মিটিয়ে নেবার একটা সুযোগ দেয়া হবে৷ ভুল বোঝাবুঝি দূর হলে উভয়পক্ষের সম্মতি সাপেক্ষে আবার তাঁদের পুনর্মিলনও হতে পারে৷ অর্থাৎ স্বামী তাঁর তালাক তুলে নিতে পারে৷ তবে বারংবার একই অপরাধ করলে অপরাধীর কড়া জরিমানা হবে এবং কাজির লাইসেন্স বাতিল করা হবে৷ আর খোরপোষের ক্ষেত্রে নিয়ম অমান্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে৷ বুধবার, ১৮ই জুন, এই খসড়া চূড়ান্ত করে বিএমএমএ আশা প্রকাশ করেছে যে, সরকার ভারতীয় মুসলিম নারী সমাজের অবস্থার উন্নতিতে এই আচার-সংহিতা কার্যকর করবে৷
আচার-সংহিতার মধ্যে আছে নিকার সময় মুসলিম পাত্রীর বয়স হতে হবে কমপক্ষে ১৮ বছর এবং পাত্রের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর৷ তাছাড়া নিকার সময় পাত্র-পাত্রীর জীবিত দ্বিতীয় কোনো স্বামী বা স্ত্রী থাকতে পারবেন না যাতে বহু বিবাহ বন্ধ করা যায়৷
বলা বাহুল্য, মুসলিম শরিয়ত নিয়মে কোনো মুসলিম পুরুষ চারবার বিবাহ করতে পারে৷ আর মেহের বা বিয়ের সময় পাত্রপক্ষ পাত্রীকে যে যৌতুক দেন, তার পরিমাণ পাত্রের মোট বার্ষিক রোজগারের কম হলে চলবে না৷ বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে মেহের বা যৌতুকের পরিমাণ মেটানো না হলে, পরে তার দ্বিগুণ দিতে হবে পাত্রকে৷ বর্তমানে কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেহের হিসাবে পাত্র ৭৮৬ টাকার কমও দিয়ে থাকে৷
ভারতীয় মুসলিম সমাজ ১৯৩৬ সালের ‘মুসলিম পার্সোনাল আইন' বা শরিয়াত দ্বারা পরিচালিত৷ কিন্তু শরিয়াত আইন বিধিবদ্ধ নয়৷ এটা স্থানীয় মৌলবিদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রয়োগ করা হয়৷ ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের দাবি, মুসলিম পার্সোনাল আইন লিখিত ও বিধিবদ্ধে করতে হবে যাতে এর নিয়মকানুনগুলি সকলের বোধগম্য হয়৷
একজন নরেন্দ্র মোদী
উগ্র সাম্প্রদায়িক আদর্শ এবং বিভাজনের রাজনীতির কারণে ভারতের বহু মানুষের কাছে তিনি খলনায়ক৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে নতুন মোড়কে সামনে এনে সেই নরেন্দ্র মোদীই শোনাচ্ছেন ভারতকে বদলে দেয়ার মন্ত্র৷
ছবি: dapd
চা ওয়ালা
১৯৫০ সালে গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশরে বাবাকে সাহায্য করতে রেল ক্যান্টিনে চা বিক্রি করেছেন৷ ঘাঞ্চি সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক বালিকার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়, যদিও বেশিদিন সংসার করা হয়নি৷ ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও মোদী বিতর্কে ছিলেন ওস্তাদ৷ ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে রাজনীতির দরজায় পা রাখেন মোদী৷
ছবি: UNI
গুজরাটের গদিধারী
১৯৮৫ সালে আরএসএস থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়ার ১০ বছরের মাথায় দলের ন্যাশনাল সেক্রেটারির দায়িত্ব পান ১৯৯৫ সালে গুজরাটের নির্বাচনে চমক দেখানো মোদী৷ ১৯৯৮ সালে নেন দলের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব৷ ২০০১ সালে কেশুভাই প্যাটেলের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দলের মনোনয়নে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আবির্ভূত হন নরেন্দ্র মোদী, যে দায়িত্ব তিনি এখনো পালন করে চলেছেন৷
ছবি: Reuters
দাঙ্গার কালিমা
মোদীকে নিয়ে আলোচনায় ২০০২ সালের দাঙ্গার প্রসঙ্গ আসে অবধারিতভাবে৷ স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গুজরাটে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন৷ মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি দাঙ্গায় উসকানি দেন৷ তিনি এ অভিযোগ স্বীকার করেননি, আদালতও তাঁকে রেহাই দিয়েছে৷ তবে দাঙ্গার পক্ষে কার্যত সাফাই গেয়ে, হিন্দুত্ববাদের গান শুনিয়েই তিন দফা নির্বাচনে জয় পান মোদী৷
ছবি: AP
রূপান্তর
দাঙ্গার পর নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেন নরেন্দ্র মোদী৷ একজন বিতর্কিত নেতার বদলে উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দিতে শুরু হয় ‘গুজরাট মডেল’-এর প্রচার৷ ২০০৭ সালের পর নিজেকে একজন সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে তুলে ধরতে নতুন প্রচার শুরু করেন এই বিজেপি নেতা, প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্র্যান্ড মোদী’৷গুজরাটের উন্নয়নের চিত্র দেখিয়ে কলঙ্কিত ভাবমূর্তিকে তিনি পরিণত করেন ভারতের ত্রাতার চেহারায়৷
ছবি: UNI
ভারতের পথে পথে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে নরেন্দ্র মোদী পাড়ি দিয়েছেন তিন লাখ কিলোমিটার পথ৷ সারা ভারতে পাঁচ হাজার ৮২৭টি জনসভায় তিনি অংশ নিয়েছেন, নয় মাসে মুখোমুখি হয়েছেন পাঁচ কোটি মানুষের৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবে শুরু করলেও এবার তিনি হিন্দুত্ব নিয়ে প্রচার এড়িয়ে গেছেন সচেতনভাবে, যদিও বাংলাদেশের মানুষ, ভূখণ্ড এবং ধর্ম নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতাদের বক্তব্য নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: AP
নতুন ইতিহাস
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটই যে এবার ভারতে সরকারগঠন করতে যাচ্ছে, বুথফেরত জরিপ থেকে তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ ৬৩ বছর বয়সি মোদীর নেতৃত্বে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি৷ ৭ই এপ্রিল থেকে ১২ই মে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮১ কোটি ৪০ লাখ৷ তাঁদের মধ্যে রেকর্ড ৬৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শেষ হাসি
নির্বাচনে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল – মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে, গুজরাটের আদলে তিনি ভারতকে বদলে দেবেন৷ অবশ্য সমালোচকরা বলছেন, ‘কলঙ্কিত ভাবমূর্তি’ ঢাকতে এসব মোদীর ফাঁপা বুলি৷ তাঁর স্বৈরাচারী মেজাজ, শিক্ষা ও অর্থনীতির জ্ঞান নিয়েও ঠাট্টা-বিদ্রুপ হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, ভোটাররা টানা তৃতীয়বার কংগ্রেসকে চায়নি বলেই বিজেপি জয় পেয়েছে৷ যদিও শেষ হাসি দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর মুখেই৷
ছবি: dapd
7 ছবি1 | 7
রক্ষণশীল মুসলিম সমাজ সেই দাবি কী মানবে? অবশ্যই না৷ তাঁদের মতে, সেটা করলে তা শরিয়াত আইনকে বিকৃত করা হবে যা মুসলিম জনসমাজের জীবনযাত্রার পরিপন্থি৷ সরকারও হয়ত মৌলবিদের চটাতে চাইবে না নানা কারণে৷ অথচ হিন্দুত্ববাদী বিজেপির নির্বাচনি ইস্তাহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে – একই দেশে দু'রকম আইন থাকতে পারে না এই যুক্তি দেখিয়ে৷ তাছাড়া অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর না হলে দেশে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা অসম্ভব৷ মুসলিম শরিয়াতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একবিংশ শতাব্দীতে শরিয়াত আইনের সংশোধন দরকার – এমনটাই মনে করে মোদী সরকার৷
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের শাহ বানু মামলার কথা৷ জনৈক মুসলিম আইনজীবী ৪০ বছর একসঙ্গে ঘর করার পর তাঁর ৭০ বছরের বদ্ধা স্ত্রী শাহ বানুকে তালাক দেন৷ শাহ বানু আদালতে খোরপোষের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে৷ এরপর তাঁর স্বামী সুপ্রিম কোর্টে গেলে শীর্ষ আদালত তা বহাল রাখে সর্বভারতীয় ফৌজদারি বিধি অনুসারে৷ তৎকালীন রাজীব গান্ধীর কংগ্রেস সরকারও তা সমর্থন করে৷ এই ইস্যু নিয়ে শুরু হয় রক্ষণশীল মুসলিমদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত৷ গোড়া মুসলিম সমাজের মতে হিন্দু আইন সরকার জোর করে মুসলিমদের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে৷ পরিনামে কংগ্রেস স্থানীয় নির্বাচনে হেরে যায়৷ পরবর্তীতে জনৈক সাংসদ মুসলিম পার্সোনাল সুরক্ষা বিল সংসদে আনলে কংগ্রেস তা সমর্থন করে৷ কাজেই মোদী সরকার এবার গোটা দেশে সব ধর্মাবলম্বীদের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি আইন বলবৎ করতে পারবে কিনা – তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সংশয় থেকেই যাচ্ছে৷