ভারতে শিশু ও নাবালিকাদের ওপর যৌন নিগ্রহের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷ দেশে প্রতি দু'জন শিশুর একজন যৌন নিগ্রহের শিকার৷ তাই এ ধরনের ঘটনা কেন বাড়ছে, কীভাবে তা রোধ করা যায় – এ সব নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে চিন্তা-ভাবনা৷
বিজ্ঞাপন
শিশু ও নাবালিকাদের যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের ঘটনা বিশ্বের প্রায় সব দেশেই অল্পবিস্তর হয়৷ কিন্তু ভারতে এই সংখ্যাটা উদ্বেগজনক স্তরে গিয়ে পৌঁছেছে৷ ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্ডিয়া' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি দু'জন শিশুর মধ্যে একজন শিশু বয়সেই কোনো না কোনোভাবে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়৷ তা সত্ত্বেও চারটি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবার বাচ্চাদের ওপর এই নিগ্রহকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলতে চায় না, মূলত লোকলজ্জার ভয়ে৷ সে কারণেই দেশের ২৬টি রাজ্যের ৪৬ হাজার শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ওপর সমীক্ষাটি চালায় ঐ এনজিও৷ শুধু তাই নয়, ২০২১ সাল নাগাদ শিশু যৌন নিগ্রহের ঘটনা ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনতে একটি অভিযানও শুরু করেছে তারা৷
কীভাবে? প্রথমত, জোর দেওয়া হয়েছে বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর৷ এই কাজে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সামিল করার কথা বলা হয়েছে৷ দ্বিতীয়ত, বাচ্চাদের দেওয়া হবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ৷ শেখানো হবে ভালো স্পর্শ ও খারাপ স্পর্শের তফাত এবং অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ৷ কারুর স্পর্শ যদি খারাপ লাগে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি যেন অভিভাবকদের জানায়৷ অন্তর্বাসের নীচে দেহের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেন কাউকে স্পর্শ করতে না দেয় তারা৷ আর কেউ তা করার চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে যেন সে চিৎকার করে অভিভাবকদের জানায়৷ সমীক্ষায় আরও বলা হয়, ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রে এই যৌন নিগ্রহ হয় জানা শোনা ও পরিচিত লোকজনদের দ্বারা৷ এই অভিযানের অঙ্গ হিসেবে পোস্টারর মাধ্যমে স্কুল বাচ্চাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর বার্তাও দেওয়া হয়৷
যৌন হয়রানির হাত থেকে কীভাবে বাঁচাবেন শিশুকে
শিশুরা বিকৃতকাম মানুষের সহজ শিকার৷ সারল্যের সুযোগ নিয়ে সহজে ভোলানো যায় তাদের৷ অনেক সময় শিশুরা বুঝতে পারে না, চিনতে পারে না পিশাচের থাবা৷ আর বুঝলেও করতে পারে না প্রতিবাদ, প্রতিরোধ৷ শুধু একটা অস্বস্তি থেকে যায় সারাটা জীবন৷
ছবি: picture alliance/abaca
ভয়াবহ অবস্থা ভারতে
ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের অর্ধেকেরও বেশি বাচ্চা যৌন নিগ্রহের শিকার৷ তবে সবচেয়ে ভয়ংকর সত্য হলো, নাবালিকা বা শিশুর ওপর যৌন হেনস্থার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে পরিবারের মধ্যে, পরিবারেরই কোনো মানসিক বিকারগ্রস্ত সদস্যের হাতে৷ তাই সে সব ঘটনা পুলিশের কাছে পৌঁছাচ্ছে না, হচ্ছে না কোনো ডাইরি অথবা মামলা৷
ছবি: Fotolia/Gina Sanders
হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব
এভাবে প্রতিদিন বিকৃত যৌন নির্যাতনে হারিয়ে যাচ্ছে অগুন্তি শৈশব৷ অনেকক্ষেত্রেই শিশুরা বুঝে উঠতে পারছে না, বলে উঠতে পারছে না তাদের অমানবিক সেই সব অভিজ্ঞতার কথা৷ তাই শিশুদের প্রতি যৌনাসক্ত, বিকৃত মানুষগুলো থেকে যাচ্ছে লোকচক্ষুর আড়ালে৷ সমাজবিদরা বলছেন, এ জন্য আগাম সতর্কতার দায়িত্ব নিতে হবে অভিভাবক এবং স্কুলের৷ শিশুকে দিতে হবে তার প্রাপ্য শৈশব৷
ছবি: Fotolia/Kitty
যেভাবে বোঝাবেন বাচ্চাদের
সহজ ভাষায় খেলা বা গল্পচ্ছলে শিশুদের এ বিষয়ে একটা ধারণা গড়ে তোলা যেত পারে৷ বাচ্চাদের বলতে হবে যে, তাদের শরীরটা শুধুমাত্র তাদের৷ অর্থাৎ কেউ যেন তাদের ‘গোপন’ জায়গায় হাত না দেয়৷ তাই কোনো আত্মীয় বা পরিচিত ব্যক্তির আচরণ অস্বস্তিকর ঠেকলে, কেউ তাদের জোর ঘরে কোনো ঘরে নিয়ে গেলে, খেলার ছলে চুমু দিলে বা শরীরের কোথাও হাত দিলে – তা যেন মা-বাবাকে জানায় তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিনিয়ে দিন যৌনাঙ্গ
অনেক বাবা-মা নিজ সন্তানের সঙ্গে যৌনাঙ্গ নিয়ে কথা বলতে কুণ্ঠা বোধ করেন৷ কিন্তু এই লজ্জা কাটিয়ে উঠতে হবে এবং খুব ছোটবেলাতেই ছবি এঁকে অথবা গল্পে-গানে বাচ্চাকে তার শরীরের অন্য সব অঙ্গের মতো যৌনাঙ্গ, লিঙ্গ ইত্যাদি চিনিয়ে দিতে হবে৷ এমনটা করলে কেউ যদি তাদের সঙ্গে পিশাচের মতো ব্যবহার করে, তাহলে শিশুরা সহজেই বলতে পারবে কে, কখন, কোথায় হাত দিয়েছিল৷
ছবি: DW/S.Rahman
শিশুর কথা শুনুন, তার পক্ষ নিন
শিশু যাতে আপনাকে বিশ্বাস করতে পারে, বন্ধুর মতো সবকিছু খুলে বলতে পারে – সেটা নিশ্চিত করুন৷ আপনার বাচ্চা যদি পরিবারের কাউকে বা আপনার কোনো বন্ধুকে হঠাৎ করে এড়িয়ে যেতে শুরু করে অথবা আপনাকে খুলে বলে বিকৃত সেই মানুষের কৃতকর্মের কথা, তবে সময় নষ্ট না করে শিশুটির পক্ষ নিন আর তিরস্কার করে বাড়ি থেকে বার করে দিন ঐ ‘অসুস্থ’ লোকটাকে৷
ছবি: Fotolia/pegbes
স্কুলেরও দায়িত্ব আছে
বাচ্চারা দিনের অনেকটা সময় স্কুলে কাটায়৷ তাই যৌন শিক্ষার ক্ষেত্রে স্কুলের একটা বড় দায়িত্ব থেকে যায়৷ তবে স্কুলের মধ্যে, বিদ্যালয় চত্বরেও ঘটতে পারে শিশু নির্যাতনের ঘটনা৷ তাই স্কুল থেকে ফেরার পর বাচ্চা যদি অতিরিক্ত চুপচাপ থাকে, একা একা সময় কাটায় বা পড়াশোনা করতে না চায়, তাহলে ওর সঙ্গে কথা বলুন৷ জানতে চান কী হয়েছে, প্রয়োজনে স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জানান৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel
ছেলে-মেয়ে সমান!
আমাদের সমাজে ছোট থেকেই মেয়েদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়৷ মেয়ে হলেই হাতে একটা পুতুল আর ছেলে হলে ধরিয়ে দেয়া হয় বল বা খেলনার পিস্তল৷ ছেলের পাতে যখন তুলে দেয়া হয় মাছের বড় টুকরোটা, তখন মেয়েটির হয়ত এক গ্লাস দুধও জোটে না৷ এ বৈষম্য বন্ধ করুন৷ বাবা-মায়ের চোখে ছেলে-মেয়ে সমান – সেভাবেই বড় করুন তাদের৷ তা না হলে নারীর ক্ষমতায়ন হবে কীভাবে? কীভাবে কমবে শিশু নির্যাতন?
ছবি: picture alliance/abaca
7 ছবি1 | 7
যেসব শিশু বা নাবালিকা ধর্ষণ বা যৌন নিগ্রহের শিকার, তাদের চিকিৎসায় কীভাবে আরও সংবেদনশীল হওয়া দরকার, সে বিষয়ে সম্প্রতি এক ক্লিনিক্যাল নির্দেশিকা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ প্রথম সারির স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থা, ডাক্তার, গাইনি, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নার্সদের জন্য মূলত এই নির্দেশিকা৷ কারণ তাঁরাই ধর্ষণ ও বাচ্চাদের যৌন নিগ্রহকাণ্ডে প্রথম চিকিৎসা শুরু করেন৷ ভারতীয় চিকিৎসক মহল এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এক্ষেত্রে নির্দেশিকাই বাচ্চাদের ওপর যৌনকাণ্ড নিবারণের একমাত্র উপায় নয়, আরও কিছু করা জরুরি৷ ভারতীয় শিশু চিকিত্সা একাডেমির সভাপতি ডা. সমীর দেহলাই মনে করেন, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া বাচ্চাদের এবং তার পরিবারের অভিভাবকদের যেভাবে তদন্তকাজে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, সেটা আরও যন্ত্রণাদায়ক৷ পুলিশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চায় ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ৷ এছাড়া শিশুর মুখ থেকে শুনতে চাওয়া এবং যেভাবে তাদের দৈহিক, মানসিক ও ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়, তা অমানবিক ও অসংবেদনশীল৷ এক্ষেত্রে সরকারের উচিত সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করা এবং শিশু মনস্তাত্ত্বিকদের তদন্ত কাজে যুক্ত করা৷
শিশুদের জন্য আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বিশ্ব
বিশ্বের অন্তত ১৮ কোটি শিশুর ভবিষ্যৎ খুব ভয়ংকর৷ কিছু দেশ নানাবিধ সংকট থেকে বের হতে না পারলে এই শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা পাবে না, দারিদ্র্যে জর্জরিত হবে, সহিংসতায় মরবেও অনেকে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/AA/E. Sansar
খোদ ইউনিসেফ বলছে...
সম্প্রতি জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ সব আশঙ্কার কথা জানিয়েছে৷ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা, প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ এবং সহিংসতা থেকে দূরে থাকার পরিবেশ আছে কিনা – মূলত এই তিনটি বিষয় বিশ্লেষণ করেই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ইউনিসেফ৷
ছবি: picture-alliance/AA/E. Sansar
শতকরা ১২ জন শিশুর সামনেই বিপদ
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এ মুহূর্তে মোট ২২০ কোটি শিশু রয়েছে৷ ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদন বলছে, এই ২২০ কোটির মধ্যে শতকরা ১২ জন শিশুরই বাকি জীবন ভালো কাটার সম্ভাবনা ক্ষীণ৷ বলা হয়েছে, ২০ বছর আগের পূর্বসূরিদের চেয়েও তাদের জীবন উন্নয়নের সম্ভাবনা কম৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/M. Moskwa
বিপদে ৩৭টি দেশের শিশু
প্রতিবেদনে বিশ্বের ৩৭টি দেশের শিশুদের নিয়ে বেশি শঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ৷ শঙ্কা প্রকাশের কারণ, এই দেশগুলোতে অর্থনীতি, প্রাথমিক শিক্ষা এবং নাগরিক নিরাপত্তা – এই তিনটির মধ্যে অন্তত একটি ক্ষেত্রে খুব বেশি অবনতি লক্ষ্য করা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Arhab
মূল কারণ
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সংঘাত, অর্থনৈতিক সংকট এবং অপশাসন – মূলত এ সব কারণেই দেখা দিচ্ছে সংকট এবং পরিণামে শিশুরাও ভুগছে৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/M. Juarez Lugo
যে দেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ
ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে দক্ষিণ সুদানের শিশুরা৷ ২০১১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করা বিশ্বের নবতম দেশটিতে অর্থনৈতিক দুরবস্থা, নাগরিক নিরাপত্তার অভাব এবং সন্ত্রাস – তিনটিই বিদ্যমান৷ দেশটির অন্তত ২০ লাখ মানুষ এখন ক্ষুধাপীড়িত৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Al-Obeidi
যুদ্ধের কারণে শিশুমৃত্যু বাড়ছে
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ইরাক, লিবিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইউক্রেন এবং ইয়েমেনে সহিংসতার কারণে ১৯ বছরের কম বয়সিদের মৃত্যুর হার বেড়েছে৷
ছবি: STEPHANE DE SAKUTIN/AFP/Getty Images
বাড়ছে দারিদ্র্য
দিনে মাত্র ১ দশমিক ৯ ডলার বা ৮৫ ইউরো সেন্ট ব্যয় করে জীবন নির্বাহ করতে হয় এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৪টি দেশে৷ জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের ২২০ কোটি শিশুর মধ্যে শতকরা ১৯ ভাগই দারিদ্র্যসীমার অনেক নীচে বাস করছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/R.Schmidt
কমছে শিক্ষালাভের সুযোগ
ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়া, বলিভিয়া, জর্ডান এবং তাঞ্জানিয়াসহ ২১টি দেশে প্রাথমিক শিক্ষার হার কমেছে৷
ছবি: Welthungerhilfe
8 ছবি1 | 8
প্রশ্ন হলো, বাচ্চাদের যৌন নিগ্রহকাণ্ডের বর্তমান আইন কী বলছে এবং সেই আইন কতটা জটিল এবং কার্যকর? কয়েকদিন আগের ঘটনা৷ একটি নাবালক তার স্কুলেরই এক নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহ করে৷ ছেলেটির বয়স সাত বছরের নীচে এবং মেয়েটির বয়স চার৷ অভিযোগ, ছেলেটি মেয়েটির যৌনাঙ্গে আঙুল আর পেন্সিল ঢুকিয়ে দেয়৷ মেয়েটির মায়ের অভিযোগে নতুন দিল্লির পুলিশ এফআইআর করে৷ কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধিতে সাত বছরের নীচে কোনো ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না৷ আইনজীবীদের মতে, বাচ্চা ছেলেটির যৌনতার চেয়ে সে সময়ে বেশি ছিল কৌতূহল৷ ভালোমন্দ বোধ ছিল না৷ তাই চার্জশিট দেবার প্রশ্ন ওঠে না৷ দিল্লি পুলিশ পড়ে মহাফাঁপরে৷
বুদ্ধদেব ঘোষ
পাশাপাশি দিল্লিতেই ঘটে অন্য একটি ঘটনা৷ পশ্চিম দিল্লির একটি স্কুলে পাঁচ বছরের একটি ছেলে একই বয়সের এক সহপাঠিনীকে যৌন নিগ্রহ করেছে – এই মর্মে মেয়েটির মা পুলিশের কাছে অভিযোগ করে৷ বাচ্চা মেয়েটিকে কোনটা ভালো স্পর্শ আর কোনটা খারাপ স্পর্শ তা শেখানো হয়েছিল৷ তাই সে বুঝতে পারে এবং বাড়িতে এসে সব বলে৷ তার যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্নও ছিল৷
আবার গত শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্ট ৪৫ বছরের এক ব্যক্তিকে তার সাড়ে তিন বছরের ভাইঝিকে যৌন নিগ্রহের পর খুন করার অপরাধে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দেয়৷ এ রকম অসংখ্য ঘটনা সমাজের চারপাশে আকছারই ঘটে চলেছে নিত্যদিন৷
এই সামাজিক ব্যাধি কীভাবে নিবারণ করা যায় সে সম্পর্কে ডয়চে ভেলে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের সমাজবিজ্ঞানী বুদ্ধদেব ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টা অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেন৷ বলেন, ‘‘আগে ‘রিলিজিয়ন' মানে ধর্ম কতগুলো ‘নর্মস' বা অনুশাসন আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল৷ তা সে ভালো হোক বা মন্দ৷ লোকে তা মেনে চলতো এই বিশ্বাসে যে, খারাপ কাজের জন্য ঈশ্বর আমাদের শাস্তি দেবেন৷ সেই ধর্মবোধ থেকে আত্মসংযম আসতো৷ ক্রমশ ধর্মবোধের সেই জায়গাটা ভেঙে যাচ্ছে৷ কিন্তু সেই জায়গায় একটা বিকল্প সামাজিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি৷ ধর্মের শূন্য জায়গাটা পূরণ করতে দরকার একটা সাংস্কৃতিক সংস্কার, যেটা সবাই মেনে চলবে৷ শুধু আইন কঠোর করলেই এ ব্যাধি দূর হবে না৷
প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো, লিখুন নীচের ঘরে৷
শিশুদের জন্য সেরা ১২টি দেশ
অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হলেও অনেক দেশ যে শিশুদের অধিকার রক্ষার বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না – এ সত্যই প্রকাশ করল কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন৷ তাই শিশু অধিকার রক্ষায় সেরা দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনের মতো দেশও নেই৷
ছবি: picture-alliance/empics/G. Fuller
১২
স্লোভেনিয়া
শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার দিক থেকে সেরা দেশগুলোর তালিকা করতে গিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাস্থ্য অধিকার, শিক্ষা অধিকার, সুরক্ষার অধিকার এবং শিশু অধিকারের জন্য অনুকুল পরিবেশ – এই পাঁচটি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছে কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন৷ সার্বিক বিবেচনায় সেরা হওয়া দেশগুলির তালিকায় দ্বাদশ স্থানে রয়েছে স্লোভেনিয়া৷ মূল তালিকাটি দেখতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Imago/J. Alexandre
১১
একাদশ স্থানে রয়েছে বেলজিয়াম৷
ছবি: Colourbox
১০
স্লোভেনিয়া আর বেলজিয়ামের ঠিক ওপরেই রয়েছে ফিনল্যান্ড৷
ছবি: picture-alliance/dpa
০৯
নবম স্থানে রয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Mazraawi
০৮
ইউরোপ বা অ্যামেরিকার অনেক দেশ স্থান না পেলেও এশিয়ার থাইল্যান্ড কিন্তু ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে কিডসরাইটস ফাউন্ডেশনের তালিকায়৷ থাইল্যান্ড রয়েছে অষ্টম স্থানে৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/V. Poti
০৭
নাগরিকের সার্বিক জীবনমানের নিশ্চয়তা দেয়ায় সুইডেনের সুনাম আছে৷ শিশু অধিকার রক্ষায়ও অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে তারা৷ এ তালিকায় সুইডেন আছে সাত নম্বরে৷
ছবি: Getty Images/D. Ramos
০৬
শিল্প-সাহিত্যের দেশ ফ্রান্সে শিশু অধিকার পরিস্থিতিও ভালোই বলতে হবে৷ তালিকায় ইউরোপের এই দেশটি আছে ষষ্ঠ স্থানে৷
ছবি: Eric Cabanis/AFP/Getty Images
০৫
পঞ্চম স্থানে রয়েছে স্পেন৷
ছবি: Fotolia/PinkShot
০৪
চতুর্থ স্থানে আইসল্যান্ড৷
ছবি: Fotolia/yanlev
০৩
মানবাধিকার বিষয়ক যে কোনো তালিকায় ওপরের দিকেই থাকে সুইজারল্যান্ড৷ এখানে তারা তৃতীয় স্থানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
০২
কিডসরাইটস ফাউন্ডেশনের সমীক্ষা অনুযায়ী, শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা দেশ নরওয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
০১
সেরা পর্তুগাল শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় অর্থের গুরুত্ব অনেক, তবে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সবচেয়ে বেশি গরুত্বপূর্ণ৷ সেই বিবেচনায় অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বেশি প্রশংসনীয় হতে পারে৷ কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন এভাবে পুরো বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করে বলে সেরাদের তালিকায় উঠে গেছে এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড৷