ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হামলা-পালটা হামলার পরই শুরু হয়ে গিয়েছিল নিহত সৈনিকদের ছবি দিয়ে রাজনৈতিক প্রচার৷ নিষেধ করলো ভারতের নির্বাচন কমিশন৷
বিজ্ঞাপন
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জৈশ-এ-মোহাম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর আত্মঘাতী আক্রমণে সিআরপিএফ বাহিনীর ৪০ জওয়ানের মারা যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছিল ‘শহিস্মরণে' রাজনৈতিক তৎপরতা৷ দেশের একাধিক জায়গায় নিহত জওয়ানদের ছবি দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পাশাপাশি সেই ছবির প্রেক্ষাপটে নেতাদের ছবি দিয়েও শুরু হয়েছিল ভোটের প্রচার৷ কেন্দ্র সরকারে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির উৎসাহ ছিল এ ব্যাপারে বেশি৷ বিশেষত পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার বদলায় সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা করে আসার গোটা ব্যাপারটাকেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের দক্ষতা এবং সাফল্য হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে৷
সামনেই লোকসভা ভোট৷ ফলে এমন প্রচেষ্টা আদৌ অপ্রত্যাশিত নয়৷ কিন্তু সেনাবাহিনী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে কাজ করে, রাজনৈতিক নেতারা সেই কৃতিত্বের ভাগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে প্রচারের ঝোঁকে সেনাকর্মীদের সাহসের থেকেও বড় হয়ে উঠছে প্রশাসকের বিচক্ষণতা, এটা সেনাবাহিনীর পছন্দ হয়নি৷
অথচ এমনটা যে করা যায় না, ভোটের প্রচারে সেনাকর্তাদের ছবি যে ব্যবহার করা উচিত নয়, ২০১৩ সালেই এক নির্দেশিকায় সেকথা স্পষ্ট জানিয়েছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষের পরই সে নির্দেশ ভুলে প্রচারে মেতে ওঠেন রাজনৈতিক নেতারা৷ বিষয়টি তুঙ্গে ওঠে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অভিনন্দন বার্তামান পাকিস্তানে বন্দি হওয়ার পর ও দেশে ফিরে আসার পর৷
কাশ্মীর ইস্যুতে বিস্ফোরক সব মন্তব্য
কাশ্মীর বরাবরই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধের কারণ৷ পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় ৪২ সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু এ বিতর্কে এনেছে নতুন মোড়৷ খোদ ভারতের মধ্যেই এ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা৷ দেখুন কিছু মন্তব্য৷
ছবি: Getty Images/R. Bakshi
আলোচনার সময় শেষ: মোদী
পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার সময় শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ কাশ্মীরে আক্রমণের পেছনে পাকিস্তানের মদদের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, জঙ্গি ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া মানে তাদের উসাহিত করা৷
ছবি: Reuters/India's Press Information Bureau
ভারতকে প্রতিহত করা হবে: ইমরান খান
কোনো প্রমাণ ছাড়াই পুলওয়ামার ঘটনায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হচ্ছে বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ ঘটনার তদন্তে পাকিস্তান সহায়তা ও আলোচনা করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু ভারত কোনোভাবে আক্রমণ করে বসলে, সাথে সাথে তার কড়া জবাব দেয়া হবে বলেও জানান ইমরান খান৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B.K. Bangash
নির্বাচনের আগেই কেন: মমতা
লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আগে কেন এতো বড় হামলার ঘটনা ঘটলো, এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ এর আগে ‘তদন্ত না করে’ পাকিস্তানের ওপর ‘দোষ চাপানো’ উচিত নয় মন্তব্য করেও বিতর্কের জন্ম দেন মমতা৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
পাকিস্তানের ধ্বংস জরুরি: কঙ্গনা রানাউত
বলিউডের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা আজমিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বলিউডের বর্তমান জনপ্রিয় অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত৷ পাশাপাশি আহ্বান জানিয়েছেন চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়ার৷ বলছেন, শুধু পাকিস্তানের শিল্পীদের ভারতে নিষিদ্ধ করলেই হবে না, পাকিস্তানকেই ধ্বংস করতে হবে৷
ছবি: AP
বন্দুক হাতে থাকলেই হত্যা: লে. জে. ঢিলন
কাশ্মীরে কেউ বন্দুক হাতে নিলেই তাকে হত্যা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের চিনার কর্পসের কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল কে জে এস ঢিলন৷ বন্দুক হাতে নিলে তা কেবল আত্মসমর্পণের উদ্দেশ্যে হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
ছবি: Imago/Zuma Press
কাশ্মীরকে বর্জন করুন: তথাগত রায়
‘কাশ্মীরে যাবেন না, কাশ্মীরী পণ্য কিনবেন না’, সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে চলা এমন বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেছেন মেঘালয় রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায়৷ কিন্তু অনেকেই অবশ্য এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, বলছেন, কাশ্মীর ভারতের অংশ, কাশ্মীরীরা ভারতের নাগরিক৷ ফলে নিজের দেশের একটা অঞ্চলের সব মানুষকে শত্রু বানিয়ে দেয়া উচিত নয়৷
ছবি: Reuters
পুরো দেশকে দোষ দেয়া যায় না: নভজ্যোত সিং সিধু
‘কিছু হাতে গোণা মানুষের জন্য পুরো দেশকে দায় দেয়া উচিত নয়’ বলে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন সাবেক ক্রিকেট খেলোয়াড় খেলোয়াড় ও পাঞ্জাবের পর্যটনমন্ত্রী নভজ্যোত সিং সিধু৷ এমন মন্তব্যের কারণে তাঁকে জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘দ্য কপিল শর্মা শো’ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Ali
বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে বর্জন করুন: হরভজন সিং
আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলতে ভারতের ক্রিকেট দলকে আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক ভারতীয় অফস্পিনার হরভজন সিং৷ প্রয়োজনে ম্যাচটি ওয়াকওভার দিয়ে দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি৷ হরভজন মনে করেন, ভারতের যে শক্তি, তাতে একটি ম্যাচ না খেললেও তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শক্তি রাখে৷
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
যদিও পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের সঙ্গে আকাশযুদ্ধে পরাভূত অভিনন্দনের বিমান পাকিস্তানের এলাকায় ভেঙে পড়ে এবং তিনি বন্দি হন৷ তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার পেছনে ভারত সরকারের দাবি ছাড়াও সক্রিয় ছিল আমেরিকার কূটনৈতিক চাপ এবং পাকিস্তানের নমনীয়তা৷ পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশের সংসদের অধিবেশনে এবং সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, যে সৌজন্যমূলক আচরণ হিসেবেই বন্দি বৈমানিককে মুক্তি দিচ্ছে পাকিস্তান৷ কিন্তু সেই দ্বিপাক্ষিক সৌজন্যের মূল গুরুত্বকে কার্যত অস্বীকার করে, অভিনন্দন বার্তামান দেশে ফিরে আসার পরই শুরু হয়ে যায় প্রচার, যে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর বিজেপি সরকারেরই কৃতিত্ব যে ভারতীয় বৈমানিককে মুক্তি দিতে পাকিস্তান বাধ্য হলো৷ রাজধানী দিল্লি ছেয়ে যায় এমন হোর্ডিংয়ে, যেখানে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের পাশে প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ-র ছবি!
অবশ্য এমন নয় যে একমাত্র বিজেপিই এই ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছে৷ দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির প্রচারেও দেখা গেছে অভিনন্দনের ছবি৷ কলকাতা শহরে পুলওয়ামা হামলার পরই দু'হাত পরপরই দেখা গেছে নিহত সেনাদের স্মরণে শহিদ বেদি, যা বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিতেই, অর্থাৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অনেকেই সন্দেহ করেছেন৷
যদিও পরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ আনেন, সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে মোদী সরকার৷ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন৷ আপত্তি জানাতে শুরু করেন সাংবাদিকদের একাংশ৷
বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক যোগেন্দ্র যাদব একের পর এক টুইটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হোর্ডিংয়ের ছবি নির্বাচন কমিশনের নজরে আনতে শুরু করেন, যেখানে সেনাকর্মীদের ছবির অপব্যবহার হয়েছে৷ প্রশ্ন তোলেন, এভাবে সেনাকর্মীদের ছবি রাজনৈতিক দলের পোস্টার, ফেস্টুনে ব্যবহার করা যায় কিনা৷
ভারতের সাবেক নৌসেনা প্রধানও এ ব্যাপারে সেনাকর্মীদের তরফ থেকে জোরদার আপত্তি জানান৷ সমাজের নানা অংশ থেকে ক্রমশ জোরাল হয় বিরোধিতা৷ এই সমবেত প্রতিবাদের মুখে শনিবার ভারতীয় নির্বাচন কমিশন আবারও জানিয়ে দিল, সেনাকর্তাদের, বা নিহত সেনানীদের ছবি দিয়ে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নয়৷ ভোটের প্রচারে কোনোভাবেই সেনাবাহিনীর উল্লেখ করা যাবে না৷ কারণ, ‘‘আধুনিক গণতান্ত্রিক কাঠামোয় সেনাবাহিনী একটি অরাজনৈতিক এবং নিরপেক্ষ অস্তিত্ব৷'' এই নির্দেশের কপি শনিবারই, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে দেশের সবকটি রাজনৈতিক দলকে পাঠিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷
আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার, যেটা সবাই গ্রহণ করতে পারছে, হয়ত বিজেপি ছাড়া, যে জঙ্গি বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই চাই: সুজন চক্রবর্তী
ভারতে বামপন্থিরা গোড়া থেকেই সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের প্রতিবাদ করে আসছে৷ এ ব্যাপারে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার, যেটা আস্তে আস্তে বাকি সবাই গ্রহণ করতে পারছে, হয়ত বিজেপি ছাড়া, (যে) জঙ্গি বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই চাই৷ দেশকে এক করেই সে লড়াই করতে হবে৷ জঙ্গি ঘাঁটিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না, কোনোমতেই যাবে না - এটা যতটা সত্য, ততটাই সত্য জওয়ানদের ছবি ব্যবহার করে, অথবা মৃতদেহ ব্যবহার করে, অথবা ঘটনা ব্যবহার করে ভোটের রাজনীতি করার বিজেপিসহ বিভিন্ন দলের যে প্রয়াস, তাকে সমূলে বিনাশ করতে হবে৷''
কিন্তু সমস্যা হলো, সব রাজনৈতিক প্রচার প্রকাশ্যে হচ্ছে না৷ জওয়ানদের ছবি দিয়ে, পাকিস্তানে তথাকথিত সার্জিকাল স্ট্রাইক এবং সরকারের বাহাদুরি নিয়ে প্রচার হচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়, বিশেষত হোয়াটসঅ্যাপের মতো একের সঙ্গে এক সংযোগ মারফত৷ সেই প্রচার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অমান্য করলেও, তা আটকাবার কোনো উপায় থাকছে না৷
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের খুঁটিনাটি
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে৷ ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে সাত ধাপে ১৯ মে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Dey
আসনসংখ্যা
সাধারণ নির্বাচন মানে ভারতের লোকসভা সদস্যদের নির্বাচন করার পদ্ধতি৷ লোকসভায় মোট আসন সংখ্যা ৫৪৫ হলেও নির্বাচন হয় ৫৪৩টি আসনে৷ বাকি দুটি আসন ভারতের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত৷ তাদের দুই প্রতিনিধি কে হবেন, তা ঠিক করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি৷
ছবি: picture alliance/dpa
ভোটার সংখ্যা
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৮৩ কোটিরও বেশি, যা বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে বাড়বে এই সংখ্যা৷ নতুন ভোটারের সংখ্যা এবছর প্রায় সাড়ে চার কোটি হতে চলেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কয়টি দল?
গত নির্বাচনে মোট ৮,২৫১ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছিলেন৷ সেবার মোট ৪৬০টি রাজনৈতিক দল ভোটের ময়দানে নেমেছিল৷ ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশনই জানাচ্ছে এই তথ্য৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
মোট প্রার্থী
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, প্রতিটি আসনে গড়ে ১৪ জন প্রার্থী থাকে ভারতে৷ এখন পর্যন্ত একটি আসনে সর্বোচ্চ ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন!
ছবি: DW/M. Krishnan
ভোটকেন্দ্র কতগুলি?
২০১৪ সালের নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৯,২৭,৫৫৩টি৷ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বুথে গড়ে ৯০০ জন ভোটার ভোট দেন৷ উল্লেখ্য, ভারতের নির্বাচনি আইন বলে, যে-কোনো ভোটারের বাসস্থানের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অন্তত একটি ভোটকেন্দ্র থাকতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
নির্বাচনি দায়িত্ব পালন
ভারতের সাধারণ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, তার দায়িত্ব পড়ে সরকারী কর্মচারীদের ওপর৷ গত নির্বাচনে এই দায়িত্ব পান প্রায় ৫০ লক্ষ আধিকারিক ও নিরাপত্তাকর্মী৷ শুধু তাই নয়, এই কর্মীরা পায়ে হেঁটে, বাসে-ট্রামে-ট্রেনে-নৌকায়, এমনকি হাতির পিঠে চড়েও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছেছেন বলে জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
একজন ভোটারের জন্যও রয়েছে বুথ!
২০০৯ সালের নির্বাচনের সময় গুজরাটের গির অঞ্চলের জঙ্গলেও ছিল ভোটগ্রহণ কেন্দ্র৷ এই ভোটকেন্দ্রের আওতায় যদিও ছিলেন মাত্র একজন ভোটার৷ তবুও বুথ চালু রাখা হয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Reuters/Danish Siddiqui
ভোটের পর...
২০১৯ সালের নির্বাচন মোট সাতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হবে৷ এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগে যাবে একমাসেরও বেশি৷ ২০১৯ সালের নির্বাচন হবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত৷ আগে যদিও ব্যালট পেপারে ভোট হবার ফলে ফলপ্রকাশ হতে কয়েকদিন লেগে যেত, আজকাল ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম আসার ফলে ফলাফল বেরোতে সময় লাগে মাত্র একদিন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/P. Gill
কত খরচ?
ভারতের মতো বিশালাকারের দেশের নির্বাচন যে খরচসাপেক্ষ হবে, তা বলাই বাহুল্য৷ নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে খরচ হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার সমান অর্থ, ভারতীয় মুদ্রায় যা দাঁড়ায় ৩,৮৭০ কোটি রুপির কাছাকাছি৷
ছবি: Fotolia/ARTEKI
কতগুলি ইভিএম?
২০১৪ সালের নির্বাচনে আনুমানিক ১৮ লক্ষ ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছিল৷ ইভিএম আসায় নির্বাচনের কাজ দ্রুত শেষ করা গেলেও অনেক রাজনৈতিক দল মনে করে যে এখানেও কারচুপি সম্ভব৷ বিভিন্ন মহল থেকে ব্যালট পেপার ফিরিয়ে আনার দাবি থাকলেও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তা হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ৷