1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারীদের সামাজিক শোষণ

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৩০ অক্টোবর ২০১৩

রুজি-রোজগারের তাগিদে সমাজের নীচুতলার মেয়েদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হয়৷ কিন্তু নানা সামাজিক শোষণের শিকার হতে হয় তাঁদের৷ স্বাস্থ্য, বাসস্থান এবং যৌন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এঁদের দিকে নজর দেয়া হয় না একদমই৷

GettyImages 91851763 Indian voters queue to cast their votes for the Haryana state assembly in Gurgaon on October 13, 2009. Three Indian states went to the polls in the first test for the ruling Congress party alliance since it won a thumping general election victory in May on promises of economic reform. Campaigning for state elections in Maharashtra, Haryana and Arunachal Pradesh has focused on relief for drought-hit areas after a poor monsoon, electricity shortages, unemployment and rising food prices. AFP PHOTO/STR (Photo credit should read STR/AFP/Getty Images)
ছবি: STR/AFP/Getty Images

ভারতে অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশনকে সামাজিক সমস্যার অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে৷ তাতে বলা হয়, ভারতে এই সমস্যার দিকে নাকি আদৌ নজর দেয়া হয়নি, হয়ও না৷ গত সপ্তাহে প্রকাশিত ঐ রিপোর্টে বলা হয় যে, লিঙ্গভেদে অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরণ এক জরুরি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে৷ সমাজের নীচুতলার নারীরা বাইরে থেকে শহরে আসেন এবং অন্যের বাড়িতে কাজের মেয়ে বা ছোট বাচ্চার দেখভাল করা, যাকে বলে ‘বেবিসিটার' হিসেবে নিযুক্ত হন৷ এই মেয়েরা সামজিক দিক থেকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর শ্রেণি৷ তাই ভারতে অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশনকে সামাজিক সমস্যার অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয় জাতিসংঘের রিপোর্টে৷

দুর্ভাগ্যের বিষয়, সমাজের নীচুতলার মেয়েদের অন্যত্র যেতে হয় রোজগারের তাগিদে৷ কিন্তু তাঁদের রোজগার আয় হিসেবে ধরা হয় না, যেহেতু তাঁদের কাজ ঘরোয়া বা পেশাগত নয়৷ পুরুষদের সঙ্গে তাঁদের আয়ে থাকে বৈষম্য৷ নিয়মিত কাজে তাঁদের নেয়া হয় কম৷ নিলেও পুরুষদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম বেতনে৷ তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্ব-নিযুক্ত৷ শুধু বেতনই নয়, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকেও তাঁরা বঞ্চিত থেকে যান৷ যেমন তাঁদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি নেই, কর্মস্থলে শিশুকে মাতৃস্তন্য পান করানোর সময় দেয়া হয় না, এমনকি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বলতেও কিছু থাকে না তাঁদের৷

বঞ্চনা আর অবহেলার শিকার মহিলারা চায় তাঁদের প্রাপ্য সম্মানছবি: Indranil Mukherjee/AFP/Getty Images

বঞ্চনা আর অবহেলার তালিকা অবশ্য এখানেই শেষ নয়৷ যে পরিবেশে বহিরাগত মেয়েদের কাজ করতে হয়, তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর৷ ফলে গুরুতর শারিরিক অসুস্থতার সহজ শিকার হন তাঁরা৷ কিন্তু মেয়ে বলে নীরবে তা তাঁরা মেনে নেন৷ প্রতিবাদ করার সাহস পান না৷

যৌন নির্যাতন আরেকটি ইস্যু৷ এর সঙ্গেও তাঁদের আপোষ করতে হয়৷ যারা কাজ দেয় বা কাজ দেওযার জন্য নিয়ে আসে, সেইসব দালাল বা এজেন্টদের হাতেই তাঁদের ধর্ষিতা হতে হয়৷ শিকার হতে হয় যৌন শোষণের৷ বাড়ির মালিক বা পুরুষ সদস্যরাও এ থেকে মুক্ত নয়৷ দারিদ্রের চাপে এই মেয়েদের অনেককেই যেতে হয় দেহ-ব্যবসার পথে৷

অনেকেই মনে করেন, দেশের অন্য জায়গা থেকে আসা এই সব গরিব মেয়েরা শহরের ওপর এক বোঝাবিশেষ৷ কিন্তু তা ঠিক নয়৷ নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, যাকে বলে জিডিপি, তাতে এঁদের অবদান অনস্বীকার্য৷

সস্তায় শ্রম কেনা যায় এঁদেরই কাছ থেকে৷ যেমন ম্যানুফ্যাকচারিং বা পরিষেবা ক্ষেত্রে এমন অনেক কাজ করানো হয় বহিরাগতদের দিয়ে, যেটা শহরের মানুষ করতে চায় না বা করে না৷ এখানেই শেষ নয়৷ শহরের জঞ্জাল অপসারণ বা নানা ধরণের বিপজ্জনক কাজও করিয়ে নেয়া হয় বহিরাগত শ্রমিকদের দিয়ে৷ সেখানে সংবিধানে বর্ণিত স্বাধীনতা বা মর্যাদা তাঁদের কাছে এক অশ্রুত শব্দবন্ধ৷

নীতি নির্ধারক বা শহর পরিকল্পনাকারীরা এই সব বহিরাগত পুরুষ ও মহিলা শ্রমজীবীদের দেখে নেতিবাচক দৃষ্টিতে৷ ভারতে অভ্যন্তরীণ বহিরাগত শ্রমশক্তি শহরের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ৷ আর এটা বেড়েই চলেছে৷ এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন অ্যামেরিকাতে এই সংখ্যা শহরের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ৷ ভারতে এই হার সব থেকে বেশি৷ গুজরাটের সুরাট শহরে ৫৮ শতাংশ, দিল্লি ও মুম্বই মহানগরিতে কাজ করছেন ৪৩ শতাংশ বহিরাগত শ্রমিক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ