ভারত জুড়ে এখন সর্বোচ্চ সতর্কতা৷ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, যে কোনো মুহূর্তে হামলা হতে পারে৷ ভারতের যে কোনো প্রান্তেই হতে পারে এই হামলা৷ গোয়েন্দারা বলছেন, এমন হামলার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশের হিযবুত তাহরীর৷
বিজ্ঞাপন
এমন একটি হামলা পরিকল্পনার আশঙ্কা থেকে গত ১৫ জানুয়ারি থেকেই সতর্কাবস্থায় আছে ভারত৷ ভারতের গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি) বাংলাদেশের একটি নাম্বার থেকে করা ফোন কলের বক্তব্যে সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনার ইঙ্গিত পায়৷ ফোনের কথোপকথনে এক বাংলাদেশি ভারতে অবস্থানরত কাউকে বলেন, ‘‘ডক্টর মেডিসিন লে কার যায়েগা''৷ হিন্দিতে বলা এই বাক্যটির মানে, ‘‘ডাক্তর ওষুধ নিয়ে যাবে৷'' গোয়েন্দারা বলছেন, এই মেডিসিন বলতে আসলে বোমা বা আগ্নেয়াস্ত্র বোঝানো হয়েছে৷ এমন প্রতীকী ভাষায় আসলে বড় রকমের হামলার পরিকল্পনার কথাই জানিয়েছে হিযবুত তাহরীরের কোনো জঙ্গি৷
এক খবরে গোয়েন্দাদের উদ্ধৃত করে ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া' জানিয়েছে, বাংলাদেশের ওই নাম্বার থেকে গত ১৫ই জানুয়ারি দু'বার ভারতে ফোন করা হয়৷ একবারের কথোপকথনের ‘ডক্টর মেডিসিন লে কার জায়েগা' বাক্যটিই সজাগ করে তোলে গোয়েন্দাদের৷ সেদিনই ভারতের সব রাজ্যের পুলিশ বিভাগকে সম্ভাব্য বোমা ও আত্মঘাতী হামলার বিষয়ে সতর্ক করা হয়৷ গোয়েন্দাদের মতে, ১৬ থেকে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে যে কোনো দিন যে কোনো স্থানে হতে পারে এ হামলা৷
আগামী ২৬ জানুয়ারি ৬৭তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করবে ভারত৷ সাম্প্রতিক সময়ে যে কোনো জাতীয় দিবসের এক দিন আগে থেকে এক দিন পর পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়৷ হিযবুত তাহরীরের কথিত হামলা পরিকল্পনার কারণে এবার প্রজাতন্ত্রের ১১ দিন আগে থেকেই সতর্কাবস্থায় রয়েছে দেশটি৷ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে৷
গোয়েন্দা সংস্থা ১৫ থেকে ২৩ পর্যন্ত যে সময়সীমার কথা বলেছিল শনিবারই তা শেষ হবে৷ অর্থাৎ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থার শেষ ২৪ ঘণ্টার উদ্বেগ এখন ভারত জুড়ে৷ ভারতীয় গোয়েন্দারা বলেছেন, ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন, লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদের মতো কিছু জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে হামলা পরিচালনার ব্যপারে সাহায্য করছে৷
এসিবি/ডিজি (ইন্ডিয়া টুডে অনলাইন)
সদ্যই সিঙ্গাপুরে আটক হলো ২৭ জন ‘বাংলাদেশি জঙ্গি’৷ এবার ভারতেও হামলার আশঙ্কা৷ তাহলে কি বলা যেতে পারে, বিদেশে বাংলাদেশি জঙ্গিদের তৎপরতা বাড়ছে? জানান নীচের ঘরে৷
ভারতের সিদ্ধান্তে সমস্যায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের মানুষ যেন গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয় সেজন্য ভারত থেকে বাংলাদেশ গরু পাচার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷
ছবি: S. Rahman/Getty Images
সীমান্তরক্ষীদের নতুন দায়িত্ব
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ২,২১৬ কিলোমিটার সীমান্ত পাহারা দেয়ায় নিয়োজিত প্রায় ৩০ হাজার ভারতীয় সৈন্যকে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ সেটা হলো, ভারতীয় গরু যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে পৌঁছতে না পারে৷ ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএসএফ সদস্যদের এই নির্দেশ দেন যেন ‘বাংলাদেশের মানুষ গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয়’৷
ছবি: Str/AFP/Getty Images
গরু পবিত্র
হিন্দুদের কাছে গরু একটি পবিত্র প্রাণী৷ তাই ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে চায়৷ রাষ্ট্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সংঘ আরএসএস এর পশ্চিমবঙ্গের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘গরু জবাই কিংবা চোরাই পথে চালান, আর হিন্দু মেয়েকে ধর্ষণ করা বা হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা একই কথা৷’’
ছবি: Shaikh Azizur Rahman.
চার যুগের ইতিহাস
ভারত থেকে চোরাই পথে আসা গরুই এতদিন বাংলাদেশের মানুষের মাংসের প্রধান উৎস ছিল৷ গত চার দশক ধরে সেটা হয়ে আসছে৷ এর সঙ্গে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য জড়িয়ে আছে৷
ছবি: Shaikh Azizur Rahman.
দাম বেড়ে গেছে
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গরুর মাংস রপ্তানিকারক বেঙ্গল মিট এর সৈয়দ হাসান হাবিব গত জুলাই মাসে রয়টার্সকে জানান, ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তাঁর কোম্পানির মাংস রপ্তানি প্রায় ৭৫ শতাংশ কমে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/Asia News Network/Jofelle P. Tesorio
চাকরি হারিয়েছে প্রায় ৪,০০০
বাংলাদেশ ট্যানারস অ্যাসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট শাহীন আহমেদ জানিয়েছেন, জুন পর্যন্ত চামড়া শিল্পে কর্মরত প্রায় চার হাজার কর্মীর চাকরি গেছে৷ আর ১৯০টি ট্যানারির মধ্যে ৩০টি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে৷
ছবি: Shaikh Azizur Rahman
ভারতীয় গরুর মাংস ভালো
বেঙ্গল মিট এর সৈয়দ হাসান হাবিব বলেন, তিনি এখন নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার থেকে মাংস আমদানির চিন্তা করছেন৷ কিন্তু ভারতীয় মাংস ও চামড়ার মান ভালো বলে জানান তিনি৷ উল্লেখ্য, ভারত গরুর মাংসের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক৷
ছবি: AFP/Getty Images
ভারতের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন মাংসের জন্য বাংলাদেশকে নতুন উৎস খুঁজে বের করতে হবে কেননা ভারত তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবে৷