ভারত-ইইউ শীর্ষ সম্মেলন পিছিয়ে গেল
৫ মার্চ ২০২০করোনা আতঙ্কে পিছিয়ে গেল ভারত-ইইউ শীর্ষ সম্মেলন। ১৩ মার্চ এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য ব্রাসেলস যাওয়ার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদীর। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার জানিয়েছেন, দু'পক্ষের সম্মতিতেই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার জানিয়েছেন, ভারত এবং ইইউ দুই তরফই করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সমানভাবে উদ্বিগ্ন। তাই আপাতত শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে না। পরে কোনও সুবিধাজনক সময়ে তা আবার হবে।
তবে এরপরও প্রশ্ন উঠেছে, শুধু করোনার আতঙ্কেই কি বৈঠক বাতিল হয়েছে, না কি এর পিছনে দিল্লির হিংসা ও তা নিয়ে বিশ্বের কিছু দেশের রাষ্ট্রনেতার মন্তব্য এবং কাশ্মীর ও সিএএ নিয়ে ইইউ পার্লামেন্টে ভোটাভুটির প্রস্তাবও কাজ করছে? প্রশ্নটা উঠছে এই কারণে যে, রবিশ কুমার তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের প্রসঙ্গও সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, একটি দেশের প্রধান ভারতে সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, আমরা মনে করি তা রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই ধরনের মন্তব্যকে আমরা সমর্থন করি না। দিল্লির পরিস্থিতি দ্রুত শান্তির পথে এগোচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীও শান্তির বার্তা দিয়েছেন।
তবে বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্টই জানিয়েছে, করোনা আতঙ্কের জন্যই আপাতত সম্মেলন বাতিল হল। কারণ, কেউই ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
এই সম্মেলনের জন্য মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন। আলোচ্য বিষয় ছিল, ইইউ-র সঙ্গে ভারতের বানিজ্য, পরিবেশ, সন্ত্রাস ইত্যাদি। কাশ্মীরে ৩৭০ বিলোপ ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হওয়ার পর গোটা বিশ্বে তার প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নেও সেই উত্তাপ ছড়িয়েছিল। সিএএ এবং কাশ্মীর নিয়ে ভোটাভুটির প্রস্তাবও পাস হয়েছিল ইইউ পার্লামেন্টে। পরে ভোটাভুটির দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ভারতে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হন। কারণ, তাঁর ভিসা শেষ মুহূর্তে বাতিল করে দেয় ভারত। তিনিও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সিএএ ও কাশ্মীর নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এই ঘটনাও ইউরোপীয় ইউনিয়নে আলোড়ন তৈরি করেছিল। সম্প্রতি জাতি সংঘের মানবধিকার সংস্থাও ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সিএএ নিয়ে আবেদন জানিয়েছে। ফলে, ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইইউতে মোদীর প্রশ্নের মুখে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। সম্মেলন পিছিয়ে যাওয়ার পিছনে এই কারণগুলো আছে কি না, সে প্রশ্নও উঠছে।
জিএইচ/এসজি(পিআইবি, পিটিআই)