ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে দু'মাসের বেশি সময় ধরে যে সহিংস বিক্ষোভ চলেছে, তা ভারত ও পাকিস্তানের মিডিয়ায় উঠে এসেছে নানাভাবে৷ কিন্তু সেই সব বর্ণনা অত্যন্ত নেতিবাচক ও ঝুঁকিপূর্ণ, বলছেন ব্লগার ও বিশেষজ্ঞরা৷ পড়ুন তারই কিছু অংশ৷
বিজ্ঞাপন
গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত একটি সামরিক ঘাঁটির উপর চারজন বন্দুকধারীর একটি কমান্ডো আক্রমণে ১৭ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হন৷ আরো একজন সৈন্য পরে হাসপাতালে প্রাণ হারান৷
উরির আক্রমণ ঘটে এমন একটি সময়ে যখন সারা বিশ্বের চোখ মুসলমান-অধ্যুষিত অঞ্চলটির দিকে, কেননা প্রায় দু'মাস আগে এক তরুণ বিদ্রোহী অধিনায়ক নিহত হবার পর থেকে এখানে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলেছে, যার ফলে ভারতীয় কাশ্মীরকে কড়া নিরাপত্তার জালে রাখা হয়েছে৷
উরির আক্রমণের পর পরই ভারতের উচ্চপদস্থ রাজনীতিকরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই আক্রমণের পিছনে থাকার অভিযোগ তুলতে শুরু করেন৷ ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে একটি ‘‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র'' বলে অভিহিত করেন এবং পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দেন৷ ভারতের টুইটার ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশ একই অভিমত প্রকাশ করে৷
পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করা সত্ত্বেও উভয় দেশের ‘মেইনস্ট্রিম মিডিয়া' তাদের বাগযুদ্ধ চালিয়ে যায়৷ একদিকে ‘‘উরির সন্ত্রাসী আক্রমণ সম্পর্কে পাকিস্তানি মিডিয়ার আজব ধারণা'', অন্যদিকে ‘‘পাঠানকোটের মতোই উরি ভারতের ভুয়ো পতাকা নিয়ে অভিযান'' ইত্যাদি শীর্ষক ছড়িয়ে থাকে দু'পক্ষের মিডিয়ায়৷
কাশ্মীরে বহুদিনের সংঘাত, বহুদিনের ক্ষত
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে যেন গলার ফাঁস হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ তাই কাশ্মীর সংক্রান্ত ঘটনাবলী আজ নিজেরাই ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bhat
১৯৪৭
বলা হয় দেশবিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত উপজাতিক যোদ্ধারা কাশ্মীর আক্রমণ করে৷ তখন কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সাথে সংযোজনের চুক্তি করেন, যা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: dapd
১৯৪৮
ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে পর, ৪৭ ক্রমিক সংখ্যক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ ঐ প্রস্তাব অনুযায়ী গোটা কাশ্মীরে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Keystone/Getty Images
১৯৪৮
কিন্তু পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সৈন্যাপসারণ করতে অস্বীকার করে৷ অতঃপর কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়৷
ছবি: Getty Images
১৯৫১
ভারতীয় কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে সমর্থন করা হয়৷ অতঃপর ভারত বলে, আর গণভোট অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই৷ জাতিসংঘ ও পাকিস্তানের মতে, গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৫৩
কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ আব্দুল্লাহ গণভোটের সমর্থক ছিলেন ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন৷ ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ জম্মু-কাশ্মীরের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযোজনকে পাকা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৬২-৬৩
১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন আকসাই দখল করে৷ তার আগের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট এলাকাটি চীনকে প্রদান করে৷
ছবি: Getty Images
১৯৬৫
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়৷ কিন্তু যুদ্ধশেষে উভয় দেশের সেনা তাদের পুরোনো অবস্থানে ফিরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
১৯৭১-৭২
আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ৷ যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালে৷ যুদ্ধবিরতি রেখাকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিণত করা হয় ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ সমাধান সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জিত হয়৷
ছবি: AP
১৯৮৪
ভারত সিয়াচেন হিমবাহ নিজ নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাকিস্তান তা একাধিকবার দখল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷
ছবি: AP
১৯৮৭
জম্মু-কাশ্মীরে বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়৷ ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উগ্রপন্থাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে, কিন্তু পাকিস্তান সে দোষারোপ চিরকাল অস্বীকার করে এসেছে৷
ছবি: AP
১৯৯০
গওকাদল সেতুর কাছে ভারতীয় সিআরপি রক্ষীবাহিনী কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে পর শতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হন৷ প্রায় সমস্ত হিন্দু কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যান৷ জম্মু-কাশ্মীরে সেনাবাহিনীকে আফসা বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Tauseef Mustafa
১৯৯৯
কাশ্মীর ভ্যালিতে গোটা নব্বই-এর দশক ধরে অশান্তি চলে৷ ১৯৯৯ সালে আবার ভারত-পাকিস্তানের লড়াই হয়, এবার কারগিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০১-২০০৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলাপ-আলোচনার যাবতীয় প্রচেষ্টা প্রথমে নতুন দিল্লির সংসদ ভবন ও পরে মুম্বই হামলার ফলে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/F. Khan
২০১০
ভারতীয় সেনার গুলি লেগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর কাশ্মীর ভ্যালি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে৷ বিক্ষোভ চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রাণ হারান অন্তত ১০০ জন৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/U. Asif
২০১৩
সংসদ ভবনের উপর হামলার মুখ্য অপরাধী আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ এর পর যে বিক্ষোভ চলে, তা-তে দু’জন প্রাণ হারায়৷ এই বছরই ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় মিলিত হয়ে উত্তেজনা উপশমের কথা বলেন৷
ছবি: Reuters
২০১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উপস্থিত থাকেন৷ কিন্তু এর পর নতুন দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনার কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ভারত আলাপ-আলোচনা স্থগিত রাখে৷
ছবি: Reuters
২০১৬
আজাদ কাশ্মীর ভিত্তিক হিজবুল মুজাহিদীন-এর অধিনায়ক বুরহান ওয়ানি-র মৃত্যুর পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা সমর্থকরা আবার পথে নেমেছেন৷ এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.S.Hussain
২০১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর গাড়িবহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে ৪২ জওয়ান নিহত হন৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/P. Kumar Verma
২০১৯
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের কাছে কিছু বিশেষ অধিকার ছিল। ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৭০ ধারাটি অবসানের দাবি তোলেন৷ বিল পাস হয়। একই দিনে তাতে সই করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিল হয়। তাছাড়া মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ছবি: Reuters
19 ছবি1 | 19
বিতর্কিত ভূমিকা
‘‘সব মিলিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মিডিয়া একটা বিশেষভাবে নেতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে ও তাদের নিজের নিজের সরকারের হয়ে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে'', কলকাতা থেকে বলেন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি সংক্রান্ত ভাষ্যকার গর্গ চট্টোপাধ্যায়৷
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ব্লগার বাশারত আলি মনে করেন যে, ভারত ও পাকিস্তানের সরকারবর্গ চিরকালই কাশ্মীর সংঘাত সম্পর্কে দিল্লি বা ইসলামাবাদের অবস্থান জ্ঞাপন করার জন্য মেইনস্ট্রিম মিডিয়াকে ব্যবহার করে থাকেন৷
‘‘ভারতীয় মিডিয়ার কাছে কাশ্মীর সমস্যায় উসকানি দিচ্ছে পাকিস্তান, সংঘাতের সূচনা থেকে নতুন দিল্লির একটির পর একটি সরকার যে অবস্থান নিয়ে এসেছেন'', ডিডাব্লিউকে বলেন আলি৷ ‘‘ওরা সবসময় তথ্যের বিকৃতি ঘটায় ও বাস্তবকে ধামাচাপা দেয়৷ লেকে যখন দেখে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে, তখন তাদের রোষ আরো বেড়ে যায়৷''
ভারতীয় সংবাদপত্রগুলির ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বহু সংবাদদাতা আছে, যেখানে পাকিস্তানি সংবাদপত্রগুলিকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংবাদ সংস্থার বিবরণের উপর নির্ভর করতে হয়, কেননা তাদের অকুস্থলে কোনো নিজস্ব সংবাদদাতা নেই৷ ‘‘পাকিস্তানি মিডিয়ার রিপোর্টে কাশ্মীরে ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার লঙ্ঘণের কথাই তুলে ধরা হয়, যা-তে এই সমস্যা বিশ্বের নজরে আসে৷ পাকিস্তানি সরকারের অবস্থানও ঠিক তাই'', বলেন ব্লগার বাশারত আলি৷
কাশ্মীর সমস্যার সমাধান কি সম্ভব?
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সহিংসতা আবারো এই প্রশ্নকে উস্কে দিয়েছে৷ কি চায় কাশ্মীরের জনগণ? আর ভারত সরকার কি সেখানকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে? কাশ্মীরের বর্তমান সংকট নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP/T.Mustafa
সংঘর্ষের সূত্রপাত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৮ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথিত সংঘর্ষে স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদীন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে৷ বুরহান নিহত হওয়ার প্রতিবাদে হাজার হাজার ক্ষুব্ধ জনতা সড়কে নেমে নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর ইট পাটকেল ছুড়লে পাল্টা গুলি চলে তাদের ওপর৷ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪০ এরও বেশি নিহত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Yasin
কারফিউয়ে জনজীবন অচল
কাশ্মীরি নেতাদের বনধের ডাকে সমগ্র কাশ্মীর উপত্যকার জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ কারফিউ জারি করেও নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না প্রতিবাদকারীদের৷ অন্যদিকে, খাবার ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে৷ মোবাইল ও ইন্টারনেট এবং ট্রেন সার্ভিস বন্ধ রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
আরো সেনা মোতায়েন
সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে চলতি সপ্তাহে ওই অঞ্চলে বাড়তি ৮শ’ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
নিহতদের বেশিরভাগই তরুণ
সাম্প্রতিক সহিংসতার নিহত ৪৪ জনের মধ্যে বেশিরভাগই বয়সে তরুণ৷ তাদের বয়স ১৬ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে৷ আহতদের মধ্যে অনেক শিশু ও নারী রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে শতাধিক মানুষ
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, কারফিউয়ের কারণে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং রক্তের অভাবে আরো অনেকের মৃত্যু হতে পারে৷ প্রায় শতাধিক মানুষের চোখে শটগানের গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন তারা৷ দ্রুত চিকিৎসা না হলে তারা দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন৷
ছবি: Reuters/D.Ismail
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক
কাশ্মীরে চলমান সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান অভিযোগ করায় দু’পক্ষের সম্পর্ক আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ভারত সরকারের অস্বস্তি বেড়েছে৷ ইসলামাবাদে সার্কভুক্ত দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যাবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Press Information Bureau
চাপে মোদী সরকার
কাশ্মীর পরিস্থিতির কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী অভ্যন্তরীণ চাপের মুখেও পড়তে পারেন বলে সরকারের একাংশের আশঙ্কা৷ প্রশ্ন উঠতে পারে, মোদীর পাকিস্তান নীতি নিয়েও৷ নরেন্দ্র মোদী সরকারের শুরুটাই হয়েছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির বার্তা দিয়ে৷ পাঠানকোট হামলার পর পরিস্থিতি বদলে যায়৷ আর কাশ্মীর ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিন্দায় চাপে পড়েছে মোদী সরকার৷
ছবি: DW/J. Akhtar
কাশ্মীর কার ভূখণ্ড?
ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রই কাশ্মীরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে৷ দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে ওই অঞ্চলটি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে পরমাণু শক্তিধর এই দুই রাষ্ট্র৷ এই সময়ের মাঝে দুটি দেশই দুইবার বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
যে কারণে সহিংসতা
মুসলিম অধ্যুষিত ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাশ্মীরের স্বাধীনতার লক্ষ্যে অস্ত্র তুলে নেয়৷ এরপর থেকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর পরিস্থিতি৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Tauseef
9 ছবি1 | 9
দুবাই-ভিত্তিক নিরপেক্ষ সাংবাদিক বাবা উমর কাশ্মীর সংঘাতের উপর বিবরণ দিয়ে থাকেন৷ তিনি বলেন যে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত অংশে বসবাসকারী কাশ্মীরিদের কাছে ভারতীয় মিডিয়া নতুনদি ল্লির ‘‘জনসংযোগের মাধ্যম'' ছাড়া আর কিছু নয়৷ ভারতীয় মিডিয়া কাশ্মীরে স্বাধীনতা-প্রয়াসী বিক্ষোভ আন্দোলনের ছবি দেখায় না, বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ এক্ষেত্রে তিনি কাশ্মীরের স্থানীয় মিডিয়ার ভূমিকার প্রশংসা করেন৷
আসল ঝুঁকি
গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের মতে উভয় দেশের জাতীয় টেলিভিশন যুদ্ধের ঝঞ্ঝনা তুলেছে, কিন্তু আঞ্চলিক মিডিয়া দৃশ্যত নতুন দিল্লি ও ইসলামাবাদের বিবাদে ততটা আগ্রহী নয়৷ সেটা একটা ভালো লক্ষণ, বলে চট্টোপাধ্যায় মনে করেন৷
অন্যদিকে কাশ্মীর সংঘাতের ক্ষেত্রে দু'পক্ষের পত্রপত্রিকাই বাস্তব তথ্য যাচাই না করেই বিবরণ প্রকাশ করে থাকে, বলে মিডিয়া বিশ্লেষকদের ধারণা৷ ভারত ও পাকিস্তান যে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের অধিকারী, মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার সেটা স্মরণে রাখা উচিত, বলে চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেন৷
বন্ধু, আপনি কী মনে করেন? কাশ্মীর নিয়ে মিডিয়ার ভূমিকা কী হওয়া উচিত? লিখুন নীচের ঘরে৷