1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-নেপাল সম্পর্ক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৬ আগস্ট ২০১৪

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর নেপাল সফর সত্যিই ঐতিহাসিক৷ এ সফর কতটা সার্থক তা প্রতিফলিত হয়েছে নেপালের সংসদ ও গণপরিষদে দেয়া মোদীর ভাষণে, যা দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলগুলির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়িয়েছে৷

Indien Delhi Budget Eisenbahn ACHTUNG SCHLECHTE QUALITÄT
ছবি: Uni

দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর মোদীর এই ‘হিট' মন্ত্র নির্ভুল নিশানায় লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হয়েছে৷ নেপালের ওপর চীনের বাড়তে থাকা ছায়া, জঙ্গি কার্যকলাপ দমন, জলবিদ্যুৎ, পরিকাঠামো উন্নয়নে ভারতের দরাজ সহযোগিতা এবং এর প্রেক্ষিতে ১৯৫০ সালের ভারত-নেপাল শান্তি ও মৈত্রী চুক্তির পর্যালোচনা – সব ইস্যু নিয়েই নেপালের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গত দেড় দশকের শীতলতা কাটিয়ে ওঠার যে প্রত্যাশা ছিল, এই সফরে তা পূরণ হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ সংযুক্ত মাওবাদী নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান প্রচণ্ডের ভাষায় ‘‘মোদী নেপালি জনগণের শুধু মন ছুঁয়েছেন তা নয়, মন জয় করেছেন৷''

নেপালের সংসদ এবং গণপরিষদে দেয়া ভাষণে তিনি বুঝিয়ে দেন যে, বিজেপি নেপালে হিন্দু রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সাহায্য করতে পারে বলে যে সন্দেহ ছিল, তা অমূলক৷ মোদীর কথায়, ভারত নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাবে না৷ ভারত চায় নেপাল হোক এক যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র৷ সেই দিশায় নেপালের গণপরিষদের সদস্যদের উচিত দেশের নয়া সংবিধান রচনার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, দলীয় মতবিরোধ দূর করে তা দ্রুত শেষ করা৷ এই মতবিরোধের কারণেই ২০১২ সালে প্রথম গণপরিষদ ভেঙে যায়৷ সরকার ও বিরোধী দলগুলি জানান এক বছরের সময়সীমার মধ্যে নতুন সংবিধান রচার প্রক্রিয়া শেষ করা হবে৷

মোদীর ‘হিট' ফরমুলা আদতে কী

নির্ভুল নিশানায় লক্ষ্যভেদ করেছে মোদীর ‘হিট' ফরমুলা৷ শব্দের অভিধা ব্যাখ্যা করে মোদী বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, ইংরেজি হিট শব্দের অর্থ হাইওয়ে, ইনফোওয়ে ও ট্রান্সমিশন লাইন৷ এ জন্য ১০০ কোটি ডলার সাহায্য দেবার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি৷ বুঝিয়ে দিয়েছেন নেপালের রাজনীতিতে মাথা না গলিয়ে নেপালের আর্থিক বিকাশের হাত ধরেই ভারত নেপালের কাছে আসতে চায়৷

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নেপালকে কাছে টানতে ভারত ও চীনের মধ্যে একটা অদৃশ্য প্রতিযোগিতা চলছে৷ গত এক দশকে নেপালের ওপর চীনা প্রভাব বেড়েছে৷ সেটা বিপরীতমুখী করতে মোদী সরকার তার পররাষ্ট্রনীতিতে অগ্রাধিকার দিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর, সহযোগিতার পরিধি বাড়ানোর ওপর৷ বলা বাহুল্য, ভুটান এবং নেপালের পর, অন্য প্রতিবেশী দেশও মোদীর সফর তালিকায় রয়েছে৷

ভারত-নেপাল মৈত্রী চুক্তির সংশোধন জরুরি

এই চুক্তির রূপায়ন নিয়ে দু'দেশের মধ্যে বিস্তর ভুল বোঝাবুঝি৷ আর তা থেকে বেড়েছে দুরত্ব৷ তাই নেপাল সফরে গিয়ে মোদী বার্তা দিয়েছেন এই চুক্তির সংশোধন জরুরি৷ উভয় দেশই মনে করে এই চুক্তি অসম৷ নেপালের সংশয় ভারত বড় দেশ হিসেবে এই চুক্তির বেশি ফায়দা নিচ্ছে৷ অন্যদিকে ভারত মনে করে যে, এতে নেপালকে বেশি সুবিধা দেয়া হয়েছে৷

১৯৫০ সালে এই চুক্তি যখন সই হয় তখন নেপালের যে রাজনৈতিক শাসনতন্ত্র ছিল, আজ তার আমূল পরিবর্তন হয়েছে৷ পাল্টে গেছে নেপালের ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ৷ নেপালের রাজনৈতিক দলগুলির দাবি – দু'দেশের জলসম্পদ বণ্টনের মাপকাঠি নতুন করে স্থির করতে হবে, ভারতীয় সেনা বাহিনীতে গোর্খাদের নিয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং দু'দেশের স্থলসীমা নতুন করে চিহ্নিত করতে হবে৷ ভারতের দাবি – জঙ্গি দমনে নেপালকে আরো সক্রিয় হতে হবে৷ নেপালের সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীরা ভারতে ঢোকে৷ তাই সন্ত্রাসীদের গতিবিধি সম্পর্কে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্যাদি দিতে হবে ভারতকে, যে বিষয়ে নেপাল এখনও নির্বিকার৷ শান্তি চুক্তি অনুসারে নেপালিদের ভারতে আসতে ভিসা দরকার হয় না৷ অর্থাৎ তাঁরা অবাধে ভারতে প্রবেশ করতে পারেন৷ ফলে ভারতে কাজকর্ম করে দেশে টাকা পাঠানোয় নেপালের জিডিপিও বাড়িয়ে চলেছেন তাঁরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ