স্থানীয় কিশোরদের হাত থেকে বন্দুক ফেলে ফুটবলের নেশা ধরানোর জন্যই শুরু হয়েছিল এই ক্লাবের পথ চলা।
কাশ্মীর এফসি-র নতুন পথ চলাছবি: Saqib Majeed/SOPA Images/Sipa USA/picture alliance
বিজ্ঞাপন
গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন পর্যটক এবং একজন স্থানীয় মানুষ। এই ঘটনার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে। ভারতের অপারেশন সিন্দুরের পরে এই দুই পারমানবিক শক্তিসম্পন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। অশান্ত হতে থাকে জম্মু কাশ্মীর। সেই অশান্তির ছায়া এসে পড়ে ফুটবল মাঠেও। বেশ কয়েক বছর ধরেই রিয়াল কাশ্মীর ফুটবল ক্লাবের (আরকেএফসি) খেলোয়াড়রা ফুটবল দুনিয়ায় পরিচিতি পেতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। ২২ তারিখের ঘটনার পর থেকে কেবলমাত্র অশান্তি আর হামলার খবরই উঠে এসেছে শিরোনামে।
ক্লাব কর্তৃপক্ষ চায়, এই অশান্তির প্রভাবে সাধারণ মানুষ এবং বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি যেন ফুটবল থেকে সরে না যায়। আরকেএফসির মালিক আরশাদ শল ডিডাব্লিউকে বলেন, "২২ এপ্রিলের ঘটনা এযাবতকালের মধ্যে সব থেকে পীড়াদায়ক এবং দুর্ভাগ্যজনক। যখন লক্ষাধিক পর্যটক কাশ্মীরে বেড়াতে আসেন তখন সেটা একটা ব্র্যান্ডের জন্য ভালো হয়। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে কাশ্মীরে আর কেউই আসতে চান না।"
কত বাধা পেরিয়ে ফুটবলার পাকিস্তানের এই কিশোরী!
02:19
This browser does not support the video element.
কাশ্মীর নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব পুরনো। ১৯৪৭-এ দুই দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর ইস্যুতে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। ২২ এপ্রিলের ঘটনা এই অঞ্চলের পরিবেশ নতুন করে জটিল করে তুলেছে।
বিপর্যয়ের পরে ফুটবল
এই অঞ্চলে ফুটবলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৪-র বন্যায় কাশ্মীর বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার পর। একটি পত্রিকার মালিক শামিম মেহরাজ এবং ব্যবসায়ী সন্দীপ ছাত্তু স্থানীয় কিশোরদের সহিংসতা থেকে দূরে রাখতে ১০০টি ফুটবল বিতরণ করেন।
শল জানান, সাধারণ কিশোর যুবকদের মানসিক চাপ এবং হতোদ্যম ভাব কমাতেই শুরু হয়েছিল এই ফুটবল। আরকেএফসি-র যাত্রা শুরু ২০১৬তে। তিনি বলেন, "ক্লাবের মোটো ছিল সৃষ্টি, ভরসা এবং অনুপ্রেরণা। কাশ্মীরকে বেশিরভাগ লোক বুলেটের জন্য মনে রেখেছিলেন। আরকেএফসি-র জয় কিন্তু আমাদের সকলের পরিশ্রমের ফসল।" স্থানীয় সাধারণ মানুষেরাও উৎসাহিত হয়েছিলেন।
কঠিন চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে
২০১৮তে আই-লিগ খেলার সুযোগ পায় আরকেএফসি। পরের বছর ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছায় তারা। তার পর থেকেই তাদেরকে 'স্নো লেপার্ড' নামে ডাকা শুরু করে ফুটবল প্রেমীরা। শোল বলেন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এত উচ্চতায়, সীমিত অক্সিজেনে খেলার জন্য তাদের ফুটবলারদের পরিশ্রম করার ক্ষমতা বেশি।
ক্লাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ফয়জল আশরফ বলেন, "আমাদের টিম যখন খেলে তখন আর কোনো কিছু নিয়েই ভাবে না। কাশ্মীরের অস্থিরতা, গোলাগুলি -- কিছুই মনে রাখে না। আমরা শুধুই জিততে চাই। আমাদের দর্শকরা কেবলমাত্র পুরুষরাই নন। মহিলারাও খেলা দেখতে আসেন। বৃদ্ধরাও খেলা দেখতে আসেন। সাধারণ মানুষ কোনও কিছুকে সমর্থন করার একটা হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন।
পরের ধাপ
আরকেএফসি-র সামনে এখন চ্যালেঞ্জ ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (আইএসএল) নিজেদের জায়গা করে নেওয়া। কলকাতা, মুম্বাই, কেরালার অন্যান্যও প্রথম সারির ক্লাবদের সঙ্গে খেলা তাদের স্বপ্ন।
শল বলেন, "আইএসএলে সুযোগ করে নিতে পারলে একটা বড় ব্যাপার হবে। কাশ্মীরের মাটিতে অন্যান্য দল খেলতে আসবে। এতে আমাদের জন্য একটা নতুন অধ্যায় রচিত হবে।"
জন দুয়েরডেন/এসসি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১০ সর্বোচ্চ গোলদাতা : রোনাল্ডো, মেসি থেকে এমবাপ্পে
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ১০ সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকা রীতিমতো তারকাখচিত৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Manu Fernandez/AP Photo/picture alliance
এরলিং হাল্যান্ড (৪৯টি গোল)
বর্তমান সময়ের অন্যতম আকর্ষণীয় খেলোয়াড় এই নরওয়েজিয়ান তরুণ৷ বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ১৩টা গোল করে নজর কাড়লেও হাল্যান্ড নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটি ক্লাবে যোগদানের পর৷ ২৯টি ম্যাচে ২৬টি গোল করে এখন পর্যন্ত ৪৮টি ম্যাচে মোট ৪৯টি গোল করেছেন তিনি৷ ২০২৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলেও ছিলেন তিনি৷
ছবি: Mark Cosgrove/News Images/Avalon/picture alliance
থিয়েরি অঁরি (৫০টি গোল)
এই ফরাসি স্ট্রাইকার দীর্ঘ দিন খেলেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে, মূলত তিনটি ক্লাবের হয়ে৷ প্রথমে মোনাকোর হয়ে সাতটি গোল, তারপর আর্সেনালের হয়ে ৩৫টি গোল ও শেষে বার্সেলোনার হয়ে আটটি গোল৷ ১৯৯৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী দলে ছিলেন থিয়েরি অঁরি৷
ছবি: augenklick/firo Sportphoto/picture alliance
কিলিয়ান এমবাপ্পে (৫৫টি গোল)
মোনাকো ক্লাবে খেলে নজরে আসা এই তরুণ ফরাসি খেলোয়াড় আরো খ্যাতিলাভ করেন প্যারিস সঁ-জার্মেই ক্লাবে আসার পর৷ ২৫ বছর বয়েসি এই খেলোয়াড় পিএসজি’র হয়ে ৬২টি ম্যাচে ৪২টি গোল দিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে হ্যাটট্রকও করেছেন তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে৷
ছবি: Federico Titone/Anadolu/picture alliance
টমাস ম্যুলার (৫৬টি গোল)
৩৫ বছর বয়েসেও ফর্ম ধরে রেখেছেন জার্মান ফুটবলার টমাস ম্যুলার৷ ১৯ বছর বয়সে নিজের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে গোল করে ৭-১-এর জয় এনে দিয়েছিলেন বায়ার্ন মিউনিখকে৷ দুবার বায়ার্নের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলে ছিলেন ম্যুলার৷
ছবি: Frank Hoermann/Sven Simon/IMAGO
রুড ফন নিসলরয় (৫৬টি গোল)
ডাচ স্ট্রাইকার রুড ফন নিসলরয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিনটি ক্লাবের হয়ে গোল করেছেন৷ পিএসভি আইন্ডহোফেনের হয়ে আটটি গোল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ৩৫টি গোল ও রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে ১৫টি গোল করেছেন তিনি৷
ছবি: Martin Rickett/empics/picture alliance
রাউল (৭১টি গোল)
রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় রাউল নিঃসন্দেহে একজন লেজেন্ড৷ লা লিগায় ৫৫০টি ম্যাচ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩২টি ম্যাচে খেলেছেন তিনি৷ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের দলকে তিনবার শিরোপা জিতিয়েছেন৷ ৭১টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোলের মধ্যে মাত্র দুটি গোল তিনি করেন শালকে ক্লাবের হয়ে, যেখানে তিনি কাটান দু’বছর৷
ছবি: Daniel Ochoa de Olza/AP/picture alliance
করিম বেনজামা (৯০টি গোল)
এই ফরাসি খেলোয়াড় বর্তমানে খেলেন সৌদি আরবে৷ কিন্তু ১৮ বছর বয়েসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার অভিষেক হয় লিয়ঁ ক্লাবের হয়ে৷ ২০০৯ সালে এই ক্লাব ছেড়ে রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন তিনি৷ রেয়ালকে চারবার চ্যাম্পিয়ন্স জেতানোয় বেনজামার অবদান মনে রাখার মতো৷ ৯০টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোলের মধ্যে ৭৮টিই করেছেন রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে৷
ছবি: Pierre-Philippe Marcou/AFP
রবার্ট লেভানডোস্কি (১০৩টি গোল)
২০২০ সালে ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় হন লেভানডোস্কি৷ পোল্যান্ডের এই স্ট্রাইকার ২০১৯-২০২০ মৌসুমে ১৫টি গোল করেন৷ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ১৭টি, বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ৬৯টি এবং বার্সেলোনার হয়ে ১৭টি গোল করেছেন৷
ছবি: Isabella Bonotto/Anadolu/picture alliance
লিওনেল মেসি (১২৯টি গোল)
এখন ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলেন মেসি, কিন্তু বার্সেলোনার হয়ে তার খেলার কথা সবাই মনে রাখবেন৷ আর্জেন্টিনার এই খেলোয়রড় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার হয়ে ১২০টি গোল করেছেন৷ ছয়বার সেরা গোলদাতা হন এই লিগে, তিনবার চ্যাম্পিয়ন দলেও ছিলেন তিনি৷ এরপর পিএসজি’র হয়ে ৯টি গোল করলেও তাদের হয়ে খেতাব জয়ের অভিজ্ঞতা মেসির হয়নি৷
ছবি: imago images/PanoramiC
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (১৪০টি গোল)
পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলে ছিলেন এই পর্তুগিজ সুপারস্টার খেলোয়াড়৷ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের হয়ে ২১টি গোল করেন তিনি৷ রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে ১০৫টি, জুভেন্টাসের হয়ে ১৪টি গোল করেন তিনি৷