ভারত পাকিস্তান আলোচনার সংকেত সবুজ, প্রশংসা ওয়াশিংটনের
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০সার্কের বৈঠক ক্রমশ এগিয়ে আসছে৷ সেই বৈঠক এবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ইসলামাবাদে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ইসলামাবাদ যাওয়ার ব্যাপারে আগেই সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছিল নতুন দিল্লী৷ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিকও জানিয়ে রেখেছিলেন, চিদম্বরমকে স্বাগত জানাতে তৈরি তিনি৷ কিন্তু সেই বৈঠকের আগেই কূটনৈতিক পথে আরেকধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছাড়ল না ভারত৷ বিদেশসচিব পর্যায়ে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ইসলামাবাদকে৷ ঝিমিয়ে পড়া শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরু করতে চেয়ে নতুন দিল্লীর পাঠানো এই বার্তা সাদরে গ্রহণ করেছে পাকিস্তান৷
মুম্বই কান্ড, বা ২০০৮ সালের ২৬/১১-র ঘটনার পর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে চলতি শান্তি উদ্যোগের যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছিল নতুন দিল্লী৷ আলোচনায় বসারও কোন প্রশ্ন ওঠে নি গত প্রায় চৌদ্দ মাস যাবত৷ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপও ছিল৷ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগ নিয়েছে কয়েকবারই৷ কিন্তু জঙ্গি দমনে পাকিস্তানের উদ্যোগ, বিশেষত, মুম্বই কান্ডে দোষীদের শাস্তি বিধানে ইসলামাবাদের তত্পরতার সমালোচনা করেছে নতুন দিল্লী বারবার৷ মুম্বই হামলায় দেশি বিদেশি নাগরিক সহ ১৬৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় পাকিস্তান ভিত্তিক লশকর এ তৈয়বা জঙ্গি সংগঠনকেই দায়ী করেছে ভারত৷ এ নিয়ে চাপানউতোর চলেছে গোটা ২০০৯ সাল জুড়ে৷
শেষ পর্যন্ত দুপক্ষই আবার আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হওয়ার পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর এই পট পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন৷ হোয়াইট হাউজে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ডেপুটি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পি জে ক্রাউলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং সমস্যাগুলির যৌথ মোকাবিলা করতে পাকিস্তান আর ভারত যদি মুখোমুখি হয়ে আলোচনায় বসে তার চেয়ে যথাযথ ব্যবস্থা আর কিছুই হতে পারে না৷ দুই দেশেরই উচিত সমাধানের পথের লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া৷ বলেছেন ক্রাউলে৷
পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে ভারত পাকিস্তানের ফের আলোচনা শুরু হওয়ার এই সিদ্ধান্ত এলাকার রাজনীতিতেও যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করতে পারবে বলে মন্তব্য শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছেও৷ প্রসঙ্গত, কাশ্মীর সহ বিভিন্ন ইস্যুতেই দুপক্ষকে একটা কোন সমঝোতায় পৌঁছতে হবে বলে মনে করেন তাঁদের অনেকেই৷ ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে এই দুটি দেশ৷ সীমান্ত সমস্যা এবং জঙ্গি সন্ত্রাসও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ঘিরে৷ অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করে চলেছে এই বিষয়টি৷ এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান উপমহাদেশের রাজনীতির অবশ্য প্রয়োজনীয় বিষয় বলে মনে করা হয়ে থাকে৷ তাই নতুন করে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা স্বস্তির ছবি ফুটিয়েছে দুই দেশেরই কূটনৈতিক মহলেও৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা- জাহিদুল হক