1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-পাকিস্তান শান্তি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৭ আগস্ট ২০১৩

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় অনুপ্রবেশকারীদের হামলায় পাঁচজন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় আবারো ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে তিক্ততা৷ সংসদের ভেতর ও বাইরের প্রতিক্রিয়ায় দু দেশের শান্তি সংলাপ শুরুর উদ্যোগ ভেস্তে যাবার আশঙ্কা৷

ছবি: picture-alliance/dpa

কাশ্মীরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় গত আট মাসে এই নিয়ে আটবার বড় রকম হামলার ঘটনা ঘটলো৷ দু'পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, নিজের দায় অস্বীকার করে৷ পাকিস্তানের অভিযোগ, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় সেনা নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে পাকিস্তানের চেকপোস্টের ওপর হামলা চালালে, একজন পাক সেনা নিহত হয়৷ ঠিক তার পরের দিন পাকিস্তানি সেনা নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতীয় টহলদার সেনার ওপর হামলা করে৷ তাতে মারা যায় দু'জন ভারতীয় সেনা৷

এই ধরণের বিক্ষিপ্ত ঘটনা এক সময় যুদ্ধের চেহারা নিতে পারে, যেমনটা হয়েছিল ১৯৬৫ সালে৷ ভাগ্য ভালো তখন ভারত বা পাকিস্তান কারোর হাতে পরমাণু অস্ত্র ছিল না৷ কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন৷ দুটি দেশই অঘোষিত পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র৷ ভারত ভাগ হবার পর থেকে, বিশেষ করে কাশ্মীরকে নিয়ে দু'দেশের মধ্যে পুঞ্জীভূত হয়ে রয়েছে বিদ্বেষ আর বদলার মানসিকতা৷ এই কাশ্মীরকে ঘিরেই ১৯৪৭ সালে যুদ্ধ হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে৷ কাশ্মীর টুকরো হয়৷ ১৯৬৫ সালের পর ১৯৯৯ সালে ভারতের কারগিলে একই কারণে আবার যুদ্ধ বাঁধে৷

দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এই ধরণের সম্পর্ক চলতে দেয়া যায় না৷ যেভাবেই হোক এর সমাধান করতেই হবে৷ তার মানে আপোষ নয়৷ প্রকৃত সমাধান, যাতে আগামী প্রজন্ম শান্তিতে থাকতে পারে৷ কাজটা সহজ না হলেও অসম্ভব নয়৷ প্রথাগত পথ ধরে সফর বিনিময়, মিডিয়ার সামনে হাসি হাসি মুখ করে ধরাবাঁধা বিবৃতি দিয়ে কাজ হবে না৷

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় আট মাসে আটবার বড় ধরণের হামলার ঘটনা ঘটলোছবি: Imago/Xinhua

এর জন্য সবার আগে তৈরি করতে হবে শান্তির আবহ৷ আর তার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে দমন করা এবং তাদের মদতদাতাদের শাসন করা৷ সে কাজটা শুরু করতে হবে পাকিস্তানকেই৷ কারণ যতবার দু'দেশ শান্তির জন্য হাত বাড়িয়েছে, ততবারই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি তা ভেস্তে দিয়েছে৷ নওয়াজ শরিফের আমন্ত্রণে ১৯৯৯ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী লাহোরে গিয়ে সই করেন লাহোর ঘোষণাপত্র৷ শান্তি ক্ষণস্থায়ী হয় কারগিল যুদ্ধের কারণে৷ কিন্তু ২০০১ সালে ভারতের সংসদ ভবনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ভারত ও পাকিস্তানকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল যুদ্ধের মুখোমুখি৷ তারপর ২০০৮ সালে মুম্বই সন্ত্রাসী হামলা দুই দেশের বুকে এঁটে দেয় চিরশত্রুর তকমা, যা আজও মুছে যায়নি৷

দু'দেশের বৈরিতায় নতুন মাত্রা এনেছে আফগানিস্তান৷ প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে, ২০০ থেকে ২৫০ জন জেহাদি ১০ বা ২০ জনের দলে ভাগ হয়ে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অনুপ্রবেশের জন্য সুযোগের অপেক্ষায়৷ আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যৌথ বাহিনী সরে যাবার সঙ্গে সঙ্গে অনুপ্রবেশের ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা৷

তবু উভয়দেশ শান্তিকে বিকিয়ে দিতে পারে না৷ দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েই নওয়াজ শরিফ ভারতের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং তা ফিরিয়ে দেননি৷ আগামী মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যোগ দেবার ফাঁকে দুই প্রধানমন্ত্রী মিলিত হবেন৷ নতুন করে সার্বিক শান্তি সংলাপ শুরু করার আবহ তৈরি হবার কথা৷ কিন্তু আশঙ্কা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি আবার তা ভেস্তে না দেয়৷ ৫ই আগস্ট কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় অতর্কিত হামলায় পাঁচজন ভারতীয় সেনার মৃত্যু কি তারই অশনিসঙ্কেত?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ