ভিডিও গেম খেলার সময় ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি গগলস অনেকেই পরেন৷ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি যদি ৩৬০ ডিগ্রি অল-অ্যারাউন্ড ভিউ আর থ্রিডি হয়? লন্ডনের হ্যাপি ফিনিশ কোম্পানি এই অভিজ্ঞতাকেই কাহিনিচিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শনের কাজে লাগাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
ভবিষ্যতের সিনেমা কেমন দেখতে হবে? সব দর্শক কি ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির চশমা পরে অন্য এক জগতে ডুবে থাকবেন?
ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি কিন্তু ধীরে ধীরে সিনেমা হলে ঢুকে পড়ছে৷ লন্ডনের ‘হ্যাপি ফিনিশ' কোম্পানি ফিল্মে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির ক্ষেত্রে পথিকৃৎ বলা চলে৷
এখন পর্যন্ত ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির শুধু ছোট ছোট ভিডিও আছে৷ তবে তারা ৩৬০ ডিগ্রি দৃষ্টিকোণের আর সেই সঙ্গে ত্রিমাত্রিকও বটে৷হ্যাপি ফিনিশ-এর ভিআর-বিশেষজ্ঞ এড ও'ব্রায়েন জানান, ‘‘আমি যখন পর্দায় ছবিটা দেখছি, তখন আমায় এভাবে মাউস ব্যবহার করে ঘোরাফেরা করতে হচ্ছে৷ কিন্তু গগলস থাকলে আমি গগলসটা নাড়াচাড়া করলে সেটাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমার ভিউটা অ্যাডজাস্ট করে দেয়৷ কাজেই আমি এই এফেক্টটা পাই৷ বস্তুত যেন বাস্তবে চারদিক ঘুরে দেখছি৷''
ভার্চুয়াল রিয়্যালিটিতে ফিল্ম তৈরি হলে দর্শক বিভিন্ন সিন ও প্রাকৃতিক দৃশ্যে অংশ নিতে পারবেন৷ কিন্তু কাহিনির কি হবে? হ্যাপি ফিনিশ কোম্পানিতে একটি পুরোপুরি ৩৬০ ডিগ্রি ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি ভিডিওতে কাহিনিচিত্রের উপাদান ঢোকানো নিয়ে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে৷ দুই থেকে ১৬টি ক্যামেরা যুগপৎ ছবি তুলছে৷
গেমসকম সব রেকর্ড ভাঙল!
গেমসকম ২০১৬-য় এবার ছিলেন ৮০০-র বেশি প্রদর্শক ও প্রায় পাঁচ লাখ দর্শক৷ উদ্যোক্তারা বলছেন, কোলোনের ভিডিও গেম এক্সপো এখন বিশ্বের বৃহত্তম৷
ছবি: Philip Kretschmer
আজব দর্শক!
সাজগোজে দর্শকরা কিছু কম যাননি, সংখ্যাতেও নয়৷ একা কোলোনের বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রেই এসেছিলেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ, বাকি নানা ছোটখাট ইভেন্টে মিলিয়ে আরো লাখ খানেক অথবা তার কিছু বেশি৷
ছবি: Philip Kretschmer
পোকেমন
কসপ্লেয়াররা প্রেরণা পান তাদের ভিডিও গেম হিরোদের কাছ থেকে৷ এই দলটি পোকেমন-এর অনুরাগী৷ ‘পোকেমন গো’ নামধারী অগমেন্টেড রিয়্যালিটি গেমটি মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে বাজারে বেরিয়েই দুনিয়া জয় করে ফেলেছে, যার ফলে নিন্টেন্ডোর শেয়ার আকাশে চড়েছে৷
ছবি: Philip Kretschmer
‘ওভারওয়াচ’ স্ট্যান্ড
৯৭টি দেশ থেকে হাজার হাজার দর্শক এসেছিলেন পাঁচ দিনের ইভেন্টটিতে৷ তাদের মধ্যে অনেকেই এ-বছরের হিট মাল্টিপ্লেয়ার গেম ‘ওভারওয়াচ’ খেলে দেখতে চান৷
ছবি: DW/N. Peters
স্মার্টফোনের দুনিয়া
জার্মানিতে এ-বছর প্রায় ৩৫ লাখ ইউরো মূল্যের ভিডিও গেমস বিক্রি হবে বলে বাজারে খবর৷ তার একটি বড় অংশ যাবে স্মার্টফোন আর ট্যাবলেটে খেলার উপযোগী গেমে৷ সাবেক কম্পিউটার বা কনসোলের জন্য ভিডিও গেমের চাহিদা কমেই চলেছে৷
ছবি: picture-alliance/Geisler-Fotopress/C. Hardt
নীলপরী
লিগ অফ লিজেন্ডস গেমের মর্গানা নামধারী চরিত্রটিকেও কোলোনে দেখা গেছে৷ গেমটিকে সংক্ষেপে ‘লল’ (এলওএল) বলা হয়ে থাকে৷ খুবই জনপ্রিয় গেম৷ কাজেই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়রা মোটা নগদ পুরস্কার জেতার আশায় নিয়মিত প্রতিযোগিতায় নেমে থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/Geisler-Fotopress/C. Hardt
ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি
গেমসকমে নতুন নতুন ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি ডিভাইস (অর্থাৎ যন্ত্রপাতি বা সাজসরঞ্জাম) পরখ করে দেখার সুযোগ পেয়েছেন গেমাররা৷ এই ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি নাকি গেমিং-এর ভবিষ্যৎ৷ অকুলাস রিফ্ট, এইচটিসি ভাইভ, স্যামসাং-এর গিয়ার ভিআর, এগুলো ধীরে ধীরে গেমারদের হাতে, নাকে, কানে উঠছে৷ ছবিতে এক গেমার সোনি-র ভিআর হেডসেটটি পরীক্ষা করে দেখছেন৷ সেটটি আগামী অক্টোবর বাজারে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
গেমার-এর চেয়ে গেমের বয়স বেশি!
যেমন সুপার মারিও ব্রস. বা ব্রাদার্স, যা চিরকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও গেমসগুলির মধ্যে পড়ে৷ কিশোর গেমাররা নিন্টেন্ডোর ১৯৮৫ সালের এই ক্ল্যাসিক গেমটি খেলে দেখতে পারে, এটা বোঝার চেষ্টায় যে, বাবা-মা আজ অবধি সুপার মারিও খেলে এত মজা পান কেন...৷
ছবি: Philip Kretschmer
7 ছবি1 | 7
আওয়াজ কিংবা আলোর এফেক্টের ফলে দর্শক হয়ত যেখানে অ্যাকশন চলছে, সেদিকে তাকাচ্ছেন না৷ ফলে কাহিনিটা দর্শকের কাছে পুরোপুরি বোধগম্য হচ্ছে না৷ হ্যাপি ফিনিশ-এর অন্য এক ভিআর-বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল চিথাম বললেন, ‘‘স্পষ্টতই এই ঘরের দু'টি মুখ্য চরিত্র এই জানলাটার কাছে, আমি তাদের দিকে দেখছি৷ কিন্তু ঘরের চারদিকে দেখতে পারি বলে আমি আরো বেশি তথ্য পেতে পারি, পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারি৷ আমি বাস্তবিক এখানে, আমি এই পরিবেশের অঙ্গ, এই অভিজ্ঞতায় আমিও উপস্থিত৷ আবার অপ্রত্যাশিত অনেক কিছু থাকতে পারে, যা আপনি দেখতে পারেন যদিও গল্পের কাহিনিতে তার কোনো ভূমিকা নেই, কিন্তু তারা প্রসঙ্গটা বুঝতে সাহায্য করে৷''
বার্লিনের এই পপ-আপ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি সিনেমা হলে দর্শক বিভিন্ন ধরনের শর্ট ফিল্ম দেখতে পান৷ তার মধ্যে একটি ভিডিও ফিল্মে জর্ডানের একটি উদ্বাস্তু শিবিরও পরিদর্শন করা যায়৷ একটি অ্যাপ থাকলে সেল ফোন দিয়ে পুরো ভিডিওটা ৩৬০ ডিগ্রি অপটিকে দেখতে পাওয়া যায়, তবে শুধু দিমাত্রিক ভাবে৷ থ্রিডি চশমা পরে থাকলে গোটা অল-অ্যারাউন্ড ভিউটাই থ্রিডি-তে পাওয়া যায়৷
ভার্চুয়াল রিয়্যালিটিতে তৈরি ফিল্ম সংবাদপ্রদান বা তথ্যচিত্রের ফরম্যাটে বিরাট উন্নতি ঘটাতে পারে৷ ফিল্মে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির সীমাটা যে ঠিক কোথায়, তা এখনও পর্যন্ত বলা সম্ভব নয়৷ আগামী কয়েক বছরে তা পরীক্ষা করে দেখা হবে৷
ভিআর-বিশেষজ্ঞ এড ও'ব্রায়েনের কথায়, ‘‘আপনি আরো অনেক বেশি তথ্য পাচ্ছেন ও সেটা আপনার ইন্দ্রিয়গত অনুভূতির সাথে এমনভাবে জড়িত যে, সিনেমায় তা হওয়া সম্ভব নয়৷ ভিআর-এ আমরা দৃশ্যপটের অনুকরণ, শব্দের অনুকরণ, আমাদের হাতগুলো কীভাবে অন্যান্যদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করছে, সেটা দেখা – ভার্চুয়াল রিয়্যালিটিতে এ সব বাড়তি উপাদান আছে, যা সিনেমায় নেই৷ সিনেমাকে এর পাশে বেশ প্রাথমিক বলে মনে হবে৷''
সিনেমা হলে কিংবা বাড়িতে ভিআর গগলস পরে বসে কি মানুষের ভালো লাগবে? দর্শকরা ভার্চুয়াল জগতে যা দেখছেন, বাস্তব জগতের কোনো মানুষের সঙ্গে তা ভাগ করে নিতে পারলে তারা আপাতত আরো খুশি হন বলেই মনে করা হচ্ছে৷
ইয়ানা ও্যর্টেল/এসি
দেবারতি গুহ
সাইবার অপরাধের বিভিন্ন ধরন
ইন্টারনেটের ব্যবহার যত বাড়ছে তত বাড়ছে সাইবার অপরাধের ঘটনা৷ ফলে আর্থিক ক্ষতি থেকে নানা রকমের হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনলাইন ব্যবহারকারীরা৷ এমনই কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পরিচয় চুরি
আজকাল অনলাইনে কেনাকাটা করছেন অনেকে৷ এরজন্য নাম, ঠিকানা, ই-মেল, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ইত্যাদি দিতে হয়৷ সমস্যাটা সেখানেই৷ যেসব ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো নয়, সেখানে এই তথ্যগুলো দিলে তা অপরাধীর কাছে চলে যাবার সম্ভাবনা থাকে৷ সেক্ষেত্রে অপরাধী আপনার তথ্য ব্যবহার করে আপনার ক্রেডিট কার্ড শূন্য করে দিতে পারে৷ কারণ আপনার যে পরিচয় চুরি হয়ে গেছে!
ছবি: picture alliance/maxppp/S. Mortagne
স্প্যাম ও ফিশিং
একদিন ই-মেল খুলে দেখলেন আপনি অনেক টাকার লটারি জিতেছেন৷ সেটা পেতে আপনাকে কিছু তথ্য দিতে বলা হচ্ছে৷ হঠাৎ করে বড়লোক হওয়ার লোভে আপনি সেই তথ্যগুলো দিয়েও দিলেন৷ ব্যস, যা হবার হয়ে গেছে৷ পরে দেখলেন টাকা পাওয়ার বদলে আপনার কাছে যা আছে সেটাও চলে যাচ্ছে! অর্থাৎ আপনি ফিশিং-এর শিকার হয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTOs
ব়্যানসমওয়্যার
উন্নত বিশ্বে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷ অপরাধীরা ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে অন্যের কম্পিউটারের ফাইলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়৷ তারপর ঐ কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে বার্তা পাঠায় এই বলে যে, ফাইল ফেরত পেতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/ZB/T. Eisenhuth
সাইবার মবিং বা সাইবারবুলিং
হয়ত মজা করার জন্য কিংবা ইচ্ছে করে একজনকে কষ্ট দিতে তার বন্ধুরা একজোট হয়ে হয়রানি করে থাকে৷ বাস্তবে স্কুল-কলেজে এমনটা হয়ে থাকে৷ আজকাল ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়ে ওঠায় ভার্চুয়াল জগতে এমন ঘটনা ঘটছে৷ কিন্তু অনেক সময় বিষয়টি আর মজার পর্যায়ে না থেকে ভয়ানক হয়ে ওঠে৷ ফলে যাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে সে হয়ত এমন কিছু করে ফেলে যা কারও কাম্য থাকে না৷
ছবি: Sylvie Bouchard - Fotolia.com
ম্যালভার্টাইজিং
ধরুন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে আছেন৷ সেখানে একটি বিজ্ঞাপন দেখে ক্লিক করলেন৷ ব্যস আপনার কম্পিউটারে একটি কোড ডাউনলোড হয়ে গেল৷ এটি কোনো নিরীহ কোড নয়৷ অপরাধীরা এর মাধ্যমে আপনাকে হয়রানির পরিকল্পনা করবে৷ সুতরাং...৷
ছবি: Getty Images
ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড স্কিমিং
রেস্টুরেন্ট, সুপারমার্কেটের বিল পরিশোধ, এটিএম থেকে টাকা তোলা, অর্থাৎ এমন কোথাও যেখানে আপনার ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডকে যন্ত্রের মধ্যে ঢোকাতে হয় সেখান থেকেও তথ্য চুরি হতে পারে৷ এটাই কার্ড স্কিমিং৷ স্কিমার যন্ত্রের মাধ্যমে এই তথ্য চুরি করা হয় বলে এর এমন নামকরণ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Baltagiannis
ফোন ফ্রড
অচেনা কোনো নম্বর থেকে (বিশেষ করে বিদেশ থেকে) মিসড কল পেলে সঙ্গে সঙ্গে কলব্যাক না করাই ভালো৷ কারণ কে জানে হয়ত ফোন ফ্রড অপরাধীরা এই কলটি করেছিলেন৷ আর আপনি কলব্যাক করতে যে টাকা খরচ করলেন তার একটি অংশ পেয়ে গেল অপরাধীরা!