1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভালো নেই সাবরিনা

আরাফাতুল ইসলাম১৫ নভেম্বর ২০১২

বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারে অত্যন্ত সুপরিচিত নাম সাবরিনা সুলতানা৷ প্রতিবন্ধীদের অধিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন তিনি৷ সাবরিনা ভালো নেই৷ মাস্কুলার ডিস্ট্রফি ক্রমশ কেড়ে নিচ্ছে তাঁর জীবনীশক্তি৷

ছবি: Sabrina Sultana

সাবরিনা সুলতানা৷ ভিন্নভাবে সক্ষম এক মেয়ে৷ চট্টগ্রামের এই মেয়েটিকে নিয়ে গত কয়েক বছর আলোচনা হয়েছে অনেক৷ সাবরিনা এবং তাঁর সহযোদ্ধা সালমা মাহবুব বাংলাদেশের অবহেলিত, সুবিধা বঞ্চিত, প্রতিবন্ধী মানুষের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, যাতায়াত ও সর্বক্ষেত্রে প্রবেশের সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনগণকে সচেতন করে তোলার উদ্দেশ্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলেছেন, নাম বি-স্ক্যান

২০০৯ সালে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়৷ ইতিমধ্যে পেরিয়ে গেছে তিন বছরের বেশি সময়৷ অর্জন কতটা? জানতে চাইলে সাবরিনা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যেহেতু আমরা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, আমরা খুব অল্প কয়েকজন মানুষ মিলে চেষ্টা করছি৷ খুব বেশি দূর এগোতে পেরেছি, সেটা বলবো না৷ অনেক বাধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে আমাদের, পদপদে৷ সরকারিভাবে বাধাগুলোর কথাই আমি বলতে চাই৷''

সালমা মাহবুব (বামে) ও সাবরিনা সুলতানা বি-স্ক্যানের যাত্রা শুরু করেন (ফাইল ফটো)ছবি: Sabrina Sultana

পরিবারের অসচেতনতা বড় বাধা

প্রসঙ্গত, জার্মানিতে সর্বক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্যতা বিশেষভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে৷ এখানে সকল গণপরিবহন যেমন বাস বা ট্রেনে প্রতিবন্ধী বা ভিন্নভাবে সক্ষমদের জন্য সংরক্ষিত আসন রয়েছে৷ একজন প্রতিবন্ধী মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাস বা ট্রেনে উঠতে বা নামতে পারেন সেজন্য ব়্যাম্প রয়েছে৷ স্টেশনগুলোও তৈরি করা হয় এমনভাবে যাতে সকল ধরনের মানুষ সঠিকভাবে যাতায়াত করতে পারেন৷ কিন্তু বাংলাদেশের গণপরিবহনে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা এখনো সেভাবে দেখা যাচ্ছে না৷

সাবরিনা তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে এই বিষয়ে বলেন, ‘‘প্রথমে যদি আমরা ধরি, তা হচ্ছে পারিবারিক অসচেতনতা৷ আজকে যদি পরিবার থেকে বাবা-মা তাঁর প্রতিবন্ধী শিশুটির সঙ্গে অপ্রতিবন্ধী শিশুটিকে কষ্ট করে হলেও স্কুলে পাঠান, তার একটা স্বাভাবিক জীবনযাপনের চেষ্টা করেন (ভালো হয়)৷ ঘর থেকে যখন প্রচুর প্রতিবন্ধী মানুষ বাইরে বের হবেন, সরকারও তখন তাদের জন্য সহায়ক ব্যবস্থাগুলো নিতে বাধ্য হবে৷ বিআরটিসি তখন উপলব্ধি করবে প্রতিবন্ধীদের জন্য ট্রান্সপোর্ট দরকার৷''

অসুস্থ সাবরিনা

সাবরিনা এখন শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ৷ কথা বলতে কষ্ট হয় তাঁর৷ হুইলচেয়ারে করে চলাচলও ক্রমশ কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে তাঁর জন্য৷ সাবরিনা বলেন, ‘‘আমার শারীরিক অবস্থা এতটা ভালো নয়৷ বিশেষ করে এখন গলার মাংসপেশীর সমস্যাটা খুব বেড়ে গেছে৷ যার ফলে কথা বলতে অনেক বেশি সমস্যা হচ্ছে৷ লেখালেখিও অনেক কমে গেছে৷ বিশেষ করে আমি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছি৷''

Week 46/12 Women 2: Sabrina fights for disabled people - MP3-Mono

This browser does not support the audio element.

আত্মজীবনী

সাবরিনা তবুও বলতে চান৷ জানাতে চান তাঁর ইচ্ছার কথা৷ স্বপ্নের কথা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার আত্মজীবনীমূলক একটি লেখা ধরেছি৷ একটু একটু করে লেখার চেষ্টা করছি৷ আমার ইচ্ছাটা হচ্ছে, যতদিন আমার শরীরে শক্তি আছে, ততদিনে আমি যেন লেখাটা শেষ করতে পারি৷ আমি চাই বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে আমার স্বপ্নের কথা পৌঁছে দিতে৷ আমি পড়ালেখার সুযোগ পাইনি৷ স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ পাইনি৷ আমি চাইনা – আমার মতো – আমার বাবা-মায়ের মতো কেউ এই ভুলটা করুক৷ আমার বাবা-মা সচেতন ছিলেন না বলেই আমাকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগটি দিতে পারেন নি৷ আমার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে যেন, আমাদের দেশের অন্যান্য বাবা-মারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেন৷ আমি সেটাই চাই৷ আমারা জন্য দোয়া করবেন৷''

বর্তমানে একটি পত্রিকা বের করার কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন সাবরিনা এবং তাঁর সহযোদ্ধারা৷ আগামী ৩রা ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে আত্মপ্রকাশ করবে অপরাজেয়৷ ট্যাবলয়েড আকারের এই রঙিন পত্রিকাটিতে প্রতিবন্ধী মানুষের কথা থাকবে৷ তাঁরা যেন তাঁদের কথা বলার একটা জায়গা পায়, সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এই পত্রিকাটি প্রকাশ করা হচ্ছে, জানান সাবরিনা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ