1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ভালো কাজের জন্য দরকার ইচ্ছাশক্তি’

সমীর কুমার দে ঢাকা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আর্থিক সংকটে থাকা মানুষদের এক টাকায় এক বেলার খাবার দেয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন৷ আরো কিছু সেবামূলক উদ্যোগ আছে বাংলাদেশের অন্যতম এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির৷

ছবি: Abdul Gani

খুব ছোট আঙ্গিকে শুরু করে এই পর্যন্ত আসার ইতিহাস এবং নানা উদ্যোগ সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন বিদ্যানন্দের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ৷ 

ডয়চে ভেলে: এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির চিন্তা আপনাদের মাথায় কিভাবে এলো?

ফারুক আহমেদ: আমরা এখানে যারা কাজ করি, তারা জীবনের কোনো-না-কোনো সময় একটা বাজে সেগমেন্ট থেকে এসেছি৷ সেটা থেকেই আসলে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বরে বিদ্যানন্দের জন্ম৷ 

‘‘এটা বিদেশি ফান্ড বা সরকারি কোনো সহযোগিতা না’’

This browser does not support the audio element.

আপনি কি শুরু থেকেই বিদ্যানন্দের সঙ্গে আছেন?

আমি শুরু থেকেই আছি৷ আমাদের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাস, তার বড় বোন, চট্টগ্রামের নাফিস চৌধুরী, আমিসহ আরো কয়েকজন শুরু থেকেই ভলেন্টিয়ার হিসেবে ছিলাম৷ চারজন এখনো নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি৷

এখন আপনারা কী কাজ করছেন?

আমাদের এখন ১৩টি ব্রাঞ্চ৷ এখানে প্রায় ২ হাজারের মতো বাচ্চা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন৷ ৬টি এতিমখানা, বাসন্তি প্রজেক্ট আছে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে৷ এই জায়গাগুলোতে প্রচুর কাজ৷ ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এই ক'বছরেই দেশের অন্যতম বড় স্বেচ্ছাসেবা প্রতিষ্ঠান হয়েছে এটি৷ আমাদের যে কাজ সেটা অর্থনৈতিকভাবে কাউকে সম্পৃক্ত করে করা সম্ভব৷ কিন্তু এই কাজটা আমরা করে যাচ্ছি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে৷ এখানে কিছু কর্মী আছেন যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ শুরু করলেও এখন তাদের খুব সামান্য একটা সম্মানী দেওয়া হয়৷ আমরা সবাই মিলেই এই প্রতিষ্ঠানটাকে দাঁড় করিয়েছি

আপনাদের অর্থের সংস্থান হয় কিভাবে?

‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন' ও ‘এক টাকায় আহার' নামে আমাদের দুটি ফেসবুক পেজ আছে৷ কয়েক মিলিয়ন মানুষ তা দেখেন৷ ওইখানে খুব ছোট থেকে শুরু করে কর্পোরেট লেভেল পর্যন্ত আমাদের সাহায্য করে৷ এটা কিন্তু ব্যক্তিগত সহায়তা৷ এটা কোনো কর্পোরেট সহযোগিতা না৷ এটা বিদেশি ফান্ড বা সরকারি কোনো সহযোগিতা না৷ 

এই কাজ করতে গিয়ে আপনারা কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন?

প্রথমত, আমরা যারা এখানে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, তারা ব্যক্তিগত জীবনের চাওয়া-পাওয়া থেকে অনেকটা সরে এসেছি৷ শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্য ছোট পরিসরে কিছু একটা করেন, যাতে জীবন চালাতে পারেন৷ তাদের কিন্তু পরিবারসহ স্বজনদের কাছে নানা ধরনের জবাবদিহিতা করতে হয়৷ কারণ, লেখাপড়া শিখে আমি কী করছি? দ্বিতীয়ত হলো, এখানে ভলেন্টিয়ারের সংখ্যা কিন্তু খুবই কম৷ ফলে আমরা যারা আছি, তাদের দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কাজ করতে হয়৷ দেখা গেল ৫০ জনও থাকে না৷ কিন্তু আমরা কাজ করি ৫০০ জনেরও বেশি মানুষের৷ তৃতীয়ত হলো, প্রতিদিন আমরা প্রায় ২ হাজার পথশিশুকে খাবার দেই৷ এখন আমরা চিন্তা করি, তাদের যদি থাকার জায়গা দিতে পারতাম, পড়ার একটা ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম! এখন তো দিনে খাবার দেই, রাতেও যদি দিতে পারতাম! এই ব্যবস্থা করার সুযোগ আমাদের আছে, কিন্তু আমরা প্রশাসনের অনুমতি পাই না৷

এটাকে আপনারা কতদূর নিতে চান? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আমরা আসলে এটাকে ধরে রাখতে চাই৷ এখন আমরা যতটুকু পাই তা দিয়েই কাজ চালিয়ে নেই৷ আমরা ৬টা এতিমখানা করেছি ৪০ একর জায়গার উপর৷ সেখানে ৪০০ বাচ্চা থাকে৷ এই জায়গাটা নিজেরা কিনেছি৷ ওইখানে ওরা সব ধরনের কাজ শিখছে৷ ওরা যখন বড় হবে, ওদের নিয়েই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা (ঠিক করা হবে)৷ আমরা আসলে অনুপ্রেরণা হতে চাই৷ যে কোনো ছোট জায়গা থেকেই বড় ধরনের কাজ করা যায়, সেটা মানুষকে শেখাতে চাই৷ প্রতিষ্ঠান কত বড় হলো সেটা বিবেচ্য নয়৷ অনুপ্রেরণা হওয়াটাই বড় কথা৷ 

১৩টি শাখায় কত শিশুকে সুবিধা দিচ্ছেন?

২ হাজারের মতো শিশুকে৷ এর মধ্যে ৪০০ এতিম শিশু৷ আমাদের আরেকটা সেগমেন্ট আছে৷ সেখানেও দুই থেকে আড়াই হাজার শিশু এক টাকায় খাবারের সুবিধাটা পায় প্রতিদিন৷

বাংলাদেশে পথশিশুর সংখ্যা বাড়ছে, নাকি কমছে?

এ নিয়ে আমাদের কোনো গবেষণা নেই৷ ঈদের আগে মনে হয় বেড়ে যায়৷ তবে বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে হয়৷ তবে সঠিক হিসাব নেই

যারা কাজ করছেন তারা কি কোনো সম্মানী নেন?

আর্থিক সুবিধা নির্বাহী কমিটিতে যারা আছেন, তারা নেন না৷ তবে ১৩টি ব্রাঞ্চ চালানোর জন্য কিছু মানুষ কাজ করেন৷ যেমন ধরেন ডকুমেন্টেশন তৈরি করা৷ এই ধরনের কাজের সঙ্গে যারা আছেন, তারা খুব কম সম্মানী নেন৷

যদি কেউ স্বেচ্ছাসেবী  হিসেবে কাজ করতে চান , তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী হবে?

ইচ্ছা থাকা এবং যত দ্রুত সম্ভব সেটা কার্যকর করা দরকার৷ এখানে চিন্তা করার সুযোগ নেই৷ যতটুকু সাধ্য, ততটুকুর মধ্যে করে ফেলতে হবে৷ একটা উদাহরণ দেই৷ ভ্যালেনটাইন্স ডে-তে আমরা কিছু রিক্সাওয়ালাকে তার প্রিয় মানুষের জন্য শাড়ি দিয়েছি৷ সেটা স্ত্রী হতে পারে, মা-ও হতে পারে৷ আপনি ৫টা না পারেন একটা দেন৷ তাই বলছি, ভালো কাজের জন্য বেশি চিন্তা করার সুযোগ নেই৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ