আর্থিক সংকটে থাকা মানুষদের এক টাকায় এক বেলার খাবার দেয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন৷ আরো কিছু সেবামূলক উদ্যোগ আছে বাংলাদেশের অন্যতম এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির৷
বিজ্ঞাপন
খুব ছোট আঙ্গিকে শুরু করে এই পর্যন্ত আসার ইতিহাস এবং নানা উদ্যোগ সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন বিদ্যানন্দের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ৷
ডয়চে ভেলে: এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির চিন্তা আপনাদের মাথায় কিভাবে এলো?
ফারুক আহমেদ: আমরা এখানে যারা কাজ করি, তারা জীবনের কোনো-না-কোনো সময় একটা বাজে সেগমেন্ট থেকে এসেছি৷ সেটা থেকেই আসলে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বরে বিদ্যানন্দের জন্ম৷
‘‘এটা বিদেশি ফান্ড বা সরকারি কোনো সহযোগিতা না’’
আপনি কি শুরু থেকেই বিদ্যানন্দের সঙ্গে আছেন?
আমি শুরু থেকেই আছি৷ আমাদের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাস, তার বড় বোন, চট্টগ্রামের নাফিস চৌধুরী, আমিসহ আরো কয়েকজন শুরু থেকেই ভলেন্টিয়ার হিসেবে ছিলাম৷ চারজন এখনো নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি৷
এখন আপনারা কী কাজ করছেন?
আমাদের এখন ১৩টি ব্রাঞ্চ৷ এখানে প্রায় ২ হাজারের মতো বাচ্চা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন৷ ৬টি এতিমখানা, বাসন্তি প্রজেক্ট আছে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে৷ এই জায়গাগুলোতে প্রচুর কাজ৷ ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এই ক'বছরেই দেশের অন্যতম বড় স্বেচ্ছাসেবা প্রতিষ্ঠান হয়েছে এটি৷ আমাদের যে কাজ সেটা অর্থনৈতিকভাবে কাউকে সম্পৃক্ত করে করা সম্ভব৷ কিন্তু এই কাজটা আমরা করে যাচ্ছি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে৷ এখানে কিছু কর্মী আছেন যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ শুরু করলেও এখন তাদের খুব সামান্য একটা সম্মানী দেওয়া হয়৷ আমরা সবাই মিলেই এই প্রতিষ্ঠানটাকে দাঁড় করিয়েছি৷
আপনাদের অর্থের সংস্থান হয় কিভাবে?
‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন' ও ‘এক টাকায় আহার' নামে আমাদের দুটি ফেসবুক পেজ আছে৷ কয়েক মিলিয়ন মানুষ তা দেখেন৷ ওইখানে খুব ছোট থেকে শুরু করে কর্পোরেট লেভেল পর্যন্ত আমাদের সাহায্য করে৷ এটা কিন্তু ব্যক্তিগত সহায়তা৷ এটা কোনো কর্পোরেট সহযোগিতা না৷ এটা বিদেশি ফান্ড বা সরকারি কোনো সহযোগিতা না৷
অন্যরকম বাংলাদেশের গল্প!
কে বলে মানুষ শুধু নিজের কথাই ভাবে! বাংলাদেশে এখনও এমন অনেকেই আছেন যারা তাদের জীবনের বড় সময়টাই কাটিয়ে দিচ্ছেন সমষ্টির জন্যে৷ এমনই কিছু উদ্যোগের গল্প থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Gram Pathagar Andolon
পক্ষাগাতগ্রস্থদের ভরসা
১৯৬৯ সালে বাংলাদেশে আসেন ব্রিটিশ সাইকোথেরাপিস্ট ভ্যালেরি টেইলর৷ ১৯৭৯ সালে স্থানীয় একটি দল নিয়ে গড়ে তোলেন সেন্টার ফর দ্য রিহেবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড৷ পক্ষাগাতগ্রস্তদের চিকিৎসায় সিআরপি এখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে আস্থার নাম৷ যার পরিচিতি ছাড়িয়ে গেছে দেশের গণ্ডি৷ চিকিৎসা, থেরাপি, পুনর্বাসন, পক্ষাগাতগ্রস্থদের জন্য সহায়ক যন্ত্রপাতি তৈরি ছাড়াও সিআরপির রয়েছে ইনস্টিটিউট, নার্সিং কলেজ, স্কুল৷
ছবি: Centre for the Rehabilitation of the Paralysed
এক টাকায় আহার
সবার জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ২০১৩ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন কিশোর কুমার দাশ৷ ২০১৬ সালে তারা চালু করে এক টাকার আহার৷ প্রকল্পটির আওতায় দরিদ্র শিশু ও বৃদ্ধরা এক টাকায় পেট ভরে খেতে পান৷ প্রায় দুই হাজার পথশিশুকে তারা প্রতিদিন খাবার দেন৷ এই খাবারের খরচ দিতে পারেন যে কেউ৷ এজন্য যেতে হবে তাদের ওয়েবসাইটে৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
পোস্টার থেকে স্কুলব্যাগ
১৩টি শাখায় দুই হাজার পথশিশুকে পড়াশোনার সুযোগও করে দিয়েছে বিদ্যানন্দ৷ আছে নারীদের জন্য বাসন্তি প্রকল্প৷ ৪০ একর জায়গার উপরে তাদের আছে ছয়টি এতিমখানা৷ সেখানে ৪০০ শিশু থাকছে৷ সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পোস্টার দিয়ে শিশুদের জন্য তারা ব্যাগ তৈরি করেছে৷ এসব উদ্যোগের পাশাপাশি এবারের বইমেলায় তারা আলোচনায় এসেছে পুরনো মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও ওষুধের বিনিময়ে নতুন বই দিয়ে।
ছবি: Abdul Gani
প্রবীণদের আশ্রয়
শেষ বয়সে এসে অনেক প্রবীণই হয়ে যান একা৷ অনেকের দায়িত্ব নিতে চান না সন্তানেরা৷ তাদের জন্য ভরসা চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার৷ ২০১৫ সালে যা গড়ে তোলেন মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিঠু হালদার৷ মিরপুরে নিজের ভাড়া করা দুটি বাড়িতে এখন পর্যন্ত ৭৫ জন বৃদ্ধকে সেবা দিয়েছেন তারা৷ ৭৫ জনের মধ্যে ১১ জন মারা গেছেন৷
ছবি: Child & Old Age Care
ইশকুল যখন মজার
সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠদান করে মজার ইশকুল৷ ২০১৩ সালে ঢাকার শাহবাগে ১৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হয়৷ পরে তাদের স্কুল কার্যক্রম শুরু হয় ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়৷ ২০১৮ সালে শিশুদের পড়ানোর পাশাপাশি খাবার কর্মসূচীও চালু করে তারা৷ বর্তমানে তাদের চারটি খোলা আকাশের নীচে, চারটি স্থায়ীসহ মোট আটটি স্কুল রয়েছে৷ আছে ১৫০০-র বেশি শিক্ষার্থী৷
ছবি: Mojar Ishkul
প্রতি গ্রামে পাঠাগার
‘প্রতি গ্রামে হোক একটি পাঠাগার,’ এমন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন৷ ২০০৬ সালে সাত তরুণ শুরু করেন এই উদ্যোগ৷ টাঙ্গাইলে ভূঞাপুরে তারা গড়ে তোলেন অর্জুনা অন্বেষা পাঠাগার৷ এরপর একে একে ৫৮টি পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে৷ এখানেই শেষ নয়৷ পাঠাগারের উদ্যোক্তা আর সদস্যদের নিয়ে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক বিভিন্ন কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা৷
ছবি: Gram Pathagar Andolon
পাঠাগার থেকে বিদ্যালয়
পাঠাগারের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য স্কুল কলেজ গড়ে তুলছেন গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনের কর্মীরা৷ সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে ভূঞাপুর যমুনার কোল ঘেঁষা একটি গ্রামে গড়ে তুলেছেন হাজী ইসমাইল খাঁ কলেজ ও বঙ্গবন্ধু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ রংপুরের গোবিন্দগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেছেন শ্যামল-মঙ্গল-রমেশ স্মৃতি বিদ্যা নিকেতন৷
ছবি: Gram Pathagar Andolon
অসহায়দের বন্ধু শওকত
যেসব মানুষের ধারে-কাছে কেউ ঘেঁষেন না, যারা ক্ষত হয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে রাস্তায় ধুকে ধুকে মৃত্যুর প্রহর গুণেন, তাদের ত্রানকর্তা পুলিশ কনস্টেবল মুহাম্মদ শওকত হোসেন৷ বছরের পর বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন৷ পরম আদরে মানুষগুলোকে তিনি রাস্তা থেকে তুলে আনেন৷ তাদের সেবা-যত্ন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন৷ প্রতি মাসের বেতন, কিংবা উৎসব ভাতা নিজের জন্য নয়, খরচ করেন তিনি এই মানুষদের পেছনেই৷
ছবি: Privat
মানুষ প্রাণীদের জন্যেও
আহত প্রাণীদের সহায়তা, প্রাণী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার বা ‘প’ ফাউন্ডেশন৷ সংগঠনটির ফেসবুকে পেইজে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের যাত্রা শুরু হয়৷ পরবর্তীতে তারা প্রাণীদের পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলে৷ অসুস্থ প্রাণীদের চিকিৎসাসহ মানুষের মধ্যে পশু-পাখির প্রতি ভালোবাসার উদ্রেক ঘটাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন তাদের কার্যক্রম রয়েছে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Reuters/A. Song
9 ছবি1 | 9
এই কাজ করতে গিয়ে আপনারা কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন?
প্রথমত, আমরা যারা এখানে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, তারা ব্যক্তিগত জীবনের চাওয়া-পাওয়া থেকে অনেকটা সরে এসেছি৷ শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্য ছোট পরিসরে কিছু একটা করেন, যাতে জীবন চালাতে পারেন৷ তাদের কিন্তু পরিবারসহ স্বজনদের কাছে নানা ধরনের জবাবদিহিতা করতে হয়৷ কারণ, লেখাপড়া শিখে আমি কী করছি? দ্বিতীয়ত হলো, এখানে ভলেন্টিয়ারের সংখ্যা কিন্তু খুবই কম৷ ফলে আমরা যারা আছি, তাদের দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কাজ করতে হয়৷ দেখা গেল ৫০ জনও থাকে না৷ কিন্তু আমরা কাজ করি ৫০০ জনেরও বেশি মানুষের৷ তৃতীয়ত হলো, প্রতিদিন আমরা প্রায় ২ হাজার পথশিশুকে খাবার দেই৷ এখন আমরা চিন্তা করি, তাদের যদি থাকার জায়গা দিতে পারতাম, পড়ার একটা ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম! এখন তো দিনে খাবার দেই, রাতেও যদি দিতে পারতাম! এই ব্যবস্থা করার সুযোগ আমাদের আছে, কিন্তু আমরা প্রশাসনের অনুমতি পাই না৷
এটাকে আপনারা কতদূর নিতে চান? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আমরা আসলে এটাকে ধরে রাখতে চাই৷ এখন আমরা যতটুকু পাই তা দিয়েই কাজ চালিয়ে নেই৷ আমরা ৬টা এতিমখানা করেছি ৪০ একর জায়গার উপর৷ সেখানে ৪০০ বাচ্চা থাকে৷ এই জায়গাটা নিজেরা কিনেছি৷ ওইখানে ওরা সব ধরনের কাজ শিখছে৷ ওরা যখন বড় হবে, ওদের নিয়েই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা (ঠিক করা হবে)৷ আমরা আসলে অনুপ্রেরণা হতে চাই৷ যে কোনো ছোট জায়গা থেকেই বড় ধরনের কাজ করা যায়, সেটা মানুষকে শেখাতে চাই৷ প্রতিষ্ঠান কত বড় হলো সেটা বিবেচ্য নয়৷ অনুপ্রেরণা হওয়াটাই বড় কথা৷
১৩টি শাখায় কত শিশুকে সুবিধা দিচ্ছেন?
২ হাজারের মতো শিশুকে৷ এর মধ্যে ৪০০ এতিম শিশু৷ আমাদের আরেকটা সেগমেন্ট আছে৷ সেখানেও দুই থেকে আড়াই হাজার শিশু এক টাকায় খাবারের সুবিধাটা পায় প্রতিদিন৷
বাংলাদেশে পথশিশুর সংখ্যা বাড়ছে, নাকি কমছে?
এ নিয়ে আমাদের কোনো গবেষণা নেই৷ ঈদের আগে মনে হয় বেড়ে যায়৷ তবে বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে হয়৷ তবে সঠিক হিসাব নেই৷
যারা কাজ করছেন তারা কি কোনো সম্মানী নেন?
আর্থিক সুবিধা নির্বাহী কমিটিতে যারা আছেন, তারা নেন না৷ তবে ১৩টি ব্রাঞ্চ চালানোর জন্য কিছু মানুষ কাজ করেন৷ যেমন ধরেন ডকুমেন্টেশন তৈরি করা৷ এই ধরনের কাজের সঙ্গে যারা আছেন, তারা খুব কম সম্মানী নেন৷
যদি কেউ স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে চান , তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী হবে?
ইচ্ছা থাকা এবং যত দ্রুত সম্ভব সেটা কার্যকর করা দরকার৷ এখানে চিন্তা করার সুযোগ নেই৷ যতটুকু সাধ্য, ততটুকুর মধ্যে করে ফেলতে হবে৷ একটা উদাহরণ দেই৷ ভ্যালেনটাইন্স ডে-তে আমরা কিছু রিক্সাওয়ালাকে তার প্রিয় মানুষের জন্য শাড়ি দিয়েছি৷ সেটা স্ত্রী হতে পারে, মা-ও হতে পারে৷ আপনি ৫টা না পারেন একটা দেন৷ তাই বলছি, ভালো কাজের জন্য বেশি চিন্তা করার সুযোগ নেই৷
প্রিয় পাঠক, আপনি কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
হাজারো গরিবের ইফতারি
সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে ইফতার বিতরণ করে আসছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’৷ নিজেদের তৈরি এই ইফতার বিতরণের কর্মযজ্ঞ দেখে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
যেভাবে শুরু
২০১৩ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা করেন কিশোর কুমার দাশ৷ ব্যক্তিগত জীবনে ‘অনটনকে’ এমন কাজে উদ্বুদ্ধ হওয়ার প্রেরণা হিসাবে উল্লেখ করেন তিনি৷ ‘এক টাকায় আহার’ নামে সারা বছর কার্যক্রম চললেও রোজার মাসে বিনামূল্যে ইফতারির ও সেহরি বিতরণ করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
বিনা মূল্যের ইফতারের আওতা
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহসহ দেশের মোট আটটি শাখার মাধ্যমে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে বিনামূল্যের ইফতারির প্যাকেট৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
ইফতারি তৈরির কর্মযজ্ঞ
ঢাকার পল্লবীতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে ইফতারি তৈরি করেন স্বেচ্ছাসেবকরা৷ প্রতিদিন সেখানে তৈরি হয় দুই হাজার প্যাকেট ইফতারি৷ এরপর গাড়িতে পৌঁছে যায় বস্তিবাসীদের কাছে৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
হরেক রকমের ইফতারি
ইফতারে বুট, পেঁয়াজু ও জিলাপিসহ অন্যান্য খাবার তৈরি করা হয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কিচেনে৷ মুখরোচক এসব খাবার যাঁরা তৈরি করেন, তাঁদের প্রায় সবাই স্বেচ্ছাসেবক৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
খাবার তৈরি ও প্যাকেজিং
খাবার তৈরির পর সেসব প্যাকেজিংও করেন স্বেচ্ছাসেবকরা৷ এরপর খাবার নিয়ে গাড়ি ছুটে যায় ছিন্নমূল মানুষের গন্তব্যে৷ প্রথমে শিশুদের খাবার দেওয়ার পর বয়স্ক ও নারীদের খাবার দেন তাঁরা৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
টার্গেট আড়াই লাখ
এ বছর আড়াই লাখ ইফতার বিতরণের টার্গেট রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতি বছর রমজানে এই ইভেন্টটা করি৷ আমরা আড়াই লাখ মানুষের কাছে ইফতার পৌঁছে দেবো৷ তার মধ্যে রান্না খাবার থাকবে ১ লাখ আর শুকনা খাবার দেড় লাখের মতো৷’’
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী
ইফতার ও সেহরির বাইরে ‘এক টাকায় আহার’ কর্মসূচি মিলিয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের রয়েছে একটি দক্ষ ও আন্তরিক স্বেচ্ছাসেবক দল৷ ‘‘আমি এক মাসের জন্য বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে কাজ করছি৷ এখানে এসেছি মূলত মানবসেবার করার জন্য, ভালোবাসা থেকেই৷ বস্তিবাসী ও ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে একত্রিত হয়ে তাঁদের সেবা করতে পারছি,’’ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন মমিনুল ইসলাম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
কাজের ফাঁকে বিদ্যানন্দে
ফেসবুক থেকে দেখে জেনে বিদ্যানন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন অনেকে৷ স্বেচ্ছাসেবক আরিফ মেহেদী ফরিদাবাদ আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী৷ রোজার মাসে রান্নার দাঁয়িত্ব পড়েছে তাঁর কাঁধে৷ ‘‘আমি মাদ্রাসায় পড়ি৷ বাকি সময়টাতে যে ছুটির সময় থাকে, ক্লাস যে সময় কম থাকে, সে সময় বিদ্যানন্দে এসে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করি,’’ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন মেহেদী৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
শৃঙ্খলার দৃষ্টান্ত
বাংলাদেশে ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণের সময় অনেক ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলেও বিদ্যানন্দের কর্মসূচি এক্ষেত্রে অনেকটা ব্যতিক্রম৷ তাদের কার্যক্রম যেন দীর্ঘদিন ধরে চেনা সবার কাছে৷ সুশৃঙ্খল লাইনে দাঁড়িয়ে শিশু, বৃদ্ধ আর নারীরা খাবার গ্রহণ করেন৷
ছবি: bdnews24.com/A.M. Ove
অর্থ আসে অনুদানে
বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার জানান, প্রথমে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে শুরু করলেও এখন মানুষের অনুদানেই চলে সংগঠনটি৷ খাবার বিতরণ দিয়ে শুরু হওয়া সংগঠনের এখন এতিমখানা, স্কুল, গার্মেন্টস, নারীদের হোস্টেলসহ বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে৷ গত বছর ছয় কোটি টাকার মতো অনুদান এসেছিল বলে জানান কিশোর কুমার৷