1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষা কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন আসছে

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৬ নভেম্বর ২০২০

দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার৷ দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিভাগ তুলে দেওয়া হচ্ছে৷ পাবলিক পরীক্ষাও হবে একবারই৷ ২০২২ সাল থেকে শিক্ষার এই কারিকুলাম চালু হবে৷

ঢাকার এক স্কুল
ছবি: Bdnews24.com

এর আগে পুরো ব্যবস্থাটি চূড়ান্ত করা হবে৷ শিক্ষা ব্যবস্থার এই পরিবর্তনকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন শিক্ষাবিদেরা৷ তবে ভালো শিক্ষক ছাড়া এই পরিবর্তনে কোন সুফল মিলবে না বলেই মনে করছেন তারা৷ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই পরিবর্তনগুলো ইতিবাচক৷ আসলেই তো শিক্ষার্থীদের কাঁধে বইয়ের ব্যাগের যে বোঝা এটা কমানো দরকার৷ পরীক্ষা একবারই হওয়া ভালো৷ তবে এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা ভালো শিক্ষকের সংকট৷ যে ব্যবস্থাই করা হোক না কেন, এর জন্য প্রথম দরকার ভালো শিক্ষক৷ আগে সেটার ব্যবস্থা করতে হবে৷ তাহলেই এই পরিবর্তন কাজে আসবে৷ এখন এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রমানিত হল সরকারের আগে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো ঠিক ছিল না৷’’

নতুন যে পরিবর্তন করা হচ্ছে, সেখানে দশম শ্রেণী শেষে ঐ শ্রেণীর পাঠ্যসূচির ওপর প্রথম পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে৷ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী শেষে দু'টি পাবলিক পরীক্ষা হবে, দু'টি মিলিয়ে হবে চূড়ান্ত ফল৷ আর তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত শতভাগ শ্রেণী কে মূল্যায়ন হবে৷ পাঠদানের সময় ‘ধারাবাহিক মূল্যায়ন’ (শ্রেণীকে মূল্যায়ন) ও বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে ‘সামষ্টিক মূল্যায়নের’ ভিত্তিতে শিক্ষার্থী পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এরই মধ্যে বিষয়টি সংসদে তুলে আলোচনাও করেছেন৷

এই পরিবর্তনগুলো ইতিবাচক: অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় পরীক্ষা নিয়ে এমনই ব্যবস্থা চূড়ান্ত করেছে দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা ও দেশের শিক্ষাবিদদের মতামতের আলোকে পরীক্ষা নিয়ে এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে৷ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এই রূপরেখা তৈরি করেছে৷ শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষাবিদদের নিয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এটা করা হচ্ছে৷

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে৷ এটা আমরা ওয়েবসাইটে দিয়েছিলাম৷ গত ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সাধারণ মানুষ মতামত দিয়েছেন৷ এখন তাদের সেই মতামতগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে৷ আগামী ডিসেম্বরেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবদের নিয়ে গঠিত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে৷ ওই বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেলে আমরা সিলেবাস প্রণয়নের কাজ শুরু করব৷ ২০২২ সাল থেকেই এই কারিকুলাম অনুযায়ী লেখাপড়া হবে৷’’

নতুন এই ব্যবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা কী ইংলিশ মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের থেকে পিছিয়ে পড়বে না? জানতে চাইলে অধ্যাপক সাহা বলেন, ‘‘এটা এখনই চূড়ান্ত করে বলা যাচ্ছে না৷ আমরা উভয় শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে একটা সমন্বয়ের চেষ্টা করছি৷’’ তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোন পরীক্ষাই হবে না? কিভাবে মূল্যায়ন হবে? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা শিশুদের জন্য কোন বই রাখব না৷ ক্লাস ওয়ানে একটি বই থাকবে, এরপর আস্তে আস্তে বাড়বে৷ যাতে শিশুরা বইয়ের বোঝার চাপে না পড়ে৷’’ বর্তমান সরকারই তো আগের কারিকুলাম ও শিক্ষা পদ্ধতি ঠিক করেছিল৷ তাহলে কি সেই পদ্ধতি ঠিক ছিল না? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এটার সংস্কার করছি৷ বৈশ্বিক চাহিদা বিবেচনায় সবকিছুতেই পরিবর্তন আনতে হয়৷ এখানে আনা হচ্ছে৷’’ 

২০২২ সাল থেকে এই কারিকুলাম অনুযায়ী লেখাপড়া হবে: এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা

This browser does not support the audio element.

জানা গেছে, নতুন কারিকুলামে সব শিক্ষার্থীকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ১০টি বিষয় পড়তে হবে৷ এর মধ্যে পাঁচটি বিষয় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞানে ৫০ শতাংশ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন হবে৷ এছাড়া বাকি পাঁচটি বিষয়- জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ভালো থাকা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতিতে পুরোটাই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে৷ ২০২৫ সালে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে৷ বর্তমানে নবম ও দশম শ্রেণীর পাঠ্যসূচি মিলিয়ে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়৷

আর একাদশ শ্রেণী শেষে ও দ্বাদশ শ্রেণী শেষে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে৷ তবে একাদশ ও দ্বাদশ  শ্রেণীর সম্মিলিত ফলের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে৷ বর্তমানে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়৷ এই স্তরে ৩০ শতাংশ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও ৭০ শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন হবে৷

অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, ‘‘দশম শ্রেণী পর্যন্ত কোন বিভাগ না থাকাই ভালো৷ কারণ শিক্ষার্থীরা তখন তো ছোট থাকে, ফলে বুঝতে পারে না, কোন বিভাগে পড়বে৷ অভিভাবকরা তাদের উপর যে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন সেটাই তারা মেনে নিতে বাধ্য হন৷ এখন ইন্টারমিডিয়েটে গিয়ে বিভাগ নিতে হলে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে, তিনি কোন বিভাগে পড়বেন৷ এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও হতাশাও অনেক কমে যাবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ