ভাল্লুকের গল ব্লাডার থেকে নেওয়া বাইল চীনা ভেষজ শাস্ত্রে একটি ওষুধ৷ ভাল্লুকগুলোকে অতি ছোট খাঁচায় রেখে কয়েকদিন অন্তর তাদের পিত্তাশয়ে সিরিঞ্জ ঢুকিয়ে পাচক রস বার করা হয়৷ লাওসে এই অমানুষিক প্রথার অন্ত ঘটানোর চেষ্টা চলেছে৷
ভিয়েতনামে খাঁচায় বন্দি ভাল্লুকছবি: DW/A. Wick
বিজ্ঞাপন
ভাল্লুকের গল ব্লাডার থেকে তৈরি ওষুধ
05:27
This browser does not support the video element.
স্ট্রবেরি মার্মালেড পেলে আর কুং-ফু-কে থামানো যায় না! কুং-ফু হলো এই ভাল্লুক-বাঁচাও-কেন্দ্রের সবচেয়ে কচি বাসিন্দা৷ বয়স মাত্র চার মাস৷ বেআইনিভাবে যারা পশুপাখি বেচে-কেনে, তাদের কাছ থেকে এই খোকা ভাল্লুকটিকে যখন বাজেয়াপ্ত করা হয়, তখন তার অবস্থা ছিল খুবই নাজুক৷ ফাতং ইয়াং তাকে খাইয়ে-দাইয়ে আবার সুস্থ করে তুলেছেন৷
‘ফ্রি দ্য বেয়ার্স’ বা ‘ভাল্লুকদের-মুক্ত-করো’ সংগঠনের পশুপ্রেমীরা এ-বছর কুং-ফু ছাড়া আরো তিনটি বাচ্চা ভাল্লুককে উদ্ধার করেছেন৷ ভাল্লুকদের দেখাশোনা করেন ফাতং ইয়াং৷ তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত বাচ্চা ভাল্লুকরা তাদের জীবনের প্রথম তিন বছর মায়ের সঙ্গে কাটায়৷ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়েদের মেরে ফেলে বাচ্চা ভাল্লুকগুলোকে অতি খারাপ অবস্থায় রাখা হয়৷ কুং-ফু-র ভাই বন্দিদশাতেই মারা গেছে, সম্ভবত না খেতে পেয়ে৷ ভাল্লুকদের জন্যে একটা মারাত্মক অভিজ্ঞতা৷’’
ভাল্লুক সুরক্ষা কেন্দ্রটি লাওসের উত্তরে, একটি সুবিখ্যাত জলপ্রপাতের কাছে৷ যে সব টুরিস্ট জলপ্রপাত দেখতে আসেন, তারা একবার ভাল্লুকদের এনক্লোজারটাও ঘুরে আসেন৷ লিউক নিকলসন টুরিস্টদের বোঝান, ভাল্লুকদের পিত্তাশয় থেকে নেওয়া পাচক রস কীভাবে চীনের প্রথাগত ভেষজ শাস্ত্রে ওষধি বলে গণ্য হয় আর বিপুল দামে বিক্রি হয়৷
হুমকির মুখে পশুরাজ ও অন্যান্য প্রাণী
জীববৈচিত্র্যকে হুমকির হাত থেকে কীভাবে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা৷ কেননা হুমকির মুখে রয়েছে হাঙর, বরফ চিতা, আফ্রিকার সিংহ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হুমকির মুখে পশুরাজ
আফ্রিকার সিংহ হিসেবে পরিচিত হলেও বলকান এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে একসময় তারা রাজত্ব করে বেড়িয়েছে৷ এদের সংখ্যা বর্তমানে এতই কমে গেছে যে কেবল ভারতের কিছু অঞ্চল এবং সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে এদের দেখা মেলে৷
ছবি: picture alliance/dpa-Zentralbild
রাশিয়ার বৃদ্ধ মানুষ
সায়গা নামে হরিণের মতো দেখতে এই প্রাণীটি কিন্তু বরফ যুগের প্রাণী৷ এই প্রাণীদের এখন কেবল রাশিয়ায় পাওয়া যায়৷ পাচারের কারণে দিন দিন কমছে এদের সংখ্যা৷ প্রাণীগুলো শুধু যে দিনে ১২০ মাইল হাঁটতেই পারে তাই না, সাঁতরাতেও পারে এরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
পাখনার কারণে হাঙর শিকার
হাঙরের পাখনা জাপান ও চীনে খুবই জনপ্রিয়৷ এ কারণে জেলেরা জীবন্ত হাঙরের বাচ্চা ধরে এদের পাখনা কেটে আবার তাদের সমুদ্রে ফেলে দেয়৷ ফল এদের মৃত্যু৷ এছাড়া হাঙরের মাংসও ঐসব অঞ্চলে খাওয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লম্বা করাত
লম্বা করাতের হাঙর এখন বিলুপ্তির পথে৷ প্রায় আট মিটার লম্বা হয় এই করাত৷ আর করাতের কারণেই খুব সহজে জেলেদের জালে ধরা পড়ে এরা৷
ছবি: TORSTEN BLACKWOOD/AFP/Getty Images
বিষের শিকার শিকারীরা
ডাইক্লোফেনাক শিকারী পাখিদের জন্য শত্রু৷ দক্ষিণ এশিয়া, স্পেন ও ইটালিতে গরু, শুকর আর ঘোড়াদের এই বেদনানাশক দেয়া হয়৷ আর এদের মৃত্যু হলে যেসব শিকারি পাখি এদের খায় খায় তারা কিডনি নষ্ট হওয়ার কারণে মারা যায়৷
ছবি: Vulture Conservation Foundation
চিড়িয়াখানার শরণার্থী
এশিয়ার বন্য গাধাদের এখন নতুন উপনাম হচ্ছে চিড়িয়াখানার শরণার্থী৷ গত ১৫ বছরে এদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/D. & M. Sheldon
সিল মাছ
এদের চামড়া খুব মূল্যবান৷ এ কারণে শিকারীদের চোখ থাকে এদের উপর৷ তবে গত কয়েক বছর ধরে প্রাণী অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এদের রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে৷ এমনকি সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্লাস্টিক যখন কচ্ছপের খাবার
সাড়ে ২২ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে বসবাস করছে কচ্ছপরা৷ কারণ বিবর্তনের সাথে অভিযোজন করার দারুণ ক্ষমতা রয়েছে এদের৷ তবে মানুষ প্রায়ই এদের ডিম চুরি করে এবং সমুদ্রে প্লাস্টিকসহ অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য বাড়ার কারণে মৃত্যুর মুখে পড়ে এসব কচ্ছপ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মেরু ভাল্লুক
মেরু ভাল্লুকের অবস্থান তখনই শক্ত হয়, যখন পায়ের নীচে কঠিন বরফ থাকে৷ কেবল আর্কটিকে এদের পাওয়া যায়৷ সেখানে শক্ত বরফখণ্ডের নীচে এরা ভেসে বেড়ায়৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরফ গলে যাওয়ায় এদের লুকিয়ে থাকা কঠিন হচ্ছে৷ ফলে সহজেই শিকারীদের হাতে ধরা পড়ছে এরা৷ কমে যাচ্ছে এদের সংখ্যা৷
ছবি: picture alliance/dpa
স্টিং রে মাছের কাটা
এ ধরনের স্টিং রে মাছদের যে কাটা থাকে তা খুব সহজেই জালে ধরা পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/ZB
10 ছবি1 | 10
‘ফ্রি দ্য বেয়ার্স' সংগঠনের লিউক নিসলসন জানালেন, ‘‘ভাল্লুকের গল ব্লাডার থেকে বাইল নেওয়ার খামারগুলোয় ভাল্লুকদের অতি ছোট খাঁচায় রাখা হয়; ভাল্লুকরা নিজেরা যতো বড়, প্রায় সেইরকম ছোট৷ এভাবে তারা বিশ বছর অবধি বাঁচে ও নিয়মিতভাবে সিরিঞ্জ দিয়ে তাদের পিত্তাশয় থেকে পাচক রস বার করে নেওয়া হয়৷ কল্পনা করুন, প্রতি কয়েকদিন অন্তর তাদের এই অত্যাচার সহ্য করতে হয়, অথচ তাদের খেতে দেওয়া হয় অতি সামান্য৷’’
‘উর্সুস থিবেটানুস'
পরিবেশ সচেতনতা ছাড়া প্রাণিবৈচিত্র্যের জন্য সংগ্রাম করা সম্ভব নয়৷ সেজন্য স্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়মিতভাবে ভাল্লুক সুরক্ষা কেন্দ্রে আনা হয়৷ ‘উর্সুস থিবেটানুস’ বা এশিয়ান ব্ল্যাক বেয়ার যে তাদের দেশেও আছে, লাওসের জঙ্গলে ঘোরাফেরা করছে, ছেলেমেয়েদের অনেকেই সেকথা জানে না৷ ফাতং ইয়াং বলেন, ‘‘বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে আমাদের আরো অনেক বেশি প্রচার করা প্রয়োজন, কেননা সেখানে বন্যজন্তু শিকার প্রায় দৈনন্দিন ব্যাপার৷ শিশুদের বুঝতে হবে যে, ভাল্লুকরা বিশেষভাবে বিপন্ন, তারা শীঘ্রই গোটা লাওস থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে৷’’
ভাল্লুকপ্রেমীদের কাজ চলে বিদেশি দাতাদের বদান্যতায়৷ ভাল্লুকদের এই মুক্তাঙ্গণে আপাতত ৩৮টি ভাল্লুক রয়েছে, যদিও এনক্লোজারটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল দশটি ভাল্লুকের জন্য৷ অপরদিকে ভাল্লুকদের বনেজঙ্গলে ছেড়ে দেওয়াটা মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে, কেননা এই ভাল্লুকরা আর মানুষকে ভয় করে না৷
লুয়াং প্রাবাং থেকে গাড়িতে প্রায় এক ঘণ্টা দূরে ‘ফ্রি দ্য বেয়ার্স’ সংগঠন ভাল্লুকদের জন্য আরো বড় একটি এনক্লোজারের পরিকল্পনা করছে৷ এই আবাস হবে ২৬ হেক্টার চাষের জমি নিয়ে৷ প্রকল্পের খরচ হবে বিরাট, কিন্তু এখানে মোট দেড়শ' ভাল্লুক থাকতে পারবে৷ তার প্রয়োজনও পড়বে, কেননা লাওস সরকার অবশেষে ভাল্লুকদের গল ব্লাডার থেকে বাইল বার করার নারকীয় খামারগুলি বন্ধ করে দেবার কথা ভাবছেন৷
প্রতিবেদন: মিশায়েল আল্টেনহেনে/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
জীব-জন্তুর বসন্ত মানেই বাচ্চা-কাচ্চা
জার্মানির চিড়িয়াখানায় বেশিভাগ পর্যটকদের ভিড় হয় বসন্তকালে৷ কারণ জীব-জন্তুরা তখন সন্তানের জন্ম দেয়৷ আর এই শিশু প্রাণীরা সাধারণত হয় বুদ্ধিমান ও আবেগপ্রবণ৷
ছবি: Lutz Schnier
সত্যিকারের বানর প্রেমী
লাইপসিশ: চিড়িয়াখানায় বানর মা কুমিলিকে দেখে বোঝা যায় যে, মাতৃত্বের আনন্দ তার চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে৷ তবে ছোট্ট মেয়ে দিয়ারাকে দেখে মনে হচ্ছে যে, পৃথিবীর আলো দেখে সে এখনো তেমন খুশি হতে পারেনি৷ দিয়ারা যেন খানিকটা ভীত৷
ছবি: Zoo Leipzig
এত উঁচু অবস্থায় কেউ জন্মায় না
বার্লিন: জিরাফের মেয়ে বিনে, দুই মিটার উঁচু হওয়ার কারণে ৩০শে এপ্রিল ওর জন্মের সময় বেশ কষ্ট হয়েছে৷ তবুও বিনে জন্মের মাত্র ৪০ মিনিট পরেই হাঁটতে শুরু করে দেয়৷
ছবি: Tierpark Berlin
এত ছোট্ট প্রাণী !
ফ্রাংকফুর্ট: জীবজন্তুদের মধ্যে এই প্রাণীটিকেই সবচেয়ে ছোট প্রাণী দলের মধ্যে ফেলা হয়৷ অর্থাৎ মাত্র ২০ সেন্টিমিটার৷ দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা এই প্রাণীরা খুবই লাজুক স্বভাবের হয়৷ ওদের পা এতটাই ছোট যে, কোথাও পালিয়ে যেতে চাইলেও ওরা যেতে পারে না৷
ছবি: Zoo Frankfurt/Winfried Faust
মিশ্র দম্পতির সন্তান
ডর্টমুন্ড: কী খুসি, মেয়ে হয়েছে, মেয়ে! ও কিন্তু সত্যিকার অর্থেই মিশ্র দম্পতির বাচ্চা৷ বাবা আমারি এসেছে জার্মানির ইয়ারফুর্ট শহরের চিড়িয়াখানা থেকে আর মা সাকিনা দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা ভোগ করা মেয়ে৷
ছবি: Stadt Dortmund
চিড়িয়াখানায় বিশেষ শো
কোলন: এ বছর কার্নিভালের সময়, অর্থাৎ গোলাপি সোমবার কোলন চিড়িয়াখানায় দেড় কেজি ওজনের এই ভালুক ছানাটির জন্ম হয়৷ এটাও যেন ছিল কার্নিভালের উৎসবের মতোই আনন্দের৷ কারণ এর আগে কখনো এ চিড়িয়াখানায় এই বিশেষ দিনে কোনো প্রাণীর জন্ম হয়নি৷
ছবি: Kölner Zoo
তুমিই কি আমার ‘মা’?
মিউনিখ: লম্বা লেজওয়ালা ‘কাটা’ প্রজাতির মা বানর তার শিশুটিকে সাথে নিয়ে ‘হেলাব্রুন’-এর পশু পার্ক থেকে মিউনিখ শহরে এসেছে৷ এই প্রজাতি বানরের আসল বাড়ি কিন্তু মাদাগাস্কারে৷
ছবি: Münchener Tierpark Hellabrunn AG
বিদেশিদের সাথে যোগাযোগ
বার্লিন: পূর্ব আফ্রিকার এই জেব্রাদের অন্য পশুদের কাছাকাছি যেতে বা থাকতে কোনো ভয় নেই৷ যে কোনো জায়গাতেই ওরা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে৷
ছবি: Zoo Berlin
খেলনা নয়, আসল ভাল্লুক
হামবুর্গ: হামবুর্গের হাগেনবেক চিড়িয়াখানার প্রধান আকর্ষণ এখন ইগোর আর ইভান৷ এরা দু’জনই জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পৃথিবীর আলো দেখেছে৷