1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিকারুননিসায় ভর্তি বাণিজ্য আর কোচিং ব্যবসা!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির নানা কাহিনী বের হয়ে আসছে৷ অনিয়মের শীর্ষে ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য৷ এই অভিযোগের কথা স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী জানান সংবাদ মাধ্যমকে৷

Bangladesch  Selbstmord  Aritree Adhikari
ছবি: bdnews24.com

একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে অভিবাবকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় নবম শ্রেণির প্রভাতী শাখার শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী আত্মহত্যা করেন গত সোমবার্৷আর এই ঘটনায় স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিবাকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করলে শিক্ষা প্রশাসনের টনক নড়ে৷ শিক্ষা মন্ত্রনালয় প্রাথমিক তদন্তে তিন জন শিক্ষককে দায়ী করে তাদের বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছে৷ তারা হলেন: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদাউস, বেইলি রোড ক্যাম্পাসের প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শিক্ষক হাসনা হেনা৷ তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলাও হয়েছে৷

‘একজনকে ভর্তি করতে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা নেয়া হয়'

This browser does not support the audio element.

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বুধবার মন্ত্রনালয়ে এক সংবাদ সম্মেললনে জানান, ‘‘ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷'' সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘‘সেখানে ১০ লাখ টাকা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়৷ সেটা বন্ধ করতে আমরা লটারি সিস্টেম চালু করেছি৷ কিন্তু তারপরও দেখা যাচ্ছে অনুমোদনের  চেয়ে অনেক বেশি ছাত্র-ছাত্রী তারা ভর্তি করে৷ তার মানে, বোঝাই যায় কেন তারা অতিরিক্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করেন৷''তিনি বলেন, ‘‘আমরা নতুন কোনো শাখা খোলার অনুমোদন দেই না৷ কিন্তু তারা একটার পর একটা শাখা খোলে৷ এর উদ্দেশ্য সহজেই বোঝা যায়৷'' ভিকারুননিসা স্কুলের নবম শ্রেণির  শিক্ষার্থী  লামিয়া রাহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অরিত্রীর সঙ্গে যা ঘটেছে তা আরো অনেকের সঙ্গেই  ঘটেছে৷ অরিত্রী সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে৷ অন্যদের হয়তো মানসিক জোর বেশি থাকায় আত্মহত্যা করেনি৷ পরিস্থিতি বোঝার জন্য এক জনের আত্মহত্যা কি যথেষ্ট নয়? আমরা আর কোনো অরিত্রীকে হারাতে চাই না৷''

‘শিক্ষকদের কাছে কোচিং বা প্রাইভেট না পড়লে নানাভাবে অপমান করা হয়'

This browser does not support the audio element.

 

আরেকজন শিক্ষার্থী অনুস্কা রায় জানান, ‘‘ ছোটখাটো বিষয়েও আমাদের অপমান অপদস্থ করা হয়৷ অভিবাকদের ডেকে তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়৷ আমরা তাদের কাছ থেকে মানবিক আচরণ পাই না৷ আমরা সব সময় ভয়ের মধ্যে থাকি৷ শিক্ষকদের কাছে কোচিং না করলে, প্রাইভেট না পড়লে নানাভাবে অপমান করা হয়৷''

তিনি বলেন, ‘‘টিসি একটা বড় আতঙ্ক৷ কোনো কিছু হলেই টিসি দিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়৷''

দিলারা চৌধুরীর দুই মেয়ে পড়ে ভিকারুননিসা স্কুলে৷ তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার মেয়েও নির্যাতনের শিকার হয়েছে৷ তারা দুই বান্ধবী সব সময় একসঙ্গে বসে এটাই তাদের অপরাধ৷ এই কারণে তাদের অপমান-অপদস্থ করা হয়েছে৷ অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি৷ স্কুলের শিক্ষকরা অভিবাবকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন৷ কোনো দাম দেন না৷''

তিনি জানান, ‘‘শিক্ষকরা তাদের কাছে কোচিং করতে বা প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে৷ না পড়লে পরীক্ষায় নাম্বার কম দেয়৷ আবার খারাপ ব্যবহারও করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে৷''

‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মানসিক নির্যাতনের অনেক অভিযোগ পাই’

This browser does not support the audio element.

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘প্রথম শ্রেনিতে চলে ভর্তি বাণিজ্য৷ একজনকে ভর্তি করতে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা নেয়া হয়৷ লটারির নামে চলে দূর্নীতি৷ টাকা না দিলে লটারিতে নাম ওঠে না৷  এই কাজে লোক নিয়োগ করা আছে৷''

ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিবাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সুজন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে  এরকম খারাপ আচরণের অনেক অভিযোগ পাই৷ মানসিক নির্যাতনের অনেক অভিযোগ পাই৷ কিন্তু সেগুলো তাদের জানালে আসলে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না৷ তারা এসব অভিযোগ আমলেই নিতে চায় না৷ আর টিসির হুমকি দেয়, অভিভাকদের সঙ্গে প্রায়ই খারাপ ব্যবহার করে৷''

তিনি বলেন, ‘‘ভর্তি বাণিজ্য এবং কোচিং বাণিজ্য এর পিছনে প্রধান কারণ৷ চার লাখ টাকার নীচে ভর্তি করা যায় না৷ আর প্রতি বিষয়ে মাসে কোচিংয়ে নেয় দেড় হাজার টাকা৷ কেউ কোচিং-এ রাজি না হলে তাদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। পরীক্ষায় নাম্বার কম দেয়৷''

‘মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করলেও অর্থের বিনিময়ে ভর্তির অভিযোগ অস্বীকার করেন’

This browser does not support the audio element.

স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মানসিক নির্যাতনসহ নানা ধরনের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও অর্থের বিনিময়ে ভর্তির অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তিনি দাবি করেন,  ‘‘আমি ভর্তি বাণিজ্য এবং কোচিং বাণিজ্যের কোনো অভিযোগ পাইনি৷ কাউকে বাধ্যতামূলক টিসিও দেয়া হয়নি৷ এটা দেয়ার নিয়ম নেই৷''

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এখন মোট শিক্ষার্থী ২২ হাজার৷ এক সময় বেইলি রাডে এই ঐহিত্যবাহী স্কুলটি গড়ে উঠলেও এখন আরো তিনটি শাখা আছে ধানমন্ডি, আজিমপুর ও বসুন্ধরায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ