1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিসির পরিকল্পনাতেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পরিকল্পনায়ই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

Bangladesch Vizekanzler der BSMRST Universität Prof Khondoker Nasiruddin
ছবি: bdnews24.com

হল না ছেড়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে শনিবার(২১ সেপ্টেম্বর) দপুরে হামলার ঘটনা ঘটে। ভিসি ড.খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের লেলিয়ে দেয়া বহিরাগতদের এই হামলায় আন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তিনজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে উঠেছে।

এই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. হুমায়ুন কবির। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শনিবার সকাল ৯টায় ভিসি শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেন । সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ও হল বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। হলের বিদ্যুৎ,পনিসহ সব সুবিধা বন্ধের কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যেকোনো মূল্যে আন্দোলন থেকে সরিয়ে দিতে হবে। হল খালি করতে হবে। প্রয়োজনে ওদের বহিরাগতদের দিয়ে মেরে তাড়িয়ে দিতে হবে। তিনি সিদ্ধান্ত দেন পাশের সোনাপুর গ্রাম থেকে বহিরাগত এনে ছাত্রদের পিটিয়ে প্রবেশ থামানো হবে। আর ভিতরে যারা আছে আদের বহিরাগত দিয়ে হামলা করে বের করে দেয়া হবে।'' 

ড. হুমায়ুন কবির

This browser does not support the audio element.

এরপর দুপুরের দিকে এই হামলা হয় এবং বহিরাগতরা হামলা চালায়। হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘বহিরাগতরা ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পথে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে পাশের ঝিলে ফেলে দেয়া হয়। মিটিং-এর সিদ্ধান্তের সময় আমি প্রতিবাদ করতে পারিনি। কিন্তু হামলার পর বিবেকের তাড়নায় আমি পদত্যাগ করি।'‘

২১ সেপ্টেম্বর সকালেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজার আগাম ১৫ দিন ছুটি ঘোষণা করে হলগুলো খালি করার নির্দেশ দেয়া হলেও শিক্ষার্থীরা তা মানেননি। কয়েকটি হলে তালা লাগিয়ে দেয়া হলেও তা ভেঙে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন । শিক্ষকদের একাংশও এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে তাদের সঙ্গে অবস্থান নিয়েছেন।

আন্দোলনরত ছাত্রদের একজন রিয়াজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এই ভিসির লেলিয়ে দেয়া বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করেছে। ভিসি ও তার দালালরা আগেই হামলার পরিকল্পনা করে। সে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।‘' তিনি বলেন, ‘‘তিনি শুধু কথায় কথায় বহিস্কারই করেন না নানা দুর্নীতির সঙ্গেও যুক্ত।''

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মোহাম্মদ বসিরউদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটা ন্যাক্কারজনক। আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারাই বের করবে কারা হামলা করেছে।‘' তবে তিনি দাবী করেন, ‘‘ভিসি হামলার কোনো পরিকল্পনা বা নির্দেশ দেননি।'‘ 

ড. মোহাম্মদ বসিরউদ্দিন

This browser does not support the audio element.

ভিসিকে বার বার টেলিফোন করে পাওয়া যায়নি। তবে হামলার ২৪ ঘন্টা পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল ত্যাগের নির্দেশের পর বিশ্ববিদ্যালয়মুখী আসা শিক্ষার্থীদের উপর দুই কিলোমিটার দূরে রাস্তায় হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'‘

এর আগে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী?', একজন নারী শিক্ষার্থীর এমন ফেসবুক পোস্টের জবাবে ভিসি টেলিফোনে ওই শিক্ষার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।  তাকে সাময়িক বহিস্কারও করেছেন। এর আগেও ২৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিস্কারের নোটিশ দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন, যা ভিসির পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভিসি ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারী শিক্ষার্থীর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন। ফেসবুকে লেখালেখির জন্য কারো বিরুদ্ধে আর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না বলেও জানানো হয়৷ কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবী অনড় থাকেন।

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০১১ সালে। এখানে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন।  শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৩০০। বর্তমান ভিসি দায়িত্ব পান ২০১৫ সালে। 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ