জার্মান রেল ডয়চে বানের একাধিক ট্রেনে প্রায়ই ব্যাপক ভিড় থাকে৷ মাদ্রিদের পরিবেশ সম্মেলন থেকে বাড়ি ফেরার সময় সেই ভিড়ের স্বাদ পেলেন গ্রেটা টুনব্যার্গও৷
বিজ্ঞাপন
মাদ্রিদ থেকে সুইডেনে বাড়ি ফেরার জন্য পরিবেশকর্মী গ্রেটা টুনব্যার্গ বেছে নিয়েছিলেন জার্মান রেল ডয়চে বানের একটি ট্রেন৷ কিন্তু শনিবারের ভিড়ের কারণে তার কপালে জুটল না একটি সিটও৷
বাধ্য হয়ে দুই কামরার মাঝে বসেই আসতে হলো তাকে৷ সেই ছবি দিয়ে একটি টুইটও করেন গ্রেটা টুনব্যার্গ৷
অল্প সময়ের মধ্যেই এই টুইটটি ভাইরাল হয়ে পড়লে অন্যান্য বিরক্ত যাত্রীরাও গ্রেটার সাথে গলা মেলাতে থাকেন৷ ডয়চে বানের ট্রেনে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় ছাড়াও উঠে আসে অনিয়মিত ট্রেনের প্রতি সাধারণ মানুষের নালিশের কথা৷
এমনিতে জার্মানি নিয়মানুবর্তিতা ও দক্ষতার জন্য পরিচিত হলেও, ডয়চে বানের প্রতি মানুষের নালিশ বর্তমানে দৈনন্দিন বাস্তবতা৷
‘নো- ফ্লাই’ আন্দোলনে বিপাকে অভিবাসীরা?
পরিবেশ বাঁচাতে বিমানে না চড়ার আহ্বান জানাচ্ছেন অনেকেই৷ সে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন সুইডিশ পরিবেশবিদ গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ নাম দিয়েছেন ফ্লাইস্ক্যাম৷ কিন্তু সবার পক্ষে কি এ আন্দোলনে যোগ দেয়া সম্ভব?
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্লাইস্ক্যাম কী?
বিমানের ইঞ্জিন থেকে নির্গত হয় প্রচুর কার্বন৷ এটি ঠেকাতেই ফ্লাইস্ক্যাম বা ফ্লাইশেম আন্দোলনের ডাক দেন গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ বিকল্প হিসেবে ট্রেনে বা জাহাজে চড়ে ভ্রমণের কথা বলছেন তিনি৷
ছবি: picture alliance/dpa/P.Pleul
দেখিয়েছেন গ্রেটা
এ বছরের পরিবেশ সম্মেলনে এ বিষয়টি আলোচনায় এনেছেন গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ বিমানের পরিবর্তে নিজেও চড়েছেন নৌকায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Kamm
যোগ দিয়েছেন অনেকেই
জেনিফার আসামোয়াহ নামে এক জার্মান তরুণীর বোন বাস করেন ঘানায়৷ বোনের বিয়েতে যাননি তিনি, কেননা, এজন্য তাঁকে বিমানে চড়তে হবে৷ ‘‘পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমি এ কাজটি করেছি’’, বলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
বেশি বিমানে চড়েন যারা
সাধারণত অভিবাসীরাই বেশি বিমান-যাত্রা করে থাকেন৷ ডর্টমুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অভিবাসীরা স্থানীয়দের তুলনায় শতকরা ৩৮ ভাগ বেশি বিমানে চড়েন৷ কারণ, স্বজনদের সাথে দেখা করতে প্রায়ই বিমানে চড়ে দেশে যেতে হয় তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
বিপাকে যারা
এ আন্দোলনটিতে অভিবাসীরাই বেশি বিপাকে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ বিমান ছাড়া ইউরোপ থেকে এশিয়া কিংবা আ্যামেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতে যাওয়া অনেক ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব বা অস্বাভাবিক ব্যয় এবং সময়সাপেক্ষ৷
ছবি: Imago Images/R. Peters
অভিবাসীদের মাঝে অস্থিরতার শঙ্কা
নো-ফ্লাই আন্দোলনটি অভিবাসীদের মাঝে এক ধরেনের অস্থিরতা তৈরি করবে বলে মনে করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত পরিবেশকর্মী মতিউর রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘আপনি যদি সবকিছুই কার্বন দিয়ে বিবেচনা করেন, তাহলে আপনি সমস্যাটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারবেন না৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. Turkia
দ্বিমত অনেকেরই
‘‘বিমানে চড়লে আমার মধ্যে কোনো অস্বস্তি হয় না,’’ বলেন পরিবেশবাদী আন্দোলন ফ্রাইডেস ফর ফিউচার, বার্লিনের এক আয়োজক কুয়াং পাশচ৷ তিনি মনে করেন, ‘‘আমাদের পুরো সিস্টেমই একটি অন্যায্য ব্যবস্থার উপর দাঁড়িয়ে আছে৷’’
ছবি: picture-alliance/dpa/L. Faerberg
7 ছবি1 | 7
গ্রেটার টুইট নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও, পরে ডয়চে বান আরেকটি টুইট করে জানায় যে গোটা যাত্রার সময়টা মেঝেতে বসে কাটাননি গ্রেটা৷ বরং, ডয়চে বানের কর্মীদের তৎপরতায় ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাসে নিয়ে যাওয়া হয়৷
এছাড়াও, সেই ট্রেনটি যে পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত ছিল, সেই কথাও ছিল ডয়চে বানের টুইটে৷
পরে, গ্রেটা পাল্টা টুইটে জানান যে ট্রেনে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় আসলে পরিবেশের জন্য একটি ইতিবাচক লক্ষণ৷ এতে প্রমাণিত হয় যে মানুষ পরিবেশবান্ধব যাত্রাকেই বেছে নিচ্ছেন, তা যতই কষ্টের হোক না কেন৷