1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ রক্ষা

রোডিয়ন এবিগহাউজেন / জেডএইচ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

ভিয়েতনামের অন্যতম আকর্ষণ হা লঙ বে৷ প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক সেখানে যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে৷ কিন্তু কয়লাখনির কারণে এলাকাটি দিনদিন দূষিত হয়ে উঠছে৷ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে জার্মানি৷

ছবি: picture-alliance/dpa

ভিয়েতনামের উত্তর দিকে অবস্থিত হা লঙ বে গঠিত হয় আজ থেকে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন বছর আগে৷ ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করে৷  কিন্তু গত ২০ বছর ধরে সেখানকার পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে৷

হা লঙ বে যে রাজ্যে অবস্থিত সেই কোয়াং নিন আরও একটি কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ সেখানে রয়েছে কয়লাখনি৷ ভিয়েতনাম সহ চীনের প্রয়োজনীয় জ্বালানির উৎস হলো এই কয়লাখনিগুলো৷ আর ভিয়েতনামের মোট কয়লাখনির প্রায় ৯৫ ভাগেরই অবস্থান এই কোয়াং নিন রাজ্যে৷

সমস্যাটা সেখানেই৷ কয়লাখনি থেকে কয়লা আহরণ, সেখান থেকে খোলা ট্রাকে করে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা নিয়ে যাওয়া এবং কয়লা আহরণের পর যে বর্জ্য থাকে সেগুলো পরিশোধন না করেই পার্শ্ববর্তী নদীতে ফেলে দেয়া এসব কারণে হা লঙ বে দিন দিন দূষিত হয়ে পড়ছে৷

কয়লাখনির কারণে হা লঙ বে এলাকাটি দিনদিন দূষিত হয়ে উঠছেছবি: AFP/Getty Images

এছাড়া অনেক পর্যটক যাওয়ার কারণে তাদের ব্যবহৃত বর্জ্যও পড়ে থাকছে হা লঙ বে এলাকায়৷ আবার পর্যটক বেশি হওয়ার কারণে ভিয়েতনামের অন্যান্য অঞ্চল থেকে অনেক লোক জীবিকার তাগিদে ভিড় জমাচ্ছেন সেখানে৷ ফলে বেড়ে যাচ্ছে জনসংখ্যা৷

ক্যানাডার পরিবেশ বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসা টেকনোলজিস বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কোয়াং নিন রাজ্য সরকারের জন্য সম্প্রতি একটি জরিপ পরিচালনা করেছে৷ তাতে বলা হয়েছে যে, দ্রুত নগরায়ন, কয়লাখনি ও ক্রমবর্ধমান পর্যটন শিল্পের জন্য হা লঙ বে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷

কয়লাখনির কারণে কোয়াং নিন রাজ্যের প্রধান শহর কাম ফা'র রাস্তাঘাট, বাড়িঘর এখন প্রায় সময়ই কয়লার ময়লায় ঢাকা থাকে৷ এমনকি মাঝেমধ্যে সেখানকার খাবার দাবারেও ময়লার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়৷

জার্মানি একটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট তৈরি করে দিয়েছেছবি: AFP/Getty Images

কয়লাখনি থেকে যে অপরিশোধিত পানি বের হয়ে বে'তে ছড়িয়ে পড়ে তাতে উচ্চহারে লোহা, ম্যাঙ্গানিজ ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান থাকে যা বে'র পানি দূষিত করে ফেলে৷ এই দূষিত পানিতে কোনো গাছ, প্রাণী বা মাছ টিকে থাকতে পারে না, বলে জানান জার্মানির খনি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কোম্পানি এলএমবিভি'র কর্মকর্তা মিশায়েল ইলিং৷

এই দূষিত পানি শোধন করতেই এগিয়ে এসেছে জার্মানির শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়৷ তাদের অর্থায়নে তৈরি হয়েছে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট৷ দুই মাস আগে এই প্ল্যান্টটি চালু হয়েছে৷ সেখানে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৮০০ ঘনমিটার পানি বিশুদ্ধ করা হয়৷ এগুলো হলো সেই পানি যা এতদিন কয়লাখনি থেকে সরাসরি গিয়ে পড়তো হা লঙ বে'তে৷ ফলে দূষিত হতো সেখানকার পানি৷ এখন এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে দূষিত পানিকে বিশুদ্ধ করে তারপর বে'তে ছেড়ে দেয়া হয়৷

তবে সব কয়লাখনির পানি বিশুদ্ধ করতে বর্তমানের পরিচালিত প্ল্যান্টটির কর্মক্ষমতা তিনগুন বাড়ানো প্রয়োজন৷ সে লক্ষ্যে এ বছর থেকেই কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে৷

প্ল্যান্টের ক্ষমতা বাড়ানোর কাজ শুরু হবে এবছরছবি: Fotolia/MasterLu

জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে শুধু প্ল্যান্টটি তৈরি করেই দেয়া হয়নি, সেই সঙ্গে ভিয়েতনামের প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানীরা যেন প্ল্যান্টটি ঠিকমতো চালাতে পারেন সেজন্য জার্মান প্রকৌশলীরা তাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছেন৷

এদিকে শুধু পানি বিশুদ্ধকরণ করাই নয়, হা লঙ বে'র পরিবেশ ঠিক রাখতে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছেন ভিয়েতনামের নাগরিক কুয়েন ভু৷ এ লক্ষ্যে তিনি গত শতকের নব্বইয়ের দশকে ‘এডুকেশন ফর নেচার ভিয়েতনাম' বা ইএনভি নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন৷ এই সংস্থার মাধ্যমে বেতারে পরিবেশ সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়৷ এছাড়া সংস্থার কর্মীরা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেকচার দিয়ে থাকেন৷

এসব উদ্যোগ গ্রহণের কারণে গত ১০ বছরে ভিয়েতনামের মানুষের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন ভু৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ