1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাল্লুক বাঁচাও আন্দোলন

গ্রিট হোফমান/এসি৩০ আগস্ট ২০১৪

ভিয়েতনামের বনেজঙ্গলে বুনো ভাল্লুক আর খুব নেই৷ শহরে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে, ভাল্লুকদের পিত্তাশয়ে নল ঢুকিয়ে রস বার করা হচ্ছে অ্যাফ্রোডিজিয়াক হিসেবে৷ ভিয়েতনামের তরুণ প্রজন্ম এই প্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চায়৷

Bildergalerie Schwarzbären Galle Asien Vietnam Tierschutz
ছবি: Education for Nature Vietnam

বাঘের হাড় থেকে নাকি ওষুধ তৈরি হয়৷ তেমনই ভাল্লুকের পিত্তাশয় থেকে পাচক রস বার করা হয় কামোদ্দীপক হিসেবে৷ অথবা রেস্তোরাঁয় অতিথিদের মনোরঞ্জন করা হয় বাঁদর পুষে৷

হ্যানয়ের একটি সুরক্ষা কেন্দ্রে অন্তত ১৬০টি জীবজন্তু দেখতে পাওয়া যাবে৷ তাদের অনেকে এতোদিন ধরে এখানে রয়েছে যে, তাদের পক্ষে আর মুক্ত প্রকৃতিতে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়৷ ‘এডুকেশন ফর নেচার ভিয়েতনাম' এনজিও-র থাও নিন বলেন, ‘‘ভিয়েতনামে বন্যপ্রাণীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রথাটা বহুদিনের৷ সেটা শুধু ওষুধ কিংবা খাদ্য হিসেবে নয়, বরং নিজের সামাজিক মর্যাদা ও প্রতিপত্তি বাড়ানোর প্রচেষ্টাও বটে: যদি তাদের কাছে এমন একটা কিছু থাকে, যা অন্যদের নেই৷''

বন্যপ্রাণীদের মাংস খাওয়া অথবা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করাটা ভিয়েতনামে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ৷ কিন্তু সেই নিষেধ এতোদিনের পুরনো প্রথাকে বন্ধ করতে পারেনি৷ বহু জীবজন্তুই আজকাল আসে ব্রিডিং ফার্ম, অর্থাৎ পশুপালনের খামার থেকে৷ যেমন এই সুরায় জারানো সাপ৷ কিন্তু বড় বড় রেস্তোরাঁয় আজও বন্যপ্রাণীদের মাংস খেতে পাওয়া যায়৷ হ্যানয়-তে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে ইমপ্রেস করতে হলে সে ধরনের রেস্তোরাঁয় নিয়ে আসতে হয়, জানালেন থাও নিন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্যাঙ্গোলিন, সঁজারু, কচ্ছপ, এ সবই বেআইনি৷ স্থানীয় কর্মকর্তাদের ব্যাপারটা জানানো দরকার৷ আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য ওদের ওপর চাপ দিই, ওদের সঙ্গে সহযোগিতা করি৷ কর্তৃপক্ষকে রেস্তোরাঁর মেনু থেকে সব বিপন্ন প্রজাতিকে বাদ দিতে হয়৷''

বিশেষ করে একটি প্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চান এই পশুপ্রেমীরা: ভাল্লুকগুলোকে ঠিকমতো অসাড় না করে তাদের পিত্তাশয় থেকে পাচক রস বার করার প্রথাটা তাদের কাছে মর্মান্তিক এবং মারাত্মক৷ সেইই রস খেলে কিংবা মাখলে নাকি ছোটখাটো কাটাছেঁড়া থেকে শুরু করে ক্যানসার পর্যন্ত সারানো যায়৷ থাও নিন জানালেন, ‘‘ভাল্লুকের পিত্তাশয়ে নল ঢোকানো দেখতে বহু মানুষ এসে ভিড় করে৷ তাদের মনে হয়, এটা পুরোপুরি স্বাভাবিক৷ তারা দুঃখ পায় না, জীবটার জন্য দুঃখও বোধ করে না৷ আমি নিজে এটা ভীষণ অপছন্দ করি৷ আমি এ সব দেখতে চাই না৷''

হ্যানয়ের উপকণ্ঠে একটি রাস্তার ধারে একটার পর একটা ভাল্লুকের খামার৷ ভাল্লুক পোষায় কোনো দোষ নেই, কিন্তু তাদের পিত্ত থেকে পাচক রস সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ৷ কিন্তু তার খোঁজই বা রাখবে কে, আর নিয়ন্ত্রণই বা করবে কে? যেখানে এই পরিমাণ ভাল্লুক পোষা হয়, সেখানে তার পিত্তির রসের চাহিদাও সে রকম হবে৷ পুরনো প্রথা বদলাতে যে সময় লাগে, তাও জানেন থাও নিন৷ সেই কারণেই তিনি প্রতি মাসে এখানে আসেন৷ লোকজনকে বোঝান বীভৎস সব ছবি দেখিয়ে; কখনো-সখনো ভয় দেখিয়ে; কখনো বা বৈজ্ঞানিক যুক্তি দেখিয়ে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে একবার পরখ করে দেখেছি, এক বোতল রসও কিনেছিলাম৷ ও সব ফাঁকি, ওতে কোনো কাজই হয় না৷ অন্তত আমি যে ধরনের জিনিস কিনেছি, তা দিয়ে নয়৷''

ভিয়েতনামের বনে-জঙ্গলে আর মাত্র ১০০টি বুনো ভাল্লুক জীবিত৷ অন্যান্য অনেক প্রাণী ইতিমধ্যেই বিলুপ্ত হয়েছে৷ একটি বাজারকে থাও নিন তাঁদের বিশেষ সাফল্য বলে গণ্য করেন৷ থাও ও তাঁর দলবল এখানে মাসের পর মাস হানা দিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের ত্যক্ত করেছেন, প্রতিটি বন্যপ্রাণীর খবর দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে৷ ফলে এই বাজারে আজ শুধু খামারে পোষা জীবজন্তু বিক্রি হয়৷ থাও নিন বললেন, ‘‘আমি তরুণ প্রজন্মে বিশ্বাস করি৷ তারা নিজেদের প্রেস্টিজ বাড়ানোর জন্য বুনো জীবজন্তুর মাংস খায় না, কিংবা বুনো জীবজন্তুকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে না৷''

পরিবর্তন একদিনে আসে না৷ কিন্তু এই তরুণ ভিয়েতনামিরা হয়তো সেই অচলায়তন ভাঙতে পারবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ