ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর শুরু হয়েছে মিথ্যা খবর ও ভিডিওর স্রোত। কীভাবে বুঝবেন, কোনটা ঠিক, কোনটা ভুয়া?
বিজ্ঞাপন
একটি টিকটক ভিডিওতে দেখানো হয়েছে প্রচুর হামাস যোদ্ধা প্যারাগ্লাইড করে ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। সত্যিই কি তাই হয়েছিল?
আরেকটি ভিডিওর দাবি, বিখ্যাত ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো একটি ম্য়াচের পর ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। এটাও কি সত্যি?
ইসরায়েল-হামাল সংঘাত শুরুর পর থেকে এরকম প্রচুর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে।
ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেক টিম জানাচ্ছে, উপরে যে দুইটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, দুইটিই ভুয়া।
অনলাইনে বিকৃত তথ্য, ভুয়া তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে থেকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বেছে নেয়াটাও একটা চ্যালেঞ্জ। কীভাবে মানুষ জানতে পারবেন, মধ্যপ্রাচ্যে ঠিক কী ঘটছে?
সম্প্রতি অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ ল্যাবের ম্যনেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ডি কারভিন ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর এখন তা নিয়ে এত বেশি মিথ্যা প্রচার, ভুল তথ্য, প্রোপাগান্ডা, বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যা আগে আমি কোনো সংঘাতের ক্ষেত্রে দেখিনি।''
ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে এআই-ডাক্তার
এআই দিয়ে বানানো যান্ত্রিক ডাক্তার ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে লাখ লাখ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে৷ এর সত্যতা কতটুকু, জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Nikos Pekiaridis/NurPhoto/picture alliance
ফ্যাক্টচেক: নকল, এআই ডাক্তার
সোশাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে এমন ভিডিও যেখানে দেখানো ডাক্তার আসল নয়, এআই দিয়ে তৈরি সেটা! গলায় স্টেথোস্কোপ ঝোলানো এই ডাক্তারদের দেখতে আসল মনে হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তাদের দেওয়া উপদেশ বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক৷ ডয়চে ভেলে এবিষয়টির সত্যতা যাচাই করেছে৷
চিয়া সিড খেলে কমবে ডায়াবেটিস?
ফেসবুকে জনপ্রিয় একটি ভিডিওতে এমন কথাই বলছে এক এআই-সৃষ্ট নকল ডাক্তার৷ বলছে, চিয়া সিড খেলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে, যা পুরোপুরি মিথ্যা৷ গবেষণা বলছে, চিয়া সিডের সুপ্রভাব রয়েছে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে৷ কিন্তু ডায়বেটিস বা রক্তে চিনির মাত্রার ওঠানামা পুরোপুরি সেরে যাবে, এমনটা নয় মোটেই৷
ছবি: Olga Sergeeva/Zoonar/picture alliance
ভারতে জনপ্রিয় নকল ডাক্তারের ভিডিও
এই ধরনের বেশ কয়েকটি ভিডিও তৈরি হয় হিন্দি ভাষায়, ভারতের জনতার উদ্দেশ্যে৷ ২০২১ সালের একটি গবেষণা জানায় যে করোনাকালীন সময় থেকেই ভারত ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মুক্তাঙ্গন হয়ে উঠছে৷ অ্যামেরিকা, ব্রাজিল বা স্পেনের তুলনায় অনেক দ্রুত ভারতে ছড়াচ্ছে এমন ‘ফেক নিউজ’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
কেন সহজেই বিশ্বাসযোগ্য হন নকল ডাক্তাররা
ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন গিলবার্টের মতে, ইন্টারনেটে ডাক্তার তখনই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে যখন তারা আর পাঁচটা ডাক্তারের মতোই প্রেসক্রিপশন দেন, রোগ নির্ণয় করেন এবং ইন্টারনেটে এসব দেখে মানুষ ভেবে বসেন যে এরা হয়তো আসলেই ডাক্তার৷
ছবি: Taidgh Barron/ZUMAPRESS.com/picture alliance
মস্তিষ্কের রোগের চিকিৎসাও ইন্টারনেটে?
আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে বলা হয় যে কাঠবাদাম, চিনির মণ্ড, মৌরি গরম দুধে দিয়ে খেলে নাকি ব্রেনের সব রোগ সেরে যায়! ডয়চে ভেলেকে জার্মান ব্রেন ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানী ফ্রাংক এরবগুথ জানান যে এটি পুরোপুরি মিথ্যা৷ এমন কোনো তথ্য কোনো গবেষণাতে পাওয়া যায়নি৷ এই ভিডিওতেও ছিল সাদা কোট গায়ে এক নকল এআই-ডাক্তার৷
ছবি: ersin arslan/Zoonar/picture alliance
কীভাবে চিনবেন নকল ডাক্তার?
গিলবার্টের মতে, গায়ে সাদা কোট থাকলেই কোনো ব্যক্তিকে ডাক্তার বলে ভাববেন না৷ বরং নজর দিন তার মুখের বা হাতের নড়াচড়ার দিকে, জানাচ্ছেন তিনি এআই-ডাক্তারের ছবিতে ঠোঁট ছাড়া মুখের আর কোনো পেশি নড়তে দেখা যায়না৷ ভিডিওতে দেখানো এক্সরে বা সিটিস্ক্যানের ছবিকেও নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া বিশ্বাস করতে মানা করেন তিনি৷
ভরসা করবেন না চ্যাটবটকেও
কিছু চিকিৎসাবিষয়ক ওয়েবসাইটে চ্যাটবট থাকে৷ চ্যাটবট এমন প্রযুক্তি যা কয়েক মিনিটেই আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে৷ কিন্তু চিকিৎসাবিষয়ক প্রশ্নের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে৷ বিশেষ করে চ্যাটবটের বলা সমাধানকে চোখ বুজে বিশ্বাস করার আগে কোনো চিকিৎসকের থেকে তা যাচাই করে নেওয়া উচিত৷ ভবিষ্যতে চিকিৎসকেরা নিজেরাই যদি চ্যাটবট তৈরি করেন, তা হয়তো চিকিৎসাকে আরো মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবে৷
ছবি: Nikos Pekiaridis/NurPhoto/picture alliance
7 ছবি1 | 7
এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আপনারা ঠিক তথ্য বেছে নেবেন, কীভাবে ভুয়া তথ্য এড়িয়ে য়াবেন, তার পরামর্শ দিয়েছে ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেকিং টিম।
ভুয়া তথ্যের জের
সংঘাতের সময় অনেক তথ্য আমাদের বিষন্ন করে, বিপর্যস্ত করে, উত্তেজিত করে তোলে।
একটি ভিডিওর কথা বললে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। এই ভিডিওটি পরীক্ষা করে ফ্যাক্ট চেকিং টিম জানিয়েছে, এটা ভুয়া। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি সেনা দুইটি ফিলিস্তিনি বাচ্চা মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। এই ভিডিও মানুষের মনে রাগ, দুঃখ বা অন্য আবেগ তৈরি করতে পারে।
এই ভিডিওর প্রভাবে আপনি কোনো এক পক্ষকে সমর্থন ও অন্য পক্ষকে নিন্দা করতে পারেন।
ফেক নিউজ স্টরি বা ভুয়া খবরের ভিডিও বা লেখা ঠিক এই কাজটিই করে। মানুষের আবেগকে প্রবলভাবে উসকে দেয়।
নির্বাচনের আগে ভুয়া খবর বাড়ছে
নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে অনলাইনে গুজব ও ভুয়া খবরের সংখ্যা তত বাড়ছে৷ জাতীয় নির্বাচনকে জড়িয়ে জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যম ও দেশীয় গণমাধ্যমে ৭৪টি ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার৷
ছবি: rumorscanner.com
নির্বাচনকে জড়িয়ে আট মাসে ৭৪টি ভুল তথ্য
গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যম ও দেশীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ১,০৮২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে তথ্য যাচাইসংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করা রিউমর স্ক্যানার (https://rumorscanner.com/)৷ এর মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (২৪৮) ভুল তথ্য ছড়িয়েছে৷ গতবছর এই সংখ্যাটি ছিল ৯২৷ শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জড়িয়ে গত আট মাসে ৭৪টি ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার৷
ছবি: Oleksandr Latkun/Zoonar/picture alliance
সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ভুয়া খবর
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ভুয়া খবরটি হচ্ছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মির্জা ফখরুল ৫০ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা নিয়েছেন’৷ রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, চেকটি বার কাউন্সিলের একটি প্রণোদনার চেক থেকে সম্পাদনা করা এবং এর নম্বরটি ভুল ছিল৷
ছবি: rumorscanner.com
যাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর
অনলাইন যাচাই ও মিডিয়া গবেষণা প্ল্যাটফর্ম ডিসমিসল্যাবের (https://dismislab.com/) হিসাবে গত জুলাই থেকে আগস্টের ২০ তারিখ পর্যন্ত যত মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে তার ৪৪.৪ শতাংশই রাজনীতিবিষয়ক৷ রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে৷ এরপর ছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী৷
ছবি: dismislab.com
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার
সম্প্রতি ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার সাথে সাথে প্রায় ৭০-৮০ লক্ষ প্রবাসী দেশে আসতে প্রস্তুত’ শীর্ষক একটি তথ্য দৈনিক কালবেলার সূত্রে ফেসবুকে প্রচার করা হয়৷ কিন্তু আসলে এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি৷ বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের নামে পরিচালিত দুটি ভুয়া ফেসবুক পেজেও এটি প্রচার করা হয়েছিল৷ তবে শামা ওবায়েদ রিউমর স্ক্যানারকে জানান, তার নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক পেজ আছে৷ এ বিষয়ে তিনি জিডি করেছেন৷
ছবি: rumorscanner.com
১০ বছর আগের প্রতিবেদন নতুন করে প্রচার
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইকোনমিস্ট ২০১৩ সালের এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন জনমত জরিপের ভিত্তিতে বলেছিল, বাংলাদেশের চার-পঞ্চমাংশ মানুষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়৷ ঐ প্রতিবেদন প্রকাশের তিনদিন পর বাংলাদেশের আমার দেশ পত্রিকায় ‘ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: দেশের ৮০ ভাগ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়’ নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল৷ প্রায় ১০ বছর আগের সেই প্রতিবেদনটির ছবি গত কয়েকমাসে ফেসবুকে আবার পোস্ট করা হয়েছে৷
ছবি: rumorscanner.com
পুরোনো ছবি দিয়ে আরাফাতের টুইট
মোহাম্মদ এ আরাফাত ২৯ জুলাই চারটি ছবি পোস্ট করে সেগুলো পুলিশের ওপর বিএনপি কর্মীদের সেদিনকার হামলার ছবি বলে দাবি করেন৷ তবে একটি ছবি ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের সংঘর্ষ নিয়ে জনকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত হয়েছিল৷ আরেকটি ২০২১ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিলের সময় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের সময় তোলা৷ তৃতীয় ছবি ২০১৫ সালে জাগোনিউজে প্রকাশিত হয়েছিল৷
ছবি: rumorscanner.com
মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে ভুয়া তথ্য
‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাচ্ছেন ড. ইউনূস: পিটার হাস’ এই তথ্য দিয়ে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের আদলে তৈরি একটি স্ক্রিনশট ফেসবুকে প্রচার করা হয়৷ কিন্তু বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এমন কোনো মন্তব্য করেননি৷ প্রথম আলোও এমন সংবাদ প্রকাশ করেনি৷ প্রকৃতপক্ষে প্রথম আলোর ওয়েব পেজের স্ক্রিনশট এডিট করে পিটার হাসের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে৷
ছবি: United States Department of State
গয়েশ্বরের পুরোনো ছবি ব্যবহার
২৯ জুলাই ঢাকায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধোলাইখালে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আহত হন৷ এই ঘটনার খবরের সঙ্গে ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর তোলা একটি রক্তাক্ত ছবি জুড়ে ফেসবুকে প্রচার করা হয়৷ ঐ বছরের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা-৩ আসনে গণসংযোগে চলাকালে কেরানীগঞ্জে এক হামলায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অন্তত ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছিলেন৷ উপরের ছবিটি ফাইল থেকে নেয়া৷
ছবি: Md Rafayat Haque Khan/Zuma/IMAGO
নিউইয়র্ক টাইমসকে উদ্ধৃত করে ভুল তথ্য প্রচার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসের বরাতে গত ২৯ আগস্ট থেকে ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করাতে ব্যর্থ হলে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে ভারতের মতো সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে’ এমন একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার শুরু হয়৷ কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসে এমন কোনো বক্তব্য প্রকাশিত হয়নি৷
ছবি: Imago Images/R.B. Levine
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা চায়নি যুক্তরাষ্ট্র
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- এমন একটি খবর দৈনিক কালবেলার সূত্র দিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচার করা হয়৷ এর আগে গত মাসে কোনো সূত্রের উল্লেখ না করেই খবরটি প্রচার করা হয়েছিল৷ তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধান করে দেখেছে, কালবেলা এমন কোনো খবর প্রকাশ করেনি৷
ছবি: imago images / ZUMA Press
10 ছবি1 | 10
মনোবিদ স্তেফান লিউয়েনডাউস্কি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''ভুয়া খবর মানুষকে উত্তেজিত করে তোলে। আমরা জানি যে, মানুষ এজন্যই ভুয়া তথ্য প্রচার করে। এই তথ্য খুব কম সময়ে ভাইরাল হয়ে যায়।''
ফলে একটু সাবধান হওয়ার দরকার আছে। নিচের প্রশ্নগুলো একবার পড়ে দেখুন। এটা পড়লেই বুঝবেন, কোনো তথ্যের ক্ষেত্রে আপনার কী ধরনের সতর্কতা জরুরি।
এই ভিডিও বা টেক্সট পড়ে আমার মনের অবস্থা কী হয়েছে? এটা কি আপনার কিছু মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়েছে বলে আপনার ভালো লেগেছে বা আপনাকে উত্তেজিত করেছে? এই খবর প্রচার করার ক্ষেত্রে কার স্বার্থ থাকতে পারে এবং কেন সে এই তথ্য প্রচার করছে? এর বিতর্কিত উৎস সম্পর্কে কি কোনো ইঙ্গিত আছে? আপনার গাট ফিলিং আপনাকে কি বলছে?
সোর্স চেক করুন
এই সংঘাতের সময় অনেকে নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে খবর পড়েন। অনেকে আবার সামাজিক মাধ্যমে ভাসতে থাকা অনেক খবর পড়তে ভালোবাসেন।
প্রতিষ্ঠিত, পরিচিত ও বিশ্বস্ত নিউজ ব্র্যান্ড সাধারণত আপনাকে ঠিক খবর সরবরাহ করার চেষ্টা করে। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে পড়ুয়া ও খবর সরবরাহকারীর মধ্যে এই বিশ্বাসের সম্পর্কটা থাকে না।
সামাজিক মাধ্যমে কোথা থেকে এই খবরটা আসছে, সেটা জানা ও বোঝাটা খুব জরুরি। আপনি যদি সূত্র জানতে পারেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, ভিডিও বা তথ্য কতটা ঠিক।
যদি সামাজিক মাধ্যমটি কোনো ব্যক্তি চালান, তাহলে আগে দেখুন ওই খবর আর কারা প্রকাশ করেছে। তারা আগে যে খবর প্রচার করেছে সেই খবরগুলিও দেখুন। তাহলে তাদের সম্পর্কে একটা আন্দাজ পাবেন। দেখার চেষ্টা করুন, কারা তাদের অর্থ দেয়। তারা কোনো সরকার বা কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত কি না।
এই অ্যাকাউন্টে একটি ওয়েবসাইটের কথা বলা থাকবে। সেখানে গিয়ে অ্যাবাউট আস-টা দেখুন। তাহলে এই খবরগুলো পেয়ে যাবেন।
তাদের ভিডিওর ক্ষেত্রে পারলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করন। এর জন্য একটা ছবি বা স্ক্রিন শট তুলুন এবং গুগল ইমেজ বা টিন আইতে গিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করন।
বিষয়বস্তু দেখুন
এই মাসের শুরুতে একটা ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে আসে। মিশর প্রচুর কামান নিয়ে গাজায় ঢুকেছে। তারাও সংঘাতে যোগ দিয়েছে। ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেক দেখে এই দাবির কোনো সত্যতা নেই।
যে তথ্য আসছে, তা অন্য জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন, তারাও সেই খবর দিচ্ছে কি না। এরপর ফ্যাক্টচেক ডট অরগের মতো অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে গিয়ে আপনি ভুয়া তথ্য যাচাই করতে পারবেন।