1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ভূতময়' শহর স্কটল্যান্ডের এডিনবরা

১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরাকে ঘিরে অনেক ভূতুড়ে, রহস্যময় কাহিনি রয়েছে৷ পর্যটকরা আজও রহস্যে মোড়া অতীত যুগের অনেক চিহ্ন দেখতে পারেন৷ কবি, নাট্যকার ও লেখকরাও এই শহর থেকে অনেক প্রেরণা পেয়েছেন৷

Silvester 2015 2016 Schottland Edinburgh
ছবি: Getty Images/R. Gilmore

এডিনবরা শহরের নীচে পাতালপুরী৷ সেখানে অতীত যুগের অনেক কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে৷ সাউথ ব্রিজের নীচের অংশ ধনুর মতো দেখতে৷ মাটির নীচে তার সম্প্রসারিত অংশ কারিগরদের কর্মশালা হিসেবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল৷ কিন্তু সেই জায়গা অনেক অপকর্মের সাক্ষী হয়ে আছে৷

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এডিনবরা শহর অঙ্গব্যবচ্ছেদ সংক্রান্ত গবেষণার পীঠস্থান হয়ে ওঠার পর কবর খুঁড়ে মৃতদেহ চুরির ঘটনা বাড়তে থাকে৷ গবেষণার ক্ষেত্রে মৃতদেহের চাহিদাই ছিল এমন অপরাধের কারণ৷

গাইড হিসেবে নোরা উল্ফ মাটির নীচে পর্যটকদের সামনে সেই কাহিনি তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বডি স্ন্যাচার বা মৃতদেহ শিকারিরা দিনের বেলায় কবরখানায় ঘুরে বেড়াতো৷ কোথায় কোন মৃতদেহ দাফন করা হচ্ছে, সেদিকে নজর রাখতো৷ রাতে সরঞ্জাম নিয়ে তারা ফিরে আসতো৷ তারপর মাটি খুঁড়ে কফিন তুলে মৃতদেহের জামাকাপড় খুলে ঠেলাগাড়িতে তুলতো৷ তারপর খালি কফিন আবার নামিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতো৷ যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটতে হতো৷ কিন্তু কখনো ঠিক সময়ে সেখানে পৌঁছাতে না পারলে মৃতদেহ লুকিয়ে রাখতে হতো৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে মাটির নীচে গোপন পথভরা এমন শীতল জায়গার থেকে ভালো আর কী হতে পারে?''

মৃতদেহ শিকারী ছাড়াও এই পাতালরাজ্য বেআইনি হুইস্কি প্রস্তুতকারক, যৌনকর্মী ও গৃহহীনদেরও আকর্ষণ করতো৷ নোরা উল্ফ বলেন, এই বিভৎস গহ্বরের মধ্যে কেউ প্রাণ হারালে তার আত্মা চিরকালের জন্য সেখানেই বন্দি হয়ে যেত৷ জ্যাক নামের এক কিশোরের অতৃপ্ত আত্মাও নাকি সেখানে বন্দি হয়ে রয়েছে৷ নোরা উল্ফ বলেন, ‘‘সে নানাভাবে নিজের উপস্থিতির জানান দেয়৷ কখনো আপনি হাতে শীতল স্পর্শ অনুভব করবেন, কখনো আপনার কোট ধরে কেউ টান মারবে, কখনো সে আবার আপনার দিকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়বে৷ বিশেষ করে এই কামরাগুলিতে আমার কয়েকজন সহকর্মীর মুখে পাথর ছোড়া হয়েছে৷ বেশ কয়েকবার এমনটা ঘটেছে৷''

এমন সব কাহিনির কারণে স্কটল্যান্ডের রাজধানীর এক ভীতিকর ভাবমূর্তি সৃষ্টি হয়েছে৷ এডিনবরা নাকি বিশ্বের সেরা ‘ভূতময়' শহরগুলির অন্যতম৷ রক্তাক্ত অতীত ইতিহাস তারই অংশ৷ হাইল্যান্ডের যুদ্ধ, প্লেগ, ডাইনি অপবাদে হত্যা, রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনার অনেক নজির এখানে পাওয়া যাবে৷

বেশিরভাগ ভূত নাকি শহরের প্রাচীন অংশে বিরাজ করে৷ স্কটিশরা জায়গাটিকে ‘পুরানো ধোঁয়াটে' বলে ডাকেন৷ অন্ধকার, সংকীর্ণ অলিগলি, সিঁড়িপথগুলিকে পটভূমি করে অনেক শতাব্দী ধরে লেখকরা ভীতিকর গল্প লিখেছেন৷

সেগুলির মধ্যে ঊনবিংশ শতাব্দীতে রবার্ট লুইস স্টিভেনসনের লেখা ‘ড. জেকিল ও মিস্টার হাইড' সবচেয়ে বিখ্যাত৷ এডিনবরা-র করণিক অ্যালান স্পেন্স-ও মনে করেন, যে এই শহরের এক বিশেষ আভা রয়েছে৷ অ্যালান বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, বাতাসেই সেই অনুভূতি পাওয়া যায়৷ তাতে অত্যন্ত গভীর আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে৷ কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকারসহ সব লেখকই সেই শক্তি অনুভব করতে পারেন৷ বুদ্ধিতে তার ব্যাখ্যা না মিললেও গভীর স্তরে কিছু একটা চলে, যার ফলে কল্পনাশক্তি তীব্র হয়ে ওঠে৷''

অ্যালান স্পেন্স-এর মতো কবি ও লেখকদের কাছে একটি জায়গার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে৷ ‘গ্রেফ্রিয়ার কির্কইয়ার্ড' নামের কবরখানায় ষোড়শ শতাব্দী থেকে শহরের অভিজাত ব্যক্তিদের দাফন করা হয়৷ সেই সব কবর নিয়ে অনেক রহস্যময় কাহিনি রয়েছে৷ অ্যালান বলেন, ‘‘এক প্রাক্তন লর্ড অ্যাডভোকেটের প্রেতাত্মা এখানে ঘুরে বেড়ায় বলে গুজব চালু আছে৷ এক গৃহহীন ভবঘুরে তাঁর সমাধিক্ষেত্রে আশ্রয় নিতে এলে তিনি নাকি প্রথমে বিরক্ত হয়েছিলেন৷ রাগের মাথায় তিনি নাকি সেই ব্যক্তিকে মারধোর করেছিলেন৷ তার পরেও এমন ঘটনার কথা শোনা গেছে৷''

এমন সব ভূতুড়ে ও রহস্যে ভরা গল্প শুনে মনে ভয় না এলেও একবার এডিনবরা শহর ঘুরে গেলে আপনার ঝুলিতে অবশ্যই নতুন কোনো কাহিনি যোগ হবে৷

আলিস কোন/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ