1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষ ভিড় করছে বার্লিনে

২৮ জানুয়ারি ২০১২

ইউরোপে আর্থিক সংকটের বড় কোন প্রভাব জার্মানির উপর পড়েনি৷ আর তাই অন্যান্য ইউরোপের দেশ থেকে মানুষ আসছে জার্মানিতে৷ কাজ খুঁজছে৷ সবাই ভিড় করছে রাজধানী বার্লিনে৷

বার্লিনে কাজের আকর্ষণই আলাদা!ছবি: picture-alliance/ZB

বার্লিনে শনিবার রাত৷ উইকএন্ড৷ রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড়৷ বার এবং পাবগুলো ভর্তি৷ বিয়ারের গ্লাস এবং ছুরি-চামচের টুং-টাং শব্দ ভেসে আসছে রেস্ট্যুরেন্টগুলোর ভেতর থেকে৷ রাস্তায় কিছুক্ষণ হাঁটলেই কানে আসবে নানা রকমের ভাষা৷ জার্মান, ইংরেজি, ইটালিয়ান, সুইডিশ এবং সবচেয়ে বেশি শোনা যাবে স্প্যানিশ৷ স্প্যানিশরা সবচেয়ে বেশি আসছে বার্লিনে৷

স্পেনের বার্সেলোনা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ আসছে বার্লিনে৷ এরপর রয়েছে মাদ্রিদ এবং গ্রানাডা৷ এরপরই রয়েছে পর্তুগাল, ইটালি এবং গ্রিসের মানুষ৷ সবাই কাজের সন্ধানে এসেছে জার্মানিতে৷ স্পেনে তরুণ প্রজন্মের ৪০ শতাংশেরও বেশি বেকার৷

সুযোগের খোঁজে বার্লিনেছবি: picture alliance/dpa

এদের বলা হচ্ছে অর্থনৈতিক শরণার্থী৷ বার্লিনে যেসব স্প্যানিশ দেখা যাবে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত তারা ছিল গায়ক, চিত্রকর, শিল্পী৷ আজ সবাই বেকার৷ এরা যখন প্রথম বার্লিনে আসে তখন সবাই জার্মান ভাষা শেখার কোর্স করেছিল৷ তখনই অন্য স্প্যানিশ বা ইটালিয়ানের সঙ্গে পরিচয় হয়৷ তখন থেকেই একসঙ্গে থাকা, যোগাযোগ এবং একসঙ্গে কাজ খোঁজা৷

স্পেনের রাজধানী শহর মাদ্রিদে কাজ পাওয়া এই মুহূর্তে অসম্ভব৷ এক রুমের কামরা নিয়ে কোনভাবে চলাও সম্ভব নয়৷ তাই ট্রেনে, বাসে, এবং সস্তা ফ্লাইটে সবাই আসছে জার্মানিতে৷ এখন মনে হবে যেন প্রতি সপ্তাহেই কয়েক শ স্প্যানিশ আসছে জার্মানিতে৷ সবাই কাজের জন্য আবেদন করছে৷ অনেকেই তাদের দূতাবাসকে পর্যন্ত জানায় না যে তারা জার্মানিতে এসেছে বা থাকছে৷     

হুয়ান প্রায় দু বছরের বেশি সময় ধরে বার্লিনে আছে৷ সে স্পেনে কালচারাল ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছে৷ এরপর বার্লিনের একটি গ্যালারিতে সে ইন্টার্নশিপ করতে এসেছিল৷ তখন প্রতি মাসে পাঁচশো ইউরো করে পেত৷ ইন্টার্নশিপের পর সে কাজ খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না৷ হুয়ান জানাল,‘‘এই অবস্থায় আমি কিছুতেই স্পেনে ফিরে যেতে পারবো না৷ স্পেনে আমি বেকারভাতাও পাবো না৷'' 

শহরের আকর্ষণও কম নয়ছবি: Getty Images

হুয়ান জানাল, স্পেনে সে তার বন্ধু, পরিবার এবং সুন্দর আবহাওয়া ভীষণভাবে মিস করে৷ কিন্তু সে কিছুতেই সেখানে ফিরে যেতে চায় না৷ আক্ষেপের সঙ্গে হুয়ান বলল,‘‘আমার বাবা আমাকে বলেছিল, আমাদের এতগুলো প্রজন্মের মধ্যে তোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ৷'' কথা সত্যি কিন্তু করার কিছু নেই৷

হুয়ান একটি কামরা শেয়ার করে ইটালির এক শিল্পীর সঙ্গে৷ হুয়ানের বেশির ভাগ বন্ধু-বান্ধবী ইটালিয়ান এবং স্প্যানিশ৷ ইটালিয়ান ঐ শিল্পী সাত বছর ধরে বার্লিনে বসবাস করছে৷

বার্লিনে বেশ কিছু জায়গা আছে যেখানে স্প্যানিশদের ভিড় বেশি৷ তারা সেখানেই আড্ডা দেয়৷ হুয়ান জানায়, সে বেশিরভাগ সময়েই অন্যান্য অপরিচিত স্প্যানিশদের এড়িয়ে চলে৷ একই মানসিকতা অন্য স্প্যানিশদের মধ্যেও দেখা যায়৷

মারিয়া কাজ করে একটি বারে৷ বারটি একটি বেসমেন্টে৷ মারিয়া গ্রানাডার মেয়ে৷ সে বার্লিনে পাঁচ বছর ধরে আছে৷ মারিয়া জানাল,‘‘জার্মানিতে খুবই কষ্ট হয় শীতকালে৷ স্পেনের বেশিরভাগ মানুষই এধরণের শীতে অভ্যস্ত নয়৷ সহ্য করতে না পেরে অনেকেই ফিরে গেছে স্পেনে৷ দুই তিন বছরের বেশি কেউই থাকতে পারেনি৷ সবাই ফিরে গেছে৷''

তবে মারিয়া কোথাও যাচ্ছে না৷ সে বার্লিনেই থাকবে৷ স্পেনের অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় একমাত্র পথ হল সেখান থেকে দূরে থাকা৷ কষ্ট করেও হলেও বার্লিনে পড়ে থাকা৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ