ভূমিকম্পের পর আয়োজিত প্রথম ফুটবল ম্যাচগুলোতে প্রধান কয়েকটি ক্লাবের সমর্থকেরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে এর্দোয়ান সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্ক এবং সিরিয়া মিলিয়ে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন৷ তুর্কি ফুটবল ক্লাব বেসিকতস এর সমর্থকেরা খেলা শুরুর আগে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন৷ রোববারের ম্যাচটি ছিল আন্তালায়াসপোরের বিরুদ্ধে৷ খেলা শুরুর সময় পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে ‘সরকারের পদত্যাগ চাই' স্লোগান শোনা যাচ্ছিল৷
খেলা শুরুর আগে ক্লাবটি ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এবং হাজার হাজার সমর্থক দুর্যোগে হতাহত শিশুদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে মাঠে বাচ্চাদের খেলনা ছুঁড়ে দেন৷
পরবর্তীতে খেলা চালার সময়ে সমর্থকেরা ভূমিকম্প পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় এর্দোয়ান সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্লোগান দেন৷ সমর্থকদের এমন আচরণের প্রতিক্রিয়ায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যেপ এর্দোয়ানের ঘনিষ্ঠ এমএইচপি পার্টির নেতা দেভলেত বাচেলি বেসিকতাস ক্লাবে নিজের সদস্যপদ প্রত্যাহার করেছেন৷
ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক আরেকটি বড় ক্লাব ফেনেরবাচের সমর্থকেরাও কোনিয়াস্পোর দলের বিরুদ্ধে শনিবারের খেলায় একই ধরনের স্লোগান দেয়৷ ‘২০ বছর ধরে মিথ্যা ও প্রতারণা'র অভিযোগ তুলে সরকারের পদত্যাগও দাবি করেন তারা৷
এমন দুর্যোগের জন্য দেশকে আগে থেকে প্রস্তুত না রাখা এবং ভবন নির্মাণে বিধিনিষেধ আরোপে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন এর্দোয়ানবিরোধীরা৷
ধসে যাওয়া ভবনের নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছয় শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তুরস্কে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ শনিবার বিচারমন্ত্রী বেকির বোসদাগ জানিয়েছেন, ৬১২ জনের মধ্যে ১৮৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের বিচার হবে৷ তাদের মধ্যে ভবনের মালিক ছাড়াও ব্যবস্থাপক এবং নির্মাণ ঠিকাদারও রয়েছেন৷
তুরস্কে পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৪ মে৷
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ঘরহীন মানুষদের জীবন
ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার অসংখ্য মানুষ এখন ঘরহারা৷ অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে কেমন কাটছে তাদের জীবন, দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Thaier Al-Sudani/REUTERS
স্টেডিয়ামে আশ্রয়
তুরস্কের কাহরামানমারাসের এক স্টেডিয়ামে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন মোহাম্মদ৷ ঘর হারালেও পোষা পাখিগুলোকে রক্ষা করেছেন ২৬ বছর বয়সি এই তরুণ৷ তাঁবুর দরজায় বসে খাঁচার সেই পাখিগুলোর দিকেই তাকিয়ে আছেন তিনি৷
ছবি: Nir Elias/REUTERS
শিশুদের ব্যস্ত রাখা
তুরস্কের ইসকান্দারুন শহরেও ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ প্রাণ গেছে অনেকের৷ অনেক শিশু হয়েছে এতিম৷ সব শিশুকে ব্যস্ত রেখে দুঃখ ভোলানোর চেষ্টাও চলছে৷ ওপরের ছবিতে নিজেদের আঁকা ছবি বোর্ডে লাগাচ্ছে কয়েকজন শিশু৷
ছবি: Eloisa Lopez/REUTERS
ছোট কাঁধে বড় দায়িত্ব
সিরিয়ার জাবেহ শহরের এই শিশুটিকে রেশনের খাদ্য নিয়ে আসার দায়িত্ব দিয়েছিল তার পরিবার৷ এক স্কুল থেকে রুটি নিয়ে পরিবারের কাছে ফিরছে সে৷
ছবি: Amr Alfiky/REUTERS
স্কুলই তাদের ঘর
সিরিয়ার লাতাকিয়ার ঘরহারাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে রেফাত দাহো স্কুলে৷ ছবিতে সেই স্কুলের সামনের দৃশ্য৷
ছবি: Amr Alfiky/REUTERS
বিষন্ন মুখে আনন্দের রং
শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য তাদের নানাভাবে আনন্দে রাখার চেষ্টা চলছে৷ তুরস্কের ওসমানিয়ের এক শিশুর গালে ছবি এঁকে তাকে আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করছেন এক নারী৷
ছবি: Suhaib Salem/REUTERS
জুমার নামাজ
ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন তুরস্ক ও সিরিয়ার অনেক মানুষ৷ শুক্রবার তুরস্কের আদিয়ামান শহরে জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা যায় কয়েকশ মানুষকে৷
ছবি: Thaier Al-Sudani/REUTERS
শিশুর আনন্দ...
কাহরামানমারাসের এক শিশু এক বেলার খাবার পেয়ে ভীষণ আনন্দিত৷ ট্রে-তে খাবার সাজিয়ে খুশিমনে পরিবারের সদস্যদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে সে৷
ছবি: Suhaib Salem/REUTERS
অস্থায়ী পার্ক
তুরস্কের হাতায় প্রদেশের এক আশ্রয় শিবিরে শত শত গৃহহীনকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে তাঁবুতে৷ পাশেই শিশুদের জন্য রয়েছে দোলনায় দোল খেয়ে আনন্দ করার ব্যবস্থ৷
ছবি: Eloisa Lopez/REUTERS
রেশনের দোকানে লম্বা লাইন
এই ছবিটিও তুরস্কের ইসকান্দারুন শহরের৷ প্রয়োজনীয় নানা ধরনের পণ্য বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে শুনে ছুটে এসেছেন সব সহায়-সম্বল হারানো মানুষেরা৷
ছবি: Eloisa Lopez/REUTERS
থেমে নেই পড়াশোনা
ছবির এই দুই কিশোরী সিরিয়া থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছে তুরস্কের কাহরামানমারাসের এক আশ্রয় শিবিরে৷ সেখানেই বই পড়ায় ব্যস্ত তারা৷