ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় আতঙ্ক এখনো কাটেনি
২১ সেপ্টেম্বর ২০১১ভূমিকম্পের তিনদিন পরেও সিকিমকে যুঝতে হচ্ছে নানা চ্যালেঞ্জের সঙ্গে৷ অনেক গ্রাম এখনো বিচ্ছিন্ন৷ ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চলেছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়৷ হতাহত ও আটকা পড়া লোকেদের উদ্ধারের জন্য নামানো হয় সেনা ও বিমানবাহিনীর ১০-১২টি হেলিকপ্টার৷ সেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর উদ্ধারকারী দল পৌঁছে গেছে ভূমিকম্পের উৎসস্থল সিকিমের মাঙ্গানে৷ ১০জনের একটি মেডিকেল টিমকে আকাশপথে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তর সিকিমের চুংথাং-এ৷ খোলা হয়েছে সেনাবাহিনীর ১০টি মেডিক্যাল ইউনিট৷
গ্যাংটকে বিদ্যুৎ সংযোগ আংশিক ঠিক হয়েছে৷ তবে বড় চ্যালেঞ্জ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দাঁড় করানো৷ এজন্য আরো সময় লাগবে৷ বাগডোগরার সঙ্গে দার্জিলিং এবং গ্যাংটকের সঙ্গে বাগডোগরার সংযোগকারী ৫৫ নং এবং ৩১ নং জাতীয় মহাসড়ক পরিষ্কার করা হয়েছে৷
ভূমিকম্প দুর্গতদের চোখে মুখে এখনো আতঙ্ক৷ ক্রমশই বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা৷ মৃতের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৯০-এ৷ তারমধ্যে সিকিমেই ৬১জন৷ ভূমিধসে একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মারা যায় ১৭জন৷ তিস্তা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মারা যায় একজন, আহত হয় ১০জন৷ ১৫ হাজার ঘরবাড়ি একেবারে ভূমিসাৎ৷এক লক্ষ বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত৷ গ্যাংটকে জলকষ্ট৷ জ্বালানির আকাল৷ ধসে বেহাল রাস্তাঘাট৷ ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসেব করা হয়নি৷ তবে আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার মত৷ ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ শেষ হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে, জানিয়েছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিং৷
ভূ-বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, হিমালয় অঞ্চলের যে-কোন জায়গায় আরো বড় ভূকম্পন হতে পারে৷ হিমালয়ের পাথরের নীচে ভূ-স্তরে চলেছে অবিরাম ঘর্ষণ৷ কখনো পাশাপাশি কখনো মুখোমুখি৷ কখনো একটা প্লেট বা ভূ-স্তর ঢোকার চেষ্টা করছে আরেকটার নীচে৷ এই ঘর্ষণজনিত শক্তি যেখানে উৎপন্ন হচ্ছে সেটাই ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক