1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূ-তাপীয় শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বাংলাদেশে

৮ এপ্রিল ২০১১

জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ এবং তৎপরবর্তীতে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার পর, বিশ্বব্যাপী এখন প্রধান আলোচ্য নিরাপদ জ্বালানি৷ আর এই নিরাপদ জ্বালানি অবশ্যই হতে হবে পরিবেশ বান্ধব৷

ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রছবি: European Union

পরমাণু বিদ্যুৎ, অভিশাপ নাকি আশির্বাদ ! এ নিয়ে তর্কের ঝড় উঠতে পারে৷ কিন্তু জাপানের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পর, এ বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, এই ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনa কারণে ধ্বংস হলে তার ক্ষতি সরাসরি আঘাত করে মানুষের ওপর৷ জার্মানির হানোফার শহরে এবারের শিল্প মেলায় কিন্তু পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি প্রযুক্তি প্রদর্শন হয়েছে সবচেয়ে বেশি৷ সকলের আগ্রহও ছিল এই দিকে৷ কেবল জার্মানি নয়, বিশ্বের অন্য সকল দেশ পরমাণু কিংবা ফসিল ফুয়েলের চেয়ে নবায়নযোগ্য যেমন বায়ু বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ এবং সৌর বিদ্যুতের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ এছাড়া, তাদের আগ্রহ রয়েছে সমুদ্রের ঢেউ থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ এবং ভূগর্ভে থাকা উষ্ণ পানির আধারকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎতৈরির দিকেই৷ একদিকে বিজ্ঞানীরা এ জন্য কাজ করছেন৷ অপরদিকে, সরকার এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এ জন্য নতুন নীতিমালার দিকে এগোচ্ছেন৷

বাংলাদেশও এর বাইরে নয়৷ বাংলাদেশ সরকার এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে৷ সরকার সম্প্রতি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর নীতি অনুমোদন করেছে৷ দেশের মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে৷ আর এর জন্য কাজও শুরু হয়ে গেছে৷

ইটালির ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রছবি: European Union

সম্প্রতি মাটির তলদেশের উষ্ণ পানির ধারা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ৷ সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও-এর বরুণাগাঁওয়ে রয়েছে এক্কেবারে প্রাকৃতিক এই পানির ধারা৷ ইংরেজিতে যাকে বলা হয় জিও থার্মাল৷ ভূ-তাপীয় শক্তির মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম৷

জিওথার্মাল এনার্জি দিয়ে সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ১৯০৪ সালে ইটালিতে৷ এ থেকে উৎপাদিত জলীয় বাষ্প দিয়ে একটি ছোট্ট টারবাইন ঘুরিয়ে, উৎপাদন করা হয়েছিল বিদ্যুৎ৷ আর সেই উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই পাঁচটি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়েছিল৷ তবে বাণিজ্যিকভাবে জিওথার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রথম স্থাপিত হয় ১৯১১ সালে, ইটালির সাউদার্ন টুয়ামির লার্ডোলোতে৷ বর্তমানে এই পাওয়ার প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন প্রায় এক মিলিয়ন বাড়ির বাসিন্দা৷ সব মিলিয়ে পৃথিবীতে এ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ৷ বলা হচ্ছে, এই পদ্ধতি পরিবেশ বান্ধব৷ আর এই বিদ্যুৎ সবুজ জ্বালানি বা গ্রিন এনার্জি৷

আজ থেকে ২০ বছর আগে সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁওয়ে একটি ডিপ টিউবওয়েলে গরম পানি ওঠার খবর পাওয়া যায়৷ ঐ পানির তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এটাকে প্রথমে ভাবা হয়েছিল অলৌকিক কিছু্৷ কিন্তু তদানীন্তন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এটা মানতে চাননি৷ তিনি জিও থার্মাল এনার্জি উৎপাদনের উৎস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পান সেখানে৷ এই কর্মকর্তা প্রায় ১৫ বছর আগে ঠাকুরগাঁও ছাড়লেও, পানির ঐ উষ্ণ উৎস থেকে নিজের মনকে সরাতে পারেননি তিনি৷ তাই শুরু করেন গবেষণা৷ এ জন্য ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে তিনি এ নিয়ে আরও খোঁজ খবর নিতে থাকেন৷ তিনি দেখেন ইন্দোনেশিয়া, জাপান ও ফিলিপাইন ইতিমধ্যেই এই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে শুরু করেছে৷ শুধু তাই নয়, ভারতের কয়েকটি স্থানেও এ ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে৷

মিজানুর রহমানের মতে, কয়লা বা গ্যাস দিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় - তার মতো ব্যয়বহুল হবে না এ বিদ্যুৎ উৎপাদন৷ তিনি জানান, এটা অন্যান্য পদ্ধতির মতো সীমাবদ্ধ নয়, বরং এ পদ্ধতিতে অফুরন্ত হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া৷ প্রাথমিকভাবে এখানে ২শ'মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কারখানা করা সম্ভব হবে৷ জানা গেছে, এ কাজে ইতিমধ্যেই এগিয়ে এসেছে একটি উদ্যোক্তা কোম্পানি৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ