ওয়েস্টমিনস্টারের এই হেরিটেজ সৌধ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে, ফাটল দেখা যাচ্ছে।
ছবি: Claudio Divizia/alimdi/IMAGO
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবন একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। শতাব্দীপ্রাচীন এই ভবন বহু ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু সেই ভবনই আর কতদিন রক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে এমনপি-দের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। হাউস অফ কমন্সে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ভবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা গেছে। আগুন লাগলে তা নেভানোর মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। ফলে বড় কোনো বিপর্যয় ঘটলে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। অবিলম্বে এই ভবনের সংস্কার প্রয়োজন বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
সাংসদদের বক্তব্য, ভবনটির এখন যা অবস্থা তা সংস্কার করতে বহু অর্থ ব্যয় হবে। কিন্তু আরো সময় ব্যয় করলে খরচ বহু গুণ বেড়ে যাবে। যা করদাতাদের টাকা থেকেই নিতে হবে। তাছাড়া আর অপেক্ষা করলে ভবনটি সংস্কারের অযোগ্যও হয়ে পড়তে পারে। এখনো পর্যন্ত যা কাজ হয়েছে তা কার্যত ধর তক্তা মার পেরেক গোছের বলে জানিয়েছে পার্লামেন্টের কমিটি। তাতেই সপ্তাহে দুই মিলিয়ন পাউন্ড করে খরচ হয়েছে।
যে দশ কারণে লন্ডনে যেতে পারেন
বিশ্বের মানুষ ইউরোপে যে শহরটি সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে, সেটা হলো লন্ডন৷ এই তো ২০১৬ সালে ব্রিটেনের রাজধানীতে গিয়েছিলেন প্রায় দুই কোটি পর্যটক৷ সংস্কৃতি, শিল্প আর সংগীতের এক অপূর্ব মিশ্রণ শহরটিকে সত্যিই আকর্ষণীয় করে তুলেছে৷
ছবি: picture-alliance/Daniel Kalker
টেমস নদী
লন্ডনের অন্যতম অনেক পর্যটন আকর্ষণ টেমস নদীর তীরে অবস্থিত৷ সাউথ ব্যাংক এলাকায় নদীর পাড় ধরে হাঁটলেই লন্ডন আই, ওয়েস্টমিনিস্টার প্যালেস এবং বেন টাওয়ার ক্লকের মতো পর্যটন কেন্দ্র ও শহরের মূল আকর্ষণগুলি চোখে পড়বে৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/M. Simoni
সেতু
টেমস নদীর উপর তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি সেতু৷ এদের একটি শহরের প্রতীকও: টাওয়ার ব্রিজ৷ পর্যটকরা ব্রিজটির আসল কয়লা পোড়ানোর জায়গা এবং স্টিম ইঞ্জিন দেখতে পারেন৷ একসময় কয়লা পুড়িয়ে সেতুটি খুলে দেয়া হতো, যাতে জাহাজ চলাচল করতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/A. Copson
মিউজিয়াম
লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়াম, ব্রিটিশ মিউজিয়াম এবং টেট মডার্ন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মিউজিয়ামগুলোর তালিকায় রয়েছে৷ টেট মিউজিয়ামটি আগে একটি পাওয়ার স্টেশন ছিল৷ বর্তমানে সেখানে সমসাময়িক আর্ট প্রদর্শন করা হয়৷ আর অন্যান্য আরো অনেক মিউজিয়ামের মতো, এখানে প্রবেশ করা যায় বিনা খরচায়৷
ছবি: Switch House, Tate Modern/Iwan Baan
সংগীত
কনসার্ট, কনসার্ট আর কনসার্ট: সংগীতপ্রেমীদের অবশ্যই লন্ডন ভ্রমণ করা উচিত৷ সেখানে ছোট ছোট পাব থেকে শুরু করে বড় পার্ক অবধি নানা স্থানে কনসার্টের আয়োজন করা হয় নিয়মিত৷
ছবি: picture-alliance7Photoshot/PYMCA
প্যালেস
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের আনুষ্ঠানিক নিবাস হচ্ছে বাকিংহাম প্যালেস৷ রানি যখন স্কটল্যান্ড থাকেন, অর্থাৎ প্রতিবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর অবধি, তখন প্যালেসের ভেতরে ‘স্টেট রুম’ পর্যন্ত পর্যটকরা যেতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/DPA/M. Skolimowska
পার্ক
লন্ডনে রয়েছে বেশ কয়েকটি পার্ক, বাগান এবং বন৷ বিশ্বের অনেক শহরের চেয়ে বেশি সবুজের দেখা মেলে লন্ডনে৷
ছবি: picture-alliance/Design Pics/Axiom
দোকানপাট
লন্ডনে সব বাজেটের এবং পছন্দের মানুষের জন্যই কেনাকাটার আয়োজন রয়েছে৷ সপ্তাহান্তে শহরটিতে অনেক বাজার বসে যেখানে নিত্যদিনের জিনসপত্র থেকে শুরু করে ফ্যাশনেবল পোশাক এবং অ্যান্টিক অনেককিছু পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/Eibner
গির্জা
ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে এবং সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রাল লন্ডনের জনপ্রিয় গির্জাগুলোর মধ্যে অন্যতম৷ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে মুকুট পরানো থেকে প্রিন্সেস ডায়ানার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, এমনকি প্রিন্স উইলিয়াম ও কেটের বিয়ের অনুষ্ঠানটিও পরিচালনা করা হয়েছিল ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে৷
লন্ডনের বার্ডসআই ভিউ: টেমসের দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত ‘সার্ড’ থেকে ২৪৪ মিটার উচ্চতায় লন্ডনের বার্ডস আই ভিউ পাওয়া যেতে পারে৷ গ্লাস এবং স্টিলের তৈরি হাইরাইজটি পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/M. Ertman
পাব
পাব ছাড়া লন্ডনের কথা ভাবাই যায় না৷ সেখানে আপনি নানা পদের পানীয়র পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন ফিস অ্যান্ড চিপস বা মিট পিস পাবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Rain
10 ছবি1 | 10
ওয়েস্টমিনস্টার রাজপ্রাসাদটিকেই যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর আগেও এর সংস্কার নিয়ে বার বার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কখনোই সামগ্রিক সংস্কারের ব্যবস্থা হয়নি। আলোচনাও খুব ধীর গতিতে এগিয়েছে। ২০১৮ সালে এমপি-রা ভোটাভুটির মাধ্যমে ঠিক করেছিলেন, ২০২০ সালে ভবনটি কিছুদিনের জন্য খালি করে দেওয়া হবে। সে সময় সংস্কারের কাজ করা যাবে। কিন্তু ২০২০ সালে সকলে পার্লামেন্ট ভবন ছেড়ে যেতে চাননি। ফলে সংস্কারও সম্ভব হয়নি।
যারা ভবনটি ছেড়ে যেতে চাননি, তারা বার বার বলেছেন, পার্লামেন্ট ঠিকমতো সংস্কার করতে হলে বহু বছর সময় লেগে যাবে। এতদিন ওই ভবন ছেড়ে অন্যত্র পার্লামেন্ট চালানো সম্ভব নয়।
২০১৬ সাল থেকে পার্লামেন্ট ভবনে অন্তত ৪৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে এখন ২৪ ঘণ্টা দমকলকর্মীরা ভবনটি পাহারা দেন। ১৮৩৪ সালে অগ্নিকাণ্ডেই নষ্ট হয়েছিল পুরনো ওয়েস্টমিনস্টার প্রাসাদ। এরপর চার্লস ব্যারি নামক এক স্থপতি নতুন ভবনটি তৈরি করেন। নিও গথিক স্থাপত্যের সেই ভবনই এখন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট।