ইউক্রেনকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বলির পাঁঠা মনে করছেন বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, এর পিছনে রয়েছে অন্যদের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ। সেই স্বার্থের জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে।
বিজ্ঞাপন
তারা বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্যের ভেটো ক্ষমতা সব সময়ই রাজনৈকিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর গুরুত্ব প্রায় হারিয়ে বসা সামরিক জোট ন্যাটো এই হামলার মধ্য দিয়ে আরো কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য প্রাণ পেলো বলে মনে করেন বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা।
তারা মনে করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পেছনে নানা পক্ষের স্বার্থ আছে। আর এই স্বার্থের বলি হচ্ছে ইউক্রেন এবং দেশটির সাধারণ মানুষ।
সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে যাওয়ার পর ন্যাটো তার গুরুত্ব হারায়। ন্যাটো ছিল ওয়ারশ প্যাক্টের বিপরীত সামরিক জোট। সেই ওয়ারশ নেই। বিশ্বে স্নায়ু যুদ্ধ নেই। তাই ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তাও ছিল না। শুধু ক্ষমতা দেখানোর জন্য এটাকে ধরে রাখা হয়েছে। আর রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার মধ্য দিয়ে ন্যাটো আবার চাঙা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে সেই ইউক্রেনই এখন আর ন্যাটের সদস্য হতে চাচ্ছে না।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অবশ্যই আগ্রাসন: শহীদুল
সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক বলেন ,"ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অবশ্যই আগ্রাসন। আমরা এর নিন্দা জানাই। কিন্তু এই হামলা এড়ানো যেতো। যুক্তরাষ্ট্র কি তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন কিছু তার পাশের দেশে করতে দেবে? মেক্সিকোতে কি রাশিয়ান সামরিক ঘাটি মেনে নেবে?”
তার কথা, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে জার্মানি ও ফ্রান্স। জার্মানির বিরোধিতার মুখে গ্যাস পাইপ লাইন বন্ধ করা যায়নি, স্থগিত করা হয়েছে। ১৯৪৫ সাল থেকে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল। এই বছরের শুরুতে তারা ভাবছিল ন্যাটেতে আসবে। কিন্তু এই দুইটি দেশ এখন ভিন্নভাবে চিন্তা করছে। আর এখন ইউক্রেনও বলছে তারা ন্যাটোতে যাবে না। অথচ ওখানে ‘প্রক্সি ওয়ার' চলছে।
তিনি বলেন, এখন ন্যাটের ন্যারেটিভ পরিবর্তন হচ্ছে। যুদ্ধ বিমান এখানো দেয়নি। সদস্য না হওয়ায় সরাসরি ন্যাটের ফোর্স সেখানে যাচ্ছে না। ইউক্রেন এখন বলির পাঁঠা।
তিনি বলেন, "নিরাপত্তা পরিষদের যে পাঁচ শক্তি তারা সবাই যুদ্ধ দেখছে, অসংখ্য মানুষের মৃত্যু দেখছে, তারপরও রাশিয়া ভেটো দিলো। রাশিয়া নিজেই একটি পক্ষ। অতীতেও রাজনৈতিক কারণে এই ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়েছে। ইরাক, আফগানিস্তানে এটা কোনো কাজে আসেনি । মানবতার পক্ষে যায়নি। তবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাশিয়ার ভেটো আমাদের সহায়তা করেছে। নয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন রকম হতে পারতো।”
ইউরোপে এখনো কেন এত অ্যামেরিকান সৈন্য?: ইমতিয়াজ
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ প্রশ্ন করেন, "ইউরোপে এখনো কেন এত অ্যামেরিকান সৈন্য থাকবে? এখন তো আর কমিউনিজম নেই। তাই গুরুত্বহীন ন্যাটোকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার মধ্য দিয়ে আরো অন্তত: ১০ বছররে জন্য নিশ্চিত করা গেল। অথোরিটেরিয়ান যদি সমস্যা হয়, তাহলে মিয়ানমার তো সাধারণ পরিষদে অ্যামেরিকার পক্ষে ভোট দিয়েছে। আফ্রিকান দেশগুলো নিয়ে কী বলবেন? ন্যাটোর ১২ সদস্য থেকে ৩০ সদস্য হওয়া। জার্মানিতে ১১০টি সামরিক ঘাঁটি। এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দরকার। রাশিয়ার সাথে জার্মানির গ্যাস পাইপ লাইন হলে তো অ্যামেরিকার ওপর নির্ভরতা আরো কমবে।”
তিনি মনে করেন, জাতিসংঘের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ আরো অনেক খাতে সাফল্য থাকলেও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো ভ‚মিকা নেই। যুদ্ধ অবসানে কোনো ভূমিকা নেই। এর মূলে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের ভেটো ক্ষমতা। জাতিসংঘ একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা। তার তো নিজের কোনো স্বাধীনতা নেই। সুপার পাওয়ার যারা, তারা নিজেদের স্বার্থে এটাকে ব্যবহার করে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ভেঙে যায় তখন তো কথাই ছিল ন্যাটো আর বাড়বে না। কিন্তু সেটা তো মানা হয়নি। রাশিয়া দুর্বল হয়ে যাওয়ার পরও তাদের ন্যাটোর পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন ছিলো কিনা এটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। ন্যাটো-ওয়ারশর সময়ও কিন্তু ওই এলাকায় নিরপেক্ষ দেশ ছিল। ওইসব দেশকেও শেষ পর্যন্ত নিরপেক্ষতা রাখতে দেয়া হয়নি। তারা নিরপেক্ষ থাকলে হয়ত রাশিয়া এতটা আগ্রাসী হতো না।
কথাই ছিল ন্যাটো আর বাড়বে না: তৌহিদ
তিনি বলেন, "আমি ইউক্রেনে হামলার নিন্দা জানাই। হামলার পক্ষে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। কিন্তু রাশিয়ার মতো একটি দেশ সব সময় অ্যামেরিকার অনুগত থাকবে- এটা আশা করা যাায় না। তারা কেন ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে তা সহ্য করবে? এটা তো ওই অর্থে রাশিয়ার বর্ডার নয়। ইউক্রেন অনেকখানি রাশিয়ার ভেতরে।”
আর জাতিসংঘের সুপার পাওয়ারদের ভেটো ক্ষমতা সম্পর্কে তিনি বলেন, "এটা কাজের চেয়ে অকাজ বেশি করে। তারা ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায় না। তারা তাদের রাজনীতির হিসাব করে। ১৯৭১ সালে অ্যামেরিকা তো আমাদের পক্ষে দাঁড়ায়নি। তারা চেয়েছিল একটি যুদ্ধ বিরতির ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ঝুলিয়ে দিতে। তবে রাশিয়ার ভেটো তাদের সে ইচ্ছা সফল হতে দেয়নি। আর এখন রাশিয়া তার নিজের স্বার্থে এটা ব্যবহার করছে।”
এই তিনজন বিশ্লেষকই মনে করেন , ইউক্রেনকে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে আর এর পিছনে আছে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্বার্থ। ইউক্রেনের পাশে যাদের দাঁড়ানোর কথা ছিল, তারা এখন নানা অজুহাতে পিছিয়ে যাচ্ছে। নতুন হিসাব দেখাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এর শিকার হচ্ছেন ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ।
যুদ্ধ ও শান্তি: ন্যাটো ও ভেটোর ভূমিকা
সোভিয়েত রাশিয়ার হুমকির প্রেক্ষিতে জন্ম হলেও নিজেদের উদ্দেশ্য থেকে পরে অনেকটা সরে এসেছে ন্যাটো৷ শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত হলেও যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
ন্যাটোর জন্ম
১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি স্বাক্ষরের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু করে ন্যাটো৷ চুক্তির পঞ্চম ধারা অনুযায়ী, ‘‘এক বা একাধিক সদস্যের উপর সশস্ত্র হামলা সবার উপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে৷’’ জন্মলগ্নে জোটের ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল তিনটি: সোভিয়েত সম্প্রসারণ ঠেকানো, উত্তর অ্যামেরিকার শক্তিশালী উপস্থিতির মাধ্যমে ইউরোপের সামরিকায়ন নিষিদ্ধ করা এবং ইউরোপে রাজনৈতিক সংহতিকে উৎসাহ দেয়া৷
ছবি: Getty Images/Keystone
কারা সদস্য
শুরুতে ১২ সদস্য নিয়ে যাত্রা করে ন্যাটো৷ ১৯৫২ সালে যোগ দেয় গ্রিস ও তুরস্ক৷ পশ্চিম জার্মানি যোগ দেয় ১৯৫৫ সালে আর ১৯৮২ সালে স্পেন৷ ১৯৯৯ সালে পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক ও হাঙ্গেরি৷ বর্তমানে জোটের সদস্য সংখ্যা ৩০৷
ছবি: AP
নিজেদের বিরোধ
ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে বিভিন্ন সময় মতভেদ তৈরি হয়েছে৷ প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটে ১৯৫৬ সালে সুয়েজ সংকট নিয়ে৷ ১৯৬৬ সালে ন্যাটোর সামরিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেয় ফ্রান্স এবং সে দেশ থেকে জোটের প্রধান কার্যালয় সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানায়৷ নতুন কার্যালয় বসে বেলজিয়ামে৷ তবে ফ্রান্স জোটের মধ্যেই থেকে যায় এবং সংকটকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রাখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
সামরিক উত্তেজনা
১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়ার হামলা এবং ইউরোপে ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনকে কেন্দ্র করে নড়েচড়ে বসে ন্যাটো৷ পাল্টা জবাব হিসেবে পশ্চিম ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় জোট৷ ১৯৮৭ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে দুই পক্ষ ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য মাঝারিপাল্লার সব ব্যালাস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে নিতে সম্মত হয়, যাকে ঠান্ডা লড়াই সমাপ্তির প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়৷
ছবি: AP
ঠান্ডা লড়াই পরবর্তী যুগ
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়া ও বার্লিন দেয়ালের পতনের পর ন্যাটোর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে৷ তবে সময়ের সাথে সাথে বরং উল্টো ন্যাটোর সম্প্র্রসারণ চলতে থাকে৷ এক দশক ধরে চলা যুগোস্লাভ যুদ্ধ ও কসভো-সার্বিয়া সংঘাতে হস্তক্ষেপ করে জোট৷ গড়ে ওঠে ন্যাটো-বহির্ভূত সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক৷
ছবি: AP
নাইন-ইলেভেন: নতুন মোড়
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর ন্যাটো সদস্যসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র আফগানিস্তানে আল-কায়দার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেয়৷ ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাক যুদ্ধে সহায়তা কার্যক্রম চালায় ন্যাটো৷ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বাইরে অন্য রাষ্ট্রে সংঘাত, বিরোধেও নিজেদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে থাকে ন্যাটো৷ লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে থাকে৷
ছবি: Chao Soi Cheong/AP/picture alliance
রাশিয়ার সঙ্গে নতুন বিরোধ
পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে রাশিয়া৷ ইউক্রেন যাতে ন্যাটোতে যোগ না দেয় সবশেষ সেই নিশ্চয়তা দাবি করে ক্রেমলিন৷ এমন প্রেক্ষিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে হামলা শুরু করেন প্রেসিডেন্ট পুটিন৷ পূর্ব ইউরোপে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ালেও এই যুদ্ধে সরাসরি যুক্ত হবে না বলে জানিয়ে আসছে ন্যাটো৷ এই সংঘাত সামনে কোন দিকে মোড় নেবে তা সময়ই বলে দেবে৷
ছবি: Yasin Ozturk/AA/picture alliance
নিরাপত্তা পরিষদ
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের মূল উদ্দেশ্য বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা৷ ১৫ সদস্যের মধ্যে স্থায়ী সদস্য পাঁচ পরমাণু শক্তিধর দেশ: চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র৷ তাদের সবার সম্মতি ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত পাস করা যায় না৷ বিপরীতভাবে কোনো সিদ্ধান্তে কেউ ভেটো দিলে তা বাতিল হয়ে যায়৷ বিভিন্ন সময়ে এই পাঁচ সদস্য তাদের স্বার্থ অনুযায়ী ভেটো ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছে৷
ছবি: Yorick Jansens/dpa/picture alliance
সবচেয়ে বেশি রাশিয়া
ভেটো ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োগ করেছে রাশিয়া৷ ২৬৫টির মধ্যে ১১৯ বার ভেটো দিয়েছে তারা৷ ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদে যত ভেটো দেয়া হয়েছে তার সবগুলোই ছিল সোভিয়েত রাশিয়ার পক্ষ থেকে৷ শীতল যুদ্ধের যুগ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দিয়ে আসছে রাশিয়া৷ ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তোলা পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবেও ভেটো দেয় রাশিয়া৷
ছবি: Reuters
রাশিয়ার সহযোগী চীন
চীন মোট ১৬ বার ভেটো দিয়েছে, এর মধ্যে ১৩ বারই রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে আর তিনবার এককভাবে৷ ১৯৭১ সালের ২৫ আগস্ট চীন তার প্রথম ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেছিল জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তির বিরুদ্ধে৷
ছবি: ASSOCIATED PRESS/picture alliance
ইসরায়েলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র
ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগে রাশিয়ার পরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ ৮২ বার তারা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে৷ এর অনেকগুলোই ছিল ইসরায়েলকে নিয়ে৷ মধ্যপ্রাচ্য ও ফিলিস্তিনে সংঘাত ও হামলা নিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে বরাবরই ভেটো দিয়ে এসেছে ওয়াশিংটন৷ তবে ২০১৬ সালে ওবামা ক্ষমতায় থাকাকালে ইসারেয়েলের বসতিস্থাপন বন্ধে আনা একটি প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থাকে তারা৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress/A. Lohr-Jones
সহযোগী যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স
যুক্তরাজ্য ২৯ বার ও ফ্রান্স ১৬ বার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন প্রস্তাব নাকচ করেছে তারা৷ তবে ১৯৮৯ সালের পর ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য আর ভেটো ক্ষমতার ব্যবহার করেনি৷ সেবার পানামায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল দেশ তিনটি৷
ছবি: Reuters/C. Allegri
সবশেষ
নিরাপত্তা কাউন্সিলে তোলা প্রস্তাবে সবশেষ ভেটোর ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি৷ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বন্ধ ও নিন্দা জ্ঞাপনের প্রস্তাব আনে কয়েক ডজন দেশ৷ তবে রাশিয়ার একার ভেটোতে তা বাতিল হয়ে যায়৷