রেকর্ড সংখ্যক আগাম ভোট পড়ছে অ্যামেরিকায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ফ্লোরিডায় নিজের ভোট দিয়ে এসেছেন।
বিজ্ঞাপন
করোনা-কালে ভোটর আগেই ভোট দেয়া পছন্দ করছেন অ্যামেরিকার নাগরিকরা। শনিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পাঁচ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ভোট দিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসের ভোটারের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। পোস্টে অথবা কেন্দ্রে গিয়ে অধিকাংশ মানুষ আগাম ভোট দিয়ে এসেছেন।
আগামী ৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচন। ওই দিনই বুথে গিয়ে মার্কিন জনগণের ভোট দেওয়ার কথা। তবে দীর্ঘ দিন ধরেই অ্যামেরিকায় আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ আছে। মূলত পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে মার্কিন জনগণ আগাম ভোট দিতে পারেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় আগাম ভোট দেয়ার কেন্দ্র তৈরি করা হয়। সেখানে গিয়েও ভোট দিয়ে আসা যায়। করোনা-কালে অ্যামেরিকার প্রতিটি রাজ্যেই আগাম ভোটের সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। ৩ নভেম্বর ভোটের লাইন এড়াতে বহু মানুষ আগেই ভোট দিয়ে আসছেন সেখানে। বস্তুত, গত শনিবার ফ্লোরিডায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও আগাম ভোট দিয়ে এসেছেন।
কার্টুনিস্টদের চোখে মার্কিন নির্বাচন
আবারও ডনাল্ড ট্রাম্প, নাকি জো বাইডেন? কে হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট? বিশ্বের প্রখ্যাত কেরিক্যাচার শিল্পীদের ভাবনায় উঠে এসেছে নির্বাচনের বিভিন্ন দিক৷ আপনার কোন ছবি বা বিষয়বস্তু ভালো লেগেছে?
ছবি: Waldemar Mandzel/Toonpool
যুদ্ধাবস্থা
জো বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিস বলেছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প নোংরা উপায়ে নির্বাচন জিততে চান৷ তাঁর মনোভাবটাই যেন প্রকাশ পেয়েছে জার্মান শিল্পী ইয়েনস ক্রিকের আঁকা ছবিতে৷ ট্রাম্প যে কাউকে পাত্তা দেন না সেটাই ফুটে উঠেছে এই ছবিতে৷
ছবি: Jens Kricke/toonpool.com
ট্রাম্পের জন্য প্রচারণা
ট্রাম্প তার প্রচারণায় বরাবরই নিজেকে সর্বোত্তম হিসেবে উল্লেখ করেন৷ যেমন: ‘‘আমার মতো বর্ণবাদবিরোধী মানুষ খুঁজে পাবে না৷’’ ‘‘আমার মতো কেউ নারীদের সম্মান করে না’’ এবং ‘‘যুক্তরাষ্ট্রে আমার মতো ভালো প্রেসিডেন্ট কখনোই আসবে না৷’’ কিন্তু মার্টিন এর্লের এই ছবিতে ট্রাম্পের ভিন্ন রূপ, তিনি ফটোগ্রাফারের প্রশংসা করছেন৷ কারণ কী? ছবিতে দেখে নিন৷
ছবি: Martin Erl/toonpool.com
টিভি বিতর্ক
এই ছবির মাধ্যমে চেক শিল্পী মারিয়ান কামেনস্কি বিশ্ববাসীর কাছে জানতে চাইছেন, মার্কিন নির্বাচনের বিতর্ক সংস্কৃতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এবারের বিতর্কে রাজনৈতিক বাক-বিতণ্ডার বদলে দুই পক্ষ একে অপরকে অপমান করতে ব্যস্ত ছিল৷
‘ঘুমন্ত জো’ এবং ভাঁড়
ট্রাম্প বাইডেনের উদ্দেশে বিতর্কে বলেছিলেন তিনি একজন ‘ঘুমন্ত বুড়ো মানুষ’ এবং ‘চরমপন্থি বামদের পাপেট’৷ অন্যদিকে বাইডেন ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছিলেন বর্ণবাদী, মিথ্যুক, ভাঁড় এবং অ্যামেরিকার সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট বলে৷ ইটালির শিল্পী ক্রিস্টিলের আঁকা ছবিতে বিতর্কের প্রতিচ্ছ্ববি৷
শিশুর মতো আচরণ
আফ্রিকার মানুষও ট্রাম্পের আচরণকে শিশুতোষ বলে মনে করে৷ বুরকিনা ফাসোর কার্টুনিস্ট ডামিয়েন গ্লেজ তার ছবির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন ট্রাম্প যে-কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চান, ঠিক যেন একটা শিশু৷
ট্রাম্পজিলা
প্রথম জাপানিজ গর্জিলা মুভি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে৷ যে পথ দিয়ে গর্জিলা যেতো তার ধ্বংসচিহ্ন রেখে যেতো৷ জাপানি কার্টুনিস্ট তাকেশি কিশিনো’র ছবিতে ট্রাম্পকে গর্জিলা হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
শত্রুর শত্রু যখন মিত্র
গণতন্ত্রকে ‘কাঁচকলা দেখানো’ রাষ্ট্রনেতাদের ট্রাম্পের ভীষণ পছন্দ৷ যেমন: পুটিন, এর্দোয়ান, কিম জং উন৷ ডাচ কার্টুনিস্ট জেরেড রোয়ার্ডসের কার্টুনে তাই তাদের ‘আলফা মেলস’ হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
মেইল-ইন ভোটের পক্ষে না!
মেইলের মাধ্যমে ভোট হলে তা হবে জালিয়াতি, মেইল-ইন ভোটের বিরুদ্ধে এমনটাই বলেছেন ট্রাম্প৷ এমনকি পোস্টাল সার্ভিসের তহবিল কাটছাট করেছেন৷ করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বেশিরাগ ডেমোক্র্যাট এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে আগ্রহী৷ মারিয়ান কামেনিস্কির আঁকা কার্টুনে ট্রাম্পের আচরণের বহিঃপ্রকাশ৷
ছবি: Waldemar Mandzel/Toonpool
চিরস্থায়ী রাজত্ব
অ্যামেরিকার সংবিধান অনুযায়ী কেনো কোনো প্রেসিডেন্ট তৃতীয় দফায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প৷ তিনি কি আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকতে চান? জার্মান কার্টুনিস্ট ক্রিস্টিয়ানে ফোলমানের আঁকা ছবিতে সেই সম্ভাবনা ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Chrsitiane Pfohlmann/toonpool.com
9 ছবি1 | 9
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যত দিন যাচ্ছে, আগাম ভোট দেওয়ার প্রবণতা তত বাড়ছে। গত দুই দশকে আগাম ভোটের পরিমাণ প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে। তবে করোনা-কালে আগাম ভোটের সংখ্যা রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোটের এখনো এক সপ্তাহ বাকি, এখনই ২০১৬ সালের আগাম ভোটের রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে।
আগাম ভোট এবং পোস্টাল ব্যালট নিয়ে অবশ্য বহু দিন থেকেই বিতর্ক শুরু করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, এর ফলে কারচুপির যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কেও এ প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। এমনকী, দাবি করেছিলেন, আগাম ভোট এবং পোস্টাল ভোট বেশি পড়লে ভোটের ফলাফল নাও মানতে পারেন তিনি। যদিও তিনি নিজেই আগাম ভোট দিয়ে এসেছেন।
আগাম ভোটের পরিসংখ্যান দেখে মার্কিন নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এ বছর রেকর্ড সংখ্যক ভোট পড়তে পারে। বিভিন্ন রাজ্যে যে পরিমাণ আগাম ভোট পড়ছে, তা ২০১৬ সালের মোট ভোটের ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে।