1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের আগে গানের লড়াই

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট যত কাছে আসছে, রাজনৈতিক তরজাও তত বাড়ছে। সম্প্রতি দুটি জনপ্রিয় গানের প্যারোডি বানিয়েছে সিপিএম এবং বিজেপি। সেই নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

ছবি: Payel Samanta/DW

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির লেখা কয়েকটি গান ব্যাপকভাবে প্রচারে জায়গা করে নিয়েছিল। এবার ভোটের আগে সেই ধরনের সুরেলা প্রচার এখনো শুরু করেনি তৃণমূল। কিন্তু ভোটের বাজার সরগরম সিপিএম–এর বানানো ‘‌টুম্পা সোনা’ গানটির প্যারোডি নিয়ে। এই ‘‌টুম্পা সোনা’ সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হয়ে যাওয়া একটি গান। তার প্যারোডি প্রত্যাশামতোই লোকের কাছে পৌছে যাচ্ছে, যেখানে চাকরি না পেয়ে, পছন্দের মেয়েটিকে বিয়ে করতে না পেরে হতাশ এক বাঙালি যুবক তার বান্ধবী টুম্পাকে বলছে, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বামফ্রন্টের সমাবেশে জোট বেঁধে যোগ দিতে। কার্টুন ছবি দিয়ে বানানো ভিডিওটিতে বিজেপি এবং তৃণমূলকে সমধর্মী বলে কটাক্ষ করে, বামেরাই যে একমাত্র বিকল্প, সেকথা বলা হয়েছে।

টুম্পা সোনা-কে যদি মানুষ রাখে, থাকবে: কঙ্কন ভট্টাচার্য, বামপন্থি গণসংগীত শিল্পী

This browser does not support the audio element.

যদিও বামপন্থিদের একাংশ টুম্পা সোনার মতো একটি চটুল গানকে এভাবে রাজনৈতিক প্রচারে জড়িয়ে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ। অনেকেই বলছেন, বামপন্থিদের গণসংগীত যেখানে হেমাঙ্গ বিশ্বাস, সলিল চৌধুরিদের ঐতিহ্য এবং মর্যাদার উত্তরাধিকার বহন করছে, সেখানে এই গান বামপন্থার সম্মানহানি করছে। কোনো কোনো বাম নেতা অবশ্য বলছেন, গান, সে যে রকমের গানই হোক, তা যদি মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করতে পারে, তা হলে ছুঁৎমার্গ থাকা উচিত নয়।

টুম্পা সোনার প্যারোডি আদৌ মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারবে কিনা, সে প্রসঙ্গে বিশিষ্ট বামপন্থি গণসংগীত শিল্পী কঙ্কন ভট্টাচার্য বললেন, ‘‌‘‌কোনো শিল্পকর্ম জোর করে টিকিয়ে রাখা যায় না। যেটা থাকার, সেটা এমনিই থাকে। যেটা যাওয়ার, সেটা চলে যায়। এটা মুহূর্তে বিচার করা খুব মুস্কিল। এটা একদিন থাকবে, দুদিন থাকবে, না ভবিষ্যতেও থাকবে, সেটা সময়ই বলবে।’’ এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সুরকার, ‘‌পথে এবার নামো সাথী’, ‘‌হেই সামালো ধান হো'‌, ইত্যাদি বহু যুগোত্তীর্ণ গানের স্রষ্টা, প্রয়াত সলিল চৌধুরির একটা কথা স্মরণ করেছেন কঙ্কন, যে যে গানের সঙ্গে দেশের মাটির যোগ আছে, সেই গানই থাকে, কালজয়ী হয়।

ফ্যাসিজম বিরোধী গান গাওয়ার সত্ব কি শুধু বামপন্থিদের: শমীক ভট্টাচার্য, বিজেপি নেতা

This browser does not support the audio element.

এদিকে বিজেপি বিখ্যাত প্রতিবাদের গান ‘‌বেলা চাও’–এর সুরে একটি গান বেঁধেছে— পিসি যাও। পিসি বলতে এক্ষেত্রে অবশ্যই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, যিনি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির সম্পর্কে পিসি, যে অভিষেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। এখন যখন অভিষেকের স্ত্রী এবং শ্যালিকার বাড়িতে অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখা অভিযান চালাচ্ছে, তখন এই গানটি আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। কিন্তু উত্তর ইটালির কৃষিশ্রমিকদের যে গান একসময় ইটালি এবং জার্মানিতে ফ্যাসিবাদ–বিরোধী আন্দোলনের স্লোগান হয়ে উঠেছিল, সেই গান কী করে বিজেপি গ্রহণ করতে পারে?‌ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‌‘‌ফ্যাসিবাদ বিরোধী গান গাইবার অধিকার, তার ইজারা, বা পুরো সত্বটাই কি পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থিরা নিয়ে ফেলেছেন?‌ এখন তো তারা এতটাই অপ্রাসঙ্গিক এবং অপাংক্তেয় যে, শেষ পর্যন্ত তাদের কৃত্রিম গাম্ভীর্য ছেড়ে টুম্পা সোনাকে আঁকড়ে ধরেছেন!‌’’ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, যে কোনো গানেরই প্যারোডি হতে পারে। তার বিরোধিতা করলে সৃজনশীলতারই বিরোধিতা করা হয়।

এই গানের লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এখনও অংশ নেওয়া বাকি। কবীর সুমন, ইন্দ্রনীল সেন, নচিকেতার মতো বড় মাপের গায়ক যে দলে, তারা এবার পাল্টা কোন সুরে শান দিচ্ছে, অনেকেই এখন সেদিকে তাকিয়ে আছে।  

১৮ ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ