আস্থা ভোটে হেরে গেছেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। কিন্তু তিনি জার্মানিতে ভোটের আগে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে চান।
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে এখন পুরোদমে প্রচার শুরু হয়ে গেছে। তার মধ্যেই শলৎস জানিয়েছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি ডনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে চান।
বার্তাসংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, ট্রাম্প ভোটে জেতার পরই শলৎস তাকে ফোন করে অভিনন্দন জানান। তখনই তিনি আশাপ্রকাশ করেন, ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি তার সঙ্গে দেখা করবেন।
সূত্র উদ্ধৃত করে ডিপিএ জানিয়েছে, খুব সম্ভবত জার্মানিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হবে। তাই তার আগে ওয়াশিংটন ডিসি-তে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে শলৎসের দেখা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই আগামী ২০ জানুয়ারি তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে অন্য কোন নেতাকে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তা এখনো বলা হয়নি।
বার্লিন বা ওয়াশিংটন জানায়নি, শলৎসের নাম আমন্ত্রিতদের তালিকায় আছে কি না।
দলগুলির প্রচারের বিষয় কি?
জার্মানির মধ্য-ডানপন্থি সিডিইউ ও তার সহযোগী সিএসইউ আয়করের হার কমাতে চায়। তারা কোম্পানিগুলির করও ক্রমশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করতে চায়। তারা জানিয়েছে, বয়স্কদের পেনশন ছাঁটাই করা হবে না। তবে যারা ৬৭ বছরের পরেও কাজ করতে চান, তাদের পেনশন ছাড়াও দুই হাজার ইউরো আয়ের উপর কোনো কর বসানো হবে না।
২০২৫-এর নির্বাচনে জার্মানির চ্যান্সেলর প্রার্থী যারা
২০২৫-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জার্মান সংসদ বুন্ডেসটাগের আগাম নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করছে৷ ছবিঘরে দেখে নেয়া যাক কারা হতে পারেন চ্যান্সেলর প্রার্থী।
ছবি: Kay Nietfeld/dpa/picture alliance
ওলাফ শলৎস, এসপিডি
বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবারও চ্যান্সেলর হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের ৬৬ বছর বয়সি চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলৎসের নিজের একটি আইন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অতীতে হামবুর্গ শহরের মেয়র, দেশের শ্রমমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা শলৎসের জনপ্রিয়তা এখন অবশ্য বেশ পড়তির দিকে।
ছবি: Annegret Hilse/REUTERS
ফ্রিডরিশ ম্যারৎস, সিডিইউ
রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটদের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ফ্রিডরিশ ম্যারৎসের জন্ম ১৯৫৫ সালে। আইনজীবী ম্যারৎস বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংস্থা ব্ল্যাকরক-এ কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার।
ছবি: Ruffer/Caro/picture alliance
রবার্ট হাবেক, গ্রিন পার্টি
৫৫ বছর বয়সি রবার্ট হাবেক গ্রিন পার্টি চ্যান্সেলর প্রার্থী। তার সবচেয়ে বড় গুণ নিজের ভুল স্বীকার করতে পিছপা হন না। রবার্ট হাবেক-ই প্রথম বর্তমান জোট সরকারের ব্যর্থতা ও জোটের শরিকদের মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেন। রাজনীতির বাইরে হাবেক একজন লেখক, অনুবাদক ও দার্শনিক।
ছবি: appeler/dpa/picture alliance
আলিস ভাইডেল, এএফডি
অর্থনীতিতে পিএইচডি করা আলিস ভাইডেলের জন্ম ১৯৭৯ সালে৷ উগ্র ডানপন্থি দল এএফডির কো-চেয়ারম্যান পড়ালেখা ও চাকরি করেছেন চীনে। অভিবাসনবিরোধী প্রচারণার কারণে আলিস ভাইডেল ইতিমধ্যে বেশ আলোচিত-সমালোচিত। শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত এক নারী তার ‘সিভিল পার্টনার’৷ বছরের বেশির ভাগ সময় সেই নারীর সঙ্গে সুইজারল্যান্ডে থাকেন আলিস। দুটি শিশু দত্তক নিয়েছেন তারা।
আলিস ভাইডেলের মতো জার্মানির বর্তমান অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারের জন্মও ১৯৭৯ সালে। মন্ত্রীসভা থেকে তাকে বহিষ্কার করার মাধ্যমেই ভেঙে পড়ে জোট সরকার। ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার পড়াশোনা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে৷ একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ সংস্থার মালিক লিন্ডনার জার্মান বিমান বাহিনীর একজন রিজার্ভ সদস্যও। ৩৪ বছর বয়সে নিওলিবারেল রাজনৈতিক দল ফ্রি ডেমোক্র্যাট (এফডিপি)-র চেয়ারম্যান হন তিনি।
ছবি: Hannes P Albert/dpa/picture alliance
জাহরা ভাগেন্কনেখট, বেএসভে
রাজনৈতিক টকশোর পরিচিত মুখ, সাবেক বাম রাজনীতিবিদ জাহরা ভাগেন্কনেখট বর্তমানে পপুলিস্ট মতাদর্শের প্রচারক। রক্ষণশীল সামাজিক নীতি, বাম ধারার অনুপ্রাণিত অর্থনৈতিক নীতি ও অভিবাসন বিরোধিতার কারণে তিনি বেশ পরিচিত। জারাহ জলবায়ু পরিবর্তন ও ন্যাটোর বিষয়েও কঠোর।
ছবি: Kay Nietfeld/dpa/picture alliance
ইয়ান ফান আকেন, লেফট পার্টি
পশ্চিম জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করা ইয়ান জীববিজ্ঞানে পিএইচডি৷ ২০০৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত কাজ করেছেন জাতিসংঘের বায়োলজিক্যাল উইপন্স পরিদর্শক হিসেবে। ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত জার্মান সংসদে বামদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ইয়ান। চলতি বছর অক্টোবরে জার্মান বাম দলের কো-চেয়ার নির্বাচিত হয়েছেন ৬৩ বছর বয়সি ইয়ান।
ছবি: Axel Heimken/dpa/picture-alliance
7 ছবি1 | 7
সোস্যাল ডেমোক্র্যাট(এসপিডি) চায় রাষ্ট্রের ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে নিয়মের সংস্কার করা হোক। তাহলে রাষ্ট্রের হাতে বিনিয়োগের জন্য অর্থ থাকবে। পরিকাঠামো তৈরির জন্য আরো অর্থ খরচ করা যাবে। তারা চায়, যে বড়লোকদের সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি ইউরোর বেশি, তাদের সম্পত্তি কর দিতে হবে। চ্যান্সেলর শলৎস বলেছেন, ন্যূনতম মজুরির পরিমাণও বাড়াতে চান তিনি।
গ্রিন পার্টিও চায়, রাষ্ট্রের ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে যে সীমা ঠিক করে দেয়া হয়েছে, তার বদল ঘটুক। তারা ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে ভর্তুকি চালু করতে চায়। পেনশন নিশ্চিত করার জন্য সিটিজেনস ফান্ড তৈরি করতে চায় গ্রিন পার্টি। তারাও বড়লোকদের আয়ের উপর কর বসানোর পক্ষে।
অতি-ডানপন্থি এএফডি-র খসড়া ইস্তেহারে বলা হয়েছে, তারা চায়, জার্মানি ইইউ থেকে বেরিয়ে আসুক এবং ইউরো ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুক। এএফডি রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির পক্ষে এবং তারা কয়লাভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে। এএফডি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকাতে সীমান্তে কড়া প্রহরা চায়। অন্য ইইউ দেশ থেকে যারা জার্মানিতে এসেছেন, এএফডি তাদের ফেরত পাঠাতে চায়।