1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের খবরে সাংবাদিকের হাতে হাতকড়া

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১ জানুয়ারি ২০১৯

নির্বাচনের ফলাফলে ‘গরমিল' সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশের দায়ে খুলনায় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে৷ তাঁদের একজনকে মঙ্গলবার আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ অন্যজনকে খুঁজছে পুলিশ৷

Symbolbild - polizeiliche Festnahme
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken

কারাগারে পাঠানো ওই সাংবাদিকের নাম হেদায়েৎ হোসেন৷ তিনি ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি৷

একই অভিযোগে দৈনিক মানবজমিনের খুলনা প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে৷ মামলাটি দায়ের করেছেন খুলানার বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী৷

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বটিয়াঘাটা থানার ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম সোহেল ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর বিরুদ্ধে ৩১ ডিসেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন৷ ওই মামলার ভিত্তিতে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছি৷ আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন৷ কাল (বুধবার) রিমান্ডের শুনানি হবে৷''

ইব্রাহিম সোহেল

This browser does not support the audio element.

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘‘ঢাকা ট্রিবিউন-এর বাংলা অনলাইনে এবং মানবজমিন পত্রিকায়  ‘খুলনা-১ , মোট ভোটারের চেয়ে ২২,৪১৯ ভোট বেশি পড়েছে' শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়৷ যা মিথ্যা এবং অসত্য৷ তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিতর্কিত করার জন্য এই খবর পরিবেশন করেছেন৷ যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ৷''

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে কয়েকবার টেলিফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি৷ তবে খুলনার জেলা প্রশাসক এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা হেলাল হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ওই সাংবাদিকরা অসত্য খবর পরিবেশন করেছেন৷ আমাদেরকে সঠিকভাবে উদ্ধৃত করেননি৷ বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন পর্যালোচনা করে মামলার নির্দেশ দিয়েছে৷ সেই অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে৷''

হেলাল হোসেন

This browser does not support the audio element.

রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হয়- এটাতো সংশোধনের সুযোগ ছিল এবং আরো দেশি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমেও খবরটি প্রকাশ হয়েছে৷ তিনি উত্তরে বলেন, ‘‘তারা তো আমাদের সাথে কথাই বলেননি৷ আমাদের তো লিখিত প্রতিবাদ দেয়ার সুযোগ নেই৷ আর ওই দু'টি সংবাদ মাধ্যম থেকেই অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত হয়েছে৷''

গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক হেদায়েৎ খুলনা প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ৷ তাঁর সহকর্মীরা জানান, দুপুর দু'টার দিকে প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার পরই পুলিশ তাকে আটক করে৷ এসময় হাতকড়া পড়িয়েই তাঁকে আদালতে হাজির ও পরে কারাগারে পাঠানো হয়৷সাংবাদিকদের উপর অদৃশ্য চাপ!

এভাবে সংবাদ প্রকাশের দায়ে সাংবাদিক আটকের ঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে৷

নূর খান

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহসচিব শাবান মাহমুদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আগেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের যে আশঙ্কা করেছিলাম  তাই সত্য হলো৷ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সব পক্ষের বক্তব্য আছে৷ যদি সেখানে কোনো ভুল থাকে, তাহলে তা সংশোধনের সুযোগ আছে৷ কিন্তু তা না করে দু'জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হলো, একজনকে গ্রেপ্তার করা হলো৷ এটা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ এটা পেশাদার সাংবাকিদতার পথে বড় বাধা৷ আমরা মামলা প্রত্যাহার ও আটক সাংবাদিকের মুক্তি দাবি জানাই৷''

মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পারিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তারের এই ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি চরম হুমকি এবং মানবাধিকারের লংঘন‘সামনে সাংবাদিকদের আরো বেশি দুর্দিন আসছে’৷ তাঁরা নির্বাচনের অনিয়মের খবর প্রকাশ করেছেন৷ এটাই তাদের কাজ৷ এই মামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সাংবাদিকরা যাতে আর অনিয়মের খবর প্রকাশ না করে সেজন্য হুমকি ও ভয় দেখানো হলো৷''

আতিয়ার পারভেজ

This browser does not support the audio element.

বাংলাভিশন-এর সাংবাদিক এবং প্রেসক্লাবের নেতা আতিয়ার পারভেজ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘নির্বাচনি ফলাফলের যে তথ্যের কথা বলা হচ্ছে, তা রিটানিং অফিসারের কার্যালয় থেকে প্রকাশ করার পর তারা ভুল বুঝতে পেরে আবার কারেকশন দেয়৷ তারা অসাধনতাবশত ভুল করে বেশি ভোটের কথা বলেছিলেন৷ আমরাও তা আবার সংশোধন করেছি৷ ওই দু'টি সংবাদ মাধ্যমও আগের নিউজ প্রত্যাহার করেছে৷ তারপরও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারে আমরা ক্ষুব্ধ৷ আমরা এর বিরুদ্ধে কর্মসূচিতে যাচ্ছি৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আটক সাংবাদিককে হাতকড়া পড়ানোর ঘটনা খুবই দু:খজনক৷ এটা পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করা৷''

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ