1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের জন্য প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন

হারুন উর রশীদ স্বপন
২ জানুয়ারি ২০২৪

আর তিনদিন পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি এবং তাদের ‘সমমনা'রা এই নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধ করতে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী।

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন৷
চার দিন পর ভোট৷ নির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধ করতে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন।ছবি: bdnews24.com

নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য একজন প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করেছে। তিনি হলেন লক্ষ্মীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান পবন। অন্যদিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ এবং বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন। ফলে তারা আর নির্বাচন করতে পারছেন না। অন্যদিকে ফরিদপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী শামীম হকের দ্বৈত নাগরিকত্বের ব্যাপারে আপিল বিভাগ শুনানি করবেন নির্বাচনের পর। ফলে শামীম হক নির্বাচনে প্রার্থী থাকছেন।

পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধাপে ধাপে মোতায়েন শুরু হয়েছে। বিজিবি এবং কোস্টগার্ডও থাকবে। এর বাইরে থাকছেন তিন হাজার ৮২০ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। তবে এরইমধ্যে আট বিভাগে এক হাজার ১৬২ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে নির্বাচনের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে।  আর ভ্রাম্যমাণ আদালতে আছেন ৭৫৪ জন ম্যাজিষ্ট্রেট । আরো এক হাজার ৪০৯ জন ম্যাজিষ্ট্রেট ভোটের দিন দায়িত্ব পালন করবেন।

নির্বাচনে নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ সদস্যরা। সারা দেশে মোট এক লাখ ৭৫ হাজার পুলিশ ফোর্স নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন ২২ হাজার পুলিশ সদস্য। এর বাইরে সেনাসদস্য, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ড মিলিয়ে আরো প্রায় ৫০ হাজার ফোর্স মোতায়েন থাকবে। তারা নির্বাচনের দুই-তিন দিন আগেই পূর্ণ শক্তিতে কেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তা, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার, ভোটার ও প্রার্থীসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকার সড়কে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার, ভোটারদের কাছে টানতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন প্রার্থীরা৷ছবি: Habibur Rahman/Zumapress/picture alliance

নির্বাচনে ৪২ হাজার ১৪৯টি ভোটকেন্দ্র এবং ভোটকক্ষ থাকবে দুই লাখ ৬১ হাজার ৫৬৫টি।এবারের নির্বাচনে মোট ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন।

নির্বাচনে পুলিশ ভোট কেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তায় থাকবে। সেনাবহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও র‌্যাব সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্সের দায়িত্ব পালন করবে। আর ভোট কেন্দ্রের ভিতরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন আনসার সদস্যরা। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৭জন আনসার সদস্য থাকবেন। এই কাজে নিয়োজিত থাকবেন সাত লাখেরও বেশি আনসার সদস্য।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে ব্যালট পেপার পাঠানো শুরু হয়েছে। দূরবর্তী ও দুর্গম এলাকা বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে এই ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে। ব্যালট বাক্স আগেই পাঠানো শুরু হয়েছে। তবে ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে ভোটের দিন সকালে।

৩০০ আসনের মধ্যে নির্বাচন হবে ২৯৯ আসনে ।নওগাঁ-২ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আমিনুল হকের মৃত্যুর কারণে ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। মোট প্রার্থী এক হাজার ৮৯৫ জন।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "নির্বাচনে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি ভালো। ১১ টি আসন বাদে আর সব আসনের ব্যালট পেপার পৌঁছে গেছে। কালকের ( বুধবার) মধ্যে ২৯৯ আসনেই ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে। একটি আসনে প্রার্থীর মুত্যুর কারণে নির্বাচন স্থগিত আছে। শতকরা ৮৫ ভাগ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ভোটের দিন সকালে যাবে। আর যে কেন্দ্রগুলো দুর্গম এলাকায়, সেখানে ভোটের আগের দিন যাবে। ”

সেনাবাহিনী বুধবার থেকে মাঠে নামবে: অশোক কুমার দেবনাথ

This browser does not support the audio element.

" আইন-শৃঙ্খলা এবং প্রস্তুতি ভালো আছে। সেনাবাহিনী কাল (বুধবার) থেকে মাঠে নামবে। তারা উপজেলা পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরাও কাজ শুরু করবেন। নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। অভিযোগের নিষ্পত্তিও প্রায় শেষ। আমরা একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছি।," জানান  নির্বাচন কমিশনের এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, "আমরা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে এখানো কোনো খারাপ আশঙ্কা করছি না। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি আছে৷

জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরছেন নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে। তিনি মঙ্গলবার গাজীপুরে অবস্থান করছিলেন। তিনি বলেন, "আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক প্রস্তুতি আমার কাছে ভালোই মনে হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয় তা নির্বাচনের দিন বোঝা যাবে। নির্বাচন কমিশন একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ বিভিন্ন বিষয়ে দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছে। এই নির্বাচনকে নানা কারণে সিরিয়াসলি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।প্রধান নির্বাচন কমিশনার তো বলেই দিয়েছেন তাদের ঘাড়ের ওপর থাবা আছে।আর নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, তারা ক্রেডিবল নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র সংকটে পড়বে।”

সার্বিক প্রস্তুতি ভালো মনে হচ্ছে: নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ

This browser does not support the audio element.

তবে তিনি মনে করেন, "বিএনপিসহ তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন বর্জন এবং ভোটদানে বিরত থাকার আহ্বান পুরো প্রক্রিয়াটিতে অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলেছে।  সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে সেটা হতো আদর্শস্থানীয়। যেটি হচ্ছে সেটা আংশিক ত্রুটিপূর্ণ।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ