সপ্তাহান্তের তিনটি জরিপে দেখা যায় যে, ‘‘রিমেইন'' বা ইইউ-তে থাকার পক্ষপাতীদের অনুপাত কিছুটা বেড়েছে৷ লেবার রাজনীতিক জো কক্স-এর হত্যাকাণ্ডের পর রবিবার আবার দু'পক্ষের প্রচার অভিযান শুরু হয়৷
বিজ্ঞাপন
সাবেক মন্ত্রী ও শাসক কনজারভেটিভ দলের যুগ্ম-সভাপতি ব্যারোনেস সঈদা ওয়ার্সি ‘‘লিভ'' অর্থাৎ ব্রেক্সিট সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ঘৃণা ও বহিরাগত বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন ও জানিয়েছেন যে তিনি এখন থেকে ‘‘রিমেইন'' শিবিরকে সমর্থন করবেন৷
সপ্তাহান্তের তিনটি জরিপে ‘‘রিমেইন'' আন্দোলনের গতিবেগ বাড়ার আভাস থাকায়, সোমবার মার্কিন ডলারের সঙ্গে ব্রিটিশ পাউন্ডের বিনিময়মূল্য প্রায় দুই শতাংশ বেড়ে যায়৷ জাপানি ইয়েনের সঙ্গে পাউন্ডের বিনিময়মূল্যও বাড়তে দেখা যায়৷ ইউরোপীয় শেয়ারবাজারগুলিতে তেজীর লক্ষণ, বিশেষ করে ব্যাংকিং সেক্টরের শেয়ারের দাম বাড়ে, রয়াল ব্যাংক অফ স্কটল্যান্ডের প্রায় সাত শতাংশ, লয়েডস-এর প্রায় ছয় শতাংশ৷
ব্রিটিনের জনগণ সব কিছু নিয়ে বাজি ধরতে ওস্তাদ৷ কাজেই সোমবার ‘‘রিমেইন'' ভোটের জেতার ‘অডস' বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ শতাংশে৷
ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মুখে ব্রিটেন
ব্রিটিশ ভোটাররা এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, যার পরিণতি হবে সুদূরপ্রসারী৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ছেড়ে দেবার পক্ষে-বিপক্ষে জোরালো অভিযান চালাচ্ছে দুই শিবির৷ দাঁড়িপাল্লায় সমর্থনের মাত্রা প্রায় সমান-সমান৷
ছবি: Reuters/T. Melville
যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত
একক বাজার ও শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের মতো লাভজনক সুবিধার প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে ব্রিটেনের কোনো আপত্তি নেই৷ কিন্তু শুধু পণ্য ও পরিষেবা নয়, নাগরিকদের অবাধ প্রবেশের অধিকার, অভিন্ন মুদ্রা, শরণার্থীদের আশ্রয়ের মতো বিষয় তাদের পছন্দ নয়৷ এই ভাবমূর্তি কতটা ঠিক, গণভোটে তার প্রমাণ পাওয়া যবে৷
ছবি: Reuters/T. Melville
ব্রেক্সিট-এর প্রবক্তাদের যুক্তি
‘লিভ’ ক্যাম্পেন ভোটারদের উদ্দেশ্য ইইউ-র আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মের বেড়াজাল থেকে ব্রিটেনকে মুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে৷ তাদের যুক্তি, নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ‘স্বাধীনতা’ ফিরে পেলে ব্রিটেন আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে, বিশ্বে তাদের মর্যাদা বাড়বে৷
ছবি: Imago
‘ব্রেক্সিট অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে’
ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে প্রবল অনিশ্চয়তা ও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে ব্রিটেনের ব্যবসা-বাণিজ্য জগত৷ তাদের মতে, ভবিষ্যতে ইইউ-র সঙ্গে সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হলেও প্রথম কয়েক বছরে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Halle'n
মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগ
ব্রেক্সিট শিবির ব্রিটিশ ভোটারদের সামনে ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে৷ যেমন তাদের দাবি, তুরস্কের নাগরিকরা নাকি অদূর ভবিষ্যতে দলে দলে ব্রিটেনে বসবাস করতে আসছে৷ ‘রিমেন’ শিবিরের বিরুদ্ধেও আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ উঠছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. J. Ratcliffe
ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুগের রূপরেখা
ইইউ-র বাইরে ব্রিটেনের বিকল্প সম্পর্কে স্পষ্ট চালচিত্র দিতে ব্যর্থ হচ্ছে ব্রেক্সিট শিবির৷ নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশকে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরলেও এই দুই দেশকে যে বাধ্যতামূলকভাবে ইইউ-র অনেক নীতি কার্যকর করতে হয়, সেই সত্যটা গোপন রাখা হচ্ছে৷
ছবি: DW/B.Riegert
ইউরোপে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ
ভোটাররা ব্রেক্সিট-এর বিরুদ্ধে রায় দিলেও ব্রিটেন-এর সঙ্গে ইইউ-র সম্পর্ক আগের মতোই থাকবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা-কল্পনা চলছে৷ সংহতি দেখানোর বদলে প্রায় প্রতিটি বিষয়ে আলাদা ছাড় দাবি করার ব্রিটিশ অভ্যাস নিয়ে বিরক্ত ইইউ-র বেশিরভাগ দেশ৷
ছবি: Reuters/Y. Herman
6 ছবি1 | 6
অপরদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার সোমবার সাবধান করে দেন যে, ব্রিটেন যদি ইইউ পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংহতিকরণ যা-তে উল্টোপথে চলতে শুরু না করে, তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ ‘‘ইউরোপ যা-তে একক রাষ্ট্রগুলির জাতীয়তাবাদে ফিরে না যায়, তা নিশ্চিত করা আমাদের যৌথ দায়িত্ব'', বলেন স্টাইনমায়ার৷
আপনার কী মনে হয়? ব্রিটেন কি ইইউ-র থেকে আলাদা হয়ে যাবে? নীচের ঘরে লিখুন৷