1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের দিন যা দেখলাম, বুঝলাম

ডয়চে ভেলের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম৷
আরাফাতুল ইসলাম
৭ জানুয়ারি ২০২৪

বিএনপিসহ কয়েক দলের ডাকা হরতাল, আর নির্বাচন উপলক্ষ্যে সাধারণ ছুটির দিন রোববার ঢাকার রাজপথ পুরোপুরি ফাঁকা ছিল৷ ফলে সহজেই চষে বেড়ানো গেছে একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত৷

ছবি: Munir Uz Zaman/AFP

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল৷ অনিবন্ধিত বেশ কিছু দলও রয়েছে এই তালিকায়৷

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি৷ শুধু তাই নয়, বলতে গেলে বিএনপির পুরো শীর্ষ পর্যায়কে জেলে রেখে সাত জানুয়ারির ভোটের আয়োজন করা হয়েছে৷ দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী হয় জেলে, না হয় লুকিয়ে কাটিয়েছে গত কয়েকমাস৷

বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ নানা ঘটনার৷ সেসব ঘটনায় করা নতুন পুরাতন মামলার অনেকগুলোই গায়েবি, সাজানো বলছে গণমাধ্যম৷ তবে সাজা ঠিকই হয়েছে, হচ্ছে৷ তবে ক্ষমতাসীনদের মন মতো নির্বাচনে যেতে রাজি হয়েছেন এমন দু'একজন বিএনপি নেতাকর্মী রাতারাতি ছাড়াও পেয়েছেন৷  

কার্যত যে রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলকে সত্যিকার অর্থে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে, সেই দলকে বাইরে রেখেই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে৷ আর তাতে অংশ নিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং তার ঘনিষ্ঠরা৷ 

এমন এক নির্বাচন যার ফলাফল সবারই জানা আগে থেকে৷ তারপরও সেই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কেমন হয় তা নিয়ে একটা আগ্রহ তৈরি করেছে রাজনৈতিক দলগুলোই৷ দমনপীড়নের মুখে কোনঠাসা বিএনপি ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে, কার্যত লুকিয়ে থেকে হরতাল, অবরোধসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছে৷

অন্যদিকে, ক্ষমতাসীনরা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করেছে, ক্ষেত্রবিশেষ ভোট না দিলে বিভিন্ন ভাতাবন্ধের হুমকিও দিয়েছে৷

রোববার ঢাকা শহরের বিভিন্নকেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন ডয়চে ভেলের সাংবাদিকরা৷ আমি নিজেও গিয়েছি নয়টি ভোটকেন্দ্রে৷ সবগুলো কেন্দ্র থেকেই ফেসবুক লাইভ করা হয়েছে৷

যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় তাহচ্ছে ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ভোট পড়ার সংখ্যা মোট ভোটারের সংখ্যার তুলনায় বেশ কমই পাওয়া গেছে অধিকাংশ কেন্দ্রে৷ শেষ বেলায় যে তিনটি কেন্দ্রে গিয়েছিলাম সেখানেও ভোট পড়ার সংখ্যা খুব বেশি দেখা যায়নি৷

তিনটি কেন্দ্রের পরিস্থিতি আমার কাছে চমকপ্রদ ছিল৷ ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের কেন্দ্রে কমলা রংয়ের টুপি, গেঞ্জি পরা অনেককে দেখেছি৷ তারা সবাই বিহারী ক্যাম্প থেকে এসেছেন৷ অনেক উর্দু ভাষাতে কথা বলছিলেন৷ তারা জানালেন, নৌকার সমর্থক তারা৷ নৌকাকে জেতাতেই এসেছেন৷ তবে সেখানে কেন্দ্রের বাইরের ভিড়ের তুলনায় ভেতরে ভোট পড়ার সংখ্যা বেশ কম ছিল৷

উত্তরার একটি কেন্দ্রেও দেখেছি একই দশা৷ বাইরে ভিড়, ভেতরে সেই তুলনায় ভোটের হার কম৷ মিরপুরে একটি কেন্দ্রে অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় বেশি ভোট পড়ার তথ্য পেয়েছি আমরা৷ সেখানে অবশ্য ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভিড় তেমন একটা ছিল না৷ আমরা যাওয়ার পর সেখানে থাকা চার-পাঁচজনের লাইনটি একটু দীর্ঘ হয়৷ তাদের অনেকের গলায় ঝুলছিল নৌকার ব্যাজ৷  

ভোটের শেষ ঘণ্টায় যে তিনটি ভোটকেন্দ্রে গিয়েছি সেগুলোতেও ভোট পড়ার হার তেমন একটা উল্লেখযোগ্য ছিল না৷ ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় এসব কেন্দ্রের সবগুলো লাইভই রয়েছে৷ 

এই লেখা যখন লিখছি, তখন অবশ্য টেলিভিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য প্রচার হচ্ছে যে সারাদেশে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে৷  

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোটের হার যাই হোক, এটা নিশ্চিত যে ক্ষমতাসীন দলই আরো এক মেয়াদে যাওয়ার পথ পরিষ্কার করে ফেলেছে৷ পরিবর্তন হবে শুধু কিছু আসনে, আর বিরোধী দল কে হবে তা নিয়েও রয়েছে আলোচনা৷

এমন এক নির্বাচন ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে কোনদিকে নিয়ে যাবে সেটা সময়ই বলে দেবে৷ সেই ভবিষ্যত নিয়ে অবশ্য সাধারণ ভোটারদের খুব একটা ভাবিত মনে হচ্ছে না, তাদের ভাবনায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিই জায়গা পাচ্ছে বেশি৷ বাকিটা দৃশ্যত নীরবে মানিয়ে চলার মুডেই দেখা যাচ্ছে তাদের৷

জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য: শেখ হাসিনা

02:38

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ