1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের ময়দানে ক্লাব অনুদান ঘিরে তরজা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৮ এপ্রিল ২০২১

বিধানসভা ভোটের মুখে ক্লাবের অনুদান নিয়ে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে তরজা চলছিল। এবার বিতর্ক উসকে বিজেপির তারকা প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় সরাসরি অভিযোগ আনলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Indien Geldverleiher in Ahmedabad
ছবি: REUTERS/File Photo/A. Dave

দান-খয়রাতির রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গে নতুন নয়। বিরোধীদের অভিযোগ, কোষাগারের বেহাল দশা হলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লাবগুলিকে অনুদান দিয়েছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েক দফায় ঢালাও অনুদান দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পাড়ায় ক্লাব-সংগঠনকে। পাশাপাশি দুর্গাপুজোতেও অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার। এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হয়েছিল। তা সত্ত্বেও গত লোকসভা নির্বাচনের মতো এই বিধানসভা ভোটের মুখে ফেব্রুয়ারি মাসে ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। বিরোধীরা এ নিয়ে আঙুল তুললেও তাঁর বক্তব্য, রাজনীতির কথা ভেবে তিনি ক্লাবে টাকা দেননি। টাকার বিনিময়ে কোনও ক্লাবকে তৃণমূলের কাজ করতেও বলেননি।

নতুন বিতর্কের সূত্রপাত

ভোটের আবহাওয়ায় এই দান-খয়রাতি কি তৃণমূলকে কোনো বাড়তি ডিভিডেন্ট দিচ্ছে? সম্প্রতি এ নিয়ে কটাক্ষ করে বিতর্ক উসকে দিচ্ছেন বেহালা পশ্চিম বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী, অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, "স্থানীয় ক্লাবগুলিকে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করতে কাজে লাগানো হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ক্লাবগুলিতেই দুর্বৃত্তদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা নির্বাচনের সময় গোলমাল পাকাতে পারে।”

শীলভদ্র দত্ত

This browser does not support the audio element.

ভোটের দিকে তাকিয়ে?

কলকাতার প্রায় ১০৫০টি ক্লাবের মধ্যে টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, যাদবপুর অঞ্চলের ক্লাবগুলিই সবচেয়ে বেশি অনুদান পেয়েছে। তারপরে ভবানীপুর, বেহালা ও পর্ণশ্রী এলাকার ক্লাবগুলি। কিন্তু সত্যিই কি ভোটের সময় আনুগত্য বজায় রাখতে বা বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্লাবগুলিকে অনুদান দিতে হয়? তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক তথা বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এটা অস্বীকার করার কিছু নেই যে মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলিকে টাকা দিয়েছেন ভোটের জন্যই। বিভিন্ন সংগঠনগুলিকে টাকা দেওয়ার কথা বলে উনি ভোট কিনতে চাইছেন। কলকাতার কোটি টাকার পুজোগুলোকে অনুদান দেওয়ার সার্থকতা কোথায়?” যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ক্লাবের ছেলেরা এলাকায় অনেক কাজ করে, প্রশাসনের পক্ষে যা করা সম্ভব হয় না। টাকার জন্য সেই সব কাজ যাতে বন্ধ না হয়, তার জন্য অনুদানের ব্যবস্থা।

এই খাতে সরকারের এখনও পর্যন্ত দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। শীলভদ্রের দাবি, "অনেক ক্লাবের টাকা ব্যক্তিগতভাবে হাতে পৌঁছেছে, ক্লাবে পৌঁছয়নি।” অতীতে পূর্ব ও উত্তর-পূ্র্ব কলকাতার ভুয়ো ক্লাবগুলি ঘিরে অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৬-১৭ বর্ষে এমন প্রায় ১৬০টি ভুয়ো ক্লাব টাকা নিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে, যেগুলির কোনো অস্তিত্বই নেই।

অভিষেক ভট্টাচার্য

This browser does not support the audio element.

ক্লাব উন্নয়ন?

আর্থিক অনুদান ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "ক্লাবগুলিকে সাহায্য করলেই অনেক বাবুদের আবার রাগ হয়।” সেই রাগের বহিঃপ্রকাশ কী শ্রাবন্তীর বক্তব্যে? কী বলছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ? টালা বারোয়ারির কর্মকর্তা অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে টাকা নিইনি। পুজোর জন্য নিয়েছি। বিশ্ববাংলা পুরস্কার পেয়েছি, সেটা অন্য ব্যাপার। তাই রাজনৈতিকভাবে আমরা ক্লাব থেকে কাউকে কোনো নির্দেশ দিই না। কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোনো দলের সমর্থক হতেই পারেন, কিন্তু তার প্রভাব পুজো কমিটিতে নেই। শাসক দলের সঙ্গে সরাসরি যোগ নেই সংগঠনের। যে টাকা পাই, সেটা সাংগঠনিক কাজে লেগে যায়।” 

বাদামতলা আষাঢ় সংঘের সন্দীপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, "আনুগত্য তো থাকবেই। আপনি টাকা দিলেন ক্লাবের জন্য, তাহলে আপনার আনুগত্য তো থাকবেই।” তার দাবি, "আমাদের সংগঠন অরাজনৈতিক। অনুদানের টাকা আমরা সোশ্যাল ওয়ার্কের কাজে ব্যবহার করি।” হাতিবাগান সর্বজনীনের কর্মকর্তা শাশ্বত বসু বলেন, "প্রায় আট-নয় বছর ধরে রাজ্য সরকার টাকা দিচ্ছে। এই সরকার ক্লাব-সংগঠনগুলিকে অনেক কিছু করে দিয়েছে, এটা অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই। তবে দায়বদ্ধতার ব্যাপারটা একান্ত ব্যক্তিগত।”

শ্রাবন্তীর এই চিঠি ঘিরে ক্লাব সংগঠকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, "শ্রাবন্তীর বক্তব্য ক্লাব সংগঠকদের কাছে অপমানকর। আমপান বা কোভিডে এই ক্লাবগুলিই এগিয়ে এসেছিল। বিরোধীরা এলে তারা যে একই পথে হাঁটবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়?”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ