ভোট-সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে সরালেন ট্রাম্প
১৮ নভেম্বর ২০২০
মার্কিন নির্বাচনে সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা অফিসারকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প। কারণ, তিনি ট্রাম্পের ভোট-জালিয়াতির অভিযোগ মানতে চাননি।
বিজ্ঞাপন
এখনো পর্যন্ত তিনি বাইডেনের কাছে হার স্বীকার করেননি। বরং ভোটে জালিয়াতির দাবিতে অনড়। তিনি দায়িত্ব ছাড়তেও রাজি নন। উল্টে নানান বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছেন। যেমন তিনি সাইবার সিকিউরিটি ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি(সিআইএসএ)-র ডিরেক্টর ক্রিস ক্রেবসকে বরখাস্ত করেছেন। ট্রাম্প টুইট করে জানিয়েছেন, সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের সুরক্ষা নিয়ে ক্রিস যা বলেছিলেন, তা একেবারেই ঠিক নয়।
সিআইএসএ-র তরফে গত সপ্তাহে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ব্যালট বা ভোটিং মেশিনে জালিয়াতির কোনো প্রমাণ নেই। বরং ২০২০-র নির্বাচন অ্যামেরিকার ইতিহাসে অন্যতম সুরক্ষিত ভোট। এই বিবৃতি দেখেই ক্ষুব্ধ ট্রাম্প এ বার ডিরেক্টরের চাকরিই খেয়ে নিলেন। অথচ, ২০১৮ সালে তিনিই সিআইএসএ তৈরি করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশ যাতে মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা।
ক্রিস ক্রেবসও জানিয়েছেন, তাঁকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্ট, ট্রাম্পের টুইট থেকেই প্রথমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারেন তিনি।
মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যমগুলোতে৷ ইরানের গণমাধ্যম এই পরাজয়কে উৎসবের কারণ মনে করছে৷ অন্যদিকে, ইসরায়েলি গণমাধ্যমে গুরুত্ব পেয়েছে ফিলিস্তিন ইস্যু৷
ছবি: tehrantimes.com
‘‘ট্রাম্পের পতন উদযাপন করছে ইরান’’
ইরানের দ্য তেহরান টাইমস মার্কিন নির্বাচন নিয়ে ‘‘ট্রাম্পের পতন উদযাপন করছে ইরান’’ শিরোনামে সংবাদ করেছে৷ পত্রিকাটি লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার বিষয়টি ইরানের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও নতুন প্রেসিডেন্ট তেহরানের প্রতি মার্কিন নীতিতে কতটা পরিবর্তন আনবেন তা নিশ্চিত হতে পারছেন না তারা৷ ফলে বাইডেনের জয়ের চেয়ে ট্রাম্পের প্রস্থানেই সন্তুষ্ট বেশি তারা৷
ছবি: tehrantimes.com
‘‘বাইডেনের জয় থেকে ফিলিস্তিনিদের চূড়ান্ত দাবি’’
ইসরায়েলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেৎস-এ ‘‘বাইডেনের জয় থেকে ফিলিস্তিনিদের চূড়ান্ত দাবি’’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করা হয়েছে৷ এতে বলা হয়েছে, গত চারবছর ধরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্বাসকে ব্যাপক চাপে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন৷ এখন সেই চাপে পরিবর্তন আসতে পারে৷
ছবি: haaretz.com
‘‘বাইডেনের জয় নেতানিয়াহুর জন্য ধাক্কা, ফিলিস্তিনিদের জন্য আশা’’
লেবাননের ইংরেজি পত্রিকা নাহানেটের শিরোনাম, ‘‘বাইডেনের জয় নেতানিয়াহুর জন্য ধাক্কা, ফিলিস্তিনিতের জন্য আশা৷’’ বিশেষজ্ঞদের বরাতে পত্রিকাটি লিখেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একজন কট্টর মিত্র ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷ বাইডেনের জয়ের ফলে এখন আবার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হতে পারে৷
ছবি: naharnet.com
‘‘বিভক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে শাসনের কঠিন কাজের পরিকল্পনা করছেন বাইডেন, মিত্ররা’’
কাতারের দৈনিক সংবাদপত্র গাল্ফ টাইমসের শিরোনাম, ‘‘বিভক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে শাসনের কঠিন কাজের পরিকল্পনা করছেন বাইডেন, মিত্ররা৷’’ পত্রিকাটি লিখেছে নির্বাচনে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর শুরুতেই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছেন জো বাইডেন৷ বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি৷
ছবি: gulf-times.com
‘‘মার্কিন নির্বাচন ২০২০ - আরবরা কী চায়?’’
আরব নিউজ মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আরবদের ভাবনা তুলে ধরতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে৷ পত্রিকাটিতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সংবাদ, বিশ্লেষণ, সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হচ্ছে৷
ছবি: arabnews.com
‘‘মার্কিন নির্বাচনে জেতায় বাইডেনকে সৌদি নেতাদের অভিনন্দন বার্তা’’
সৌদি পত্রিকা সৌদিগেজেটের শিরোনাম, ‘‘মার্কিন নির্বাচনে জেতায় বাইডেনকে সৌদি নেতাদের অভিনন্দন বার্তা৷’’ পত্রিকাটিতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রবিবার রাতেই এক বিবৃতিতে সৌদি নেতারা জো বাইডেনকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন৷
ছবি: saudigazette.com.sa
6 ছবি1 | 6
তবে সেনেটের সিলেক্ট কমিটি অন ইনটেলিজেন্সের চেয়ারম্যান মার্ক ওয়ার্নার ক্রিসের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওয়ার্নার বলেছেন, ''ক্রিস হলেন অসাধারণ সরকারি কর্মকর্তা। নির্বাচন সুরক্ষিত রাখতে তাঁর মতো অফিসার অ্যামেরিকার খুবই দরকার। তিনি সত্যি কথা বলেছিলেন। তাই প্রেসিডেন্ট তাঁকে সরিয়ে দিলেন।''
আসলে ট্রাম্পেররাগের কারণও আছে। গত কয়েক দিন ধরে ক্রিস ক্রেবস ও তাঁর সংগঠন মার্কিন নির্বাচন নিয়ে প্রতিদিন ফ্যাক্ট চেক প্রকাশ করছিল। ট্রাম্প ও তাঁর অনুগামীরা যে সব অভিযোগ করছিলেন, সেগুলির প্রকৃত তথ্য কী সেটা তিনি জানাচ্ছিলেন। ফলে ট্রাম্প রীতিমতো রেগে যান। ক্রিস অ্যামেরিকানদের বলেছিলেন, যত ভয়ঙ্কর ও চমকপ্রদ অভিযোগ হোক না কেন, সবসময় তা প্রথমে খতিয়ে দেখা উচিত।
চলতি মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টুইট করে ট্রাম্প কোনো বড় পদে থাকা ব্যক্তিকে সরিয়ে দেয়ার কথা জানালেন। এর আগে প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপারকে সরিয়ে দেয়ার খবরও টুইট করে জানিয়েছিলেন।