ভোলায় সংঘর্ষ: অজ্ঞাতনামা পাঁচ হাজারের বিরুদ্ধে মামলা
২১ অক্টোবর ২০১৯![Bangladesch | Menschen tragen einen verletzten nach Zusammenstößen zwischen Polizei und Demonstranten](https://static.dw.com/image/50906351_800.webp)
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারকে কেন্দ্র করে ভোলায় পুলিশের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ রোববার রাতে বোরহানউদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক আবিদ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত এসব আসামীর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন বলে উল্লেখ করেছে সংবাদ মাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন৷
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামের এক যুবকের কথিত ফেসবুক ম্যাসেজ নিয়ে এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়৷ অভিযোগ ফেসবুক মেসেজে নবী ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে তিনি কটূক্তি করেন৷ ওই ফেসবুক ম্যাসেজটি স্থানীয়ভাবে পোস্ট আকারে ছড়িয়ে দেয়া হলে উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে৷ শুক্রবার বিকেলে ওই যুবক নিজেই বোরহানউদ্দিন খানায় গিয়ে অভিযোগ করেন যে তার ফেসবুক আইডি হ্যাকড হয়েছে৷ পরে যার সত্যতা পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
রোববার সকাল ১০ টায় তৌহিদী জনতার নামে একটি ব্যানারে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে লোকজন সদরে আসেন৷ এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে৷ এতে চারজন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন৷
ভোলা জেলায় অনুমতি ছাড়া সব ধরণের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন৷ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুম আলম সিদ্দিক জানান, ‘‘কেউ যেন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো ধরণের সভা সমাবেশ বা মিছিল না করে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে৷''
বোরহারউদ্দিনের পাশাপাশি ভোলা জেলা শহরে রোববার থেকেই পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷ পাশের জেলা থেকে অতিরিক্ত দুইশর বেশি পুলিশকে ভোলায় আনা হয়েছে বলে ভোলা মডেল থানার ওসি এনায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন৷
এদিকে এই সংঘর্ষে হতাহতের প্রতিবাদে বুধবার সারাদেশে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি৷ নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আগামী ২৩ অক্টোবর বুধবার ঢাকা মহানগরীর থানায় এবং সারাদেশে জেলা ও মহানগরীতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে৷''
এলাকার পরিবেশ থমথমে
এদিকে বোরহানউদ্দিনে এখন থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান স্থানীয় সাংবাদিক নজরুল হক অনু৷ তিনি বলেন, সেখানে প্রচুর অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব নিযুক্ত রয়েছে৷ সকাল থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও দোকান বন্ধ ছিল৷ তবে বেলা ১ টার পর থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে সেগুলো ধীরে ধীরে খোলা শুরু হয়েছে৷ ব্যক্তিগত ছাড়া বোরহানউদ্দিনে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
সকালে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কয়েক দফা মিছিল বের করা হয় বলে জানান অনু৷ তবে ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে তাদের সমাবেশ করার কথা থাকলেও প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় তা বাতিল করা হয়৷ এদিকে সংঘর্ষের ঘটনার পর তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরেছে৷জেলা ও থানায় নিযুক্ত ওসি, এসপিদের প্রত্যাহার, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তা ও ফেসবুক ম্যাসেজের ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানান তারা৷
এদিকে রোববারের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বরিশালের ডিআইজি শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে৷ অন্যদিকে উপ পরিচালক মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের পৃথক আরেকটি কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ৷
এফএস (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ঢাকা ট্রিবিউন)