ভ্যাকসিন পাসপোর্ট নিয়ে উঠছে অনেক প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে বৈষম্য তৈরি হবে। লিখছেন রবার্ট মাজ।
বিজ্ঞাপন
করোনার টিকা নিলেই একটি সার্টিফিকেট দিতে চায় ইউরোপীয় কমিশন। এই সার্টিফিকেটকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল গ্রিন পাস বা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট। ১ মার্চ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন টুইট করে বলেছেন, ‘‘ডিজিটাল গ্রিন পাস ইউরোপীয়দের জীবনকে সহজ করবে। গ্রিন পাস থাকলে ইউরোপের ভিতর ও বাইরে বেড়াতে যাওয়া সহজ হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘চলতি মাসের শেষে এই পরিকল্পনা চালু হবে।’’
গ্রিস, সাইপ্রাসের মতো দেশগুলির অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল। তারাই এই সার্টিফিকেট দেয়ার জন্য ইইউ-র উপর চাপ দিচ্ছে। এই সার্টিফিকেট দেয়া শুরু হলে, তাদের পর্যটন ব্যবসা আবার ফুলে ফেঁপে উঠবে।
অনুমান করা হচ্ছে. এই নতুন ব্যবস্থা চালু করতে অন্ততপক্ষে মাস তিনেক সময় লাগবে। প্রযুক্তিগত ও বাস্তবের পরিস্থিতি অনুসারে ব্যবস্থা নিতে এই সময়টুকু দরকার। আর এখানেই সমস্যার শুরু।
অক্সফোর্ডের সেন্টার ফর ডেমোগ্রাফিক সায়েন্সের ডিরেক্টর মেলিন্দা মিলস মনে করেন, ‘‘এই ডিজিটাল গ্রিন পাস বা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট তখনই দেয়া যাবে, যখন অনেককে ভ্যাকসিন দেয়া হয়ে গিয়েছে এবং অনেকের ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ইউরোপের পরিকল্পনা ছিল, গরমের আগে ৭০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার।’’ এখনো পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে মাত্র ছয় শতাংশ মানুষকে।
ইইউ-র এই সার্টিফিকেটে শুধু টিকা দেয়ার কথা থাকবে না। কমিশনের মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান উইগার্ড বলেছেন, নাগরিকদের মধ্যে আমরা কোনো বিভেদ করতে চাই না। তাই অন্য তথ্যও রাখতে হবে। করোনা পরীক্ষার ফল। করোনা হলে কবে তিনি সেরে উঠেছেন, সেই সব তথ্যও থাকবে।
করোনায় দেউলিয়া যারা
করোনা মহামারির ধাক্কায় বিপর্যস্ত বিশ্ব বাণিজ্য৷ নিরবে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট কোম্পানিগুলো৷ এমনকি অনেক বড় প্রতিষ্ঠানও নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করছে৷
ছবি: DW/I. Banos-Ruiz
কারা টিকে থাকছে?
অনেক জায়গাতেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দুয়ার এখনও বন্ধ৷ এমন পরিস্থিতিতে কত প্রতিষ্ঠানে চিরতরে হারিয়ে যাবে আর কতগুলো শেষ পর্যন্ত ফিরবে তা অনিশ্চিত৷ এই মুহূর্তে দেউলিয়া ঘোষণা করার আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে না অনেকেই৷ বলা হচ্ছে বিশ্ব এখনও এই সংকট পরিস্থিতির মাঝামাঝিতে অবস্থান করছে৷ পুরো পরিস্থিতি অনুধাবন আর আসল ধাক্কাটি সম্ভবত টের পাওয়া যাবে আগামী বছরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Gateau
ছোটরা বেশি বিপদে
করোনার কারণে সবচেয়ে বড় লোকসান পড়েছে খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো৷ যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাশন পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান জে ক্রু নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে৷ হংকং এবং জার্মান ভিত্তিক ফ্যাশন পণ্য বিক্রেতা এসপ্রি বলেছে, এশিয়া থেকে সব স্টোর তারা গুটিয়ে নিবে৷ অনলাইন বেচাকেনা জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় কোভিড-১৯ এর ধাক্কা লাগার আগে থেকেই অবশ্য এই কোম্পানিগুলো অস্তিত্ব সংকটে ভুগছিল৷ মহামারি তা আরো ত্বরান্বিত করছে মাত্র৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/L. Ying
নড়বড়ে বড়রাও
দেউলিয়া আইনে সুরক্ষা পেতে আবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্যান মার্কাসের মতো বৃহৎ ডিপার্টমেন্ট স্টোর৷ মে মাসেই ‘চাপটার ইলেভেন ফাইল’ করেছে জেসি পেনি৷ ১১৮ বছর বয়সী প্রতিষ্ঠানটির স্টোর আছে ৮০০ টি৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা এই তালিকায় এমন নামীদামি কোম্পানির নাম সামনের দিনে যোগ হবে আরো৷ এমনকি জার্মানির সবচেয়ে বড় ডিপার্টমেন্ট স্টোর গ্যালারিয়া কার্স্টার্ড কাউফহফ এর মত প্রতিষ্ঠানও সেই পথে হাঁটছে বলে গুঞ্জন রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে কে বাঁচাবে?
যুক্তরাজ্যে এক জরিপে দেখা গেছে চলতি বছর প্রতি দশটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের একটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ তাদের সেবার চাহিদা দ্বিগুণ বেড়েছে অথচ তহবিল আগের চেয়ে কমে গেছে৷ আর এক্ষেত্রে সামাজিক সহযোগিতা কিংবা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে যারা কাজ করে তারাই পড়ছে সবচেয়ে বিপাকে৷ এমনকি ন্যাশনাল ট্রাস্ট এর মত খ্যাতনামা গ্রুপও এই ধাক্কা অনুভব করছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Güttler
রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় ধ্বস
বিভিন্ন জায়গায় রেস্টুরেন্টগুলো তাদের চেয়ার গুটাতে শুরু করেছে৷ বলা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত এই ব্যবসায় শুধু দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক চেইনগুলোই হয়তো টিকে থাকবে৷ তবে কিছু বড় চেইনও নড়বড়ে অবস্থানে রয়েছে৷ যেমন ভাপিয়ানোর মত জনপ্রিয় চেইনটি জার্মানিতে দেউলিয়া আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে৷ মারিদো নামের আরেকটি কোম্পানি তাদের তৃতীয় রেস্টুরেন্ট বন্ধ করেছে৷
ছবি: picture-alliance/SvenSimon/F. Hoermann
পর্যটনে বেঁচে থাকার লড়াই
অ্যামেরিকার গাড়ি ভাড়া দেয়া প্রতিষ্ঠান হার্তজ৷ গতমাসে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বিদায় নিয়েছেন৷ দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছে তারা৷ উত্তর অ্যামেরিকাজুড়ে ছাঁটাই করেছে ১০ হাজার কর্মী৷ পর্যটন খাতে জড়িত বাকিরাও স্বস্তিতে নেই৷ জার্মানির বিমান প্রতিষ্ঠান লুফটহানসা সরকারের কাছ থেকে ৯০০ কোটি ইউরোর সহায়তা তহবিল নিয়েছে৷ ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া কোন রকমে টিকে আছে ‘ভল্যানটারি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের’ অধীনে৷
ছবি: Imago/R. Peters
পেট্রোলিয়ামের কদর নেই
চাহিদা কমে যাওয়া বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম তলানিতে ঠেকেছে৷ এর সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর এখন ত্রাহি পরিস্থিতি৷ এপ্রিলে ডায়মন্ড অফশোর ড্রিলিং, হোয়াইটিং পেট্রোলিয়াম, আল্ট্রা পেট্রোলিয়াম ফিল্ড যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের কাছে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন জানিয়েছে৷ তবে তারা যে একেবারে বিদায় নিচ্ছে তা নয়৷ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটলেই এই প্রতিষ্ঠাগুলো ব্যবসায় ফিরবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
ছবি: Imago-Images/ITAR-TASS
মাঠে যখন দর্শক নেই
দর্শকের বদলে খেলোয়াড়রা, শিল্পীরা নিজেদের নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন ক্যামেরার সামনে৷ তাতে কি ক্ষতি পোষাবে? এর সঙ্গে জড়িত ক্লাব, কর্তৃপক্ষ আর বিভিন্ন কোম্পানি বঞ্চিত হচ্ছে টিকিট আর বিজ্ঞাপনের টাকা থেকে৷ জার্মানির পেশাদার ফুটবল দল কাইজার্সলাউটার্ন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই তালিকা সামনের দিনে ক্রমশ লম্বা হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Anspach
আসল পরিস্থিতি সামনে
বিরাট অঙ্কের আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে উন্নত দেশগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ কিন্তু আসল পরিস্থিতি ধরা দিবে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে৷ কেননা ততদিনে অনেকেরই প্রণোদনার টাকা ফুরাতে শুরু করবে৷ কোম্পনিগুলো দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আদালতপাড়ায় লাইন ধরবে, বাড়বে কর্মহীন মানুষের বহরও৷ এমন আভাসই দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা৷
ছবি: Reuters/D. Ryder
দেউলিয়া হলে কি সব শেষ?
দেউলিয়া হয়ে যাওয়া কারো কাছে গর্বের, কারো কাছে লজ্জার৷ অনেক ক্ষেত্রে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া কোম্পানি বা ব্যক্তি নতুন প্রস্তুতি নিয়ে আরো শক্তিশালী রূপে ফিরে আসতে পারে৷ হেনরি ফোর্ড তার কোম্পানি শুরুর আগে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন৷ ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দায় জিএম, ক্রাইসলারের মত কোম্পানিও দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছিল৷ করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতেও এমন কিছু খারাপ খবর আসবে যা হয়তো পরবর্তীতে ভাল কিছুর জন্ম দিবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Inderlied
10 ছবি1 | 10
নৈতিক ও গোপনীয়তার প্রশ্ন
এখানেই উঠে যাচ্ছে নৈতিক ও গোপনীয়তার প্রশ্ন। মিলস বলেছেন, যে নৈতিক প্রশ্ন প্রথমে দেখা দেবে, তা হলো, এই সার্টিফিকেট থেকে কাদের বাদ দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসার কারণে অনেকে করোনার টিকা নিতে পারবেন না। যেমন, যাদের বেশি মাত্রায় অ্যালার্জি আছে, যারা গর্ভবতী এবং কিছু দেশে জাতিগত সংখ্যালঘুরা টিকা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত। তার মানে এই সব গোষ্ঠীগুলি পাসপোর্ট পাবে না।
রয়্যাল সোসাইটির একটি গোষ্ঠী একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে এবং তা জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। মিল সেই রচয়িতাদের একজন। তারা দেখিয়েছেন, এই ধরনের একটি ব্যবস্থা তৈরির আগে কোন জিনিসগুলির উপর জোর দিতে হবে।
অন্য লেখকদের মধ্যে আছেন অক্সফোর্ডের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস ডাই। তিনি জানিয়েছেন, রিপোর্টে নৈতিক, গোপনীয়তা ও টেকনিক্যাল বিষয়গুলির কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা বলা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেকটা পথ হাঁটতে হবে।
তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশাল প্রগতির প্রয়োজন। আমরা এখনো এই ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ব্যবহারের উপযুক্ত জায়গায় নেই। আমরা এখনো তথ্য সংগ্রহ করছি যে, এই টিকা করোনা থামাতে কতটা সক্ষম হবে। এর ফলে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে, তা কতদিনের জন্য থাকবে।’’
মিলস মনে করেন, ইইউ-কে আগে আইনগত ও নৈতিক মাপদণ্ডগুলি ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। প্রথমেই দেখতে হবে, সার্টিফিকেট থেকে কাদের বাদ দেয়া হবে। চিকিৎসাগত কারণে অনেকে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না। গর্ভবতীরাও নয়। যাদের অ্যালার্জি আছে, তারাও টিকা নিতে পারবেন না। কিছু জাতিগত সংখ্যালঘুও নেবে না। তার মানে, এদের সার্টিফিকেট দেয়া যাবে না।
ভ্রমণের পথে বাধা সৃষ্টি করছে করোনা সংকট
করোনা সংকটের কারণে গোটা বিশ্বে জনজীবন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ বিশেষ করে ভ্রমণ ও পর্যটন ক্ষেত্র অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ অদূর ভবিষ্যতেও অনিশ্চয়তা কাটার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
ছবি: picture-alliance/nordphoto/Bratic
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত বন্ধ
১৭ই মার্চ থেকে এক মাসের জন্য ইইউ-র বহির্সীমানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ ইইউ-র বাইরের কয়েকটি দেশসহ শেঙেন এলাকার বহির্সীমানাও বন্ধ রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/E. Cegarra
জার্মানিতে সতর্কতার মেয়াদ বাড়লো
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস জানিয়েছেন, বিদেশ ভ্রমণে সতর্কতার মেয়াদ কমপক্ষে এপ্রিল মাসের শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে৷ তিনি টুইট বার্তায় জার্মানির মানুষকে বাসায় থেকে নিজের ও অন্যান্য মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন৷ অনেক ভ্রমণ সংস্থাও এপ্রিল মাসের শেষ পর্যন্ত কার্যকলাপ বন্ধ রেখেছে৷ জার্মান সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেশিরভাগ দেশের সঙ্গে সীমান্ত ৪ঠা মে পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে৷
ছবি: picture-alliance/nordphoto/Bratic
আটকে পড়া নাগরিকদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ
করোনা সংকট শুরু হবার পর থেকে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে আটকে পড়া দেড় লাখেরও বেশি জার্মান নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে৷ টিইউআই ভ্রমণ সংস্থার সূত্র অনুযায়ী এই উদ্যোগের ফলে প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ দেশে ফিরে এসেছেন৷ বিশেষ করে মিশর, স্পেন, পর্তুগাল ও কেপ ভ্যার্দ দ্বীপপুঞ্জে বেশিরভাগ জার্মান নাগরিক আটকে পড়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Margais
ভারতে বন্ধ পর্যটন ভিসা
করোনা সংকটের জের ধরে ভারত সব পর্যটক ভিসা কমপক্ষে এক মাসের জন্য বাতিল করেছিল৷ একমাত্র যে সব বিদেশি আগে থেকেই দেশে ছিলেন, তাদের থাকার অনুমতি দিয়েছিল ভারত সরকার৷ আপাতত ৩রা মে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/N. Kachroo
এশিয়ার পর্যটনে ধস
বিশেষ করে চীনা পর্যটকদের প্রবেশের উপর বিধিনিষেধের কারণে এশিয়ার অনেক পর্যটনকেন্দ্র সংকটে পড়েছে৷ যেমন টোকিওর সেনসো-জি মন্দির ও কম্বোডিয়ার আংকর ওয়াট মন্দিরে দর্শকদের সংখ্যা নাটকীয় মাত্রায় কমে গেছে৷ মার্চ মাসেই থাইল্যান্ডে পর্যটকদের সংখ্যা ৪৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Taga
অ্যামেরিকায় প্রবেশ নিষেধ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ থেকে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে৷ ইটালি ও স্পেন করোনা সংকট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে৷ ফ্রান্স লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ১৩ই এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যে অ্যামেরিকায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা ততদিন চালু থাকবে, যতদিন না ইউরোপের দেশগুলিতে উন্নতির লক্ষণ দেখা না যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Stolyarova
মাইয়র্কা দ্বীপে দুশ্চিন্তা
পর্যটনের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল স্পেনের মাইয়র্কা দ্বীপ৷ পালমা শহরের রাজপ্রাসাদের সামনে এখন প্রায় কোনো মানুষই চোখে পড়ছে না৷ পর্যটকেরা ইস্টারের ছুটি কাটাতে সেখানে যেতে পারেন নি৷ বিশেষ করে জার্মানি ও ব্রিটেনে অনিশ্চয়তার কারণে এমনকি মরসুমের সময়েও অনেক হোটেল বন্ধ রাখতে হবে সেখানকার হোটেল সংগঠন আশঙ্কা করছে৷
ছবি: picture-alliance/GTRES/G3online
আশার আলো
সুইজারল্যান্ডের ম্যাটারহর্ন পর্বতের উপর আলোর এক ইনস্টলেশন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও মানবজাতির মধ্যে সংহতির বার্তা পাঠাচ্ছে৷ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও পর্যটকদের প্রিয় অনেক স্থানে এমন ইতিবাচক বার্তা তুলে ধরা হচ্ছে৷ যেমন মিশরের গির্জা পিরামিডের সামনে লেখা আছে ‘নিরাপদ থাকুন, বাসায় থাকুন’৷
ছবি: picture-alliance/KEYSTONE/V. Flauraud
অস্ট্রেলিয়ায় নাগরিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা
অস্ট্রেলিয়ার সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য নাগরিকদের বিদেশ সফরের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বিদেশে অবস্থানরত সব অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের দেশে ফেরার ডাক দিয়েছেন৷ অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করলে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম বে কিছু দিন ধরে চালু রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/Sopa/F. Rols
9 ছবি1 | 9
মিলসের প্রশ্ন, এটা কি শুধু বেড়াতে গেলেই লাগবে, না কি চিকিৎসার জন্য, চাকরি পেতে, ফুটবল ম্যাচ দেখতে, বাইরে খেতে গিয়েও পাসপোর্ট লাগবে?
তাছাড়া এর মধ্যে কিছু স্পর্শকাতর আইনি সমস্যাও আছে। ভ্যাকসিন পাসপোর্টে কিছু স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য থাকবে। তাই এই সব বিষয়ে যেন কোনো অস্পষ্টতা না থাকে। একটি মাপদণ্ড তৈরি করা হয়।
ইউরোপীয়ান কোর্ট অফ হিউম্যান রাইটস(ইসিএইচআর) মতে, কোনো ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকার বজায় রাখতে হবে। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য গোপন রাখাটাও তার মধ্যে পড়ে।
বৈষম্যের প্রশ্ন
বলা হচ্ছে, টিকা নেয়া বাধ্যতামূলক নয়, ইচ্ছে হলে কেউ তা নিতে পারে, ইচ্ছে না হলে, নয়। তা হলে যারা চিকিৎসাগত কারণে টিকা নিতে পারছেন না, তাদের ক্ষেত্রে কী বলা হবে?
ইসিএইচআর সবসময়ই মনে করে, আইনের চোখে সকলে সমান এবং কোনো বৈষম্য করা হবে না। প্রশ্নটা হলো, ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কি এই নীতি বজায় রাখতে পারবে? জার্মান এথিক্স কাউন্সিল মনে করে, এই পাস বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে।
মিলস বলেছেন, যারা ভ্যাকসিন নেননি, তারা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বেন। সরকারের দায়িত্ব, দেশের নাগরিক, কর্মী, ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষা করা। ফলে যারা টিকা নেবেন না বা চিকিৎসার কারণে নিতে পারবেন না, তারা কি বৈষম্যের শিকার হবেন না?