যুক্তরাজ্যে ফ্ল্যাট কেনার সময় আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছে। এই অভিযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন ভ্যাটিকান সিটির এক আধিকারিক।
বিজ্ঞাপন
এ বার দুর্নীতির অভিযোগ খোদ ভ্যাটিকান সিটিতে। অভিযোগ সেখানকার এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক যুক্তরাজ্যে ভ্যাটিকানের জন্য বাড়ি কেনার সময় কয়েক মিলিয়ন ইউরো দুর্নীতি করেছেন। বৃহস্পতিবার পোপের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র দিয়েছেন ওই ব্যক্তি। পোপ তা গ্রহণ করে নিয়েছেন।
পোপ ফ্রান্সিসের পাঁচ বছর
ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ করলেন পোপ ফ্রান্সিস৷ এ সময়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন, কখনো কখনো কোনো কোনো মহলের সমালোচনারও শিকার হয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Agentur Andina/J. C. Guzmán
সেই সন্ধ্যা
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হয়েছিলেন হর্খে মারিও ব্যার্গোগলিও৷ সেন্ট পিটার্স স্কয়্যারে সেদিন ছিল লাখো ভক্তের ভিড়৷ পোপ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেয়া ভাষণ শুরু করেছিলেন দু’টি মাত্র শব্দ দিয়ে, ‘বুয়োনা সেরা ’, অর্থাৎ ‘শুভ সন্ধ্যা!’
ছবি: Reuters
সংস্কার কমিটি ‘কে নাইন’
পোপ হয়েই ন’জন কার্ডিনালকে নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করেন ভ্যাটিকান প্রধান৷ চার্চের সংগঠন এবং নির্দেশনায় সংস্কারের দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L'Osservatore Romano
দুর্বলের পাশে
আফ্রিকা থেকে ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে তখন অনেকের প্রাণ যাচ্ছিল৷ পোপ বলেছিলেন বিষয়টি তাঁর ‘হৃদয়ে কাঁটা’ হয়ে বিঁধে৷ ২০১৩ সালে ইটালির লাম্পেডুসা সফরে গিয়েছিলেন পোপ৷ শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশী সেদিন আশা করেছিলেন, পোপের আগমন উপলক্ষ্যে হয়ত তাঁদের ইটালিতে থাকার অনুমতি দেবে সরকার৷ সে আশা অবশ্য পূরণ হয়নি৷
ছবি: AFP/Getty Images
বিনম্রতার প্রতীক
ছবির এই গাড়িটি ৩০ বছরের পুরোনো রেনল্ট বা রেনঁ মডেলের৷ গাড়িটি তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন ভেরোনার এক যাজক৷ পোপ ফ্রান্সিস নিজে চালাতে চেয়েছিলেন গাড়িটি৷ কিন্তু নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে বলে সেই অনুমতি তাঁকে দেয়া হয়নি৷
ছবি: Reuters
সেলিব্রিটি ফ্রান্সিস
পোপ ফ্রান্সিসের জনপ্রিয়তা বিশ্বের অনেক সেলিব্রিটির মনেই হিংসার জন্ম দিতে পারে৷ খ্রিষ্টান নন, এমন কোটি কোটি মানুষও তাঁকে পছন্দ করেন৷ তাই তো ইতিহাসের প্রথম পোপ হিসেবে রোলিংস্টোন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture alliance/dpa/ROLLING STONE
সেতুবন্ধন
পোপ ফ্রান্সিস সবসময় সংঘাত, হানাহানির বিরুদ্ধে৷ তাই কখনো মধ্য আফ্রিকা এবং কলম্বোর বিবদমান দুই পক্ষ, কখনো যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা, কখনো বা যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর সম্পর্কোন্নয়নের উদ্যোগে দেখা গেছে তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Agentur Andina/J. C. Guzmán
সব ধর্মে বন্ধুত্ব
সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বন্ধুত্বের মনোভাব উৎসাহিত করতে দৃষ্টান্তমূলক কিছু কাজ করেছেন তিনি৷ জেরুসালেমে গিয়ে যেমন প্রার্থনা করেছেন, একইসঙ্গে গ্র্যান্ড মুফতি মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে আসতেও ভোলেননি৷ মিশরে গিয়েও কপটিক চার্চের প্রধান এবং গ্র্যান্ড ইমাম দু’জনের সঙ্গেই দেখা করেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Roque
জনতার পোপ
গত জানুয়ারিতে চিলি সফরে গিয়েছিলেন পোপ৷ রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে বিমানে উত্তরের শহর ইকিকে যাচছেন৷ বিমানের দুই ক্রু এসে তাঁর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এক পর্যায়ে জানালেন যে তাঁরা পরস্পরকে বিয়ে করবেন৷ পোপ তো বেজায় খুশি৷ ওই বিমানে তক্ষুণি দুই তরুণ-তরুণীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে দিলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/Osservatore Romano
সমালোচনা
পোপ ফ্রান্সিসের সমালোচনাও নেহাত কম নয়৷ ধর্মযাজকদের একটি অংশ তাঁকে খুব কট্টর মনে করেন৷ ওপরের পোস্টারে গির্জার ভিতরে কারো প্রতি ন্যূনতম ক্ষমা প্রদর্শন না করার জন্য সমালোচনা করা হয়েছে৷ অনেকে আবার মনে করেন, তিনি অতিরিক্তি ধর্মনিরপেক্ষ, তাঁর মানবতাবোধও অতিরিক্ত সাহসী৷ কেউ কেউ বলেন, পোপ ফ্রান্সিস খুব বেশি প্রচারমুখী, তাই যেভাবে যেখানে গেলে প্রচার জুটবে সেখানে ঠিক সেভাবেই হাজির হন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press
9 ছবি1 | 9
২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের চেলসিতে এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ভ্যাটিকান সিটির কার্ডিনাল অ্যাঞ্জেলো বেচিউ। ভ্যাটিকান সিটির পোপ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এই ব্যক্তি। খ্রিস্টান এই ধর্মস্থানে একেবারে প্রথম সারির আধিকারিকদের মধ্যে একজন ছিলেন অ্যাঞ্জেলো। পদমর্যাদার জোরেই ভ্যাটিকান সিটির জন্যই চেলসিতে এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে অত্যন্ত ধনী এক জায়গায় ফ্ল্যাট কেনার জন্য টাকার লেনদেনও করেন। অভিযোগ, অর্থের হিসেবে বিপুল গরমিল রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ফ্ল্যাট কেনার সময় কয়েক মিলিয়ন ইউরোর দুর্নীতি করেছিলেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশ অবশ্য অ্যাঞ্জেলোর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাটে অর্থ লেনদেন তিনি করেছিলেন, সেই ইটালীয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভ্যাটিকান সিটিও অ্যাঞ্জেলোর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কোনো অভিযোগও দায়ের করেনি। তবে পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য তাঁর উপর যে যথেষ্ট চাপ ছিল, তা অনেকেই মনে করছেন।
বস্তুত, চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন অ্যাঞ্জেলো। তাঁর কার্ডিনাল পদবিও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে ভ্যাটিকানের সঙ্গে তিনি আর যুক্ত থাকলেন না। এর আগে ২০১৮ সালে এ ভাবেই এক উচ্চপদস্থ আধিকারিককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল ভ্যাটিকান। মার্কিন সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ছিল।